দৌড়
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
মানুষের জীবনটা খুবই অদ্ভুত । সাধারন মানুষ এবং একজন সেলিব্রেটির জীবনটা যে কতটা অদ্ভুত সেটা কেবলমাত্র সেলিব্রেটিরাই বলতে পারবে । একজন মানুষ যেভাবে তার জীবন-যাপন করতে পারে, একজন সেলিব্রেটি সেভাবে পারেনা ।তাদেরকে অনেক কিছু মাথায় রেখে চলতে হয় । বলতে পারেন তারা দুটি জীবন-যাপন করে, একটি মিডিয়া জীবন আরেকটি নিজের জীবন । আসলে তাদের নিজের জীবন বলতে কিছু নেই । তাদের যা আছে সেটা হচ্ছে অভিনয়, একটা সকলের সামনে এবং আরেকটা আড়ালে নিজের জীবনের সাথে । আমিও সেইভাবে ছিলাম । কিন্তু ঘটনা যেহেতু অনাকাঙ্খিত, তাই আমার জীবনের একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা বদলে দিয়েছিলো আমার জীবন । আমি তখন কক্সবাজারে শুটিং এর কাজে ছিলাম । শুটিং শেষে রুমে বিশ্রাম নিচ্ছি, হঠাৎ দরজায় জোরে জোরে কড়াঘাত পরলো । আমি বিরক্ত হলাম এই ভেবে, কলিং বেল থাকতে দরজায় জোরে আঘাত করাটা কোন ধরনের ভদ্রতা । কিন্তু দরজা খুলে আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম ।একটা মেয়ে আমার কাছে অটোগ্রাফ নিতে এসেছে । এইজন্য আমি হতভম্ব নই যে মেয়েটি আমার কাছে অটোগ্রাফ নিতে এসেছে । হতভম্ব এজন্য যে জীবনে অনেক অটোগ্রাফ দিয়েছি, কিন্তু এই মেয়েটি যেভাবে অটোগ্রাফ চাচ্ছে তা আমি জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি । মেয়েটা একটি কাগজ হাতে দাঁড়িয়ে, আর তাতে বড় করে লেখা “আমাকে অটোগ্রাফ দিন”, আমি আপনার একজন বড় ফ্যান । কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর মেয়েটিকে রুমে এসে বসতে বললাম । নাম জিজ্ঞাসা করায় মেয়েটি আবারো কাগজে লিখতে শুরু করলো । কাগজটি আমার হাতে দিলো, আর তাতে লেখা অনন্যা । মানে মেয়েটির নাম অনন্যা । মেয়েটির নাম তার রুপের সাথে মানিয়ে নিয়েছে, মেয়েটি দেখতে সত্যিই অনন্যা । মেয়েটি আমার দিকে ঢ্যাপঢ্যাপ করে তাকিয়ে আছে । আমি বললাম- কিছু বলবেন? মেয়েটি আবারো কাগজে লেখা শুরু করলো, আর তাতে লেখা- অনেক কিছু বলার ছিলো, কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না । অযথা আপনাকে বিরক্ত করলাম, আজ আসি তাহলে । মেয়েটি মুচকি হেসে চলে গেলো । আমি কতক্ষণ বসে রইলাম, আর ভাবতে লাগলাম মেয়েটি আমাকে বোকা বানাতে এসেছিলো নাকি । একটি কথাওতো মেয়েটি বললো না । পরেরদিন শুটিং স্পট এ দেখলাম মেয়েটি দাঁড়িয়ে আমার শটগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে । আমি ঠিকমতো শট দিতে পারলাম না, বার বার মেয়েটির দিকে তাকাচ্ছিলাম । ভালো লেগেছিলো বলে নয়, গতকালের ঘটনার কথা ভেবে তাকাচ্ছিলাম । শট শেষ করে গতকালের ঘটনার বিষয়টা স্পষ্ট করতে আমি মেয়েটির কাছে যেয়ে বললাম- কেমন আছেন? মেয়েটি আজও কথা না বলে হেসে দিয়ে চলে গেলো । পাশে থাকা মেয়েটি আমাকে বলল- ভাইয়া কিছু মনে করবেন না । ও আমার বন্ধু, জন্ম থেকেই বোবা, কথা বলতে পারেনা । আপনার সাথে কথা বলতে পারবেনা বলেই লজ্জা পেয়ে এমনভাবে চলে গেলো । মেয়েটিকে সেদিনের প্রথম দেখাতেই ভালো লেগেছিলো । আর আজকের এই কথা শুনে মেয়েটির প্রতি এক অদ্ভুত ধরনের মায়া জন্মেগেলো । সেই মেয়েটির কাছ থেকে জানতে পারলাম,আমি যে রিসোটে আছি ওরাও নাকি একই রিসোটে উঠেছে । সন্ধ্যাবেলায় হঠাৎ দেখতে পেলাম মেয়েটি রিসোটের ওয়েটিং রুমে একা বসে আছে আর এদিক ঐদিক তাকাচ্ছে । আমি ভাবলাম মেয়েটিকে একটা সারপ্রাইজ দেওয়া যাক । আমি রিসিপশন থকে কাগজ-কলম নিয়ে মেয়েটির সামনে কাগজ হাতে দাঁড়ালাম । আর তাতে লেখা- আমি কি আপনার পাশে বসতে পারি? মেয়েটি মাথা নেড়ে সন্মতি জানালো, আর আমিও দেরি না করে বসে পরলাম মেয়েটির পাশে । আপনি কি আমায় খুজছিলেন? মেয়েটি আমার প্রশ্নে খানিকটা ইতস্তবোধ করলো । আমি বললাম- খুশি হননি আমি বসাতে । মেয়েটি আমার হাতে থেকে কাগজ নিয়ে লিখলো- খুশি হয়েছি, আর আমি আমার বান্ধবীকে খুজছিলাম। আমি বললাম- কেন? আমাকে ভয় পাচ্ছেন। মেয়েটি আবার লিখলো- খানিকটা । আমি বললাম- আমি কি আপনার কিছু হতে পারি? মেয়েটি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো । তখন বললাম- আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি? মেয়েটি তখন লিখলো- সেলিব্রেটিরা কি কখনো কারো বন্ধু হতে পারে, তাদেরতো ওতো সময় নেই । আমিতো মানুষ, আমার সময় আছে । আমি জিজ্ঞাসা করলাম আর কতদিন থাকবেন এখানে? মেয়েটি আমার হাতে কাগজটা দিয়ে উঠে চলে গেলো । আর কাগজটায় লেখা- আগামীকাল সকালে । দুদিন পর আমারো শুটিং শেষ হলো । আমি ঢাকাতে ফিরে আসলাম । ঢাকায় এসেই আমি অনন্যাদের বাসায় চলে যাই ওকে সারপ্রাইজ দিবো বলে । কক্সবাজার থেকে আসার সময় রিসোটের রিসেপশন থেকে আমি অনন্যার বাসার ঠিকানাটা নিয়ে আসি ।সেদিন অনন্যা আমাকে যেভাবে হতভম্ব করে দিয়েছিলো, আমিও অনন্যাকে তেমনভাবে হতভম্ব করে দিয়েছিলাম । সেদিন অনন্যা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে । এরপর থেকে আমি আর অনন্যা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি, একসাথে অনেক সময় কাটানো, কিছুটা অভিমান এভাবেই চলতে থাকলো কিছুদিন । সারাক্ষণ একে অপরকে sms পাঠানো একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে দাঁড়ালো । এক সময় এমন হলো, অনন্যাকে ছাড়া আমার সময়টা কাটতো না । অনন্যা আস্তে আস্তে আমার জীবনের একটা বড় অংশ হয়ে উঠলো । তখন বুঝতে পারলাম আমার মায়াটা অজান্তেই একটি গন্তব্যে পৌছেছে । আমি অনন্যাকে ভালোবেসে ফেলেছি । আর আমি তখন অনন্যাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম । আমার জীবনের অতিস্ত করবো বলে ভাবলাম । কিন্তু ভাবাটা যত সহজ, বাস্তবতা ততটাই কঠিন । আমার পরিবার কিছুতেই অনন্যাকে মেনে নিবেনা, বলে- সবেমাত্র তোমার ক্যারিয়ার শুরু, আর তুমি সেটা ধ্বংস করতে চাচ্ছো । সেটাও একটি বোবা মেয়ের জন্য । শুধু আমার পরিবার নয়, অনন্যার পরিবারও এই বিয়েতে রাজি নন । তারা বলে- বাবা তুমি একজন সেলিব্রেটি আর আমরা সাধারণ মানুষ । আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আমার মেয়েটি বোবা, তোমাদের সংসার টিকবে না । আমি সবাইকে বোঝাতে ব্যর্থ হলাম। পরিশেষে ছুটে গেলাম অনন্যার কাছে, ভাবলাম ওতো আমাকে ভালোবাসে, ও নিশ্চয়ই রাজি হবে । অনন্যা কিছুতেই রাজি হলোনা, শেষবারের মতো একটি কাগজ আমাকে দিলো । আর তাতে লেখা ছিলো- “আমি বোবা, আমি তোমার একজন ভালো বন্ধু হতে পারি কিন্তু জীবনসঙ্গিনী নয় । ভালোবাসা মানে কি শুধুই প্রাপ্যতা, ত্যাগটা কি ভালোবাসা নয় । আমিও তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম । নাই বা পেলাম তোমায়, না হয় দূর থেকেই ভালোবেসে যাবো । আমি চাইনা আমার কারনে কেউ কারো সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুক । আমি কারো সুখের কারন হতে যেয়ে কারো দুঃখের কারন হতে চাইনা । যদি পারো আমাকে মাফ করে দিয়ো । মনে করো অনন্যা নামের কারো সাথে তোমার কোনদিন দেখা হয়নি । অনন্যা নামের কোনো মেয়েকে তুমি চেনোনা । সুখে থেকো ।”
আমি অনন্যাকে কিছুতেই রাজি করাতে পারলাম না । বোঝাতে পারলাম না ভালোবাসা মানে কি শুধুই কথা বলা, আমার কাছে ভালোবাসা হচ্ছে একে অপরের অনুভূতিগুলোকে বুঝতে পারা, যেটা আমাদের মাঝে ছিলো । এরপর থেকে অনন্যাকে আমি আর খুজে পাইনি । অনেক খুজেছি, কিন্তু আমাকে ভালো রাখতে যেয়ে ওরা কোথায় চলে গেছে তা কেউ জানেনা । সব নাম্বারগুলোও বদলে ফেলেছে । আমাদের গল্পটাও মেঘের মতো, যা আকাশে কিছুক্ষণের জন্য আসে এবং বৃষ্টি হয়ে ঝরে যায়। আজও অনন্যার দেওয়া শেষ কাগজটা নিয়ে ঘুরি । যতবারই লেখাগুলো পড়ি ততবারই ভাবি আজ যদি তুমি আমাকে দেখতে তাহলে বুঝতে তুমি দূরে সরে যাওয়াতে আজ আমি কতটা সুখে আছি । আজও অপেক্ষায় থাকি দরজায় কড়াঘাত পরবার । দরজায় অবশ্য কড়াঘাত পরে কিন্তু সেই অনন্যার কড়াঘাত আর পড়েনা । কেউ কাগজ হাতে দাঁড়িয়ে থাকেনা, যাতে লেখা থাকবে- “আমাকে অটোগ্রাফ দিন”, ।
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
সকালে উঠে মায়ের মমতামাখা মুড়ি ও লিকার চা খেতাম। তারপর দাদু বলতেন, এবার পড়তে বোস।…..
রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর…..
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট অফিসের চাকরির ইন্টারভিউয়ে জটিল একটি প্রশ্ন করা হলো। প্রশ্নটি হচ্ছে –…..