মানুষ আর ঈশ্বরের দ্বন্দ্ব

শিপ্রা
কবিতা
Bengali
মানুষ আর ঈশ্বরের দ্বন্দ্ব

মানুষ আর ঈশ্বরের দ্বন্দ্ব

ঠিক এইখানে ছিলো…
ঘাসফড়িং ওড়ে দূর পাহাড়ে
অনেকগুলো তখন রঙের বুদ্বুদ
শঙ্খচিলের ভাঙা ডানা, রোদ কাতরানো!

প্রতিবার খুঁজে হারায়-
ফসকানো কানামাছি, হাত উঁচিয়ে ডাকে দুঃস্বপ্ন
শরৎ-এর দুপুরটা ভোকাট্টা
বড় একা হয়ে যাচ্ছে!

সম্পর্কের একটা সমঝোতা থাকে…
চারদিক থেকে চেপে আসা অন্ধকার
কখন জানি শীতল দীঘির চোখ
শুধু চেয়ে তাকা আর প্রতীক্ষা!

খবর আসে না-
চিঠির বাক্সে ঝাপি আঁটা শব্দরা কানাগলি
কষ লেগে যায় সব কিছুতেই
বিকেলের উঠোনে জলহীন স্বপ্ন!

হে বাউল নিয়ে চলো অজানায়…
মন কান্দে, সূতোর বাঁধন আলগা
জানলার পাশে কলাগাছটি বেড়ে ওঠছে তড়তড়িয়ে
ফিরে আসা সেটাই!

কেও ঈশ্বর হলে ক্ষতি নেই-
মানুষ আর ঈশ্বরের দ্বন্দ্ব
কতোদিন দেখা হয় না
বলার ছিলো অনেক, শোনার’টা আরো জরুরী!

 

স্তব্ধতার দাফনে

স্তব্ধতার দাফনে শীতল ছায়ামূর্তি-
কাগজের নৌকো ভিজে যায় অগোছালে
আচমকাতে ভাঙছে ইচ্ছের অনুমতি!

ভীষণ জ্বরে কাতর, কথার শহরে অবিশ্বাস
শব্দগুলো দ্রুত ফুরিয়ে গেলেও, কিছু শব্দের সাজা দিগম্বর শূন্যতায়
শীতের শুরু, কুয়াশার সন্ধ্যায় শুধু বিন্দু পতন!

ভালোবাসা কোনো অভ্যেসের দাস নয়
যতোটা-ই চিৎকার কবে বলো, সব ভুলে যাও
কিন্তু ভেবে দেখেছো কী- কথা কেবল কথার কথা নয়!

হয়তো খোয়াইশ ছিলো, নয়তো এমনটা হবার নয়
সমুদ্রটা এখন তাই নোনা পানির ছলাৎছল
মাথার ওপরে পাহাড় স্তম্ভে ভারী হাতুড়ি, কবর খোঁড়ে!

দুপুরের রোদ থেকে সরে যায় গিটারের প্রতিজ্ঞা
গান আর কবিতা শুনিয়েছি কতোবার, বলতে পারি- চেয়েছিলে আবদারে
তখন আলতো অলসে চোখ থাকতো টেবিলের ওপর,
পাশ্চাত্যের আদলে চেহেরা!

মেঘের ভেতর মেঘ খুঁজছি, বুকের ভেতর ভাটিয়ালী
আর একবার এসে কাঁদিয়ে যাও…
জন্ম যখন আজন্ম পাপ, দোয়ার কসম ওহে সৌখিন সওদাগর!

 

কবিতারাও বৃষ্টি ঝরায়

তুই এখন ঘোড়ার পিঠে, চাপড়ানো এক নদী
আসমান হলো লাল
তোকে বড্ড প্রয়োজন
মেঘ কুড়োনো বিকেল, আঁধার করে বুকে!

সব ফুরালো সন্ধ্যে শেষে পাহাড় পোড়া চাঁদ
দু’য়ে দু’য়ে মিলছে না আর
জমিন উপড়ে শেকড় দাঁতাল
আযান শুনে মনে আসে স্বদেশীনীর ডাক!

পড়শী ছিলো অনাবৃত একটি গাছের নীচে
ছায়াহীন পরছায়াটি
দিবানিশি তালাস করে, বটবৃক্ষের ওম
আগত সে আগন্তুক ভুলিয়ে রাখে ছলে!

জীওন কাঠি ছুঁইয়ে দিয়ে, ঘুম ভাঙালো শেষে
কতো স্বপ্ন কতো শব্দ, কাব্য তখন
দুলে দুলে নেত্ত করে, সমস্ত চরাচর
ভাবনাগুলো ছাতা খোলে খেজুর পাতার ডালে!

কবিতারাও বৃষ্টি ঝরায়- একগুচ্ছ চিঠি
জলঘুম, ক্ষমা চাওয়া- দোষ ছিলো না মোটে!

আমি তো আকাশ দেখেছি নিভৃতে

মৃত জোনাকি স্বপ্ন জানে না-
সারাদিনে বড্ড ভারী হচ্ছে কথার শব্দ
দীর্ঘ রাত, সরোবরে নোনা জল!

সেই অপরাহ্ন, একটি স্বরের রঙতুলি-
ক্যানভাসে ধূলো-জমা ছবি
আর কিছু লুকোচুরি খেলা!

গভীরের গভীরতা বাহানার ঢেউ-
বঞ্চিত বেদনার আস্ফালন মিথ্যে বালুচর
লু হাওয়ার দাপটে পাগলামি অনুযোগ!

অভিমানী সুর, বড্ড কাঁচার বেদানা-
কষের দাগে কষাকষি অরণ্যের সবুজ
হাতছানি দেয়, চশমার দৃষ্টিকোণ!

পরাজয়ের শূন্যহাতে পৃথিবী-
বললেই ভালো থাকা যায় না
আমি তো আকাশ দেখেছি নিভৃতে!

শিপ্রা পাল (লাভলী)। কবি। জন্ম ও নিবাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যে। শিপ্রা নামেই লেখালিখি করেন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..