রাত্রিযাপন

জালাল জয়
কবিতা
Bengali
রাত্রিযাপন

এক. 

ধর্ষণ ও দার্শনিক চেতনা

দার্শনিক চিন্তা চেতনা
ধর্ষকের লালার কাছে পরাজিত

ওরা জাতিকে নিয়ে লাটিম খেলে
প্রতিদিন পতাকায়, ছুড়ে মারে
ধর্ষিতার রক্ত

এমন কোন শক্তি নেই
তাদের রুখে দাঁড়াবার

আমরা প্রতিটা মানুষ বড়ই অসহায়
পত্রিকার প্রথম পাতায় চোখ রাখতেই
ধর্ষণ হত্যা আর কত কী
এভাবেই এগিয়ে চলছে
ধর্ষণের দার্শনিক চেতনা…

দুই.

হৃদয় মাখো কবিতায়

সমস্ত রঙজুড়ে
তোমার ঠোঁটলিপি
স্পর্শকাতরতায়,
আমার ঘুম ভাঙানো ভোর
চৈত্রের রঙগুলো
তোমার শরীরে মেখে
তুমি অঙ্কন করো—আমার শরীর

ঘাসের বুক ছুঁয়ে
শিশিরে স্পর্শ করে,
ছুঁয়ে দাও তুমি, আমার হৃদয়
কোকিলের সুর মাখানো গানে
মিশিয়ে ঠোঁট—
রেখে দাও তুমি, তোমার মধুর প্রাণে

আর কোন মেঘ ছুঁয়ে
ছুঁয়ে যেওনা কোন অভিমানি জল
শুধু থাকবে চেয়ে আমার ঠোঁট বরাবর
এক-একেকটি চুমুর বিনিময়ে
জন্ম হবে এক-একেকটি কবিতার

তোমার স্বর্গজমিনে আমি ফুল ফুটাবো
ভালোবাসার বীজে পরিপূর্ণ করে দেবো
এই জীবনে যত স্বপ্ন তোমার
তুমি আর কোন দু:স্বপ্ন দেখো-না
শুধু দেখে যাও রেখেছি কত
যতন করে এই হৃদয়ে…

 

তিন.

অদৃশ্য সংলাপ

শোনো হেমন্ত, তোমার শরীরে
জলে ভেজা রঙ মেখে দাও
চুম্বকের মত আকর্ষিত চোখে
ডেকে নিয়ে যাও বসন্তের কাছে

চার.

স্পর্শ

অমানিশার ঘোর ঘিরে ফেলে আমায়
চারদিকে কেবল হতাশার মিছিল
জীবন চিনে না জীবনের দৌড়
আশাহত মনে বসন্ত পালায়
কারাগারে অবরুদ্ধ ক্ষণে
আকাশের বুকে রাখি চোখ
নামে বৈশাখী ঝড়…

তুমি নেমে আসো বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে,
কারাগার ভেঙে যায় তোমার চোখের বজ্রপাতে

আকাশে রঙীন মেঘ ছড়িয়ে
জড়িয়ে নাও তোমার আলোময় বুকে
যেন পুকুরপাড়ে জ্যোৎ¯œার ডুব
কোমলতার স্পর্শখানি উর্বর করে মন
মিশ্রিত জোনাকের প্রফুল্ল উল্লাসে

 

পাঁচ

রাত্রিযাপন

কোন এক দিনশেষে
নিরবতার দৃষ্টি ভেঙ্গে
মধুর আঘাতে রাতের শরীর
স্বপ্নকে হত্যা করে
ঝুলিয়ে রাখে গাছের ডালে

পাহাড়ির বুকজুড়ে রক্তের চুমু
উষ্ণ-কোমল হৃদয় কেটে
শীতল করে কুয়াশার ঠোঁট
আগুন চোখে, রাত্রীর কত ভয়
আদরের ফোঁটায় ফোঁটায়
রক্তমায়া টপটপ করে পড়ে

ভাবছি নিজেকেও বিলিয়ে দেবো
এমনই এক আঁধার রাতে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ