শুভ্রদীপ রায়ের পাঁচটি কবিতা

শুভ্রদীপ রায়
কবিতা
Bengali
শুভ্রদীপ রায়ের পাঁচটি কবিতা

ভ্যাম্পায়ার

বিগত তিরিশ বছরের রোদ্দুর আমার কাছে অসূর্যস্পর্শা।আমি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে উপভোগ করি ঘনান্ধকার আর অভ্যস্ত হয়ে পড়ি নিশাচর প্রবৃত্তিতে।আমার বশ্যরা বোঝে আমার ভাষা আর স্বদন্তের তীক্ষতা।আবহমান কাল ধরে ব্যয় হয় কাল অমানিশা,আমি তবুও আশা করিনা উচ্চকিত আলোকসম্পাত।

আমার স্বপ্ন গুলোও তামসিক আর কখনো সর্বনাশীর… আমার গহনকালো মৃত্যুকালে একটুকরো সূর্য!

 

আমি

নিজেকে বারবার ডাইসেক্ট করি অন্যের আরোপিত মাইক্রোস্কোপিক ক্রাইটেরিয়ায়।একটা  অসম্পূর্ণ ডি এন এ আর ধোঁয়াটে ভবিতব্য লেখা হয় জীবনের চার্টে। তুমি তো এক দূর্লঙ্ঘ দ্বীপ, অনতিক্রম্য দূরত্বে সহবাস করি। মৃত্যু আমার প্যারাসাইটিক ভালবাসা,কাঙ্খিত না; তবুও লিখিত প্রেডিকামেন্ট…

বিগাঠনিক মোচড় গুলো দুমড়িয়ে দেয় আমার কবিসত্তা। দীর্ঘকাল অপসৃত হয় এই বিনির্মানকামী চেতনাদের পূনর্নির্মাণে। আমি অপেক্ষায় থাকি আজীবন এই  ভাঙ্গচুরের সাক্ষী হতে। নিজের ব্যবচ্ছেদে নিজেই দিই হাতিয়ার সাপ্লাই- হৃদয়ের স্থানে পচা আবেগ আর মননের বদলে স্মৃতিবিভ্রম! খোলা পরে থাকি মর্গের শীতল আশ্রয়ে, পুনর্বার শুচি/ সূচি স্পর্শে জোড়া লাগতে এক আধিভৌতিক পন্থায়।

 

যুদ্ধ শেষে

স্রোত টা বড় অচেনা লাগছে সর্বনাশী

আমার দুহাতে কোন আয়ুধ নেই

নেই কোন ভালবাসা, এ এক ভারসাম্যহীন  যাওয়া আসা।

দ্যাখো আমার চোখে এক অদ্ভুত ঘোর লেগে আছে,

দু’ হাতে মুছতে চাইছি এইসব জাদুবাস্তব প্যারানইয়া!

মনের কথায় দেহ আর সায় দেয়না,

আমি অসাড় হয়ে  যাচ্ছি  দিনদিন এই কীটসীয় বিহ্বলতায়।

ধোঁয়াশ্বাস মেখে শেষ করব  যাত্রা

দু’হাতে কিছুই নেই আমার, শুধু জিভে লেগে আছে রক্তের স্বাদ!

 

খ্যাতির বিপরীতে

একঝাঁক আলো আর বিনিদ্র নিস্তব্ধতা,

সারি সারি বিভীষিকা ঘাঁই মারছে আশেপাশে!

আসন্ন আলোকবর্ষে আমি নিভুনিভু প্রদীপ হব,

এতো উজ্জ্বল উপস্থিতি ঝলসে দিয়েছে এ’জন্মের অক্ষিগোলক।

আকর্ষিত যত  অনিবার্য পতঙ্গাদি আমার সূক্ষ শ্লেষে পুড়েছে

সকলেই সুতনূকা নয়,কেউ কেউ অনাম্নী!

প্রজ্জ্বলিত সব দ্বন্দ্বের অবসান ঘটুক,

সর্বনাসী বুকভরা আঁধার দে, আশ্লেষে মুখ ডোবাই।

 

আগুন তুমি

 

১/   বালি সায়র ছেনে

আজ তোকে হাতে পেয়েছি

হে আমার অন্তরতম দাবানল-

একটি বার ঝলসে ওঠ – সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে…

২/ বুকের ঠিক পাশটায় দগদগে ক্ষত!

কাটাকুটি- কুৎসিত- বীভৎস!

একদিন দেখি সেখানে তড়িৎ বৃক্ষের নকশা,

আজকাল আগুন লিখতে আর ডরাই না।

৩/ ” চিনতে পারছেনা কেউ”

তবু তুমি হাতটুকু ধরলে

একা থাকার জো কোথায়?

বৃষ্টি না হয় ছাতায় ঢাকি

আগুন ঢাকি কিসে?

 

 

 

শুভ্রদীপ রায়ের জন্ম ১৯৮৭ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর।তিনি পশ্চিমবঙ্গের একজন প্রথম দশকের কবি। 'উত্তরের কবিমন' পত্রিকার চার সম্পাদকের একজন। ভিন্নস্বরের ও এক্সপেরিমেন্টাল লেখা লিখতে আগ্রহী।লিটারেরি থিওরি সম্পর্কিত বই,সিনেমা সম্পর্কিত লেখা, কমিক্স পড়তে ভালবাসেন। বাউল আর ক্লাসিকাল গান শোনায় আগ্রহী।আর ভাল লাগে...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..