মজনু শাহ’র কবিতা

মজনু শাহ
কবিতা
মজনু শাহ’র কবিতা

ক্রৌঞ্চপর্বত

ক্রৌঞ্চপর্বতের গায়ে এসে থেমেছে
দূরধন্য সব পাখির প্রবাহ।
এই তাদের বাড়ি ফেরা।
পাতাদের উড়ে যাওয়ার শব্দের ভিতর
এই দৃশ্য।
তুমিও আয়নার মধ্যে অন্তরীণ এক ক্রৌঞ্চ।
দেখতে পাবে কাল সকালে এরা অন্যত্র চলেছে।
পাখিশূন্য গাছতলে এসেছে তোমার নির্বাক গদ্যকুমার।
আর ক্রুদ্ধ ইন্দ্রের হুঙ্কারে আকাশ থেকে
রাজলক্ষ্মী নিচে পড়ে যাচ্ছে আবার।

 

নরক

রাত্রি মেখে এইখানে পড়ে আছে অর্ধেক পৃথিবী,
আর আমি স্বরচিত নরকের থেকে উঠে এসে
দেখি এক ভণ্ড কবি স্নানসূত্র শেখাচ্ছে দেবীকে।
মাতাল আরবি ঘোড়া একা বাড়ি ফিরে আসে আর
আনমনে ছুটে যায় চকলেট সময়ের দিকে;
যে-তুমি রেখেছ বহুদূরে বাঘিনীর শান্ত দুধ
গোপন স্বর্ণকলসে, বুঝি নি তোমার অভিপ্রায়।
সারা গায়ে বাঘছাল জড়িয়ে নিয়েছি কী কী ভেবে
মনে নাই কুহু মনে নাই কোনো গান হাহাকার
তবু জগতের এই রুক্ষ মাঠ হাঁসে ভরে ওঠে।
একটি কুক্কুট খুঁজে পেতে ওই টিলার ওপরে
সারা সন্ধ্যা হয়রান হল তবু বুড়ো ধনুর্ধারী।
এখন কানন পথ মুখরিত কিন্নরের গানে
রুটি ঝলসানোর দৃশ্য থেকে সরে গেল অনাহারি—

 

আইডিয়া

আইডিয়ার মস্তানি চলছে জগতে।
কিছুক্ষণ সেই মস্তানি দেখি। পরক্ষণে ভাবি,
সাপেদের বাক্সের মধ্যে ভরানোই আমার মূল কাজ।
আমার গাধা আরেকটু বেশি গাধামি করার আশায়
আইডিয়ার পাহাড়ে উঠছে। এই যে এত রকম পাহাড়,
এরা কি মৃতদের কোনো হরিৎ পরামর্শ দিচ্ছে?
যেমন সমুদ্র পরামর্শ দিচ্ছে সমস্ত কাঁকড়াদের।
কাঁকড়াদের চলন দেখে, আর কী নতুন আইডিয়া পাবে
বালিতে শুয়ে থাকা শব্দহিংস্র কবিরা?

মজনু শাহ, জন্ম ২৬ মার্চ ১৯৭০, গাইবান্ধায়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ — আনকা মেঘের জীবনী (১৯৯৯), লীলাচূর্ণ (২০০৫), মধু ও মশলার বনে (২০০৬), জেব্রামাস্টার (২০১১), ব্রহ্মাণ্ডের গোপন আয়না (২০১৪), আমি এক ড্রপআউট ঘোড়া (২০১৬), বাল্মিকীর কুটির(২০১৮)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..