শতরূপা সান্যালের কবিতা

শতরূপা সান্যাল
কবিতা
Bengali
শতরূপা সান্যালের কবিতা

কালিকা’র দোতারা

নয়ানজুলিতে পড়ে আছে দোতারাটা
খমকটা দেখ বিহ্বল হতবাক
ছেলেটা হঠাত পাখি হয়ে উড়ে গেছে
হয়তো আকাশ পাঠিয়েছে শেষ ডাক!

ছেলেটাকে খোঁজে ব্যাকুল বাংলাদেশ
ছেলেটাকে খোঁজে লক্ষ লক্ষ লোক
ক্ষোভে রাগে শোকে থরথরো কলকাতা
কে মোছাবে আজ দোতারার ভিজে চোখ?

 

জঞ্জাল

হঠাত একটা ছুটি পেয়ে ভাবি, ঘরটাকে সাফ করি
জঞ্জাল ফেলে সাজিয়ে গুছিয়ে করে তুলি সুন্দরী।
রোজ রোজ এত জমেছে কাগজ পত্রিকা ভুরি ভুরি
পুরনো বোতল কৌটো প্যাকেট চিঠিও কয়েক ঝুড়ি!

প্রায় সারা বেলা কেটে গেল আজ সে সাফাই অভিযানে
এপাশের র্যাক ওপাশে রেখেছি সোফাটাকে ওই খানে!
ঘেমে নেয়ে গেছি বাছাই করতে জঞ্জাল স্তুপ থেকে
কোনটা কাজের কোনটা অকাজে খুঁজে খুঁজে ছেঁকে ছেঁকে!

পুরনো কৌটো ফেলতে গিয়েও মনে হল ফেলবনা
চিঠি পত্রের মধ্যে পেলাম অনেক লুকোন সোনা!
পত্রিকাগুলো তথ্যে বোঝাই অথচ হয়নি পড়া
বাতিল জামাও মনে হল আজ কত না স্মৃতিতে ভরা!

এভাবেই কত বাড়তি জিনিষ হয়ে ওঠে দরকারি
হেলাফেলা তবু ফেলার সময় কেউ কি ফেলতে পারি?
ছোটনের ব্যাট তিতিনের জামা পলিনের আঁকা ছবি
বড় হয়ে গেছে ওরা, তবু এতে ধরা আছে শৈশবই!

কিছুই তো ফেলা গেলনা আমার, কিছুই যায়না ফেলা
এলোমেলো ঘরে সাজাই গুছোই অনেকেই সারা বেলা।
পুরনো জিনিষে ফিরে ফিরে আসে কত না স্মৃতির জাল
এভাবেই বয়ে নিয়ে যাই সুখে এই সব জঞ্জাল!!

 

 

 

শতরূপা সান্যাল। কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, গীতিকার, আলোচক এবং জাতীয় স্তরে সম্মানিত চিত্রপরিচালক। প্রাণী চিকিৎসা ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানে স্নাতক। নারীমুক্তি ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর নিয়মিত কবিতা, ছড়া, লেখালিখি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এই সময়ের দলিল।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ফ্রেম

ফ্রেম

দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..

সীমানার শর্ত

বিজ‌য়ের সব মুহূ‌র্তেই… তার অ‌ধিকার! কেন্দ্র হোক আর কেন্দ্রা‌তিগ ব‌লের আসন; কেউকেউ বোরকায় রমনীয় স‌ঙ্গানুসঙ্গের;…..