আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
ভেতরের সব কিছু খাক করে কাগজে ঢেলেছে কবি
তার নাম কবিতা, সূর্য পোড়া ছাই, আত্মদীর্ণ শস্য,
রাশি রাশি ভষ্ম ঠেলে বেরিয়ে আসার তীব্র চেষ্টা
অজস্র শব্দের কংক্রিট গাথুনিতে মিশে যায়
কবির হৃথপিণ্ড ফুসফুস আর ছিঁড়ে যাওয়া ধমনীর
চাপ চাপ রক্ত-এই পথে নিরন্তর আত্মক্ষরণে জন্ম নেয়
কবিতার বীজ, কবির শরীর বেয়ে নেমে যায় অজস্র শিকড়
শিকড় ছড়িয়ে যায় অলিতে-গলিতে হাভাতের পাতে
স্টেশনে-বস্তিতে হৃদয়ের অজস্র ফাটলে গাঢ় অন্ধকারে
কবিতা রস পায়, কবিতা বেড়ে ওঠে ; এভাবেই বাঁচে।
হেতালের ঝোপে থাবা গেড়ে আশ্চর্য নীরবতায় স্থির
যে বাঘ, ঠিক তার মত শীতল ঘাতক
অথবা মসৃণ ব্লেডে বাতাস কেটে নেমে আসা চিল
আমাদের ব্যর্থ চিৎকার তাচ্ছিল্য ক’রে এক ছোঁয়ে
যেভাবে ঠোঁট জুড়ে মেখে নেয় রক্তের স্বাদ
সেই ভাবে, ঠিক সেই ভাবে আরো আরো প্রাণীদের মতো
মানুষের স্বাদ নেয় ভিন্নতর মানুষ স্থির নির্বিকার অথচ
শানিত নখে-এই পথে আমাদের অনিবার্য ক্ষয় অনির্বার
সময় পাইনি তখন , নয়তো নির্ঘাত যেতাম
তোমার শান্ত বুকে আদ্দি কালের লজ্জা যত
মুখ লুকিয়ে – দিতাম উপড়ে সব
অবকাশ পেলাম কই !
আর তুমিও তেমন , অনুতাপে রাতভোর
পায়েষ -গন্ধ নরম হাতে ভোরেই শাড়ি মেলো ছাঁদে
আমি সতর্ক ক্ষেতমজুর তবু ও গেলাম ভুলে
তোমার সমগ্র ঘ্রাণ নিতে ব্যস্ত সময়-শরীর জুড়ে।
আমার ভিতরে ঘাস ফড়িং কাঁচপোকারা ঝাঁপ কাটে
গাঢ় সবুজ ঘাসের গালিচায়, এলোমেলো উড়োউড়ি
আমার ভেতরে প্রজাপ্রতি, ক্ষতরস মুছে নিয়ে নরম পাখনায়
উড়ে এসে বসে খোলা আলিন্দে, ডানার বাতাস দেয়
আমার ভেতর শুকোয়- ভেতরে অঙ্কুর; চারাগাছ হয়।
ফাতনার মত কচি পাতায় জোনাকি বসে রাতে, আলো দেয়-
নরম কাদায় আলো গুঁজে বাবুই দোল খায় আমার বাগানে ।
বাগান রাত জাগে ঝিঁঝিঁদের ব্যাঙেদের কলরোলে
মাতোয়ারা রাত; আমার ভেতরে ভোর হয় শীতঘুম ভেঙে
তুঁষজ্বলা উনুনের ধারে পুরাতন উষ্ণ আরামে।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..