মায়ার খেলা
মীরা আমার কাছে এক আঁজলা জল, বীণার ঝংকার, গোলাপ- সৌরভ। তেরাস্তার মোড়ে নির্জন নদীধারে তাকে দেখেছিলাম সোনালি কৈশোরে। সেই থেকে ধরে আছি তাকে। হায়নার হিংস্র নখ হানা দেয় ভালোবাসার টলটলে শরীরে। দাঁতে দাঁত ঘষাঘষি করে ভালোবাসাকে ভয় দেখায় নায়াগ্রা জলপ্রপাত। আমি তাই অন্ধের মতো অসম্ভব দূরত্ব থেকেও লাঠি ছুঁয়ে থাকি মীরার শরীরে। তবু মুহুর্মুহু স্বপ্ন ভাঙে, বুক জ্বলে যায়। আমি হাওয়ায় হাত ভাসাই। এতকাছে মীরাকে পাইনি কোনদিন। হাত নিশপিশ করে। পতন থেকে আমাকে রক্ষা করো মীরা।
হাঁস – জ্যোৎস্না
না খেটে খেটে যে ভোগী মানুষটা শয্যাগত অসুখে আক্রান্ত, তার কথা ভেবে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে অতিরিক্ত খেটে কাহিল আফজল চাষি। তার কাছে চাওয়া মানে শুধু মোটা ভাত, মোটা কাপড় আর মাথার ওপর একটা পলিথিনের ছাদ। এগুলো জোগাড় করতেই সে দিশেহারা। সে বুঝেছে পরিশ্রম কাহিল করে, না – পরিশ্রম অসুস্থ করে। না – পরিশ্রমে ডাক্তার, বদ্যি, রাংতামোড়া হাজারো ওষুধ, আর পরিশ্রমে ফুসফুসে হাওয়া ভরার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা। তবু নির্লিপ্তের মতো তাকে রোদ – জল চাটতে হয় উদাসী প্রান্তরে।
ছাপহীন জলছাপ
মলাটঢাকা ‘ আরণ্যক ‘ সামনের সুদৃশ্য তাকে সাজানো। আমি ইনহেলার নিচ্ছি বিছানায় বসে। জীবনে মেনে নিতে হয় অনেককিছু। জলের বদলে পাথর গলাতে চাই আমরা, আর সেখান থেকেই সমস্যার উৎপত্তি। সামনাসামনি থেকেও হাজার আলোকবর্ষ দূরে আমরা আর আরণ্যক। মুঠিভর্তি বাতাস কে আর আদর করে ভরে দেবে আমাদের ফুসফুসে? মুখে কৃত্রিম হাসি, চোখে জল। ক্যামেরাবন্দি রামধনু দেখি আর নির্বিচারে ধ্বংস করি অরণ্য। চারপাশে শুধু আগুন। মাটিতে গড়াগড়ি খায় আরণ্যক বিভূতি।