রূপগঞ্জ থেকে

ভজন দত্ত
কবিতা
Bengali
রূপগঞ্জ থেকে

ধর্মঘট বা বুক রিভিউ

ধরণদিনে তুলসীতলায় প্রতিদিন ঘটে জল ঢালে যে, তার মর্মে ধর্মঘট হলে স্ট্রাইক বলে না কেউ!

সব দরজায় বনধ লেখা হলে তালা ঝোলানোর বা তোড়বার দরকার নেই। শংসাপত্র এবং তাদের বুক চিরে তোমার জন্য একটাই কথা,কতজনের খাওয়া ছিলো, পান-বাসনা ছিলো, কোন কথাটি খুব দরকারি ছিলো, একটুখানি জায়গা ছিলো, শুকনো ছিলো, তাতে কি কেউ কাদা করে বতর ধরলো!

আকাশ থেকে বারিস হলে, দেশের রাজধানীতে দান আসে, খয়রাতি আসে, কিন্তু সেসবের সাথে গলাগলি ভাব না থাকলে পরে বলবেন না প্লিজ রেডিও তে, বিনা রক্তপাতে দারুণ একটা সময় কাটলো!

বিরক্ত হতে পারতো ইতিহাস বা ভূগোল ক্লাসের প্রজেক্টটা, লাইনে দাঁড়িয়ে ডিমান্ড নোট ধরাতে পারলেই, রাজার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেবে বলে যারা বাহারি খাবারের গামলায় মুখ রেখে সব খবরই খায়, তাদেরও দরকার ছিলো একটুখানি আঠার।

আঠা-আঠা ভাব থাকলে গণতান্ত্রিক পতন হলে সেটি কারো দুর্বলতা! তার জন্য কোনো কথা বলার থাকলে বিদেশ থেকে দূত আসে! কি দরকার ছিলো উঠোন জুড়ে লাউয়েরডগা,তার জন্য মাচান করা! মাচানতলায় তুলসীগাছ লাগানোর, তার ওপর ঘট ঝোলাবার,জল ঢালার রূপকথা তো ঢের হয়েছে!
সব আঁচলেই বাঁধা সোনার কাঠি, রূপোর কাঠি পক্ষীরাজ আপাতত অথরাইজড বাহন হয়েছে।

মন্ত্রী-সান্ত্রি রাক্ষসী সব ঘুমের মধ্যে গন্ধের স্বপ্ন দেখে পা ভেঙেছে। তাতে কি আর হবে! ধর্ম যদি মানছো তবে, ঘট ঝোলাবার আগে, ধর্মঘটটি কার হাতে, কার পাতে মাছের মুড়ো, দুধের বাটি, জলের ঘটি এসব কথাও কি ভাবতে হবে!

দিনে ডাকাতি নিয়ে কিছু মোটা মোটা বই প্রকাশিত হয়েছে সেই সব বুক সুসংকলিত হলেও তা রিভিউর সময় হবে কবে!

বলি, বুক রিভিউ কবে …

রূপগঞ্জ থেকে

কৃষ্ণচূড়ার দিনে করাতকাটা মেঘের নীচে গাছের মায়াছায়ায়, হন্য হবো, বন্য হবো, ধন্য হবো।

হামি থাকবে আনাচকানাচ, আদুলগাঁয়ে রূপগঞ্জে।

উদাসী শিমুল এলোমেলো ভেসে যাবে, সক্ষম বা অক্ষম অক্ষরবীজ নিয়ে।

প্লিজ সেসবের নাম দিও না।ছন্দ থেকো, ঠিক আছে। মলান-ডিহি বা মলান-দিঘি, সেসব নিয়ে কাব্যি করো না, সত্যি বলছি ঘোঁত বা ঘাঁত ঠিকঠাক বুঝি না। খোলাচুল, এলোমেলো হিসেবে,

হিজাব না আলতামিরা গুহা!

রহস্য উপন্যাস!প্রচ্ছদেই আটকে আছি , একটিও পাতা তার ওল্টানো হলো না। অক্ষরগুলোকে ধরতে চেয়ে আদর করতে চেয়ে, কিছু কথা বলা হোল না।

সৈকত, বালিয়াড়ি সব রেডি, জোয়ারের গা-জোয়ারি, রেডিওলোজি, যত্তসব ভুলভাল বাক্যাবলি, আবহাওয়া দপ্তরের খবরদারি,

সেসব আজ কিছুই চলবে না। ফণী, প্রাগৈতিহাসিক আঙুল, সেসব না হয় লাঙল বলে ভাবলে,

দুটি মুঠো মুখে তুলে দেবে বলেই, বাহারি সবুজের ভেতরে যত হুটোপুটি।

জমি ও বীজের সঙ্গম প্রতীক্ষায়

ভেবেছিলাম, ছুটি – জীবনটা বেশ কাটিয়ে দেবো,

রোমান্টিক গদ্য লিখবো, বেলুন ফোলাবো, লাগাবো,নরম কেকের ভেতর আলতোভাবে ছুরি চালাবো,মোমবাতির নরম আলোয় বসে চাঁদ দেখবো

সোনার থালায় চাঁদ এবং মুখোমুখি প্রগাঢ় বিষণ্ণতা এলে ভেবেছিলাম আমাদের খোকাখুকুর কপালে এঁকে দেবো চুমু,খোকার ভবিষ্যৎ নিয়ে, মেয়ে-জামাই-বউমা নিয়ে, আমাদের কিছু কথা বলার ছিলো। কিছুটা আদর, কিছুটা সমরের প্রয়োজন ছিলো।

সেসব কিছুই হলো না।হাওয়ায় কিছুই হওয়ার নয়।

নীরব শালবনে, মুঠো মুঠো সবুজ নিয়ে আমরা কেউ কোনোদিন কাউকে রাঙিয়ে দিতে পারিনি।

কারো প্রতীক্ষায় থাকতে পারি নি বলেই জঙ্গল লুঠ হয়ে মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং তৈরি হলো।

আমাদের মাত্র সাড়ে আটশো স্কোয়ারফুটে লালমাটি বিছানো হলো না!কোনোদিন যৌথ পারফর্মেন্সে গাওয়া হলো না “গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ”…

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ