আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
গ্যাভ্রিল, তুমি বলছ ওই অনূঢ়া কমলালেবুটির রঙ
প্রকৃতই লাল – হতে পারে, সঠিক তুমি, আমার চোখে
ধরা পড়ছে না তা, তবে প্রকৃত তার ভেতর দেখো এক
নদী রঙের সাদা জানলা, সেখানে প্রকৃতিই ঈশ্বর, রস
কুঁদে ভরে দিয়েছেন, অথচ অনূঢ়া কমলালেবুটি জানে না
সে রস কোথা থেকে এল! ওরাও জানতো না, কামক্রীড়া
কোথা থেকে আসে, প্রেমিকের বেগানা মন
আসে কোথা থেকে সেই স্ফীতি সেই ভয় সেই লজ্জাকর
কার্পাসবন যার ভেতর তাদের প্রবেশ করতে হবে
ওরা মূলত চামড়া রঙের, ওদের লাল দেখি,
ব্রীড়ানতা মুখগুলি ওই অনূঢ়া কমলার মতোই
দেখো গ্যাভ্রিল, তুমিও চেনো, অর্থোডক্স গির্জার বাইরে
এই সব লাল ফুলদের… আমি কি ঈশ্বর থেকে দ্রুত
চলে এসেছি? এরাও কি যীশু থেকে দূরে অপেক্ষা করছে
সেই দিনের জন্য যখন ব্রীড়া ফেলে তারা আবার
কমলা রঙের পোশাকে নিজেদের সাজিয়ে তুলবে
আদপেই একটা হাওয়া সারাটা দিন সন্ধ্যে
বয়ে যায়, তার ভেতর আমাদের পোশাক পাল্টানোর সময়
আমরা নিজেদের মায়া করি, ভান করি সে পোশাকে
আমরা নিজেদের নগ্নতা ঢাকছি অথচ সেই হাওয়া বয়ে
যায় সন্ধ্যে থেকে দিন, আমরা নগ্নতা ডুবিয়ে রাখি
সে পোশাকে – বুঝলে গ্যাভ্রিল, তোমার ফারের কোটের
পকেটে তোমার আত্মা রয়েছে, তুমি তাকে দিয়ে মুখ
মুছেছ, তোমার ঠোঁটে কেউ নয় তুমিই আসলে লেগে
এমন একটা হাওয়াবাতাসের দিন ভাবো, যখন গির্জার
মোমগুলো শান্ত, অপার… তার ভেতর দিয়ে আলো বইছে
এমন সন্ধ্যের কথা ভাবো যখন তোমার আত্মা, বাক্সে
তুমি বাইরে থেকে তাকে দেখছো, তার ভেতর বাতাস
নগ্নতার কথাও ভাবো এমন, যখন তোমার ক্রোধ হতাশা
লোভ পিপাসা ব্যর্থতা কেউ না কেউ দেখে ফেলছে
আমি তো সারা দিন এ প্রবীণ সময়ের ওপর বয়ে যাই
তোমাদের পোশাক পাল্টানোর সময়ও, উপেক্ষার মধ্যেও
তোমাদের ভান দেখি, কিভাবে গ্যাভ্রিল তুমিও ঢাকছো
হাওয়ার ভেতর নিজেকে…
তিন.
“শুধু একজন ভেন্ট্রিলোকুইস্টের গলা
নানা স্তর থেকে কথা বলে”
– মণীন্দ্র গুপ্ত
কত শুনি ওহ গ্যাব্রিল, তুমি আমাকে কাইজার পাহাড়ে
পাঠাবে, তুমি জারের কাছে পাঠাবে, আমি ফুল ধরে
রাখতে শিখব ভঙ্গুরতায়, তুমি আমায় নকশার কাছে
পাঠাবে, আমি কালোসাদায় বুনতে শিখবো স্বর
কিভাবে কেঁপে উঠে অন্যকে কাঁপায়, তুমি কাঁপা হাতের কাছে
আমায় পাঠাবে, আমি স্থিতি শিখবো তার কাছে, কিভাবে
ভেতর ভেতর স্তব্ধ করে দিতে হয় অনুরণন, শুধু কোনো
একজন গলার মানুষ যাকে তোমরা ঈশ্বরতা দিয়েছ
তার আধার নেই, অবয়বহীন অসংখ্য বিন্যাস থেকে
আমাকে ডাকছে, তার করুণ ডাক কত শুনি গ্যাব্রিল
তুমিও কি সেই অভ্যুত্থানের কথা শোনো? রক্তাক্ত
হত্যাকাণ্ডের কথা কোনো রবিবার যেদিন চারটে
ফুটফুটে মেয়ে ফুটেছিল রাশিয়ায়… সে করুণ
আমায় ডাকছে, আর অতীতে ঢূকে পড়তে চাইছে
এই মোমের সামনে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না
হাজার ভাষায় অনেক স্তর থেকে ডাকছে শুধু একবার
তা’তে অবয়ব দেওয়ার জন্য, পাপী হবার জন্য ডাকছে
টেবিল এক অবস্থান সেখানে তোমরা কসাই
তোমাদের কর্ম তোমরা নিজের হাতে কাটো আর
ফল থেকে কোনো শরৎ বেরিয়ে আসে না, অথচ তো
আমি চাই সে ফলের ভেতর পোকা হয়ে ঢুকে পড়ুক আলো
তোমরা তোমাদের শাঁস চিনে ওঠো, অবস্থান সংক্রান্ত
খবর চিনে ওঠো, পারিপার্শ্বিকতা বুঝে গতিপ্রকৃতি বদলাও
টেবিল এক ধর্ম, তোমরা নাস্তিক, চারধারে শুধুই ছুরি
তোমাদের ভেতর মাংস টেবিল দেখছে, তোমাদের
হাতের ছুরি দেখতে দেখতে টেবিল ভয়ে কাঠ…
আর উইলো ভেবে ফেললে তোমরা তাকেই! হাঃ…
আমি গ্রিগরি সেই টেবিল যার পাশে তোমরা পাইন
জঙ্গলের মতো ভিড় করে আছো, আমার বুকে তোমাদের
জরা, শোক, ব্যাপিত ভালবাসা দেখছ, লালা ঝরছে
তোমাদের… এই ক্ষরণ সত্য, টেবিলও সত্য, শুধু আমার
এই ভয়ে কাঠ হয়ে যাবার মধ্যে নমনীয় অবস্থান কেউ
ঠাহর করলে না, চিনে উঠলে না তার ভেতর জমাট
পোকাদের সংসার আমায় খেয়ে ফেলেছে, সুতরাং
আমার অবস্থান মিথ্যা… শুধু মায়ার ভেতর তোমরা
আমাকে স্বীকার করছ কর্মের ভেতর ফলে, শাঁসে, বীজেও
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..