দৌড়
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
আগুনের শিখার তেরচা গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সাথে সাথে আনোয়ারা বেগমের বিলাপের ধ্বনিও ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল। প্রতিটি শিখার সাথে তিনি যেন তার কন্যার অবয়ব দেখতে পারছিলেন। এদিকে তার স্বামী আব্দুস সোবহান ঠান্ডা মাথায় আগুনের তাপ নিচ্ছিলেন আর সিগারেট ফুকছিলেন। এই আগুন পোহানো তাদের কাছে নেহাতই শরীর উষ্ণ করা নয়। বিশাল এক দগদগে ক্ষত নিস্পত্তির চুড়ান্ত পর্ব আজকের এই শীতের রাতের আগুন পোহানো। আগুন পোহানোর সাথে সাথেই এই দম্পতি টাইম মেশিনে ভ্রমন করে দুই বছর আগের এক সন্ধ্যায় চলে গেলেন।
ওই সন্ধ্যায় লোকেরা যখন আব্দুস সোবহানের বাড়িটিতে ভিড় করছিল তখন হাস্নাহেনা ফুলের মাতাল এক গন্ধে বুদ হয়ে ছিল চারপাশ। বারান্দায় লাগানো এই হাস্নাহেনা গাছটি গন্ধ বিলিয়ে লোকেদের মস্তিস্কে ঝাঁকি দেওয়ার জন্য মনে হয় এই দিনটি বেছে নিয়েছিল । আর ছিল প্রবল জোছনা। শাদা জোছনার চাদরে ঢাকা সুলতানপুর গ্রামটিকে মনে হচ্ছিল সদ্য স্নান করা রুপবতী এক নারী। কিন্তু এইরকম উথালপাথাল দিনে আনোয়ারা বেগমের বিলাপের আগ্রাসনে সব তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে । আব্দুস সোবহান আর আনোয়ারা বেগমের একমাত্র কন্যা ফারজানা দুই বছর আগের ওই সন্ধ্যাবেলায় পুকুরপাড়ের আমগাছের ডালে ফাঁস নিয়ে আত্নহত্যা করে। তৃতীয় বারের মত এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করাটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেনি সে । যদিও আব্দুস সোবহান কিংবা আনোয়ারা বেগম কিছুই বলেননি। আনোয়ারা বেগম শুধু উঠানে শুকনো খড় বিচুলি গোছাতে গোছাতে ”আহারে নসিব রে! আহারে কপাল রে! ” বলে নিজে নিজেই মৃদু বিলাপ করে সান্ত্বনা খুজছিলেন ।খিল আটকে নিজের ঘরে অবস্থান করা ফারজানার কানে এই বিলাপের ধ্বনি না পৌঁছানোরই কথা ।কিন্তু রাত নামার সাথে সাথে নিজের সাথে নিজের বোঝাপড়ায় পরাস্ত হয় ফারজানা নিজেই।
গাছ থেকে লাশ নামিয়ে যখন বারান্দায় রাখা হয়েছিল তখন হাস্নাহেনা ফুলের গন্ধ বিলানো মাতাল বেশ ধারন করে। বাড়িটিতে জড়ো হওয়া প্রতিবেশীরা গভীর রাতে বাড়ী ফেরার সময়ও এই গন্ধ তাদের অবশ করে রেখেছিল ।হাস্নাহেনা ফুলের গন্ধের সাথে কম পরিচিতি থাকা লোকেরাও এই কথা বলে যে এই গন্ধের সাথে ব্যাখ্যার অতীত কিছু মিশ্রিত আছে সন্দেহ নাই । এস টি কলরিজের কবিতার নাবিকের ঘাড়ে ঝুলে থাকা অ্যালবাট্রস এর মত সুলতানপুর গ্রামের লোকেরা এই গন্ধ বয়ে বেড়িয়েছেন অনেক দিন। রীতি অনুযায়ী ফাঁস নেওয়া গাছ কেটে ফেলাই উত্তম। দাফনের তিন দিন পরে মিলাদের দিনে মসজিদের ইমামও আব্দুস সোবহানকে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন । যথারীতি তাই করা হয়। তারপর থেকে শুরু হয় অদ্ভুত এক ঘটনা। ফি সপ্তাহে একবার আব্দুস সোবহান একই রকম একটা স্বপ্ন দেখে । । তার খোয়াব জুড়ে থাকে শিকড় আর শিকড়।তিনি দেখেন শিকড়ে চাপা পড়ে আছে তার কন্যার থেঁতলানো দেহ। যে রাতে সে এই স্বপ্ন দেখে পরদিন তীব্র জ্বর আর মাথা ব্যথায় সে বিছানায় পড়ে থাকে। প্রথমে গ্রামের হরিপদ ডাক্তার পরে উপজেলা সদরে সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দেখিয়েও কোন লাভ হয়নি । অতঃপর আবার মসজিদের ইমাম সাহেবের দ্বারস্থ হয় সে । তার পরামর্শক্রমে একজন কামলা সহযোগে আব্দুস সোবহান কেটে ফেলা গাছের শিকড় মাটি খুড়ে খুড়ে তুলে ফেলে এক শুক্রবারে। মাসখানেক রোদে রাখার পর শিকড়ের অত্যাচার হতে নিস্তার লাভ করার জন্য এক শীতের রাতে উঠানে সমস্ত শিকড়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তারা। তেরচা আগুনে শরীর উষ্ণ করার পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ঘুম তাদের পরম আরাধ্য হয়ে উঠেছিল। আনোয়ারা বেগম আগুনের শিখার সাথে তার কন্যার মুখচ্ছবি ভেসে ঊঠছে বলে জানিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
অবশ্য আব্দুস সোবহান স্বপ্নে শিকড় দেখা থেকে নিস্তার পেলেও এবার আনোয়ারা বেগম অদ্ভুত সব খোয়াব দেখতে থাকেন। তার স্বপ্ন জুড়ে থাকে তেরচা আগুনের লেলিহান শিখা। তিনি দেখেন তার কন্যা আগুনে পুড়ে পুড়ে ” মা বাঁচাও, মা বাঁচাও” বলে আর্তনাদ করছে।
ছয় মাসের মাথায় আনোয়ারা বেগম পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তার স্থান হয় জেলার নারী ও কিশোরী সংশোধনাগার কেন্দ্রে। আনোয়ারা বেগমের পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়ে পুনরায় বিয়ে করে সোবহান। বিয়ের বছর না পেরোতেই সন্তান নেওয়ার গ্রাম্য রীতি মেনে এক বছরের মাথায় এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমুন নাহার। এক সন্ধ্যাবেলায় কন্যা ফাইজাকে দোলনায় দোলাতে দোলাতে দেয়ালে ঝুলানো একটা ছবিতে চোখ গেলে রক্ত হিম হয়ে যায় তার। দুই দেয়ালের সংযোগ স্থলে সিলভারের ফ্রেমে বাঁধা এই ছবিটি আগে দেখেনি সে । মনে হয় ছবিটি যেন তার কন্যা ফাইজার বড়বেলার ছবি। নাকি ছবির এই রুপবতী মেয়েটিই কি তার ঘরে জন্ম নিয়েছে নতুন করে? ফাইজার নাক, মু্খ , চিবুক , কপাল সহ চেহারার অধিকাংশ গড়ন খোদিত হয়ে আছে দেয়ালের ওই ছবিটিতে।
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
সকালে উঠে মায়ের মমতামাখা মুড়ি ও লিকার চা খেতাম। তারপর দাদু বলতেন, এবার পড়তে বোস।…..
রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর…..
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট অফিসের চাকরির ইন্টারভিউয়ে জটিল একটি প্রশ্ন করা হলো। প্রশ্নটি হচ্ছে –…..