মজনু শাহ’র কবিতা

মজনু শাহ
কবিতা
মজনু শাহ’র কবিতা

খ্রিস্টের রুটির মতো অমীমাংসিত ওই মেডুসার মাথা।
মাঝে মাঝে, ধূসর জটা ছড়িয়ে, ধায় অন্তরীক্ষের পানে।
তার ধাবন পথের এখানে সেখানে একেক করে জ্বলে ওঠে
চর্বির প্রদীপগুলি, নভো কক্ষে কক্ষে কৌমার্যের মতো মিথ্যে কথার
সাড়া পড়ে যায়।

দূর থেকে তাকে মনে হয় ব্রহ্মাণ্ডের একটি কোয়ার্ক, ছুটছে,
পরিণামহীন ক্ষুধা নিয়ে বসে আছে কেউ, তারই মৃৎপাত্রে
একদিন পরিবেশিত হবে, গোপন রোদনের মুহূর্তে
পায়ের শেকল তার ঝমঝম বেজে ওঠে রাতে।

 

২.

তবু ঢের গদ্যচর্চা হল তোমায় চিঠি লিখে লিখে। শব্দ, বুনো আকাঙ্ক্ষারা, কোথা থেকে আসে? হস্তলিপি ক্রমে বিবর্ণ হল। আমি কি প্রকাশ্যে আনি নি আত্মার প্রশ্ন, ঘুমের ভিতরে দেখে ফেলা ময়দান? এক বিবেচক উন্মাদ আমার ছিঁড়ে ফেলা চিঠিগুলো কোথাও জোড়া দিয়ে চলেছে।

 

৩.

ক্যাসিনো টেবিলে হয়ত কারো জন্যে অপেক্ষা করছে
একটি কাকাতুয়া। এখানে আমি
প্রহরীর অধিক কিছু নই। দমকা হাওয়ায়
তাসের রানির পিছে উড়ে গেল তাসের জোকার।
জোকারের পিছে রাজা উড়তে গিয়ে পড়ে রইল মেঝেয়।
চোঙা লাগানো গ্রামোফোনে কে বেজে উঠবে এখন,
আঙুরবালা, না গহরজান?

৪.

অন্ধকারের সাতশো পর্দা নিয়ে তুমি কিছু বলো,
আলোর সাতশো পর্দা নিয়েও বলো এক-আধটু।
এখন নদী থেকে উঠে আসা গর্জনের দিকে
তাকিয়ে আছে একটি হরিণ, আমিও উৎকর্ণ
তোমার দিকে তাকিয়ে।
আমার আকাঙ্ক্ষা, আরো আকাঙ্ক্ষা না করা।
সুফি-অভিধানের পাতার মতো খুলে যাচ্ছে
একটি দুটি দ্বন্দ্ব-জানালা।

মজনু শাহ, জন্ম ২৬ মার্চ ১৯৭০, গাইবান্ধায়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ — আনকা মেঘের জীবনী (১৯৯৯), লীলাচূর্ণ (২০০৫), মধু ও মশলার বনে (২০০৬), জেব্রামাস্টার (২০১১), ব্রহ্মাণ্ডের গোপন আয়না (২০১৪), আমি এক ড্রপআউট ঘোড়া (২০১৬), বাল্মিকীর কুটির(২০১৮)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..