গৌর (মালদা) – বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস
বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস সম্পর্কে জানার সময়, গৌরের মতো আর কিছু গন্তব্য হতে পারে না।…..
ভ্রমণবিলাসী চারজন বেরিয়ে পরলাম ভ্রমণে। আমিও গেলাম।প্রথমে ওরা গেল মুকুটমণিপুর। সপ্তাহান্তে পিকনিক বা একদিনে ছুটিতে কাছাকাছি বেড়ানো অন্যতম জায়গা হল মুকুটমণিপুর।আমি, বিশু,রজত দাস আর সোমা দুজন স্বামী স্ত্রী। আর দুজন বন্ধু মিহির আর রমা।বাঁকুড়া পৌঁছে রমা বললো, চলো আমরা এখন কিছু খেয়ে নি তারপর আমরা মুকুটমণিপুরে উদ্দেশ্যে যাত্রা করব।রিমা জিজ্ঞাসা করল বাঁকুড়া থেকে মুকুটমণিপুর কত দূরে দাদা।মিহির বলল, প্রায় 55 কিলোমিটার হবে।তারপর খেয়ে দেয়ে ওরা রওনা হল বাঁকুড়া থেকে বাসে করে মুকুটমণিপুরে উদ্দেশ্যে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে তারা পৌঁছে গেল মুকুটমণিপুর। কংসাবতী নদীর তীরে অবস্থিত মুকুটমণিপুরে প্রাকৃতিক শোভা অনবদ্য। ঝাড়খন্ডের সীমানা ঘেঁষে মুকুটমণিপুরে রয়েছে দেশের বৃহত্তম নদী বাঁধ কংসাবতী। নদীর উপর বাঁধ দেখতে মানুষেরা ভিড় জমায়।তারা গিয়ে দেখল অনেক লোক আসে সাধারণভাবে নদীর তীরে পিকনিকের মজা নিতে। তারাও আনন্দ করতে মুকুটমণিপুর এসেছে।কংসাবতীর শীতল জলে স্নান করে ওদের পরিশ্রমের ক্লান্তি দূর হলো। আমি ও বিশু সেই দিনটা খাওয়া-দাওয়া করে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন ভোর বেলায় হতে, সূর্য ওঠা দেখতে গেলাম। কংসাবতীর বাঁধ থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার দৃশ্য অপূর্ব। আবার পূর্ণিমা রাতে চাঁদের আলোয় কংসাবতী তীরের সৌন্দর্য দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যাবে। ঘরে এসে বিশুু আর রজত বলল আজ রাত্রিবাস করলেই বোঝা যাবে চাঁদের আলোয় কংসাবতীর তীরে সৌন্দর্য। এই সৌন্দর্য দেখতেই সবাই বেড়াতে আসে এখানে। আমরা সেখানে রাত্রি বাস করব।তারপর তারা চলে গেল লজে।রাত্রিবেলায় রজত সবাইকে নিয়ে বাইরে এল আর চাঁদের আলোয় সেই বাঁধের উপর হাঁটাহাঁটি করতে লাগল। তাদের খুব ভালো লাগলো।রজত বলল-ওই নদীবাঁধ ছাড়াও মুকুটমণিপুরে আছে জৈনদের অন্যতম তীর্থস্থান কুড়িটি মন্দির সন্নিবিষ্ট পরেশনাথ পাহাড়, ডিয়ার পার্ক ঝিলিমিলি।মুকুটমণিপুরে একটি রাত্রি বাস করলে পরদিন ভোরে উঠে গাড়ি ভাড়া করে এই সমস্ত স্থান ঘুরে আসা যায়।
নদীয়া জেলায় পঞ্চাশটির মত হরিণ শাবক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মিলবে। এখানে ব্যবস্থা আছে মুকুটমণিপুর থেকে পনেরো কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে উপজাতি সম্প্রদায় হাতের তৈরি ঘর সাজানোর সামগ্রী বিখ্যাত।মিহিরকে বাঁকুড়ার একটি লোক বলল মুকুটমনিপুরে রাত্রি বাস করার জন্য কয়েকটি হোটেল রয়েছে।
মুকুটমণিপুর খুব একটা দুর নয়। তবে হাওড়া থেকে মুকুটমণিপুর যাওয়ার ট্রেন বাঁকুড়া ষ্টেশনে নেমে বাসে বা গাড়িতে যেতে হয়। আর সড়ক পথে যেতে হলে কলকাতা থেকে উনিশ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে মুকুটমণিপুর যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা।ওখানে রাত্রি বাস করার পর সকাল বেলা উঠে ওরা ঠিক করল মায়াপুর যাবে। নবদ্বীপে মায়াপুরের দেখার জায়গা চৈতন্যদেবের জন্ম ভূমি। নবদ্বীপ তার প্রথম জীবনের লীলাক্ষেত্রও বটে। রিমা বললো আমার বহুদিনের শখ আমি ওখানে গিয়ে পুজো দেবো। মায়াপুরে গিয়ে আমি পুজো দিতে পারলে আমার মনস্কামনা পূর্ণ হবে।। তাই বস্তুত হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম তীর্থক্ষেত্রে পরিগণিত হয় নবদ্বীপ ধাম। শ্রী চৈতন্যদেবের জন্মস্থান আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হল মায়াপুর।
কথা বলতে বলতে চলে এলো মায়াপুর। নবদ্বীপ থেকে বেরিয়ে গেল। নদীর তীরে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সেখানে মন্দির। তারা আশ্রয় নিল নবদ্বীপের একটি লজে। পাশাপাশি রয়েছে এবং চৈতন্য সম্প্রদায়ের মিলনভূমি নবদ্বীপ।রমা বললো চলো আমরা নৌকায় যাব। নবদ্বীপ থেকে। তারপর চারজন মিলে জলঙ্গি নদী পেরোলেই মায়াপুর। জলঙ্গি নদীতে নৌকা আছে অনেক। সেখানে মাঝিদের বলে তারা নৌকাবিহার করল এবং সেখানেই রয়েছে বিখ্যাত চন্দ্রোদয় মন্দির। মায়াপুর যাওয়ার জন্য কথা বললে অবশ্য কিছুটা ভুল বলা হবে।।
রজত বলল, এটি আসলে হুগলি নদীর মিলনস্থল ।রিমি বললো দেখো এই দুই নদীর মিলনস্থল দেখে বোঝা যাচ্ছে ভিন্ন রংয়ের জলের ধারা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা ঘিরে রয়েছে মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দির। ইসকন চত্বরে রয়েছে আরও মন্দির। সোমা বলল, আর কি কি মন্দির মন্দির আছে? গৌড়ীয় মঠের মন্দির গোস্বামী মহারাজের মন্দির প্রভুপাদের মন্দির আছে। এছাড়াও মন্দির চত্বরে কর্মীদের পাশাপাশি পর্যটকদের ব্যবস্থা আছে।এবার দেখা যাবে সন্ধ্যায় আরতি।
সুন্দর আরতি দেখার পর রজত বলল-এই আরতি না দেখলে মায়াপুর আসাটাই মনে হয় অসম্পূর্ণ থেকে যেতো।এ ছাড়া বিকেলে রাধামাধবের ছবি ফুল দিয়ে সাজিয়ে নামকীর্তনের সঙ্গে ভক্ত পরিবারের বিহার অসাধারণ।ওখানকার স্থানীয় একজন লোক রজতকে বলল যে সেবিকাদের মন্দির চত্বর পরিভ্রমণের অসাধারণ দৃশ্য দেখবেন।
আর তাছাড়াও ইসকন মন্দিরের কথা তো না বললেই নয়।টিকিট কেটে এবং বিনামূল্যে দু রকম ভাবে পাওয়া যায়। টিকিট কেটে দুপুরের ভোগ পাওয়া যায় তার মধ্যে ভাত ডাল রুটি সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের থাকে। আর কি কি থাকে আর বিনামূল্যে বিভিন্ন সবজি দিয়ে খিচুড়ি টিকিট কেটে বিভিন্ন পাওয়া যায়। তার চেয়ে যেন বেশি খিচুড়ি বিতরণ করা হয় তাই নবদ্বীপ মায়াপুর ইসকন মন্দির।মায়াপুরে একদিন কাটিয়ে ওরা চারজন চলে এলো অবিভক্ত বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে।
বাংলার ইতিহাস ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে তাদের মূলত ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে প্রসিদ্ধ মুর্শিদাবাদ হাজারদুয়ারি।
ইমামবাড়ী আজো বাংলার নবাবদের সাক্ষ্য বহন করে।মুর্শিদাবাদে থাকার জায়গা খুঁজে নিল তারা এখানে একা থাকবে। এখানে আসতে তেমন অসুবিধা হয়নি। নবদ্বীপ থেকে একদম চলে এসেছে মুর্শিদাবাদ বহরমপুর। ট্রেনে বাসে এখানে এসে গাড়ি করে তারা চলে এসছে হাজারদুয়ারি।হাজারদুয়ারিতে গাইড পাওয়া যায় অনেক একজন গাইড খুঁজে নিয়ে তারা ঘুরতে শুরু করলো, সেখানকার জলঙ্গী নদীর তীরবর্তী মতিঝিল পার্ক অন্যতম স্থান মুর্শিদাবাদ কাশিমবাজার দিল্লি চাঁদনীচক মার্কেটে।
অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে মুর্শিদাবাদের বিখ্যাত রেশমি শাড়ি আপনারা এখানে কিনে নিতে পারেন।শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য মুর্শিদাবাদ অদ্বিতীয়। হাওড়া থেকে শিয়ালদা হয়ে লালগোলা প্যাসেঞ্জার ট্রেন আছে।
আপনারা এভাবেও আসতে পারতেন।মুর্শিদাবাদ দেখার পর পরের দিন রজত আর মিহির মিলে ব্যাগ কাঁধে করে চলে এলো বাসে। বাসে চাপল তারা। বাসে চেপে এখন তাদের উদ্দেশ্য হল তারাপীঠ যাওয়া। তারাপীঠ যেতে গেলে বাস ছাড়া গতি নেই এখান থেকে।
তারা ভালোভাবে বাসের সামনে এসে বসলো বললো, হিন্দুদের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র তারাপীঠ। তন্ত্র সাধনার অন্যতম স্থান বললে ভুল হবে না। আজ অমাবস্যা রাতে জেগে ওঠে তারাপীঠ। তারাপীঠ মন্দির নির্মাণের ইতিহাস রয়েছে।
তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান পেয়েছে সাধক বামাখ্যাপা। এটাই আমাদের ব্যাপার, জয় তারাপীঠ তারাপীঠ। তারাপীঠে অনেক পুরোহিত আছেন। তারা সবকিছু এখানকার পরিচয় দিয়ে থাকেন,তারা চেনেন সবকিছু। ওরা চারজন প্রথমে একটা থাকার জায়গা খুঁজে নিয়ে ব্যাগে রেখে নিয়ে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পরলো একজন গাইডকে নিয়ে তারা ঘুরতে শুরু করলো তারাপীঠ। বামাক্ষ্যাপার জন্মভিটে থেকে ঘুরে আসা যেতে পারে তারাপীঠে গেলে।এখান থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগে মাত্র 10 মিনিট। রাস্তা দিয়ে ভ্যানে করে আটলা যাওয়ার সময় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করল তারা। সূর্যাস্ত দেখার মজা অসাধারণ। তারপর মন্দিরের পুরোহিত বললেন তারাপীঠের রাত্রি বাস করলে পরদিন ভোরে গাড়ি ভাড়া করে বক্কেশ্বর, মেসেঞ্জাের, নলাটেশ্বরী মন্দির ঘুরে আসতে পারবেন। তারাপীঠ থেকে মাত্র 16 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নলাটেশ্বরী মন্দির 51 সতীপীঠ কথিত আছে। নলহাটিতে দেবীর গলার নলি পড়েছিল। নলাটেশ্বরীর অন্য আরেকটি শক্তিপীঠ প্রধান মহিষাসুরমর্দিনী মন্দির। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চলে আসে তাছাড়া ময়ূরাক্ষী নদীর উপর নির্মিত বাঁধ অন্যতম দর্শনীয় স্থান। বক্রেশ্বর গিয়ে রজতের সঙ্গে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়েছিল। তিনি অকৃতদার। তিনি রজতকে খুব ভালবেসে ফেলেছিলেন। তিনি বললেন, আমার কেউ নেই তুমি আমার ছেলের মত। রজত বলল- আপনি কুড়িয়ে-পাওয়া বাবার মতন। তাই আপনার নাম দিলাম ধুলো বাবা।এই ধুলো বাবা কিন্তু রজতের শেষ দিন অব্দি সঙ্গী ছিল। ফিরে আসার সময় রজত বলল-আমার শ্বশুরবাড়ি সিঙ্গী চলো। আমরা কলকাতায় ফিরে যাব। সোমা বললো এই সুযোগে বাবা মাকে একবার দেখে নিতে পারব। তারা সিঙ্গীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো।রিমি বাড়িতে ব্যাগপত্র সব রেখে চারজনকে নিয়ে সবাই মিলে বেরিয়ে পড়ল ঘোরার জন্য।
কাশীরাম দাস এর জন্মস্থান। বড় মধুর বড় সুন্দর পথের ধারে একা পূর্বপ্রান্ত নিকেতন শান্তিনিকেতন হোমের সামনে একটা পুকুর। জেলা পূর্ব বর্ধমান। 12 বছরের প্রাচীন এক জনপদ।কলকাতা থেকে মাত্র 160 কিলোমিটার পথ। মিহির কলকাতার ছেলে। তার কাব্য ভাব জেগে উঠলো। সে বলল, শীতের আড়মোড়া ভেঙে যাচ্ছে কড়াইশুঁটির ক্ষেত। সবুজ খোসা ছাড়িয়ে সবুজ দানার মত নরম মিষ্টি রোদ্দুর আকাশ থেকে মাটির আঙ্গিনায় গড়িয়ে পড়ছে।
সেই রোদের আদর গায়ে মেখে সপরিবারে উইকেন্ডসে আমরা এসেছি এখানে ভালোবাসার টানে। বহুবছরের ঋণ মনে হয় জমা হয়ে আছে এই খোলা মাঠের মায়ায়।মিহির বলল, তুমি ব্যাটা শ্বশুরঘর এসে কবি হয়ে গেলে।সোমা বলল,এটা আমার জন্মভূমি দাদা আপনাদের আনতে পেরে ভালো লাগছে খুব।
রজত সোমাকে বললো তোমার গ্রাম সম্বন্ধে কিছু বল। সোমা বললো সিঙ্গি হল বাংলার প্রাচীন গ্রাম। এই গ্রামেরই নদী পুকুর খাল বিল জলাশয় সব আছে। ফসল বিলাসী হওয়ার গন্ধ আছে সিঙ্গীর মাটির উর্বরতায় ফুলে ফলে ফসলের সুন্দর গ্রাম।
বাংলার সব পাখিরা কমবেশি সিঙ্গীর আকাশে বাতাসে ঘুরপাক খায়। তিনি বিখ্যাত করেছেন ইতিহাসে স্থান করে দিয়েছেন।কবি কাশীরাম দাস সংস্কৃত থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন মহাভারতের কাহিনী। এই মহাপুরুষের জন্মভিটার সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা দিনে তাঁর ভিটাতে দাঁড়িয়ে তাঁকে শ্রদ্ধাসংগীত শোনাতে পারি। তারপর রিমি অনেকটা হেঁটে গিয়ে দাসপাড়া পেরিয়ে গিয়ে বটবৃক্ষের তলায় দাঁড়াল উদাস হয়ে। এই স্থানের মাটি কপালে বুলিয়ে নিল একবার। সবাইকে ক্ষেত্রপালের মন্দির নিয়ে গেল। ক্ষেত্রপাল বটবৃক্ষষের নিচে অবস্থিত। তারপরে রাস্তা দিয়ে গিয়ে সোজা শিব মন্দির।
এখন পাকা রাস্তা হয়ে গেছে বুড়ো শিবের মন্দির যেতে। রিমা বলল, ছোটবেলায় আমরা মাটির রাস্তা ধরে ধুলোমেখে ঘরে ঢুকতাম। বর্ষাকালে এক হাঁটু কাদা হয়ে যেত। গোরুর গাড়ি ছাড়া কিছুই যান ছিল না। আর ছিল পাল্কি। গ্রামের ছেলেমেয়ের বিয়ে হলেই শুনতাম পাল্কির গান।
এবার ওরা আনন্দময়ীর মন্দিরে গেল। সেখানে সবাইকে দেখালো এবং পাশের গ্রাম আছে। সেখানেও তারা যাবার ঠিক করল।
তারা নিশ্চিন্তে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে সিঙ্গীতে থেকে গেল কয়েকদিন। পারিপার্শ্বিক অবস্থানের থেকে সামান্য দূরে রয়েছে যোগাদ্যা সতীপীঠ।ক্ষীর গ্রামে অবস্থিত।
ঝঙ্কেশ্বরী মন্দির আছে মশাগ্রামে। এর জন্য বিখ্যাত গ্রামটি। এসব মন্দির ঘুরে বেরিয়ে দারুণভাবে ছুটি উপভোগ করা যায়।
সোমার জন্মভূমি এই সিঙ্গি গ্রামে। সে হঠাৎ হাটবারে এক গ্রামবাসীর দেখা পেয়ে গেল। তাকে সে দাদু বলতো।সেই বয়সেও তিনি প্রতি হাটবারে ঘর ছেড়ে হাতে চলে আসেন এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকেন হাট দেখেন দেখেন বড় আজব মানুষ।
দাদু কথায় কথায় বললেন কাশীরাম দাস গ্রন্থাগার উদ্বোধন করতে এই গ্রামে নাকি ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় এসেছিলেন সে বহুকাল আগেকার কথা।চারজন মিলে সঙ্গীতে বেশ আনন্দ করলো খাওয়া-দাওয়া দই-মিষ্টি কোন কিছুর অভাব নেই শহরের যাবতীয় সুবিধা এই গ্রামে থেকেও পাওয়া যায়।এবার বাবা-মাকে ছেড়ে সোমার কলকাতা যাওয়ার পালা পালা সকলেই তৈরি হয়ে সকাল বেলা রওনা হলো কিন্তু রিমার চোখে জল দেখে সকলের মন খারাপ হয়ে গেল এখন ছেড়ে যাওয়ার সময় চোখের জল নিয়ে তাকে গ্রামকে আবার কোনদিন আসার অপেক্ষায় চলে যায় তারা।মনে থাকবে তার সিঙ্গি গ্রামের বারুই, মাটির ঘরের চাল খড় দিয়ে ছাইয়ে দেয়। ঘরামি দুই থেকে তিনফুটের মাটির দেওয়াল তৈরি করে ধীরে ধীরে। তারপর বারুই বাঁশ আর খড়ের সাহায্য নিয়ে চাল তৈরি করে। বারুইরা তবু খুব গরীব ছিল।সামান্য মজুরিতে সংসার চলত না। একটা প্রবাদ আছে, বারুই এর ঘরের চাল ফুটো থাকে চিরকাল ।
কবি জসিমউদ্দিনের নকশি কাঁথার মাঠে, বারুই নায়ক ছিল রূপাই।
মাটির সহজলভ্যতা, প্রয়োজনীয় উপকরণ আর শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় আমাদের দিনে মানুষ মাটির ঘর, খড়ের ঘর বানাতে বেশ আগ্রহী ছিল। এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়ের ছাউনি দেওয়া হতো। মাটির দেয়ালের চারপাশ ঘিরে গ্রামের সৌখিন গৃহিণীরা মাটির দেয়ালে খাটুনি দিয়ে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে তাদের নিজ বসত ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। এটা ও এক ধরনের আনন্দ ছিল আমাদের মাঝে।
পূর্ববর্ধমান জেলার খড়ের ঘরের কারিগর উদয়চাঁদ বলেন , এসব খড়ের ঘর তৈরি করতে আমাদের সময় লাগত মাসখানেক । স্বল্প খরচে তৈরি করা হতো এসব ঘর। এই আধুনিকতার দিনে খড়ের তৈরি এসব ঘর এখন আর চোখে পড়ে না। এই ঘরগুলো গরমে থাকার জন্য বেশ আরামদায়ক গরমের দিনে শীতল থাকে খড়ের ঘরগুলো। তাই এই ঘরকে গরিবের এসিও বলা হয়ে থাকে। আমাদের নবগ্রাম অঞ্চলে ৮০ থেকে ৯০ এর দশকে প্রতিটি বাড়িতে একটি করে হলেও খড়ের ঘর চোখে পড়ত। প্রায় প্রতিটি গ্রামেরই ছোট খড়ের ঘরগুলো ও ঘরের পরিবেশ সবার নজর কাড়ত। এ যেন এক রাজ্য। ঝড়, বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও শীত থেকে বাঁচতেও এই ঘরের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু কালের বিবর্তনে দালানকোঠা আর অট্টালিকার কাছে হার মেনেছে চিরচেনা মাটির ঘর। এই ঘরগুলো একশো বছরের বেশি টিকত। এখন ইঁটের বাড়ি জনপ্রিয় হয়েছে। মাটির ঘর ও খড়ের চাল এখন কম দেখা যায়।
বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস সম্পর্কে জানার সময়, গৌরের মতো আর কিছু গন্তব্য হতে পারে না।…..
এপিসোড-১ (প্রথমাংশে রেল-জংশন) সে তিন যুগ আগের কথা।ঢাকা থেকে এসে বিল্টু মামা নেমেছেন কুলাউড়া জংশন…..
কবি কাশীরামদাসের জন্মস্থান পূর্ববর্ধমান জেলার সিঙ্গিগ্রামে বেড়াতে গেলাম।তাঁর জন্মভিটের ভগ্নাবশেষ দেখলাম।আমি,মিহির,রিমি,সোমা,রজত সকলে গ্রাম ঘুুুুরলাম। চারদিকে…..
হঠাৎ করে ঠিক হওয়া প্ল্যানে এয়ার ইণ্ডিয়ার যান্ত্রিক পাখীর পেটে ডিমের মত চুপচাপ থেকে, যখন …..