শোধ

কাকন রেজা
কবিতা
Bengali
শোধ

অবুঝের কাব্য

যে বোঝে না ভালোবাসা কারে কয়
নিরর্থক তার সকল উদযাপন, জয়।

যে প্রাপ্তি বলতে বোঝে শুধুই দখল
চারিপাশে যা আছে, আকাশ মাটি, সকল!

ভূমি মানে যার কাছে মাংসপিন্ড, জমিন
শিশ্ন সেখানে স্বত্বের পতাকা, উড্ডীন!

যে শব্দ বোঝে না, কী যায় আসে ফিসফিসে,
যে রাষ্ট্র বোঝে না, তার স্বাধীনতা কিসে!

জোড়া পঙক্তি

পাখি শিকার নিষিদ্ধ
আহা, মানুষের যদি ডানা থাকতো।

অনেকে বলেন, মানুষের চেয়ে
প্রভুভক্ত কুকুর, আনন্দময়
হোক কুকুর জীবন।

 

প্রেম অপ্রেমের কাব্য

সময় অনেক হলো, হয়নি লেখা
কবিতাগুলো প্রেমের,
উস্কোখুস্কো দিন যে কাটে ভুলে
গাড়ির ভেতর বিরক্তিকর জ্যামের।

তারই মাঝে পেলাম দেখা ম্যামের
সুন্দরী আহা ভীষণ-
বলেন বন্ধু রোমান,
বিরহ শেষে বিষাদ
কষ্ট পেলে ঠেক খাওয়ারা জমান।

প্রেম কি তবে গেলো
এই বয়সে হাড়ের কী আর দোষ,
নড়তে গেলেই কেলো
ভেড়ার লোমে লুকায়
ছাই কালো এক দুর্বিনীত মোষ।

ম্যাম যে ছিলেন গরম তন্দুরি
কাছে যাবার পথে ছিলো কাঁটা,
ঘোরের মাঝে ভীষণ কাতর শরীর
দরোজা দুটো কঠিন করে সাঁটা।

অপ্রেমেতে আলোর কুহক জ্বেলে
হয়নি লেখা প্রেমের পয়ারগুলো,
দেহের ভেতর পাখনা দুটো মেলে
ছাই ফেলতে লাগতে পারে কুলো।

 

শোধ

শোধ নিচ্ছি শোধ
বোধহীন এক শোধ,
বলছো নির্বিবেক
ওইটা হলো ভেক।

গান্ডু হচ্ছে সব
হচ্ছে কিছু কেলো,
এথায় সেথায় ‘মব’
প্রাণ গেলো, প্রাণ গেলো।

যাচ্ছে যদি যাক
কতদূর আর যাবে,
সাপলুডুর ঘরে
সাপটা তাকে খাবে।

বিষের থলির নিচে
আটকে রাখা বোধ,
সাপটা হলো আমি
শোধ নিচ্ছি শোধ।

উপকথা

ভাঁড় আর ভাড়াটের ভিড় আজ খুব
জনহীন জনারণ্যে মানুষেরা চুপ।

মাটিও লজ্জা পায় ভাঁড়েদের ভিড়ে
এবং দীর্ঘশ্বাস থাকে বিক্ষোভের বুক চিরে।

দুই
এ কেমন দিন এলো, ভাড়াটে মালিক বনে
গৃহ ছেড়ে গৃহস্থের দিন কাটে পলায়নে!

তিন
মনুষ্য খামার আজ পশুর দখলে
ঈশ্বর বিস্মিত আর মানুষ সকলে!

ভাঁড় আর ভাড়াটেরা মিলে
উড়ায় ফানুস আজ মৃতের মিছিলে।

 

আমার শহর

নাড়িপোঁতা ঠিকানা আমার
ছেড়ে আছি দূরে –
খুব মনে পড়ে
তোমায় শহর ঢাকা,
বুকের ভাঁজে একটা জমিন
তোমার জন্যেই রাখা।

সুমনার সাথে প্রেম
সুদূর কৈশোরে
মনে পড়ে, সরে-অবসরে
নিমগ্ন আঁধার খুব
একাকি সন্ধ্যায় রেললাইন চুপ!

রেল নেই তবু ঝিকিঝিক
বেজে যায় গোপন গহীনে ঠিক,
সুমনা আবার চলো
উড়াই প্রেম দুজনে চারিদিক।

নাড়িপোতা শহর আমার
বিসর্জনের বিষাদ বাজে বুকে,
ফিরবো ঠিক তোর কাছে
ফিরে আসার তীব্র উৎসুকে।

নিশ্চিত জানিস, যায়নি কিছু চুকে-
সুমনা থাকুক, খুব একা দূরে
আমি ফিরি কৈশোরে।

অনেকতো হলো, যায় কী আর
তোকে ছেড়ে থাকা,
কৈশোরের ফেলে আসা প্রেম
আমার প্রিয় শহর ঢাকা।

 

কাকন রেজা। লেখক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক। জন্ম ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৬ মার্চ, বাংলাদেশে, ঢাকার উত্তর শাহজাহানপুরে। তারুণ্যের দিনগুলো পাড়ি দিয়েছেন লেখকের নিজ জেলাশহর শেরপুরে। তাঁর বাবা মরহুম আব্দুর রেজ্জাক ছিলেন, একাধারে লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিক। মা জাহানারা রেজ্জাক এক সময়ে ছিলেন...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..