ভালোবাসার মুখোমুখি

আরণ্যক বসু
নাটক
Bengali
ভালোবাসার মুখোমুখি

একটি শ্রুতিনাটক

 

ভালোবাসার মুখোমুখি

(এই নাটকের তিনটি চরিত্র –প্রতিষ্ঠিত লেখক বাবা নশ্বর সরকার, মা নিরালা সরকার এবং যুবক পুত্র নীলাঞ্জন সরকার)

 

(নাটকের সময়কাল করোনা আক্রান্ত ঘরবন্দী জীবন এবং আমফান ঘূর্ণিঝড়ের দিন ও রাত)

(এই নাটকের সব চরিত্র এবং ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক)

 

(প্রথম পর্ব)

 

(বৃষ্টির শব্দ, অস্থির ও ঝোড়ো অবহাওয়া। বারবার ডোর বেলের আওয়াজ, দরজা খোলার শব্দ)

 

নশ্বর                :           আচ্ছা এই বাড়িতে বেলটা কী জন্যে আছে? শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি হিসেবে

শোনার জন্যে, নাকি দয়া করে গলা তুলে সাড়া দেওয়ার জন্য।

 

নিরালা             :           প্লিজ, ভেতরে এসে কথা বলো। দরজায় দাঁড়িয়ে যখন প্রতিবেশীদের

শুনিয়ে চিৎকার করো, তখন তোমার সমস্ত সফিস্টিকেশন থেকে

পাঁকের গন্ধ উঠে আসে। (দরজা বন্ধ করার শব্দ) আমাদের মা আর                                   ছেলের বমি উঠে আসে তাতে।

 

নশ্বর                :           এইতো, যেটা আশা করেছিলাম সেটাই শুরু হলো। দল পাকানো।

তিনজনের বাড়িতে দুটো দল, যেহেতু আমি পিছনে কথা বলিনা,                                          সেহেতু আমি একা। যেহেতু আমি আলাদা ফ্লোরে থাকি, তাই আমি

একা।

 

নিরালা             :           প্লিজ, চেঞ্জ ইওর কমপ্লেক্স। ট্রাই টু বি রেশানাল।

 

নশ্বর                :           সন্দেহবাতিকগ্রস্ততা! প্রত্যেকটা ব্যাপারে তুমি দল পাকাও না?

আর আমি কী এমন অন্যায় করেছি? সাত – আটবার বেল দিচ্ছি

কেউ সাড়া দিচ্ছে না! এতটা তাচ্ছিল্য করা কখন অর্জন করলে                                           তোমরা?

 

নীলাঞ্জন          :           (চিৎকার করে উঠল) বেশ করেছে তাচ্ছিল্য করেছে। তোমার                                              মেজাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে হবে সবাইকে? সাড়া দিচ্ছে না

যখন, তখন নিশ্চয়ইকোন কারণ আছে।

 

নশ্বর                :           কি কারণ সেটাইতো জানতে চাইছি? তুই সারাক্ষণ কানে হেডফোন

গুঁজে অ্যানড্রয়েড নিয়ে খেলা করছিস, আর তোর মা কোণার ঘরে

ঢুকে ফোনে খোস গল্প করছে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে। যারা জীবনেও                                 আমাদের খোঁজ নেয়না।

 

নিরালা             :           এবার আমি কিন্তু মুখ খুলবো।

 

নীলাঞ্জন          :           মা, ছেড়ে দাও, ফালতু কথা বলে কোন লাভ নেই। বাবা কোনদিনও

শুনতে চেষ্টা করেছে আমাদের কথা? শুধু তোমাকে আমাকে

ডমিনেট করেছে।

 

নিরালা             :           দোস ডেজ আর অলরেডি গন। এখন আমার পাশে আমার বড় হয়ে

যাওয়া ছেলে আছে। এখন আমার নিজের একটা পৃথিবী আছে।

 

নীলাঞ্জন          :           আঃ! মা চুপ করে যাওনা। বাবা, তুমি প্লিজ ওপরে যাও।

 

নিরালা             :           না, তোমাকে দাঁড়িয়ে শুনে যেতে হবে কোথায় তুমি অন্যায়টা করেছো।

 

নশ্বর                :           আচ্ছা, কি ব্যাপারটা কী? খুলতে দেরী হয়েছে, আমিও স্বাভাবিকভাবে

চেঁচামেচি করেছি। দুটো বিশাল ব্যাগ ভর্তি করে এই বয়সে সারা                                           সপ্তাহের বাজার করাটাতো চাট্টিখানি কথা নয়। রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে                                   রাখলে মেজাজ এমনিতেই গরম হয়ে যাবে। আমার জায়গায় তোরা                                    থাকলে কী করতিস?

 

নিরালা             :           আর যাইহোক না কেন ষাঁড়ের মতো চিৎকার করতাম না। তুমি

জানো না, নীলাঞ্জনের ওয়ার্ক এট হোম চলছে? সেই ব্যাপারে তখন

একটা ফোন এসেছিল। যখন নিজের কাজ করো তখনতো সারা

বাড়িতে ছুঁচ পড়ার শব্দও সহ্য করতে পারো না। মোস্ট স্বার্থপর তুমি।

 

নশ্বর                :           আমি স্বার্থপর! হোল্ড ইওর টাং। এক পয়সার মুখে পাঁচ পয়সার

আওয়াজ মানায় না।

 

নীলাঞ্জন          :           হ্যাঁ, সত্যিই মানায় না, কারণ তুমি সেলিব্রিটি। তোমার জন্য আমরা

সবাই স্যাক্রিফাইস করবো আর তুমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে

হুকুম করবে। কি ভেবেছো বলতো তুমি?

 

নশ্বর                :           কিস্যু ভাবি নি। শুধু ভাবছি এইভাবে আর কতদিন এখানে পড়ে

থাকতে পারবো। হয়তো বাধ্য হয়েই ছেড়ে     চলে যেতে হবে।

 

নিরালা             :           যাওনা, গিয়ে দেখাও না। তোমাকে ছাড়া আমাদের দিন চলে কিনা

সেটা আমরাও দেখতে চাই। তুমি ভুলে যাচ্ছো আমারও একটা

চাকরি করা যুবক ছেলে আছে, যে তার মায়ের দায়িত্বটা সম্পূর্ণ

নিতে পারবে।

 

নশ্বর                :           অবশ্যই। তবু ওকে এই জায়গাটায় দাঁড় করাতে গিয়ে আমারও

বোধহয় মুখে রক্ততোলা পরিশ্রম ছিল, যার মূল্য তোমাদের কাছে

একটা বিগ জিরো। এবং সেই কারণেই আমাকে তোমাদের আর

প্রয়োজন নেই।

 

নীলাঞ্জন          :           ইউ আর এ্যাবসল্যুটলী কারেক্ট বাবা, সত্যিই তোমাকে আমাদের

আর প্রয়োজন নেই। তুমি যেখানে খুশি গিয়ে থাকতে পারো এবং

তাতে আমরা ভালোই থাকবো। কারণ তোমার যেমন একটা আলোকিত                              পৃথিবী আছে, আমাদেরও আছে। আমি তোমার মতো স্বার্থপর                                             সেলিব্রিটি হতে চাইনা। আমি সাধারণ মানুষ হয়েও ভালো থাকতে                                             পারবো। এ্যান্ড ফর গডসেক, আমার মা-কেও ভালো রাখতে পারবো।

 

নিরালা             :           নীল, তুই এবার চুপ করে যা, এনাফ ইজ এনাফ।

 

নশ্বর                :           ইয়েস, এনাফ ইজ এনাফ। বাট ফর ইওর কাইন্ড ইনফরমেশন,

আই উড লাইক টু সে, সেলিব্রিটি হবার জন্য কেউ জন্মায় না। যেমন

গায়ের রং সাদা বা কালো অথবা ধনী-দরিদ্র যে পরিবারেই জন্মাক না

কেন, জন্ম মুহূর্তে সবার পরিচয়ই এক -সে মানব সন্তান। নীলু, তুই

জন্মের পরে অনেক কিছু পেয়ে বড় হয়েছিস, আমরা সেগুলো

চোখেই দেখিনি। সেলিব্রিটি হওয়ার কোন ইচ্ছেই আমার কোনদিন

ছিল না।

 

নীল                 :           ছাড়ো তোমার জ্ঞানের কথা। এই লকডাউনের দু-আড়াই মাস ধরে

তুমি এদেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে লাইভ অনুষ্ঠান করছো, আর                                   তার জন্যে আমাদের সপ্তাহে দু-তিনদিন দম আটকে বসে থাকতে                                      হচ্ছে, দেড়-দু ঘন্টা ধরে আমরা ফিসফিস করে কথা বলতে         বাধ্য হচ্ছি,                               পাছে আওয়াজ করলে তোমার মতো বিখ্যাত লেখকের অসম্মান হয়।                                  তার পরেও তুমি দলবাজি করা দেখছো। আসলে তুমি পুরোপুরি                                                সাইকো।

 

নশ্বর                :           তাতে আমি কি করতে পারি? আমার ডিমান্ড আছে, তাই আমাকে

সবাই ডাকছে।

 

নিরালা             :           সে তো কেউ অস্বীকার করছে না! কিন্তু তুমিওতো আমাদের ব্যাপারটা                               বুঝবে! তুমি যখন পরপর ডোর বেল বাজিয়েই যাচ্ছিলে, তখন আসলে                               নীলু ওর বসের কল রিসিভ করছিলো, তাই ও বিরক্ত হচ্ছিল। ওর ছোট                                   মুখে এই বড় কথাগুলো তো তোমার শোনার কথা ছিল না, তুমি ওকে                                বাধ্য করিয়েছো কথাগুলো বলতে। জানোই তো ও একটু রোখা-চোখা                               ছেলে।

 

নশ্বর                :           মাই ফুট টু রোখা-চোখা, হোয়াট ননসেন্স টু সে, রোখা-চোখা? ও কি

পাড়ার মাস্তান নাকি। আমাদের পারিবারিক লীগ্যাসিতে তো রোখা-                                     চোখা ব্যাপারটা কারুর মধ্যেই নেই। ও কোথাথেকে অর্জন করল?

আর ও রোখা-চোখা হলেই আমাকেও তার সাথে কম্প্রোমাইজ করতে                                 হবে তারই বা কি মানে আছে? আমি তো ওর কাছে সিকি পয়সাও ধারি                                না। আমি অনেক মানুষের কাছেই তো মান্যতা পাই। বাংলা ভাষার বহু                                    মানুষ তো আমার কথা জানে, আমার গুরুত্ব জানে, আমাকে মান্যতা                                   দেয়। আমি কেন নিজের বাড়িতে দাঁড়িয়ে শুনবো – বাড়ি থেকে চলে                              যাওয়ার কথা?

 

নিরালা             :           প্লিজ চুপ করো, সমস্ত দরজা জানলা খোলা, বাইরের লোকেরা শুনছে।

 

নীল                 :           বাবা, আমার মনে হয় তোমার মানসিক চিকিৎসা দরকার। তুমি                                           পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগছো। তুমি ভেবেই নিয়েছো তুমি বাড়িতে                                ঢুকলেই আমরা তোমার পায়ের কাছে বসে পড়ে তোমাকে ঢাক-ঢোল,                                  মালা-চন্দনে বরণ করে নেব। ছ্যাঃ, প্লিজ ট্রাই টু রেক্টিফাই ইয়োরসেল্ফ,                                 এখনো সময় আছে।

 

নিরালা             :           সেলিব্রিটি,সেলিব্রিটি শুনতে শুনতে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পরের

কোনো জন্ম থাকলে যেন সেলিব্রিটির বাড়ির মানুষ না হই।

সেলিব্রিটিরা পাশের বাড়ির মানুষ হলেই ভালো, নিজের বাড়িতে

যেন মূর্ত্তিমান আপদ। যাকে ট্যাকেল করা আমাদের পক্ষে সম্ভব

নয়। আমরা চাপ নিতে পারছি না।

 

নীল                 :           আমারও একই মত। তোমার তো অনেক শুভানুধ্যায়ী, তুমি অন্য

কোথাও গিয়ে থাকো।

 

নশ্বর                :           (খানিকটা শান্তভাবে) ঠিক আছে, আমি তাই করবো। এই বয়সেও

আমি নিজের ঠিকানা খুঁজে নিতে পারবো। কেননা প্রতিদিন এই

আক্রমণ সহ্য করা আমার পক্ষেও সম্ভব হচ্ছে না। মায়ের সামনেই

ছেলে ছোট মুখে বড়   কথা বলছে –

 

নীল                 :           এই এই, তুমি কাকে ছোট মুখ বলছো? একজন গ্র্যাজুয়েট

ইঞ্জিনিয়ার, সম্পূর্ণ নিজের দক্ষতায় সম্মানজনক চাকরি পেয়েছি,

তুমি কি আশা করো, এখনো আমার ষোলো বছরের নরম-শরম মুখ

থাকবে?

 

নিরালা             :           আসলে ডমিনেট করাটা এদের বংশের রীতি। বাইরে বিখ্যাত শিল্পী-

সাহিত্যিক, ঘরে ফিরলেই ছেলে বউ-এর কাছে ভয়াবহ হিটলার।

 

নশ্বর                :           জাস্ট শাট্ আপ! বংশ তুলে একটাও কথা বলবেনা। আমার বংশটা

কী, সে তো আমাকে দিয়েই বোঝা যায়। অন্তত সাধারণ মানুষ সেটা

বোঝেন। তোমাদের বোঝা বা নাবোঝাতে কিচ্ছু যায় আসে না। তুমি

উচ্চ শিক্ষিতা   হয়েও সারাজীবন পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে বসে

থাকলে, আমার রোজগার, আমার সংসার বলে বড় বড় ভাষণ দিলে।                                   অথচ ছেলেটাকে ভালো স্কুলিং দেওয়ার জন্য দশটা-পাঁচটা চাকরীর                                     পরেও আমাকে নিজের মেধা বিক্রী করতে হয়েছে।             তোমরা দুজনেই

নেমক -হারাম। তাই অন্ধকারের জীবদের মত দল পাকাচ্ছো। ঠিক                                     আছে আমি চলেই যাবো।

 

নীল                 :           তুমি চলে গেলে আমরা সত্যিই সুস্থ থাকবো।

 

নিরালা             :           দয়া করে ব্যাংকের পাস বই, চেক বইগুলো রেখে যেও।

 

(হঠাৎ জানলাটা দড়াম করে আছাড় খাওয়ার শব্দ, সঙ্গে প্রবল হাওয়া ঝাপটা)

 

নীল                 :           সেকি, আমফান ঝড় তো বিকেল চারটে নাকি পাঁচটায় আসার

কথা। মা, সব কেনাকাটা হয়েছে তো?

 

নিরালা             :           নীলু, তুমি বাথরুমে সমস্ত বালতিতে জল ভরো। এই, তুমি ওপরে

গিয়ে বাথরুমের বালতিগুলো ভরে রাখো। খাবার জল কতটা ধরা

আছে দেখো। সব জল ভরা হলে আমি আবার পাম্প চালাবো। সবাই

স্নান করে নাও। এখন আর কোনো তর্ক নয়। তাড়াতাড়়ি খাওয়া-

দাওয়া সেরে নিতে হবে। বিকেলের পর থেকে হয়তো কারেন্ট

থাকবে না। (দোতলা থেকে জানলার কাঁচ ভাঙার আওয়াজ) নীলু,

তোকে বারবার বলেছিলুম, বাবা বাজারে বেরিয়ে গেলে উপরের

জানলাগুলো সব বন্ধ করে দিয়ে আসবি। তুই তখন কানে হেডফোন

লাগিয়ে সিনেমা দেখছিলি।

 

নীলু                 :           (উদ্ধতভাবে) হ্যাঁ দেখছিলাম, তো? এই লকডাউন পিরিয়ডে আমি

তো অনেক কাজ করেছি। তোমার মতন সারাক্ষণ বাবার পিছনে

টিকটিক করি না। আর বাবা বাইরে বেরিয়ে গেলে বাবার নামে

নিন্দে-মন্দও করি না।

 

নশ্বর                :           তর্কবিতর্কের আর কোন প্রয়োজন নেই। আমার যা বোঝার বোঝা

হয়ে গেছে। আমার নিজের পরিশ্রমের তৈরি বাড়িটা যে আদৌ

আমার নয়,কেমন পরিস্থিতি এলে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ গুছিয়ে

বেরিয়ে যেতে হবে, সেটা আমি খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছি।

দোতলার ব্যবস্থাটা আমিই করছি। ও হ্যাঁ, একটা কথা, বিপদের

সময় যেমন মানুষকে চেনা যায় তেমনি এটা উপলব্ধি করা যায় যে,

সংসারে কখনোই টেকেন ফর গ্র্যান্টেড হয়ে যাওয়া উচিত নয়,

তাতে আধ পয়সা-এক পয়সার কীটপতঙ্গ লাথি-ঝাঁটা মারে। চলি,

তবে আমার মনে হচ্ছে একতলায় জল ঢুকে যাবে। কাজেই খাওয়ার

আগেই কোন মালপত্র উপরে তুলবে কিনা ভেবে দেখো।

 

নিরালা             :           অত দূরের ভাবনা এখন ভাবতে হবে না, আমাদের বাড়ি যথেষ্ট উঁচু।

যাও তোমরা স্নানে যাও।

 

(দ্বিতীয় পর্ব)

 

(বাইরে ঘন সন্ধ্যা। টিভিতে খবরে বলছে ভয়ংকর ঝড় শহরের বুকে আছড়ে

পড়েছে। আবার জানলার কাঁচ ভাঙার শব্দ হলো। আবহে ঝড়ের প্রচন্ড দাপট।)

 

নীল                 :           বাবা, এক তলায় জল ঢুকতে শুরু করেছে। তুমি জলে নেমোনা,

সিঁড়ির গোড়ায় এসে দাঁড়াও। সাবধান, সিঁড়ি জলে ভাসছে। রুম

স্লিপার ছেড়ে খালি পায়ে পা টিপে টিপে এসো। মা ও মা, তুমি

একতলার রান্নাঘরে কি করছো? নিচের ফ্রিজে যা খাবার আছে তুলে

আনো। মাইক্রোওভেনটা বাবার হাতে দাও। বাবা, তুমি জলে নামবে

না কিন্তু।

 

নিরালা             :           আমি ঠিক আছি। গ্যাস ওপরে তুলতে হবে না। আমি ছোটখাটো

জিনিসগুলো নিয়ে উপরে যাচ্ছি। নীলু, তুই পাম্পটা আর একবার

চালিয়ে দে। এই শোনো, তুমি হাতে অনেক জিনিস নিয়েছো, ওপরে

সাবধানে উঠবে। বয়সটার কথা মাথায় রাখবে। আর হ্যালো মিস্টার

সেলিব্রিটি, ভালো করে পা ধুয়ে ওপরে টিভি খুলে বসো। মোমবাতি,

দেশলাইগুলো সামনে টেবিলে এনে রাখো। আমি ফ্লাস্কে চা আর

পাঁপড়ভাজা নিয়ে উপরে যাচ্ছি।

 

নশ্বর                :           নীচের সমস্ত প্লাগ খুলে নাও নীলু। ল্যাপটপ, কম্পিউটার, তোমার

দরকারী কাগজপত্রের সমস্ত ফাইল এক এক করে আমার হাতে

দাও। তেমন জল এখনো জমেনি, আমি নামছি নীচে, তোমরা দুজন

মিলে সামলাতে পারবেনা, আমি নামছি নীচে।

 

নীলু ও নিরালা :           (একসঙ্গে) খবরদার না। তুমি সিঁড়ির মুখটায় দাঁড়িয়ে বরং হেল্প করো।

 

 

নিরালা             :           নীলু, তুমি খাবারগুলো ওপরে তুলে দিয়ে ফ্রিজের প্লাগ খুলে দাও। চলো                               আমার চা রেডী। ওপরে টিভি খোলা আছে তো?

 

(টিভিতে খবরে বলছে – সারা কলকাতা সহ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায়                      আছড়ে পড়েছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণি ঝড় আমফান। এতো ভয়ঙ্কর ঝড়ের মুখোমুখি

আগে কখনো আমরা হইনি, এই অভিমত শহরের বহু বিশিষ্টজনের। আপনারা

আমাদের বিভিন্ন সংবাদ প্রতিনিধি বন্ধুদের দেখতে পাচ্ছেন, তারা জীবনের                         ঝুঁকি নিয়ে কিভাবে ঝড়ের গতি প্রকৃতি আপনাদের কাছে তুলে ধরছেন।                          কলকাতা, নামখানা, সন্দেশখালি, দীঘা থেকে তাঁদের আপনারা সরাসরি টিভির                পর্দায় দেখতে পাচ্ছেন। এই করোনা আনঙ্কের মধ্যে, ঘরবন্দী মানুষের কাছে এ                 যেন পরপর দুটো বিশাল ধাক্কা। জানিনা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা দাঁড়াবে।                     আপাতত একটা ছোট্ট বিরতিতে যাচ্ছি, আপনারা টিভির পর্দায় চোখ রাখবেন                       আর খুব সাবধানে থাকবেন।)

 

(আবার জানলার একটা কাঁচ ভাঙার শব্দ)

 

নিরালা             :           আসলে আমাদের বাড়িটা ঝিলের ধারে বলে হাওয়ার দাপটাও বেশী

মনে হচ্ছে। এই এই, তুমি কোথায় উঠছো? তুমি এখন ভাঙা কাঁচ

কুড়োতে যাবে? কাল বাদ পরশু না তোমার ঢাকা থেকে লাইভ

অনুষ্ঠান আছে। চা – পাঁপড় ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, আর তুমি গোমড়া

মুখে বসে ধ্যান করছো? দুঃশ্চিন্তা করে কি ঝড় থামাতে পারবে।

 

(বলতে বলতে কারেন্ট চলে গেল সঙ্গে ঝড়ের দাপটটাও বাড়লো। কোথাও

মড়মড় করে গাছ ভাঙার শব্দ হলো।)

 

নিরালা             :           নীলু দরজা খুলিস না। মনে হয় দুটো বাড়ি পরে ভোলাদের বাড়ির

আমগাছের একটা ডাল ভেঙে গেল। আহারে, গাছটায় ঝাঁপিয়ে আম                                   এসেছিল এবার। নীলু ফোনে একবার খবর নে তো।

 

নীলু                 :           নিচ্ছি। (ফোন করে জিজ্ঞাসা করে) ভোলাকাকু, তোমরা সবাই ঠিক

আছো তো? তোমাদের গাছের ডাল ভাঙলো? হ্যালো …. হ্যালো….

হ্যালো….. যাঃ কেটে গেল। পরে আবার খোঁজ নিচ্ছি। মা বাড়িতে

পিচবোর্ডের পিস আছে? জানলার কাঁচগুলো ম্যানেজ করছি

আমি। ও ডার্লিং পিতাশ্রী, বি ইজি, বি ইজি। তুমি কি সকালের

ব্যাপারটা মনে রেখে এখনোও দুখঃ পাচ্ছো? প্লিজ আবার এখন

দুঃখের কবিতা লিখতে বসো না, আমরা একটু আড্ডা মারি এসো।

মা, আর চা আছে?

 

নশ্বর                :           একতলার সব আউটলেটগুলো বন্ধ করা হয়েছে? সাপ-টাপ না

ঢুকে পড়ে আবার।

 

নিরালা             :           আচ্ছা, আমাদের ওপর কোনো ভরসা নেই তোমার? মানলাম

বাড়িতে সাপ ঢুকলে তোমাকেই দরকার হয়, তাই বলে তুমি এতো

টেনশনে ভুগলে তো আমরাও …….

নীলু                 :           ছাড়ো তো ঐ সব ফালতু কথা। বাবার টেনশন কোনদিনও শেষ হবে

না। ঐ জন্যেই তো আমি বিয়ে করবো না। শোনো, পুনেতে থাকার

সময় আমার রুমমেটদের আমি মোট চারদিন খিচুড়ি রান্না করে

খাইয়েছি। আজকে সেই ঘ্যাঁট আবার তোমাদের খাওয়াবো। সঙ্গে

ডিম ভাজা। তোমরা আপাতত তোমাদের এতো বছরের দাম্পত্যের

ঝামেলি মেটাও। তারপর গরম-গরম চাল ডালের ঘ্যাঁট পেটে

পড়লে কোথায় করোনা, কোথায় আমফান, মেজাজ খুশ হয়ে

যাবে। এক ঘুমে রাত কাবার, কাল একটা নতুন সকাল। আবার তুমি

বাইরে থেকে চেঁচিয়ে ডাকবে, আমিও ফাটাফাটি করবো। আর তুমি

বলবে আমরা দল পাকাচ্ছি।

 

নশ্বর                :           ব্যাপারটা রিস্কি হয়ে যাচ্ছে না? এই ঝড়ের মধ্যে নীচে নেমে কাজ

নেই। যা আছে তোদের হয়ে যাবে। আমি তো আর কিচ্ছু খাবো না।

দুপুরের খাওয়াই এখনো হজম হয়নি।

 

নিরালা             :           পেটে পেটে এতো বদ বুদ্ধি আর রাগ থাকলে খাবার জীবনেও হজম

হয়না। আমার খিদে লাগছে, চলতো নীলু, আমরা খিচুড়ি বানাই।

 

নীলু                 :           দ্যাটস ফাইন। তবে মা, তুমি কিন্তু বাবার সঙ্গে ঝগড়াটা মিটিয়ে

নিতে পারতে। বিখ্যাত লোক বলে কথা। আমি তো সবসময় কলার

তুলে আমার বাবার কথা বলি।

 

নিরালা             :           না না চল আমি নীচেই যাবো। তোকে ডিরেকশন দিতে হবে।

তাছাড়া তোর বাবার কাছেই বসে থাকলেই     এমন ন্যাকা ন্যাকা কথা

বলবে, আমি হয়তো গলে আইসক্রীম হয়ে যাবো। তাহলে আবার

কালকের ঝগড়াটা জমবে না। চল। এই তুমি ওপরটা সামলে রাখবে।                                  মোমবাতি জ্বালিয়ে নাও। একটা সুইচ অন রাখো, আলো এলে বুঝতে                                  পারবে।

 

নীলু                 :           বাবা তোমাকে একটা রিকোয়েস্ট করবো? অফ মুডটাকে ফিরিয়ে

আনো, বেশ জোরে জোরে রবীন্দ্রনাথের পৃথিবী কবিতাটা শোনাও

তো, নীচে থেকে আমরা শুনবো।

 

নিরালা             :           আমারও একখান কথা আসে কত্তা, না না সিরিয়াসলি বলছি – শঙ্খ                                      ঘোষের জাবাল সত্যকাম কবিতাটা শুনিও প্লীজ। জানিস তো নীলু,

ভিকটোরিয়ার ঘাসে বসে ওর মুখে এই কবিতাটা শুনে আমি

যাহারপরনাই ফিদা হয়ে গেছিলাম। বেশ ছিল বন্ধু, শয়তানটাকে

বিয়ে না করলেই বোধহয় ভালো হতো।

 

নীলু                 :           যাঃ স্ সালা, তাহলে আমি কোথা থেকে আসতাম?

 

নিরালা             :           নীলু, আমরা তোমার বাবা-মা, মুখে লাগাম টানো, এটা পাড়ার রক

নয়।

 

নশ্বর                :           জয় গুরু, সবে শুরু।

 

নীলু                 :           এইতো, মিস্টার নশ্বর সরকার মুডে এসে গেছে। তোমার জন্য দুটো

শুকনো লঙ্কা ভাজাও রাখবো, আমি জানি তুমি কী খেতে

ভালোবাসা। মা, চলো আজকে কন্টিনেনটাল খিচুড়ি রাঁধবো। তুমি

চেয়ারে বসে বাবার কবিতা শুনবে, আমি ঘন্টা খানেকের মধ্যে

খিচুড়ি নামিয়ে দিচ্ছি। নাও বাবা, শুরু করো, আমরা নীচে যাচ্ছি।

 

(তৃতীয় পর্ব)

 

(অনেকক্ষণ ঝড় থেমে গেছে। বৃষ্টিও খুব ধীরে ধীরে পড়ছে। পাশের ঘরে নীলাকাশ

ঘুমিয়ে পড়েছে। তার নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ আসছে। চারিদিকে অদ্ভুত একটা

নিস্তব্ধতা। ধ্বংসের পরের স্তব্ধতা। তখনো আলো আসেনি)

 

নিরালা             :           এই তোমার গুমোট লাগছে না? দক্ষিণের জানলাগুলো এবার খুলে

দিই। তুমি শুয়ে পড়ো, মানসিক চাপ নিওনা। কাল সকালেই ঘুম

থেকে উঠে যেন তোমাকে লেখার টেবিলে দেখি।

 

নশ্বর                :           নীলু কিন্তু খিচুড়িটা দারুণ জমিয়েছিলো। খাবো না খাবো না

করেও…….

 

নিরালা             :           কিচ্ছু হবে না, সুগারের ওষুধগুলো খেয়েছো? আমার কাছে অ্যান্টাসিড                               আছে দিয়ে দিচ্ছি, বেশী করে জল খেয়ে শুয়ে পড়ো। আর একটা কথা,                              আমার সম্পর্কে তোমার ভালো ধারণা যদি নাও থাকে, এই বয়সে তা                                    আর পাল্টাতে হবে না। শুধু, ফর গড সেক, বাবার ইগো ছেড়ে                                           ছেলেটাকে এবার বোঝবার চেষ্টা করো। ওরও বয়স কিন্তু দেখতে                                       দেখতে চব্বিশ হতে চললো। মুখে যাই বলুক, ও তোমাকে পাগলের                                     মতো ভালোবাসে। সেদিন ব্যাঙ্কের মানি রিডাকশান মেসেজ তোমার                                   ছেলেকে দেখাচ্ছিলাম, ও অবাক হয়ে বললো – বাবা করোনার ত্রাণে                                    এতো জায়গায় টাকা পাঠাচ্ছে! সাবাশ, এই না হলে আমার বাবা।

 

নশ্বর                :           ও মাই গড, আবার ওকে জানানো কেন? আমি তো এই কাজগুলো

সম্পূর্ণ নিঃশব্দে করেথাকি। সেই কোন ছোটোবেলায় মা বলে

গিয়েছিলো –

 

নিরালা             :           জানি, বহুবার শুনেছি – ডান হাত দিলে যেন, বাঁ হাত জানতে না

পারে। তা না হলে দানের কোনো মাহাত্ম থাকে না। আসলে

আমাদের দুজনের জয়েন্ট এ্যাকাউন্টের ফার্স্ট নেম আমি, তাই

আমার মোবাইলেই……

 

নশ্বর                :           ওর ভালো লেগেছে?

 

নিরালা             :           অফ কোর্স! কিন্তু তোমাকে জানাই একটা সদ্য চাকরীতে জয়েন্ট

করা ইঞ্জিনিয়ার, যে এখনো ট্রেনিং পিরিয়ডে, সেও তার সাধ্য মতো

অর্থ সাহায্য করছে বিভিন্ন ত্রাণ তহবিলে।

 

নশ্বর                :           কনগ্র্যাচুলেশন মাই সন, আই লাভ ইউ, রিয়েলি লাভ ইউ। ওকে

একটু আদর করে দিয়ে আসবো? না থাক, ঘুমিয়ে পড়েছে।

আদরটা সকালের জন্য তোলা থাক।

 

নিরালা             :           আমিও আমার সঞ্চয় থেকে …………….. সরি, তোমাকে শোনানোর

কোনো ইচ্ছেই আমার আর নেই। কেননা তোমার সমস্ত ফিলিংস

নষ্ট হয়ে গেছে। তুমি এখন প্রতিষ্ঠিত। সেলিব্রিটি। বাট প্লিজ, ফিল

সামথিং এ্যাবাউট ইওর ওনলি সান। ও তোমাকে সাংঘাতিক

রেসপেক্ট করে নশ্বর, বরং আমি কিছু বললে ও সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ

করে। ওকে ভুল বুঝো না। ওর একটা স্টেডি রিলেশন ব্রেক হয়ে

গেছে, ওর সেই মানসিক চাপটা আমার সঙ্গে ও শেয়ার করে। তুমি

অন্ততঃ ফিল করো সেটা। তোমার ধমক-ধামকগুলোকে বন্ধ

করতে হবে এবার। আমারও কিন্তু বয়স বাড়ছে। ধৈর্য কিন্তু আমারও

কমছে। গত কুড়ি বছরে তোমাকে নিয়ে যে উদ্দামতা দেখেছি, তার

ঝড়ঝাপটা তো আমাকেও সহ্য করতে হয়েছে। তুমি তো ধোয়া

তুলসীপাতা কোনোদিনই ছিলে না।

 

নশ্বর                :           আমি তোমাদের পাগলের মতো ভালোবাসি। মঞ্চের গ্ল্যামার থেকে

ছিটকে বেরিয়ে এসে, বাড়িতে তোমার সঙ্গে এক কাপ চা-ই ছিলো

আমার সব থেকে বড় আড্ডার জায়গা। আমার কোনো নেশা নেই,

কেননা নেশা থাকলে একটা সাধারণ চাকরী করে বাড়ি ঘর-দোর

বাড়ানো যায় না। ছেলেকে নামী স্কুলে পড়ানো যায়না। তাওতো নীলু

মেধাবী বলে আমার অনেক সুবিধে হয়েছে। জানোতো, এই

লকডাউন পিরিয়ডে হাঁ করে আছি, কবে টিভির কোনো একটা

চ্যানেলে ঋত্বিকের মেঘে ঢাকা তারা দেখাবে। বিপদ যখন ঘনিয়ে

আসে, তখন নীতার কথা মনে পড়ে। যেদিন সিনেমাটা দেখাবে,

একসঙ্গে দেখবো, কেমন।

 

নিরালা             :           ঠিক এই কারণেই আজো তোমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবি

না। ঠিক আছে, এঘরের ডিভানে একটু কষ্ট করে ঘুমিয়ে পড়ো।

আমি তোমার বেডরুমের ডিভানে, নীলুর পাশে গিয়ে শুচ্ছি। নীলুর

পাশে তোমাকে শুতে দিলেই, আমি জানি, তুমি ওকে চটকে ওর

কাঁচা ঘুমটা ভাঙিয়ে দেবে; তাছাড়া –

 

(আবার বৃষ্টি নামে)

 

নশ্বর                :           এই তাছাড়াটা আমি জানি, বলবো?

 

নিরালা             :           না, একদম না। এই বয়সেও কিছু রহস্যময় থাক না নশ্বর। (হেসে

ফেলে) নাঃ বলেই ফেলি, আসলে বলতে না পারলে আমারই ঘুম

হবে না। আজ অনেকদিন পরে, নশ্বর তোমার বিছনায় শুয়ে শুয়ে

তোমার সেই চেনা গন্ধটা বুক ভরে নেবো, যা তোমার ছাব্বিশ

বছরের পাঞ্জাবীতে লেগে থাকতো। আমি আজও সেই গন্ধটাকে

খুঁজে বেড়াই নশ্বর। আর, তোমার আগে যদি ঘুম ভাঙে, তাহলে

তোমার লেখার টেবিলে বসে চুরি করে তোমার কবিতার খাতাগুলো

পড়বো। লেটেস্ট প্রেমের কবিতাটা আমার জানা চাই। আমি কি

তোমার প্রেমের কবিতার কোথাও এখনো বেঁচে আছি? (নশ্বর কিছু

বলতে যায়, নিরালা চুপ করিয়ে দেয়) আর একটাও কথা নয় নশ্বর,                                      এসো আমরা বৃষ্টির শব্দ শুনি। ধ্বংসের পরে নতুন সৃষ্টির শরোদ                                          বাজাচ্ছে মেঘ আর মেঘ মল্লার। তুমি শুনতে পাচ্ছো নশ্বর?

 

(বাইরে বৃষ্টির শব্দ হয়েই চলে।)

 

সমাপ্ত

 

 

বিনীত,
আরণ্যক বসু, কলকাতা, ভারতবর্ষ,
(নাটকটি ‘‘অংশুমালী” পত্রিকার জন্য সংরক্ষিত। অভিনয় করবার আগে নাট্যকারের অনুমতি নেওয়া বাঞ্ছনীয়।)
(মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা দশটি)
১২.০৭.২০২০

আরণ্যক বসু। কবি, নাট্যকার ও বাচিকশিল্পী। জন্ম ও বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের কলকাতায়। প্রকাশিত বই: মেঘ রোদ্দুর নীলাকাশ (প্রতিভাস), শোকসভার পরে এবং অন্যান্য নাটক (একাল), মেঘ চলেছে হলুদ পুকুর (প্রিতম প্রকাশন), ছায়াপথের কাছে ও অন্যান্য নাটক (উ,খন্ড), মন খারাপের ছেঁড়া পাতারা (প্রয়াগ...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

নবকুমার বসুর ‘দুই বেয়ান’ গল্প অবলম্বনে শ্রুতিনাটক

নবকুমার বসুর ‘দুই বেয়ান’ গল্প অবলম্বনে শ্রুতিনাটক

ভূমিকা: নবকুমার বসুর এই গল্পটি অবলম্বনে শ্রুতিনাটক করার দায়িত্ব পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলাম। শ্রদ্ধেয় অগ্রজপ্রতিম…..