চেয়ারম্যান সাহেব খুব অনেস্ট
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
আজ বিউটি পার্লারে অস্বাভাবিক ভীড়। অনেক পুরোনো কাস্টমার এসেছে কোন রকম অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই।
সাম্প্রতিক নির্বাচনে নৌকার ভূমিত্রাস বিজয় উদযাপনে বিভিন্ন পার্টিতে যাবে সবাই।
এক মহিলা এসে একজন বিউটিশিয়ানকে বলে, আমি একটু বিকেলের দিকে ভোট দিতে গিয়ে দেখি আমার ভোট দেয়া হয়ে গেছে।
বিউটিশিয়ান জিজ্ঞেস করে, ভোট ফর বোট-এর লোকজনের ভোটটাও রাখেনি তাহলে!
মহিলা বলে, তাতে অসুবিধা হয়নি; কিন্তু আমার হাতের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দিতে পারিনি। এখন পার্টিতে গেলে তো সবাই দেখতে চাইবে ভোট দেয়ার প্রমাণ। কী যে করি!
আরেক মহিলা এগিয়ে এসে বলে, আমারও তো সমস্যা হয়েছে একই। ভোট কেন্দ্রে যেতেই এক পুলিশ বললো, ব্যালট পেপার ফুরিয়ে গেছে।
পরে অবশ্য বুঝলাম, আমি ভোট দিতে না পারলেও; ভোট ফর বোট হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমার আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ তো দেয়া হলো না। ফেসবুকে ভোট দেয়ার প্রমাণসহ আঙুলের অমোচনীয় কালির ছবি আপলোড না করা গেলে, সরকারি সেবক সংঘ (সসেস)-এর আনুগত্যের দৌড়ে পিছিয়ে পড়বো যে।
বিউটিশিয়ান বলে, এতো অল্পসময়ে অমোচনীয় কালি জোগাড় করবো কোত্থেকে। তার চেয়ে এক কাজ করুন; নেইল পলিশ দিয়ে একটা বোট এঁকে নিন বৃদ্ধাঙ্গুলিতে। বিজয় উদযাপনে আপনি যখন পার্টিতে গিয়ে থাম্বস আপ করবেন; তখন সবাই এই বোট দেখে বুঝবে আপনি ভোট ফর বোট করেছেন।
খদ্দের মহিলারা সবাই পার্লারের সোফায় বসে সারি বেঁধে বসে নেইলপলিশ দিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুলিতে নৌকা আঁকতে থাকে। পার্লারের স্পিকারে মিহি সুরে মান্না দে গাইতে থাকেন,
যদি কাগজে লেখো নাম কাগজ ছিঁড়ে যাবে
পাথরে লেখো নাম পাথর ক্ষয়ে যাবে
ভোটের নেইলপুলিশে লেখো নাম সে নাম রয়ে যাবে।
আরেক মহিলা এসে বিউটিশিয়ানকে অভিযোগ করে, কাল ফলাফল আসার শুরুতে মুখে বিজয়ের হাসিটা ছিলো; কিন্তু ফলাফলের শেষটা দেখে মুখমণ্ডলে বিজয়ের হাসিটা ঠিক ধরে রাখতে পারছি না যে। কী করা যায়!
বিউটিশিয়ান বলে, ও নিয়ে ভাববেন না। আমরা আগে থেকেই সেজন্য চীন আর ইন্ডিয়া থেকে আনিয়ে রেখেছি স্পেশাল ‘ফেয়ার এন্ড লাভলী ইলেকশান ক্রিম’। এটা মুখে লাগালেই মুখমণ্ডলে বিজয়ের হাসি হয় মসৃণ ও উজ্জ্বল। কেউ বুঝতে পারবে না ইউ আর ফেকিং ইট।
এক অত্যন্ত রসিক মহিলা বলে, লাভ-লাইফে সুখের রহস্য হচ্ছে, ইফ ইউ কান্ট মেইক ইট; ফেইক ইট; ইলেকশানেও ব্যাপারটা একই।
অনেক মহিলা হো হো করে হেসে ওঠে; কেউ কেউ খানিকটা লাজুক ভঙ্গিতে নিজেই নিজের মুখ চেপে ধরে। এক মহিলা হাসতে হাসতে বলে, ছি ছি এসব কী কথা ভাবী। আস্তাগফিরুল্লাহ।
লেখাটির অডিওপাঠ শুনুন এইখানে
এ সময় পার্লারের দেয়ালের বিশাল টিভি স্ক্রিনে ইলেকশান বিজয়ের কারণ কী তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একটি উন্নয়ন বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে।
“কপিলাকে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকায় কুবের। তারপর একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, এতো সুন্দর সাজতে শিখলি কেমনে! এই সুন্দর বুকজামা তোকে কে দিয়েছে!
কপিলা মুখ ঝামটা দিয়ে বলে, সারাদিন নৌকায় চইড়া ঘুরো; আবার ভাব দ্যাখাও জানি কিছুই বোঝো না। বলোতো দেহি কে দিছে বুকজামা, বিউটি পার্লার!
ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে কুবের।
কপিলা মোবাইল ফোনে ফেসবুকিং করতে করতে বলে, “ঈশ্বর মুখ তুইলে চেয়েছে গো; তিনি এখন মৎস্যপল্লীতেও ভ্যানগাড়িতে করে ঘুরতে আসেন। তুমি কী মোবাইল নিবা মাঝি!”
টিভি প্রমোশনাল শেষ হতেই রসিক মহিলা বলে, এই বিজয়ে বেঁচে গেছি বাবা।
সবাই সমস্বরে বলে, কেন ভাবী কেন!
ভাবী মুখটা খুব সিরিয়াস করে বলে, আহা ভাবতে পারেন, আমাদের সবাইকে বুকজামা ফেরত দিতে হতো। ‘ভোট ফর বোট’ পার্লার বন্ধ হয়ে যেতো। মোবাইল ফোন ফেরত দিতে হতো; সঙ্গে ফেসবুকও। আমি ফেসবুক ছাড়া বাঁচতে পারতাম না গো।
মাকেন্দো গ্রামে ভীষণ বিপর্যয় নেমে আসে। এ গ্রামের কৃষক ও কারিগরেরা শ্রমে-রক্ত-ঘামে যে টাকা-পয়সা…..
এক রাজার রাজ্যে কিছু চাল ব্যবসায়ী একজোট হয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতার কাছে গিয়ে বললো,…..
স্ত্রী তার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ। ঐ একবার মঈন মামাকে দুটি ঘোড়ামন্ত্রে বশ করে ওপাড়ার প্রণব সাধু…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..