রাজু ও ছিনতাইকারী
গার্মেন্টস কর্মী রাজু। শক্তপোক্ত যুবক, তবে চেহারাটা নিরীহ ধরনের। ঈদের ছুটিতে দেশের বাড়ি যাচ্ছে রাজু।…..
ঈদে সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে হাসিব। তার স্ত্রী ঈদের শপিং-এ মগ্ন। চারপাশে নানারকম মন খারাপের ঘটনা ঘটছে। তাতে কী! বানের পানিতে মানুষ ভাসছে বলে মিসেস হাসিব তার
ফেশিয়াল -পেডিকিওর-ম্যানিকিওরের এপয়েনমেন্ট বাতিল করতে পারে না। হাসিব একবার বলেছিলো, পার্লারের এপয়েনমেন্ট বাতিল করো।
মিসেস হাসিব বলেছে, ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়সে বলে কী স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার মালয়েশিয়া সফর বাতিল করসে? তুমি কী মন্ত্রীর চেয়ে বেশি বোঝ!
হাসিব কাজের ফাঁকে তার বাবাকে ফোন করে।
–আব্বাজান আমরা ঈদের আগের দিনই পৌঁছে যাবো।
বাবা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলেন, এইবার ঈদে না আসলে হয় না বাজান!
–এইটা তুমি কী কইলা আব্বাজান; তোমার নাতি-নাতনি-বৌমা সবাই রেডি হইছে; আর তুমি নিষেধ করতেছো!
বাবা টেলিফোনের ওপারে চুপচাপ হয়ে যায়। হাসিব অভিমানের সুরে বলে, নাকি ডেঙ্গি ভাইরাসের ভয় পাইতেছো; ভাবতেছো আমরা ডেঙ্গি ভাইরাস ব্যাগে কইরা আনতেছি। আমরা সবাই টেস্ট করাইছি আব্বা। সবারই নেগেটিভ আসছে। মানে ডেঙ্গি হয় নাই।
বাবা বলে, মনে কিছু নিওনা হাসিব। খালি ডেঙ্গি ভাইরাস না ; তুমি যতবার গ্রামে আসো, বড় চাকরির ভাইরাস, বড় গাড়ির ভাইরাস, শহুরে বউয়ের ভাইরাস; ইংলিশ বলা বাচ্চা-কাচ্চার ভাইরাস এইগুলি গ্রামে ছড়াইয়া পড়ে। ফলে যারা সুখে আছিলো; তাগো মনে অসুখি ভাইরাস বাসা বাঁধে। গত ঈদে ফেসবুকে তুমি সপরিবারে সিঙ্গাপুরে ঘুরার ছবি দিছিলা; ঐডা দেইখা; এক পোলায় জমিজমা বেইচা সিঙ্গাপুর যাওয়ার হুজুগ তুইলা তার বাপেরে পথে বসাইছে।
হাসিব চুপসে যায়। তার নিজের কাছেও মনে হতে থাকে গ্রামে সম্পন্ন জীবন ছিলো তার; কোন প্রয়োজন ছিলো না এই প্লাস্টিক জীবনের জটিল গোলকধাঁধায় ঢুকে পড়ার। সে নীচু গলায় বলে, ঠিক আছে; আপনি যা বলবেন; তাই হবে।
মিসেস হাসিব বাইরে থেকে ফিরে দেখে হাসিব চুপচাপ সোফায় বসে আছে। শপিং-এর জিনিসপত্র রাখতে রাখতে জিজ্ঞেস করে, আব্বার সঙ্গে কথা হইসে! বলসো আমরা আসতেসি।
হাসিব উত্তর দেয়, আব্বাজান এইবার ঈদে যাইতে নিষেধ করছেন।
–হোয়াট! তাই কী হয়! কী উলটাপালটা বলতেসো।
–আব্বা বললেন আমরা নাকি ভাইরাস। আমরা গেলে গ্রামের মানুষেরা অসুখি হইয়া ওঠে!
মিসেস হাসিবের প্রথমে বুঝতে অসুবিধা হয়। মনে মনে ভাবে সবাই তো খুশি হয় আমরা গেলে। তার পর বলে,আমরা গেলে গ্রামের সবাই এতো খুশি হয় যে আমাদের ভি আই পি ট্রিটমেন্ট দেয়।
–সমস্যা তো সেখানেই। আমরা গ্রামে গেলে ভি আই পি ভাইরাসটা ছড়ায়। গ্রামের অনেক মানুষ তখন কী করে ভি আইপি হওয়া যায় সেই চেষ্টায় এতোদিনের সহজ-সরল সুখটাই হারিয়ে ফেলে।
–আমরা তো আমাদের গাড়ির জন্য ফেরি আটকে ঘাটে অপেক্ষায় থাকা এমবুলেন্সের রোগি মেরে ফেলি না; গাড়ির সঙ্গে পতাকা লাগিয়ে ‘অমুক ভাই’ ‘তমুক বুবু’ হয়ে ঘুরিনা। আব্বা ওভার রিএক্ট করছেন। আমি কথা বলবো উনার সঙ্গে।
–এখন থাক; সময় আছে; পরে কথা বোলো। আর ফেসবুকে বেশি বেশি ছবি দেওয়া বন্ধ করো; তোমার ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’ সিরিজের ছবি দেখে আমাদের গ্রামের এক ছেলে বাপের জমিজমা বেচে সিঙ্গাপুরে যাবার চেষ্টা করছে। ওদিকে বাপ পথে বসে গেছে।
মিসেস হাসিব তার শ্বশুরকে ফোন করে, হ্যালো আব্বা; আপনার কথা শুনে খুব মন খারাপ হলো। আসলে আমি এতো দিন ভাবতাম ঘুষ-দুর্নীতি-চাঁদার পয়সায় যারা বিলাসিতা করে তারা অপরাধ করে। কিন্তু আমরাও একটা অপরাধ করেছি নিজেদের উপার্জিত পয়সায় একটু শৌখিন হয়েছি; সেটা মনে হচ্ছে একটু লোক দেখানো হয়ে গেছে। থ্যাংক ইউ আব্বা; আপনি সচেতন করায় আমরা এখন শো-অফ ভাইরাসমুক্ত।
ফোনের ওপারে হো হো করে হেসে কুটি কুটি হন হাসিবের বাবা।
গার্মেন্টস কর্মী রাজু। শক্তপোক্ত যুবক, তবে চেহারাটা নিরীহ ধরনের। ঈদের ছুটিতে দেশের বাড়ি যাচ্ছে রাজু।…..
রাত নেমেছে; ভাওয়ালপিন্ডির রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে এসেছে। নিয়ন বাতিগুলো আলস্যে হাঁই তুলছে। ঘর মুখো…..
নতুন দিল্লিতে প্রণব মুখার্জি নেই। কোয়ালিশন ইয়ারস-এর সেই প্রাজ্ঞ চাণক্যের কলমটি ধুলোমাখা ডেস্কের কলমদানিতে আকুল…..
নবম শ্রেণীতে জোনাথন সুইফটের গালিভারস ট্রাভেলস চিন্তাজগতটাকে পালটে দিয়েছিলো। ছোটবেলায় রঙ্গিন ছবি-অলা গালিভারস ট্রাভেলস-এর শিশুতোষ…..