পাগল
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
মেঘে’র কাছে চিঠি…
মেঘরাজ,
তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে
একদিন,
সেই জানে তোমারে ভোলা
কি কঠিন।
-কাজী নজরুলইসলাম
সবাই বলে মেঘের অনেক রঙ।
সেই রঙে বদলায় মেঘের ও মন।
আচ্ছা মেঘ, এত রঙ কোথা থেকে পাও? আমি কিন্তু জানি তোমার রঙের রহস্য। তোমার নাম মেঘ। কোনো কোনো সময় তোমার নাম ছায়া। কোনো সময় তোমার নাম তুলা, নয়তো ভেলা। ভরা বর্ষায় তুমি কালো। শরতে প্রায় সাদা। আবার মাঝেমধ্যে তুমি হালকা থেকে ঘন হও। রহস্যের রহস্য যেন তোমায় ঘিরে।
নদীনালা, খালবিল, সমুদ্রের পানি সূর্যের তাপে বাষ্প হয়ে ওপরে উঠে ঊর্ধ্বাকাশে ঠান্ডায় বাষ্প জমে খুব ছোট ছোট পানির বিন্দুতে পরিণত হয়। সেই ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র পানির বিন্দু মিলেই যে তোমার জন্ম।
তাই তোমার ভেতরের পানির বিন্দুগুলো কত বড় তার উপর নির্ভর করে তোমার রঙ।
মেঘরাজ,
তোমার যখন মন খারাপ হয়, যখন তোমার বুকের ভেতর হাঁপড়ের মত হাঁশফাঁস করে তখন তুমি
হও একধরনের তরল, যা আকাশ থেকে মাধ্যাকর্ষণের টানে ভূপৃষ্ঠের দিকে পরে। সেই ফোঁটা ফোঁটা তরলের নাম বৃষ্টি। ওটা তোমার মন খারাপের মনের জল। অবশ্য তা ক্ষণিকের। কারণ তুমি গুরুগম্ভীর থাকতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্য।
যখন তুমি সূর্যের আলোর সবগুলো রঙ সমানভাবে ছড়িয়ে দাও, তখন তোমাতে প্রতিফলিত আলো সূর্যের আলোর মতোই সাদা দেখায়। সে জন্যই হালকা মেঘ সাদা রঙের হয়। কিন্তু যখন তোমার ভেতরের পানির বিন্দুগুলো ভারী হয়ে বৃষ্টির ধারায় নেমে আসার উপক্রম হয় তখন তুমি কালো রং ধারণ কর। কারণ, পানির বিন্দুগুলো এত পুরু হয়ে ওঠে যে এর মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো আসতে পারে না। তখন চারপাশের উজ্জ্বল আকাশের বিপরীতে সেই মেঘ ঘন কালো দেখায়।
জানি আমি এও, কালো সে মেঘে বৃষ্টি হয়। তখন তোমার মন, মন খারাপের তুঙ্গে।
মেঘরাজ,
দেখেছ, আমি কত’টা তোমাকে পড়তে পারি? বুঝেছ, আমি কত’টা তোমাকে বুঝতে পারি? জেনেছ, আমি কত’টা তোমাকে বিশ্লেষিত করতে পারি?
থাক সেসব,
আচ্ছা তুমি কেমন আছো? আজকাল ?
জানতে ইচ্ছে হলেই বা জানতে পারি কই ? তুমি তো আর আমাকে সেধে জানাতে আসো না। কত বদলেছে সময়। যে আমাতে তোমার সকল ছায়ার মায়া ছিলো সেই আমাতেই এখন তোমার মায়া কায়া হয়ে বিদ্যুত ঝলকায়। তাই আমাকেই খবর নিতে হয়। কে? কেমন আছে? কিংবা কার কি হল ? তোমার কি কখনও জানতে ইচ্ছে করে আমি কেমন আছি? আমার কবিতা গুলো কবিতা হয়ে ওঠে কিনা? আমার গল্পেরা গল্প বলে কিনা? তুমি তো এখন আর সে সবে কাব্যিক হয়ে ওঠো না। তার জন্য ভুল করে ও কি কখনও তোমার আক্ষেপ হয়?
জানো,আজ মনটা ভীষণ এলোমেলো। কেন? জানিনা ? ইদানিং রোজকের বিকেলগুলোতে কেন জানি উদাসীনতা ঘিরে ধরে আমাকে। আমি নিজেকে কেমন যেন ভাবুক বা এরকম কিছু ভাবতে থাকি।
মেঘরাজ,
আমার কবিতা, গল্পের অক্ষর গুলো তোমার জন্যই ছিল। আজ তুমি নেই বলেই আমার কবিতারা আরো বেশি প্রতিবাদী তোমাকে নিয়ে। আরো বেশি বিবাদি তোমায় ঘিরে। আর ও বেশি সহজ সহজিয়া অনুরাগে। তোমাকে তারা ঘৃণা করার বদলে আরো বেশি ভালোবাসে। ভুলে যাওয়ার বদলে আর ও বেশি মনে করে। তাড়ানোর বদলে
আরো বেশি প্রশ্রয় দেয় বুকের জমিনে। তুমি কি মনে কর তুমি হীন আমি কিংবা আমার কবিতা বড় বেশি একাকিত্বে ভোগে? মনমরা মরু তৃষিত থাকে আমার গল্পেরা?
মোটেই না। ভালোলাগা, ভালোবাসারা যখন পালিয়ে যায়, হারিয়ে যায়, কিংবা ছেড়ে যায় তখন চারপাশে সন্ধ্যা ঘনায় খুব তাড়াতাড়ি। নিকষ কালো অন্ধকারে ঘুমিয়ে পরে পৃথিবী, নারিকেল গাছের ফাঁক দিয়ে জ্যোৎস্নার লুকোচুরি হয়ে যায় আড়ি। মন খারাপের উদাস বাতাসে ভবঘুরে হয় মন।
মেঘরাজ,
আমি কিন্তু ভবঘুরে হইনি। আমি বেসংসসারী ও হইনি। আমি পরিপাটি হয়েছি আর ও। আমি গুছিয়েছি খুব করে আমাকে ও। আমি এখন রূপকথার গল্পের চুপকথা। আমার হাসিতে এখন ঢাকা পরে পৃথিবীর সব অন্ধকারের কষ্টামি। আমার আলোতে হার মানায় হার মানার নষ্টামি। আমি জ্যোৎস্নায় স্নান করে ধুয়ে আসি চোখের জল, আমি ধ্রুবতারার কাছে রেখে আসি তোমাকে না পাওয়ার বিহব্বলতা, আমি শুকতারার কাছে জমিয়ে রাখি তোমার চলে যাওয়ার মুহূর্তটা।
তারপর আমি আলোকিত হই তপ্ত খরা রৌদ্রের প্রখরতায়।
জানি আমি কত’টা আলোকে নিজেকে সাজাতে হয়। জানি আমি কত’টা লুকিয়ে প্রকাশ করতে হয়।জানি আমি কত’টা মারাত্বক না হয়ে ও দূর্বলতায় সবল হওয়া যায়। সেটা কেবল আমিই জানি। আর কেউ না।তুমি ও কোনদিন জানবে না। জানতে চাওনি কখনো। না জানাই ভালো। জানলে হয়তো আমারই কষ্টের কষ্টামি যেত বেড়ে। মনোঃকষ্টে ভুগে হয়তো ভারসাম্য হারাতাম মনের।আমার চারপাশ যে বড্ড আমি ময়। আমি আমাকে ছাড়া এখন আর কাউকে এতটা ভালোবাসিনা। আমার আবেগ আমাকেই তাড়িত করে এখন সবচেয়ে বেশি। তাই হয়তো আজো আমি বেঁচে আছি তুমি ছাড়া।
জেনে রেখ তুমিহীন আমি বেশ আছি। মৃগভিলাষে কাটাচ্ছি প্রচ্ছন্ন বাসর।
মেঘরাজ,
এখন আমার চাওয়া নেই জীবনের কাছে। জীবন যখন যা দেবে তাই মেনে নেব স্নিগ্ধতায়। তাই বলে ভেবোনা আমি হেরে গেছি। মেনে নেওয়া মানিয়ে নেয়া মানেই তো হেরে যাওয়া নয়। আমি এখন মুগ্ধতা খুঁজি বেঁচে থাকায়, নিজের ঘামে সিক্ত হয়ে একটু সুখ কুড়ায় সযতনে। বৃষ্টির জলে নয়, চোখের নোনাজলে জমানো কষ্টগুলো ধুয়ে দিয়েছি বারবার। মন অরণ্যের মাঝে শুধুই নির্লিপ্ত আমি। আমি চেয়েছিলাম বড্ড অল্প, চেয়েছিলাম ভীষণ অল্পই, চেয়েছিলাম খুব অল্প কিছু। এখন সেই অল্প টুকু ও চাই না।
তাই বেশ আছি।
তুমি ও ভালো থেকো। তোমার মতো করে।
সময় করে লিখব চিঠি আবার ও। ফিরতি চিঠির আশা না করেই।
জানি তো আমি,
ফিরতি চিঠি না লিখলে ও আমাকেই মনে করে তুমি বৃষ্টি হয়ে ঝরবে না বলা ভালোবাসায়, হেরে যাওয়ার হার মেনে।
রোদেলা
মনের ভেতর মন
ইসরাত জাহান
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
১৮ মার্চ ২০১৯ মধ্যরাত! চারদিক অন্ধকারে ঢেকে আছে শুধু বাড়ির চারিপাশে বিদ্যুতের বাল্বগুলো জ্বলছে তাদের…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..
পাঠকদের প্রায় জনেই হয়ত জানেন, সমকাম কি ? সমকামী কারা ? সমকামীর প্রকারভেদ, কেন…..