যাযাবর
যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..
জ্বলন্ত একটা রাতে পথ ভুল ক’রে উড়ন্ত পেঁচার দল
নেমে আসে আমার সাদা পৃষ্ঠায়
দ্য স্টারি নাইট সৃষ্টি হয় আমার রোম কুপের শেকরে বাকরে
পিকাসো কিংবা ভ্যান গঘের মতো নিখুঁত পাথরে খোদাই
স্বপ্ন ভেঙে শিল্প আসে।
ভেঙে গেল ইশ্বরের বিগ্রহ,
প্রার্থনারত খ্রিস্টান অথবা
নামাজ পাঠরত মুসলিম
বুলেটের ঘায়ে স্বর্গে গেল বা জন্নতে
কিংবা নিরুদ্দেশ কোথাও…
আমি জঘন্য এক রাত জেগে দেখেছি
ওদের রক্ত লালই ছিল
আর
হিন্দু – খ্রিস্টান – মুসলিম তকমাওয়ালা ডেডবডিগুলো
আসলে মানুষ ছিল।
যদি পৃথিবীর সব শিশু কেঁদে ওঠে একসাথে
তবু তুমি নিজেকে বলবে মানুষ!
যদি সব নারী ধর্ষিতা হয়
তবু বলবে!
যদি সব গাছ কাটা পড়ে যায়
যদি সব নদী শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়
তবু তুমি বলবে – আমি মানুষ!
ভেবে দেখো –
মুঠোফোনে বন্দি মানবিকতারা
ক্রমশ মৃত্যুপথযাত্রী।
মানুষ আর কেউ নেই।
আজকে আমার ভীষণ জ্বরে জানলায়
মালভূমিকেও সাজাতে চাই আলনা
গ্রীষ্ম দুপুর পুড়ছে পাখির পাখনা
স্মৃতিরা সব হারিয়ে যাচ্ছে, যাক না।
মাথার ওপর কে বাঁধে জলপট্টি?
রাস্তার মোড়ে ঘুমিয়ে গেছে বটটি,
সিলিং ছাড়া জায়গা তো নেই কোত্থাও
এগোচ্ছি না, থামলাম অগত্যা।
বাস স্টপে আর দাঁড়াচ্ছে না রিক্সা
বোষ্টমিরাও ছাড়লো বুঝি ভিক্ষা,
গোপাল দাদার চায়ের দোকান বন্ধ
পুড়ছে শহর ছড়াচ্ছে ছাই গন্ধ।
মানুষ যখন কড়াত চালায় বিস্তর
প্রতিবাদের পেরেক ঠুকছে ইশ্বর।
এ যুগে শিশুরাও নিষ্পাপ নয়,
হ্যাঙ্গারে ঝোলানো ঘড়ির কাঁটা পরিত্যাগ করেছে মসৃণ বায়ু,
ঘাসের ওপর নগ্ন পা ছোঁয়ালে সুরসুরি দেয় না আর
কন্টক ভদ্রতা দাঁত খিচিয়ে হাসে :
ফুলগুলি শক্ত কাঠ
মিইয়ে গেছে প্রজাপতির ডানা।
কবিকেও আজ পোশাক খুলে নিষ্ঠুর হ’তে হয়।
সমুদ্রের ধারে সভ্যতা দাঁড়িয়েছে এক বুক নিশ্বাস নেবে ব’লে,
কারখানার কালো ধোঁয়ার ভ্রুকুটি দুঃস্বপ্ন দেখায়।
বৃদ্ধ পৃথিবীর মৃত দৃষ্টিশক্তি
যেন ঠাকুরদাদার শীর্ণ হাত সবুজ হাতরায়।
যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..
কবি গো ওওও,আর যত গুণীজন কি দিয়ে পূজি তোমাদের চরণ আমি যে অভাগা জানি না…..
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..