আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
ভেবো না রাত্রি হলেই,
আমি চুপচাপ বিছানা পেতে নেব নির্লজ্জ ইশারায়,
ভেবো না সংগোপনে, ছুঁয়ে নেব উত্তাপ।
তুমি তো জানোই না,
জীবন আর মৃত্যুর মাঝে যে কটা রাত,
তার অর্ধেকটাই কেটে যায় বিনিদ্র নির্জনতায়।
ঐ যে কত কত সংকেত বানিয়ে ফেলেছ,
ঐ যে অতশত বেআব্রু অহংকার গুঁজে রেখেছ বেহায়া চোখে, ঐ ওখানেই কথা ছিল হারাবার, জীবনের খোঁজে।
এখন রাত্রি নামলে, এক এক করে সমস্ত আলো নিভে গেলে, ভীষণ ঝগড়া করতে ইচ্ছে হয় নিজের সাথে, কখনও বা বন্ধ দরজার ভিতরের অন্ধ দম্পতির সাথে।
তোমার মতন ওরাও তো জানে না,
ধাপে ধাপে কতটা উচ্চতা পেরোলে রাতেরা আবার একাই রয়ে যায়।
বেশ, তবে ভালো থেকো লাবারিশ প্রেম,
আমিও ঘুমেদের বুঝিয়েই দিয়েছি,
বেঁচে থাকতে হলে কোন কোন রাত কাটাতেই হয়
বিষাক্ত অ্যালজোলাম ছুঁয়ে ছুঁয়ে।
গাছের তলায় দিব্যি বিশ্রাম নিচ্ছিল যে ছেলেটি,
সে জানে না ফুটপাথে তার জন্য অপেক্ষা করছে
আরেকজন,
আরেকজন দাঁড়িয়ে আছে বালিগঞ্জ স্টেশনে,
আরেকজন আহিরিটোলায়।
এদের প্রত্যেকের ঠিকানা এক নয়,
বাড়ির নম্বর, গলি সড়ক পিনকোড সব আলাদা আলাদা,
তবু কোথাও যেন একটা আশ্চর্য রকমের মিল।
এদের হাতে হাতে রোজ ঘুরে বেড়ায় ভূগোল ইতিহাস আর অঙ্কের বিবরণী,এদের হলদে দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে আঠালো হাসি লেগে থাকে, যার প্রতিটি কণায় শুধু মিথ্যা ….
একটা আশ্চর্য রকমের মিল আছে এদের প্রত্যেকের নাক্ষত্রিক অবস্থানের,
এরা প্রত্যেকেই আসলে “বেকার”……
অনেকগুলো মোড় আসে জীবন বৃত্তে,
এ মোড় থেকে ও মোড়।
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গহীন কালো জীবনে,
কখনও বা নিয়ে আসে ভোর।
জানি, মোড়ের মাথায় এসে পড়লেই,
সঠিকটা চিনে নিয়ে এগিয়েও যেতে হয়।
কখনও বা ভুল পথের বাঁকে, বেঁকে যায় পথ
মোড়ের মাথায়, যখন চোখে পড়ে না অসংখ্য ভুলচুক,
কেমন যেন পি সি সরকারের জাদুর মতন সব দুঃখগুলো
ছুঁ মন্তর হয়ে যায়।
হুঁশ ফিরলে, নতুন করে আর ফিরে আসা দায়,
ফেলে আসা মোড়ের মাথায়।
আবারও এগিয়ে চলা,
নতুন মোড়ের নতুন ভোরের আশায়…
আমরা ফিরে আসি,
ফিরে আসতেই হয়,
ঝিনুকের ভিতর থেকে মুক্তার বেড়িয়ে আসার মত,
দুর্গম নির্জনতার ভিতর হতে বেড়িয়ে আসতেই হয়…
এই যে একাকিত্বের আড়ম্বর,
এই যে নিশ্চুপ যাপন, পাহাড়ের কোলে কোলে
ক্ষনিকের এই হারিয়ে যাওয়া
ক্ষনিকের এই নিজেকে পাওয়ার আশ্চর্য খেলায়
মননে মননে গেঁথে ওঠা মুক্তামালায়,সংসারের চিলেকোঠা সাজাতেই হয়।
তবু ফিরে আসতেই হয়…..
আমি জানি তুমি মানো না,
তুমি জানো আমি মানি না,
হতাশ হৃদয় জানে প্রত্যাবর্তনের মানে,
জেনেবুঝে মেনে নেওয়াতেই বাঁচতে হয়,
তবু ফিরে আসতেই হয়…..কবিতাখানি….
উফ কি লিখিয়ে নিলে, আমায় দিয়ে প্রিয়জন,
আমিতো ভুলতেই বসেছিলাম,
জন্মলগ্ন থেকেই আমার নামের সাথে জুড়ে আছে
শ্রাবনের গান, চৈত্রের প্রখর আস্ফালনের পর
নেমে আসা বৃষ্টির মতোই আমিও তো বারিধারা
বয়ে আনি শুষ্ক প্রেমিকের বুক জুড়ে….
প্রিয়জন, তুমি তো জানোই না
ভুলে যাওয়াটাই আমার বেঁচে থাকার শ্রেষ্ঠ কারণ,
হয়তো বা বেঁচে আছি এ ভাবেই ভুল করেই।
আমার পাঁচিলের ওপারে তোমাদের বাস,
দেওয়াল বেয়ে নেমে আসে আমার চিৎকার
নিস্তব্ধ রাতেও,তোমরা শুনেছ কি?
শুনেছ কি রাতের পাঁচালী পড়ে যাচ্ছি আমি?
ঝরঝর করে প্রেমিকের হৃদয়পুরে নামিয়ে আনছি অসময়ের বৃষ্টি?
প্রিয়জন,
শোনোনি বলেই
তোমাদের জন্য বুনে যাচ্ছি অক্ষরমালা,
কখনও সময় এলে, পড়ে নিও আমার কবিতাখানা।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..