লাক্ষা ও পাসপোর্ট

অনুপম মুখোপাধ্যায়
কবিতা
Bengali
লাক্ষা ও পাসপোর্ট

বন ও জীবন

বনে গেলেই আমি পেয়ে যাব নতুন জীবন
হাতিদের উঁচু গুঁড়ি শীতের দুপরে

আমার প্রতিটা ভুল- জনশূন্য মন্দিরের ভাঙা অন্ধকার

বাঘের শিকার যথা হরিণের টেনে ছেঁড়া ছালে

বিখ্যাত গাছেদের গোপন কোটর
লুকিয়ে রাখব আমার অচেনা মুকুট

না চেয়ে পেলেও এই মন্ত্রণা ঠিক

যে দিনের আলোয় নেই ছায়ার আমেজ
হরিণের খুরে সেই দিন জ্বলে যায়

 

অশ্বমেধ

ফুলের অন্তর ফুঁড়ে লাফিয়ে ঢুকছে সেই আরবী ঘোড়া

ঘোড়ার পাপড়ি খাবো
ফুলের মাংসও

স্তনবৃন্ত ছিল শিশ্নের শিখর
ভগাঙ্কুর ছিল নেশা পেরিয়ে যাওয়া খাঁড়ির নোঙর

শীৎকার চিনে নিতে তবু কেন লেগে গেল সমস্ত জীবন

হোক হোক

শুরুর আগেও কিছু মৈথুন হোক

 

নার্শিসাস

নিজেকে যে ভালবাসি খুব অনায়াসে তা বোঝা গেল না

জীবন আমাকে করেছে হলুদ পাতাটি
জীবন আমাকে করেছে সবুজ শিকড়

অত জ্ঞানী নই
প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র তো নই

নিজেকে চেনার চেয়ে নিজের প্রতি টান
বোঝা তাই কঠিন

 

লাক্ষা ও পাসপোর্ট

স্মরণীয় কিছু আমি এ জীবনে স্বীকার করি না

সারিবদ্ধ স্মৃতি না কি পিয়ানোর দাঁত

কুয়াশার মধ্যে নামে ঝর্নার জল
তার দেহ ধরতে না পেরে
অথচ কিছু লোক মনগড়া নাম পেয়ে যায়

আমারও বাগানে আছে জঙ্গলের ছায়া
জাঁতি থেকে ছিটকে যায় সুপারির গুঁড়ো

পুত্রবধূর নাম মনে করতে গিয়ে
আমারও বাবা শুধু লাক্ষা আর পাসপোর্ট খোঁজে

অনুপম মুখোপাধ্যায়। কবি ও সম্পাদক। জন্ম ১৯৭৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যে। ২০০৯ থেকে ‘বাক্‌’ ব্লগজিন সম্পাদনা করে আসছেন। প্রকাশিত বই: 'রোদ ওঠার আগে' (কাব্যগ্রন্থ, ২০০৬), 'যার নাম অপরাজিতা সেও কিন্তু নামকরণে হেরে যায়' (কাব্যগ্রন্থ, ২০১৭), 'রুবারু' (কাব্যগ্রন্থ, ২০০৭), 'হাইওয়ে' (কাব্যগ্রন্থ,...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..