প্যাটাক্যুয়রিক্যাল নাইটশোয়ে আপনাকে স্বাগতম (শেষ পর্ব )
ইংরেজি ভার্সান এখানে >>> Welcome to the Pataquerical Night Show (Last Episode) পূর্ববর্তী পর্ব এখানে>>>…..
মাধবী চলে যাবার জন্য পা বাড়ালো। ও দরজার দিকে যাচ্ছে। আমি ওর কথামত বিয়ে করতে রাজী হইনি বলে রাগ করে চলে যাচ্ছে।
– দাঁড়াও। কথা শেষ করে যাও।
আমি দরজা আগলে দাঁড়ালাম, যাতে ও দরজা খুলে চলে যেতে না পারে। আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম। দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, অনুশোচনা, অসহায়ত্ব – কী নেই ওর চোখে?
– আমি তো বলিনি বিয়ে করবনা। করব। যদি তুমি রাজী হও।
– তুমি জান আমার সমস্যাটা কোথায়।
– জানি। তাহলে কি এ জীবনে আর আমাদের এক হবার সম্ভাবনা নেই?
মাধবী চুপ করে আছে। আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম। প্রথমে কিছুটা দ্বিধা ছিল। আমাকে বাধা দেবার চেষ্টা করল। আমি শুনিনি। জোর করে ওর ঠোঁটে চুমু খেলাম। ধীরে ধীরে ওর সব প্রতিরোধ ভেঙ্গে গেল। যেন এটাই স্বাভাবিক। এমনটাই হবার কথা। আমি মাধবীকে বুকে টেনে নিলাম।
মাধবীর ঠোঁটদুটো একটু মোটা। এত সুন্দর যে, দেখলেই চুষতে ইচ্ছে করে। ওকে প্রথম প্রথম যখন বলতাম, “চিঠিতে তোমার চুমু এঁকে দিও”, ও লজ্জা পেত। তবু মাঝে মাঝে এঁকে দিত। আমি সেই ঠোঁটে কত হাজার বার চুমু খেতাম, তার ঠিক নেই।
আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমরা এত কাছাকাছি আছি, তবু আমরা কেউ কারও নই। হবার সম্ভাবনাও নেই। ওকে আমার ছাড়তে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে, এখনই ওকে নিয়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাই।
অনেকক্ষণ পর মাধবী নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে খাটে বসলো। তীব্র ভাললাগাবোধ তখনও ওর চোখে মুখে।
– আর একবার ভেবে দ্যাখ মাধবী। তুমি একটু সাহস করলেই আমরা এক হতে পারি।
– সম্ভব না।
– সামাজিকতার চিন্তা করোনা। আমি তোমাদেরকে নিয়ে লন্ডনে ফিরে যাব।
– বাচ্চারা রাজী হবেনা। তাছাড়া ওদের স্কুলিং – এ সমস্যা হবে।
– কিচ্ছু হবেনা। আমি সব সামলে নেব। তুমি শুধু হ্যাঁ বল।
মাধবী আমার সামনে খাটে বসে আছে। আমি দাঁড়িয়ে। আমি দুহাতে ওর মুখটা তুলে ধরলাম।
– তুমি পাশে থাকলে কোন সমস্যাই আমার কাছে কোন সমস্যা না।
– বাচ্চারা তোমাকে মেনে নেবেনা। পরে ভয়াবহ সমস্যা হবে।
ভেবে দেখলাম, ও ঠিকই বলছে। ডিভোর্সের পর বা সঙ্গী মারা গেলে বাবা বা মা একা একা জীবন কাটাবে, ওদেশের ছেলেমেয়েরা এটা অনুচিত মনে করে। তাই তারা চায়, বাবা বা মা আবার পছন্দমত কাউকে বিয়ে করুক। বাবা-মা অসুখী হলে ছেলেমেয়েদের সম্মতিতেই মিউচুয়াল ডিভোর্স হয়। ওরা সবসময় নাটক-সিনেমায়, পরিচিত মানুষদের বা বন্ধুদের বাবামার প্রতিনিয়ত ডিভোর্স হতে বা আবার বিয়ে হতে দেখে। তাই নিজের বাবা বা মায়ের নতুন সঙ্গীকে ওরা মেনে নেয়। যেমন আমার ছেলে নিয়েছে। মাধবীর সন্তানরা তা করবে না। কারণ আমাদের সমাজে বাবা বা মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে সন্তানেরা মেনে নিতে পারেনা। বিশেষ করে মায়ের।
মাধবী চলে গেল। ওকে পাবার ক্ষীণ একটা আশা আমার মনের মধ্যে ছিল। সেটা এবার পুরোপুরি শেষ হয়ে গেল। আমি ভেবেছিলাম, দেখা হলে মাধবী ওর মত বদলাবে। তা হলোনা। আমি মা, ভাইবোনদের সাথে দেখা করে দিন সাতেক পর ফিরে এলাম। বন্ধুদের সাথে দেখা করিনি। আমার কোনকিছুই ভালো লাগছিল না।
ফিরে এসে মলিকে সব জানালাম। ও আফসোস করল। আমি কাজে যোগ দিলাম। সবকিছু আবার গতানুগতিক। আগের মত। মাঝে মাঝে মাধবীর সাথেও কথা হত। আগের মতই। তবে ওকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্নটা আর ছিলনা।
মাসছয়েক পরে আমার মানসিকতায় হঠাৎ একটা বিরাট পরিবর্তন ঘটলো। আমি আমার জীবনে আরও একটা বিরাট ভুল করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ঠিক করলাম, আগামী জানুয়ারী মাসে আমি মলিকে বিয়ে করব। বিয়ে করছি শুনে সোমা বলল, “ভাল। মাধবী ছাড়া যাকে খুশী বিয়ে কর। আমার কোন আপত্তি নেই।”
বেচারা! কোনদিন বুঝলোইনা যে, দোষ শুধু একা মাধবীর নয়। আমিও সমান দায়ী। সোমা আমাকে অনেকবার বলেছে, মাধবীকে বিয়ে করলে নীলকে কিছুতেই আমার কাছে দেবেনা। অথচ ও জানেনা, মাধবী নীলকে কত ভালবাসে। প্রায়ই নীলকে নিয়ে আমাদের কথা হয়। মাধবী আমাকে হাজার বার বলেছিল, “নীলের জন্য হলেও আমাকে ভুলে যাও। বৌ-ছেলে নিয়ে ভাল থাক। নাহলে ওরা কষ্ট পাবে।” আমার ডিভোর্সের পর একবার বলেছিল, “আমার খুব ইচ্ছে করে, একবার তোমার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরব। তারপর ওর দুহাতে চুমু খেয়ে হাতদুটো ধরে বলব, সরি বাবা, আমার জন্য তোমাকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। সরি, সরি।” আরও বলেছিল, যদি ওকে বিয়ে করি, তাহলে ও নীলকে এত ভালবাসা দেবে যে, ও সোমাকে মিস করবেনা। মাধবী সেটা পারে। আমি জানি, ওর সে ক্ষমতা আছে।
মলি রাজী হয়েছে। স্বেচ্ছায়। সব জেনেশুনে। ও মনে হয় সত্যিই আমাকে ভালবাসতো। আমি ওকে ওভাবে না ছাড়লে হয়ত আমাকেই বিয়ে করত। মলিকে বিয়ে করছি শুনলে আমার পরিবার খুশী হবেনা। ওরা মলিকে পছন্দ করবেনা। বড় আপা যখন বিয়ের কথা বলেছিল, আমি বলেছিলাম, আমি বিয়ে করলে মাধবীকেই করব। শুনে আপা অবাক হননি। সবাই ধরেই নিয়েছিল, মাধবীর সাথে আমার এখন যোগাযোগ হওয়াটাই স্বাভাবিক, যেহেতু সোমা নেই। আপা বলেছিল, “সমস্যা কি? বাচ্চা থাকলে কি তাকে বিয়ে করা যায়না?” মলির বেলায় এটা বলবেনা। মাধবীর সাতখুন মাফ। মলির নয়।
ঠিক করেছি, এবারও আমি বিয়ে করতে গিয়ে মাধবীর সাথে দেখা করবনা। করলে আমি মলিকে বিয়ে করতে পারবনা। আমি বিয়েটা করতে চাচ্ছি। এভাবে একা একা আর ভাল লাগছেনা। আমি কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছিনা। মাধবী ফিরবেনা। আর অপেক্ষা করে কি লাভ?
আমি প্রথমে ঢাকায় গিয়ে মলির সাথে দেখা করব। তারপর বিয়ের দিন ঠিক করব। কোথায়, কিভাবে বিয়ে করব, তা চুড়ান্ত করব। আমাদের জরুরী সিদ্ধান্তগুলো নেয়া শেষ। যেমন, মলির ছেলেরা কার কাছে থাকবে, আমি দেশে থাকব, না আবার ফিরে আসব, মলি আমার সাথে আসবে কিনা, চাকরী ছাড়বে কিনা, বিয়ের পর আমরা কোথায় উঠব, আমার ছেলে আমার কাছে আসতে চাইলে তাকে মলি গ্রহণ করবে কিনা- এসব।
সব বিষয়েই আলোচনার পর আমরা একমত হয়েছি। একে অন্যের সিদ্ধান্তের সপক্ষে যুক্তি মেনে নিয়েছি। এখন বাকী শুধু সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর করা। মলি বলেছে, বিয়ের পর কিছুদিন ও দেশেই থাকবে। ওর ছেলেরা আমাকে মেনে নিলে তারপর ছেলেদের নিয়ে আমার সাথে লন্ডনে চলে আসবে। নাহলে আমিই স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসব। অথবা অন্য ব্যবস্থা। সেটা পরে দেখা যাবে।
অবশ্য কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে ব্যবধান আকাশ আর পাতালের মতই। সোমাকে বিয়ে করার আগে আমি ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি যে, সবকিছু জানার পরেও ও মাধবীর চিঠি নিয়ে ও এত ঝামেলা করবে। মাধবীর প্রসঙ্গ টেনে বন্ধুদের সামনে আমাকে অপমান করবে। আমার পরিবারের সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ করে দেবে।
আমি বিয়ের বাজার করছি। দ্বিতীয়বার। প্রথমবার সোমার জন্য গহনা কিনেছিলাম ঢাকা থেকে। বড় আপাকে সঙ্গে নিয়ে। সবই আমার পছন্দে। মাঝারী আকারের গহনা। কিছু হালকাও ছিল। আমি কোন ভারী গহনা কিনিনি। কারণ আমি জানতাম, সোমার বাবার বাড়ীর দিক থেকে ও অনেক ভারী গহনা পাবে। মজার ব্যাপার হল, বিয়ের পর সোমা আমার দেয়া গহনাগুলোই সবসময় পরতো। এমনকি গতকাল নতুন বরের সাথে যে দাঁত ক্যালানো হাসির ছবি পোস্ট করেছে, তাতেও সে আমার দেয়া গহনাই পরে আছে। মাধবী এটা করত না।
এদেশে কেনাকাটায় ঠকতে হয়না। ন্যায্যমূল্যে ভাল জিনিস পাওয়া যায়। হোক সেটা গহনা বা খাবার জিনিস। প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক – উভয় সার দিয়ে উৎপাদিত সবজি-তরকারী পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক সারে উৎপাদিত জিনিসের দাম একটু বেশী। এদেশের ব্যবসায়ীরা সৎ ও সচেতন। ভেজাল- বাসি-পচা খাবার বিক্রি করেনা। করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আছে। চর্বিযুক্ত মাংস বিক্রি করলে সে কসাইয়ের লাইসেন্স বাতিল হয়। খাবারের প্রতিটা প্যাকেটে উৎপাদনের তারিখ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, ব্যবহৃত উপাদান, ব্যবহারবিধি লেখা থাকে। খাবারে কি পরিমাণ ক্যালোরি আছে, খাবারের প্যাকেটে তাও উল্লেখ থাকে। ফলে ক্যালোরি হিসেব করে খেয়ে ওজন ঠিক রাখা যায়। দোকানে সবকিছু সাজানো থাকে। তাতে দামও লেখা থাকে। ফলে দর কষাকষি করতে হয়না। পছন্দমত জিনিস কেনা যায়। জোর করে জিনিস গছিয়ে দেবার বিড়ম্বনাও এদেশে নেই। আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা খাবার, অষুধ, কসমেটিকস্ – সবকিছু তে ভেজাল মেশায়। লাভের জন্য। মানুষের জীবনের চেয়েও তাদের কাছে টাকার দাম অনেক বেশী। আমি দেশে থাকতে ফল খেতে পারতামনা। দ্রুত পচে যায়। ফরমালিনের গন্ধ লাগে।
-বিয়ে করছি।
– সত্যি?! যাহ্। তুমি মিথ্যে বলছ।
– মিথ্যে না। সত্যি করছি।
– কাকে?
– মলিকে। তুমি তো রাজী হলেনা। তাই অগত্যা।
কিছুই না বলে মাধবী ফোন রেখে দিল। আমি বিয়ে করছি শুনে মাধবীর খুশী হবার কথা। ও তাই চেয়েছিল। কিন্তু মাধবী খুশী হয়নি। ও কষ্টে মরে যাচ্ছে। মানুষ ভালবাসার কাঙ্গাল। তাছাড়া মনের কথা বলার জন্যও প্রতিটা মানুষের একটা ভরসার জায়গা চাই। বিশ্বস্ত বন্ধু চাই। এতদিন আমি ওর পাশে ছিলাম। কষ্টের সময়গুলোতে ও আমার কাছে আশ্রয় পেয়েছে। ভালবাসা পেয়েছে। সব কষ্ট মনখুলে আমাকে বলতে পেরেছে। এবার মাধবী ভীষণ একা হয়ে যাবে। আমার সাথে কথা বলতে পারবে না। আমাকে মিস করবে। যেমন আমি করি। এবার আমি ওকে ছাড়ব। কোন যোগাযোগ রাখবনা। মলিকেও সোমার মত একই কষ্টে আমি ফেলতে চাইনা।
গত পনেরো দিন ধরে মাধবী কাঁদছে। ফোন করে কিছু বলেনা। আমি ‘হ্যালো’ বলার পর সে চুপ করে থাকে। আমিও কিছু বলিনা। কান পেতে শুনি, ও কাঁদছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। আমি ওর দোষ দেইনা। ও চাইলেও অতকিছু উপেক্ষা করে আমার কাছে আসতে পারবেনা। সামাজিকতা, চাকরী, আত্মীয়, সন্তান। সেও তো বাঙালী মেয়েই।
বাচ্চা দু’টো ওর প্রাণ। আমাকে যতটা ভালবাসে, তারচেয়ে একটু হলেও বেশী ভালবাসে ওদের। স্বামীর অত অবহেলার পরেও শুধু ওদের জন্যই সংসার আঁকড়ে পড়ে আছে। নিজের জমানো টাকা দিয়ে শ্বাশুড়ী-ননদের থাকার জন্য শ্বশুরবাড়ীতে বিশাল বাড়ী বানিয়ে দিয়েছে। তাও আবার বরের অমতে। ও অত ভাল না হলেই আমি খুশী হতাম। একটু হলেও যদি নিজের ভাললাগার কথা ভাবতো, তাহলে ও নিজেও একটু ভাল থাকতে পারতো। ভালবাসাহীন জীবন কাটানো যে কতটা কষ্টের, সেটা আমি জানি। বড় কষ্টে কাটালো জীবন। আমাকেও কষ্ট দিল সেইসাথে। একটু খারাপ হও সোনা। বাকী জীবন একটু নিজের কথা ভাব। আমার কথা ভাব। প্লিজ।
মাধবী এসেছে। আমি মাধবীকে নিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলাম। মাধবী আমার ঘাড়ে মাথা দিয়ে চোখ বুজে আছে। কথা বলছে না। মুখটা গম্ভীর। মনে হয় ওর ঘুম পাচ্ছে। কতরাত সে ঘুমায়নি, কে জানে। আমি ওর মাথাটা আমার কোলে নিয়ে ওকে গাড়ীর সিটেই শুইয়ে দিলাম। ও আপত্তি করলনা। আমি ওর মাথা, চুল, গাল, ঠোঁট, গলায় হাত বোলাচ্ছি। গাড়ী চলছে ঝড়ের বেগে। আমি মাধবীকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছি। এবার আমরা এক হব।
ঢাকায় নেমে বিয়ের ঝামেলা শেষ করে ওকে নিয়ে উঠলাম বড় আপার বাসাতেই। আপা আগেই আমাদের শোবার ঘর গুছিয়ে রেখেছিলেন। আমি ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। আজ আর কোন ভয় নেই, দ্বিধা নেই। অবশ্য আমার আগেও কখনও মনে হয়নি, অন্যায় করছি। বরং মনে হয়েছে, ওকে একটু সুখ দিতে পারলে ওর ভাল লাগবে। ওকে সুখ পেতে দেখে আমারও ভাল লাগবে। স্বামীর কাছে ও তেমন কিছুই পায়নি। দুটো সন্তান ছাড়া। আমাদের দেশে সেক্স করার ক্ষেত্রে পুরুষের তৃপ্তিই মূখ্য। অর্গাজম নিয়ে কেউ তেমন ভাবেইনা।
আমার ঘুম ভেংগে গেল। কোথাও মাধবী নেই। আমি শূন্য বিছানায় একা শুয়ে আছি।
আমার এখন অনেক কাজ বাকী। বিয়ে করতে দেশে যাচ্ছি। টিকিট বুকিং, জব থেকে ছুটি নেয়া, বিয়ের জন্য যে কেনাকাটাগুলো করেছি, সেগুলো গোছগাছ। সবার জন্য এটা সেটা কিনেছি। সেগুলো নিতে হবে।
মাধবীকে বলেছি, “তুমি ডাকলে আমি বিয়ের আসর থেকে উঠে আসব।” সেকথা মলিও জানে। মাধবী ডাকলে আমাদের ভালবাসার জয় হবে। মিথ্যে সামাজিকতা আর ভাল থাকার অভিনয় পরাজিত হবে। তখন আমি মাধবীকে নিয়ে আর একটা নতুন গল্প লিখব। না এলে আবার জোড়াতালি দেয়া জীবন। আবার ভাল থাকার অভিনয়। মনকে মিথ্যে সান্তনা, “আমি ভাল আছি।”
মলি আমাকে বোঝে। অন্ততঃ সোমার চেয়ে বেশী। মন্দের ভাল। আমার সবকিছু জানে। তাই রাজী হয়েছি। মাধবী প্রথমে বলেছিল, “আনম্যারেড কাউকে বিয়ে কর। মলির বাচ্চারা কষ্ট পাবে।” আমি বলেছি, “আমার জন্য মলিই বেস্ট। কারণ আমি বাবা হবার জন্য বিয়ে করছি না।” আমি মলিকে ত্যাগ করে ওকে কষ্ট দিয়েছিলাম। বিয়ের পর ওকে ভাল রাখার চেষ্টা করব। মলি আশাবাদী, ওর ছেলেরা আমাকে মেনে নেবে। দীর্ঘদিন বাবার কাছ থেকে আলাদা থাকার কারণে বাবার প্রতি ওদের টান কম।
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব। মাধবী যদি একটু সাহস করতে পারে, তাহলে আমাদের জীবনটা আমূল বদলে যাবে। যদি না পারে, তবু আমাদের ভালবাসা এক তিল কমবেনা। যেমন আছে, তেমনি থাকবে। আমরা যে যেখানে যেভাবেই থাকিনা কেন, আমাদের যোগাযোগ থাক বা না থাক, আমৃত্যু আমরা দু’জন দু’জনার। আমরা কেউ কখনও কোনদিন কাউকে আমাদের মন থেকে দূরে সরাতে পারবনা। সেই গানটার মত –
দুই ভুবনে দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল
রেললাইন বহে সমান্তরাল
বহে সমান্তরাল।
সমাপ্ত।
ইংরেজি ভার্সান এখানে >>> Welcome to the Pataquerical Night Show (Last Episode) পূর্ববর্তী পর্ব এখানে>>>…..
ইংরেজি ভার্সান এখানে >>> Welcome to the Pataquerical Night Show (Episode-5) পূর্ববর্তী পর্ব এখানে>>> শেষ…..
ইংরেজি ভার্সান এখানে >>> Welcome to the Pataquerical Night Show (Episode-4) পরবর্তী পর্ব পড়ুন এখানে>>>>…..
আগের পর্ব পড়ুন এখানে: >>> বাদল মেঘের আলোয় (পর্ব ১২) কবির আর গওহর স্বাভাবিক দাম্পত্য…..