প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
মায়া জিনিসটা খুবই ছোঁয়াচে। খুউব পোড়ায়। যার প্রাণ আছে, অনুভূতি আছে, স্পন্দন আছে তার জন্যই মায়া আছে। মনে আছে ছোটবেলায় আমার একটা বেবি গোট ছিল। খুব সুন্দর ছিল দেখতে। ডাগর দুটো চোখ ছিল। ডোরাকাটা দাগ ছিল। বেবি গোট আমার সাথে খেলত, বেড়াত, খেত, ঘুমাত, কথা বলত। ভীষণ সখ্যতা আমার সাথে। স্কুল থেকে এসেই আমি বেবীটা নিয়ে মেতে উঠতাম। সেও আমার জন্য অপেক্ষা করত। আমার খেলার সাথী ছিল। একদিন হঠাৎ কে যেনো বেবি গোটটার একটা পা ভেঙ্গে দিল। মানুষ কত নিষ্ঠুর হতে পারে আমি জানলাম। না হয় সে কোনো অপরাধ করেছেই। গোটটার যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ার কারণে সে একদিন মারা গেলো। তাকে হারিয়ে আমি খুউব কষ্ট পেলাম। খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। অনেকদিন তার জন্য কেঁদেছি আমি।
একই সময় বাড়ির পিছনের জঙ্গলে একটা কলা গাছ রোপন করেছিলাম আমি। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আমার একমাত্র কাজ ছিল কলা গাছটা দেখতে যাওয়া। তার পরিচর্জা করা। পানি দেওয়া। কতদূর বেড়ে উঠল গাছটা সেটা দেখি আমি। একটু একটু বেড়ে উঠছে গাছ। আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি। কিন্তু কি কারণে জানিনা গাছটা একদিন শুকিয়ে গেলো এবং পচে মরে গেলো। আজও আমার এ দুটো ঘটনা মনে গেঁথে আছে। আমি সহজে কিছু ভুলি না। যারা আমাকে কষ্ট দেয় তাদের কথা মনে থাকে। একটা অবোধ পশু বা সামান্য একটা গাছ আমার মনে রেখাপাত করেছিল গভীরভাবে।
আর যদি হয় মানুষ তাহলে তার গভীরতা কত প্রগাঢ় হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
মানুষের রয়েছে ভালবাসা আর কাছে টেনে নেওয়ার অসীম ক্ষমতা, স্নেহ মমতা দেওয়ার ক্ষমতা। আমার মা, আমার বোন সাজু, আমার ভাইয়ের মেয়ে মৌরী এঁদের মৃত্যু আমাকে সবসময় পোড়ায়। আমি যখনই বাড়িতে যেতাম মৌরী সারাক্ষণ আমার সাথে লেগে থাকত। মৌরী ছিল সবার থেকে আলাদা। মানুষকে আপন করার অলৌকিক ক্ষমতা ছিল ছোট্ট মেয়েটির। সেই মৌরীর অকাল মৃত্যু আমাকে বেদনায় নীল করে দিয়ে গেছে। সাজুও মৃত্যুর দু’দিন আগেও আমাকে দেখতে চেয়েছিল, খুউব দেখতে চেয়েছিল। পিঠাপিঠা হলেও আমাকে কোলে করে পাড়া বেড়াত। সাজুও চলে গেলো আকস্মিক।
আমার যে সমস্ত বন্ধুরা দূরে চলে গেছে তাদের জন্যও মায়া ছাড়েনা সহজে। যখনই যাকে আপন ভেবেছি, মিশেছি, ভালবেসেছি, মমতা দিয়েছি তখনই তাদের জন্য মায়া হয়েছে। সেই মায়ার কথা কাউকে বোঝাতে পারিনি। অনেকেই হয়ত এসবকে গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু আমি নিরবে তাদের জন্য কষ্ট পেয়েছি। কতজন কাছে এসেছিল, কতজন দূরে চলে গেছে। কিন্তু তাদের স্মৃতিগুলো মুছে যায়নি। হঠাৎ হঠাৎ তারা আমার স্মৃতিতে হানা দেয়। মায়া খুউব খারাপ জিনিস..
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..