করাচিতে নজরুল
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
আজকালের নারী শক্তি ত্যাগ এবং সাহসের প্রতিমূর্তি মহিলারা এখন স্বাবলম্বী ভালো সচেতন এবং আর্থিকভাবে স্বতন্ত্র। খেলাধুলা রাজনীতি শিক্ষা ক্ষেত্রে যাইহোক না কেন তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। মহিলারা প্রতিটি পদক্ষেপে পুরুষদের সাথে একসাথে মিছিল করেছেন। গৃহিণী থেকে সিইও পরবর্তীতে সক্ষম হয়েছে। আগে তারা স্বামী বা পিতার ছায়া ছিল তবে এখন তারা তাদের নিজস্ব পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং স্বতন্ত্র হয়েছে। অথচ আমরা দেখতে পাই বাংলা ভাষায় অধিকাংশ হয়রানিমূলক কথা, গালি, তিরস্কারমূলক শব্দই সাধারণত নারীকে অবমাননা অথবা হয়রানি করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
সেই সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি নারীকে যে নানা ধরণের মানসিক নিগ্রহের শিকার হতে হয়, তার একটি বড় অংশ হয় নেতিবাচক নানা শব্দের মাধ্যমে। কোন ঝগড়া বিবাদে নারী বিভিন্ন ধরনের মৌখিক সহিংসতার শিকার হয়। ‘ঘরে-বাইরে প্রথমেই একজন নারীকে ভাষার মাধ্যমে হেয় করা হয়, যাতে সে মানসিক ও সামাজিকভাবে এগোতে না পারে। শব্দ, বাক্য এবং উক্তি-তে কোনো লিঙ্গ থাকার কথা না। কিন্তু সেই ভাষাকেই লিঙ্গ অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে।
যেমন: অনেক সময় মেয়েদের পরিচয় করিয়ে দিতে মেয়েমানুষ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। মানুষ হিসেবে পরিচয় করানো হয় না। আমরা বুঝে না বুঝে সবাই-ই ভাষার মাধ্যমে নারীকে হেয় করি।’
হয়ত খেয়াল করেছেন আপনার আশপাশে প্রচলিত বেশিরভাগ গালির সাথে স্ত্রী লিঙ্গের সম্পর্ক রয়েছে। অনেক তিরস্কারমূলক শব্দের পুরুষবাচক কিছুই নেই। ভাষা যেকোন সমাজের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটায়। যেহেতু ভাষা যেকোন সমাজের মানুষের ভাবনাকে ধারণ করে, ফলে কোন সমাজে নারীর অবস্থান সেই সমাজে নারীর প্রতি ব্যবহার হওয়া ভাষার মাধ্যমে বোঝা যায়।
ভাষার মাধ্যমে লিঙ্গীয় বৈষম্য কী?
আমাদের বিভিন্ন ভাষাবিদ ও সমাজতাত্ত্বিকেরা অনেক সময়ই ভাষার মাধ্যমে লিঙ্গীয় বৈষম্যের কথা বলে থাকেন। নারীর প্রতি তিরস্কারমূলক কিছু শব্দ নিচে দেও্যা হলো
যেমন ধরুন, আমাদের সমাজে কিছু প্রচলিত শব্দ আছে, যেগুলো বাংলা অভিধানেও রয়েছে, যে শব্দগুলো সাধারণত সবসময়ই মেয়েদের নেতিবাচক ভাবে বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন এই শব্দগুলো-
* মুখরা—যে নারী খোঁচা দিয়ে বেশি কথা বলে
* ঝগড়াটে—যে ঝগড়া করে, কিন্তু কোন আগ্রাসী পুরুষের জন্য এই শব্দ ব্যবহার হয় না
* মাল—আকর্ষণীয় নারী
* বন্ধ্যা—সন্তান নেই যার
* পোড়ামুখী—খারাপ ভাগ্য যার
এছাড়া কিছু শব্দ, বাক্য বা প্রবাদ ও প্রবচন রয়েছে, যেগুলো দিয়ে নারীর কর্মদক্ষতা, বা যোগ্যতা খাটো করা হয়। আবার কিছু শব্দ আছে, যেগুলোর পুরুষবাচক শব্দ বাংলা ভাষায় নেই, যেমন ধরুন-
* ডাইনী
* খানকী বা বেশ্যা
* ছিনাল
* কুটনি
* সতী ও অসতী
* নটী
এসব শব্দ নারীকে হেয় করে
সমাজে এই ধরণের শব্দের মাধ্যমে নারীকে যে হেয় করার চেষ্টা করা হয়। আমরা দেখেতে পাই, যখন কারো ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়, তখন তাকে মৌখিকভাবেও নির্যাতন মানে গালিগালাজও করা হয়। আর মানসিক নির্যাতন তো আছেই, যেমন তুমি এটা পারবে না, ওটা করবে না। আবার ধরুন কেউ অফিসে রয়েছে, তার ভয় থাকে বস কী বলবে। অর্থাৎ এক ধরণের ফিয়ার অব ভায়োলেন্স আছে।শহর-গ্রাম নির্বিশেষে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার সময় নানা ধরণের নেতিবাচক বা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার হয়।
বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে অল্প বয়সে মেয়েদের স্কুল থেকে ঝড়ে যাবার এটি একটি অন্যতম প্রধান কারণ। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাষার মাধ্যমে নারীকে হেয় করা বা হয়রানি করার প্রভাব পড়ে সমাজের প্রায় সব ক্ষেত্রে। সামাজিক বিভিন্ন কাজে নারীর অংশগ্রহণও এর ফলে কমে যায়।
সমাজতত্ত্ব কী বলে?
শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি সাফল্যের। একজন মহিলার তার অধিকার বুঝতে হবে যাতে সে পুরুষদের সাথে সমানভাবে চলতে পারে নারীমুক্তির যাত্রা অনেক দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসে তারা কয়েক দশক ধরে কঠোর সংগ্রাম করেছে তবে এখন তারা নিজস্ব পরিচয় সফল ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে এর আগে মহিলারা কেবল মাত্র গৃহিনী হিসাবে দেখা হত কিন্তু আজ অফিসে শক্ত ক্লায়েন্টের পরিচালনা করার পাশাপাশি তারা বাড়িতে সাফল্যের সাথে মাল্টিটাস্ক ও করে। নারীর ক্ষমতায়ন একটি দ্রুতগতিতে সমাজকে বিকাশের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারে।
আমার মতে “সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বলি মেয়েদের মেয়ে হয়ে এবং ছেলেদের ছেলে হয়ে উঠতে শেখানো হয়। লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার একটি বড় কারণ আমরা দেখেছি, ছেলেদের সমাজে শেখানো হয় ছেলেরা কাঁদবে না।
অর্থাৎ তারা আবেগ প্রকাশ করতে শেখে না, যে কারণে তারা সহিংস একটি প্রকাশের মাধ্যমে তারা আবেগ প্রদর্শন করে। এর পেছনে রয়েছে আমাদের গণমাধ্যমে নারীর উপস্থাপন কেমন তার একটি বড় প্রভাব।”
অনেক শব্দের মাধ্যমে নারী যে আহত বা অসম্মানিত হতে পারে, সে ব্যাপারে ধারণাও থাকে না অনেক মানুষের। কেবল ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হবার মাধ্যমে যে সমাজে নারী পুরুষের বৈষম্য অনেকটাই কমিয়ে আনা যেতে পারে। এর জন্য আমাদের উচিৎ শিশুদের ভাষার ইতিবাচক ব্যবহারে সচেতন করা, পাঠ্যপুস্তকে নারীকে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধি, সামাজিকীকরণের মধ্যেই পরিবর্তন আনা, নিয়ম-নীতি, আচার-আচরণ, সংস্কৃতি, পোশাক, সবকিছুতে পরিবর্তন এনে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা, সবার মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে ভাষা ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
করাচি বন্দরে এককালে গ্রিক-পারসিক-আরবীয় সওদাগরেরা নোঙ্গর করেছে; অনেক স্থাপত্য চিহ্ন আজো রয়ে গেছে; যা…..
তিনি বললেন, ভাষা হল ওষ্ঠের উপর সুধার মতো। আর বললেন, কবিতা যথেষ্ট স্বাদু, কিন্তু…..
রূপকথা পড়েছেন ছোট বেলায় অনেকে একথা আর বলা সন্দেহমুলক, প্রযুক্তির ব্যবহার জন্মের পর থেকে এখন …..
একটি পরাধীন দেশ আর তার বাসিন্দাদের মনে স্বাধীনতার আকুতি আমরা দেখেছিলাম ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে। এর…..