পাগল
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
পাঠকদের প্রায় জনেই হয়ত জানেন, সমকাম কি ? সমকামী কারা ? সমকামীর প্রকারভেদ, কেন একজন মানুষ সমকামী হয়, আর সমকামী সম্পর্কে রাষ্ট্র পরিবার আর ধর্ম কি বলে। তারপরেও যেহেতু সমকামী বিষয়ক কিছু লেখার তাগিদ নিয়ে লেখতে বসেছি তাই ভূমিকা স্বরূপ সমকামীর পরিচয় আর অন্যান্য কিছু তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তাও মনে করছি । আমরা জানি সমকামিতা (ইংরেজি: Homosexuality, হোমোসেক্সুয়ালিটি) বা সমপ্রেমিতা বলতে সম লিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি “রোমান্টিক আকর্ষণ, যৌন আকর্ষণ অথবা যৌন আচরণ”কে বোঝায়। মহিলা সমকামীদের বোঝাতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দটি হল ‘ লেসবিয়ান ‘ এবং পুরুষ সমকামীদের ক্ষেত্রে ‘ গে ‘ শব্দ ব্যবহৃত হয়, যদিও ‘ গে ‘ কথাটি প্রায়শ সমকামী মহিলা ও পুরুষ উভয়কে বোঝাতেও সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । ইতিমধ্যেই আমরা জেনেছি ২৪০০ খ্রিঃ পূঃ মিশরের খ্নুমহোটেপ ও নিয়াঙ্খ্নুম-কে ইতিহাসে নথিভুক্ত প্রথম সমকামী যুগল বলে গণ্য করা হয়, কিন্তু সমকাম নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে নানান শাস্তির ব্যবস্থা প্রণয়ন করে একের পর এক, কারাবাস, মৃত্যুদণ্ড আরও কত কি, কাজ হয়নি, সমকাম চলছেই, দিনদিন তা বেরেই যাচ্ছে, এ সব আমরা সবাই জানি। আমরা এও জানি যে বর্তমান সভ্য আধুনিক পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে বসবাসরত সমকামীরা তাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনও করছে, তারা বিয়ে করতে চায়, সংসার করতে চায়, তাদের নানান আবদার, কিন্তু সংসার মানে যে শুধু সেক্সের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় সমকামীরা কিছুতেই তা বুঝতে চায় না, তারা তাদের কাজ করবেই, তারা সরকারকে বাধ্য করতে চাইছে এই সব বেপারে, তাদেরকে যেন রাষ্ট্রীয় ভাবে সম লিঙ্গের সহিত ঘড় সংসার করার স্বীকৃতি দেয় এই নিয়ে তারা আন্দোলনও করছে বিভিন্ন ভাবে । সরকার পরেছে এই নিয়ে মহাবিপদে, এরেই মধ্যে সমকামীদের গোলমাল সইতে না পেরে ১৯৯৮ খ্রিঃ হাওয়াই রাজ্য সম লৈঙ্গিক বিবাহের বিরুদ্ধে সংবিধান সংশোধন করে ২০১৩ খ্রিঃ রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল সম লৈঙ্গিক বিবাহের স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাশ করায়, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সেই দেশে সমকামী বিবাহকে বৈধ বলে ঘোষণা করে । মাঝে মাঝেই দেখা যায় সমকামী সম্প্রদায় দলবল নিয়ে বের হয়, শ্লোগান দেয়, মিছিল মিটিং করে । গুরুতর সমকামীরা ধর্ম নিয়ে ততটা মাথা ঘামায় না, পৃথিবীর সকল ধর্মই তাদরে কাছে মূল্যহীন, ধর্ম বলতে তারা বোঝে অবুঝ মানুষ নিয়ে এক প্রকার রাজনীতি, এইসব কট্টরপন্থী সমকামীদের ধারনা তারাই পৃথিবীর সব চেয়ে আধুনিক মানুষ, লে-টেস্ট ভার্সন ।
আবার কিছু সমকামী আছে যারা সাধারণ মানুষের মত ঘরসংসার করে, তাদের বউ বাচ্চা সবেই থাকে তবও সম লিঙ্গের প্রতি কামবাসনা তীব্র, সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে, এই সব মুখোশ ধারী সমকামীদের নিয়ে বড় ঝামেলা সৃষ্টি হয় আমাদের সমাজে সংসারে, তারা যে কোন ভদ্র লোকের ইজ্জত মারতে সামান্যতম দ্বিধা করে না কখনো, তারা শিশু কিশোর কিছুই বাদ রাখে না, যেখানে সুযোগ-পায় সেখানই তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে ।
লিঙ্গ নিয়ে বিজ্ঞান অনেক কিছু বলে, আমি বিজ্ঞানী নই, আমি লেখক মানুষ, বিজ্ঞান নিয়ে লেখা আমার শোভা পায় না, তবও লিঙ্গ নিয়ে বিজ্ঞান কি বলেছে তা একটু তুলে ধরছি, বিজ্ঞান মতে, বায়োলজিকাল ফ্যাক্টর অনুসারে জন্মের আগেই জিন ও হরমোন লিঙ্গ পরিচয়ের উপর প্রভাব ফেলে, হরমোন জনিত প্রভাব বেশ জটিল । ভ্রূণের ক্রমবিকাশের খুব প্রাথমিক ধাপে লিঙ্গ নির্ধারণকারী হরমোন তৈরি হয় এতে প্রকৃতিগত ভাবে নির্দিষ্ট এক লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ করা যে প্রবণতা কাজ করার কথা, তা বিঘ্নিত হয় অথবা বাহ্যিক যৌনাঙ্গের গঠন প্রভাবিত হয়, আরও অনেক কিছু, ইত্যাদি ইত্যাদি। বিজ্ঞানের কোন কোন গবেষক মূলত বলতে চাইছেন, জিন, হরমোন এই সব কারণেই একজন মানুষ মানুষিক ভাবে লিঙ্গ প্রেমিক হয়, আরও পরিষ্কার করে বললে এই কারণেই মানুষ সমকামী বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত হয় তার জীবন কালে ।
বিজ্ঞান থাকুক, সমকামীর ভূমিকা ব্যাখ্যা তাও থাকুক । আসুন আমরা শৈশবের কিছু পড়া আবার পরে নেই, আমরা জেন্ডার বা লিঙ্গ নিয়ে পরেছিলাম, লিঙ্গ ৩ প্রকার, ১/ পুং, ২/ স্ত্রী, ৩/ ক্লীব। পুং বলতে আমরা পুংজাতীয়, স্ত্রী বলতে নারীজাতীয় বা মেয়ে সম্প্রদায়কে, আর ক্লীব বলতে বুঝি নপুংসক বা হিজড়া জাতীকে, যে জাতী বীর্য বা বিক্রমহীন কিন্তু মানুষ, তার মানে ক্লীব হলো পুরুষও নয় স্ত্রীও নয় এমন মানুষ, এই ক্লীব লিঙ্গের তেমন গুরুত্বপূর্ণ যৌনমিলন নেই, এরা দৈহিক মিলন বলতে যা করে তা এক প্রকার খেলা তামাশা ছাড়া আর কোন কিছুই নয়, তা ছাড়া এরা স্বাভাবিক সমাজেরও অন্তর্ভুক্ত নয়, তাদের জীবনযাত্রা আলাদা, এই বিষয়ে আমরা সবাই মোটামুটি অবগত আছি, তাই ক্লীব লিঙ্গ নিয়ে তেমন কিছু লিখলাম না, ওদের যেহেতু লিঙ্গই নেই তাই এরা সমকামী না বিপরীত লিঙ্গে আগ্রহী এই সমর্পকে গুরুত্ব না দিয়ে স্ত্রী এবং পুরুষ নিয়ে লেখাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে ।
আমরা আগেই জেনেছি সাধারণত সমকামী বলতে বুঝি পুরুষ পুরুষে যৌন মিলন বা নারী নারীতে যৌনমিলন, মানে বিপরীত লিঙ্গের সহিত যৌনমিলন না করে সম লিঙ্গের প্রতি যৌনমিলনকে সমকামিতা বলা হয় । এখন বেপারটি আমরা নিজ থেকে একটু ভাবি, ধরুন ফট করে আপনি শুনলেন বা বুঝতে পাড়লেন আপনার ভাই, বোন বা সন্তান বা যে কোন আত্মীয় সমকামী হয়ে গেছে, তখন আপনার কেমন লাগবে ? সমকামী আত্মীয়ের প্রতি আপনার কেমন ধারনা হবে ? আপনার ছেলে অন্য একটি ছেলের সঙ্গে দৈহিক মিলন করে, অন্য একটি ছেলে আপনার ছেলের মাধ্যমে দৈহিক চাহিদা মেটায় । যে মেয়েকে খুব আশা করে বড় করছেন আপনি, বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হবে সে, আর সেই মেয়ে হয়ে গেছে সমকামী, কেমন লাগবে আপনার ? নিশ্চয় ভালো লাগার কথা নয়, আপনার বন্ধু মহল আপনাকে দেখে টিটকারি দিবে, হাসবে, পাড়ার ছেলেরা মনে মনে বলবে, অ্যাঙ্গেলের মেয়ে আমাদের চোখে দেখে না ? আপনার মরে যেতে ইচ্ছে হবে, কোন একদিন দেখা যাবে সিলিং ফ্যানে গামছা বেধে ঝুলে আছেন নয়ত বাসার ছাদ থেকে লাফ মেরে বর্তা হয়ে গেছেন আপনি । আসুন আমরা আরো গভীরে যাই, আরও পরিষ্কার করে বলি, মনে করুন আপনি পুরুষ আর অন্য একটি পুরুষ আপনার সঙ্গে দৈহিক চাহিদা মেটায়, একদিন নয় দু দিন প্রায় দিন, আপনি পুরুষ হয়েও সম লিঙ্গের কারো ভোগ বিলাসের মানুষ হয়ে গেছেন, তখন আপনার কেমন লাগবে ? আপনার কি ইজ্জত যাবে না ? আপনি নিশ্চয়ই আমার মতই অপমানবোধেই করবেন, আর অন্য একটি পরুষের মাধ্যমে যদি আপনার দৈহিক চাহিদা মেটাতে হয় তখন আপনি নিজেকে কাঙ্গাল বা বর্তমান সময়ের অযোগ্য মানুষ ভাবতে সামান্যতম দ্বিধা করবেন না । পৃথিবীতে শত লক্ষ মেয়ে থাকার পরেও পুরুষের মাধ্যমে আপনার যৌন চাহিদা মেটাতে হয় বেপারটি অবশ্যই ভালো লাগার কথাই নয় । ধরা যাক কোন কারণে এই বেপারটি আপনার ভালো লেগেই গেলো, তার পরেই কিন্তু যৌন মিলনের যে প্রকৃত সুখ তা সম লিঙ্গের সহিত কখনই আপনার পাওয়া সম্ভব নয় । বিপরীত লিঙ্গের দেহের বিশেষ কিছু স্থান অঙ্গ প্রাকৃতিক ভাবেই সুখ দিয়ে থাকে যৌন মিলনে, যে অঙ্গ গুলো স্পর্শকাতর এবং যৌনমিলনের প্রতি বিপরীত লিঙ্গকে বিশেষ উৎসাহিত করে, ইন্দ্রিয় জাগায়, এই বেপারটি সম লিঙ্গের সহিত যৌন মিলনে আপনার পাওয়া সম্ভব হলো না কখনোই । এতশত বিষয় থাকার পরেও সমকামীরা তারা সমকামী হয়েই বেচে থাকতে চায় আনন্দ-বোধ করে ।
এবার আত্মজীবনী মূলক কিছু ঘটনা উল্লেখ্য করি । সময় কাল ১৯৯৬-১৯৯৮ খ্রীঃ আমি তখন গ্রামের এক উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করি, (বিশেষ কারণে বিদ্যালয়ের নাম আর উল্লেখিত স্যারের নাম লিখছি না) সেই বিদ্যালয়ে আমাদের ইংরেজি স্যার ছিলেন খুবেই মেধাবী এবং চটপটে, তিনি আমাদের টেনস যখন পড়াতেন তখন ইংরেজির জাহাজ হয়ে যেতাম সবাই, বার বার আমার মনে হতো আমি কেন স্যারের মতো না, যদি স্যারের মতো মেধাবী হতে পারতাম তবে হয়তো পৃথিবীতে আমার মত ইংরেজি আর কেউ বুঝতো না ! এই ইংরেজি স্যার সব বিষয়েই পারদর্শী ছিলেন, বার্ষিক ক্রিয়া প্রতিযোগিতা, স্কাউট, বিদ্যালয়ের মিলাদ মাহফিল, লোকাল অথবা রাষ্ট্রই বিশেষ ব্যক্তির আগমন উপলক্ষে যাবতীয় আয়োজন, সব কিছুরেই দায়িত্ব পড়তো এই ইংরেজি স্যারের উপর । কিন্তু প্রতি বছর আমাদের বিদ্যায় থেকে ছেলেদের টিম নিয়ে স্যার যখন স্কাউটে যেতেন তখনেই ঘটতো অন্য ঘটনা, শোনা যেত বিদ্যালয়ের অমুক ছেলেকে স্কাউটে নিয়ে স্যার জোর করে সেক্স করেছেন, বিনা পয়সা প্রাইভেট পরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে অমুক ছেলেকে বসে এনেছেন, জোর পূর্বক যৌনমিলন করতে গিয়ে স্যার ধরা খেয়েছেন, অপমানিত হয়েছেন, পরিশেষে ঘটনায় নির্যাতিত ছেলের অভিভাবক বিদ্যালয়ে নালিশ নিয়ে এসেছে, এই নিয়ে হেড স্যারের রুমে ব্যাপক হইচই । তারপর কিভাবে কিভাবে যেন ইংরেজি স্যার হাতে পায়ে ধরে চাকরি টিকিয়ে রাখতেন । প্রতিদিনকার মতো আবার চলতে থাকতো বিদ্যালয়, অন্যান্য স্যারেরা ইংরেজি স্যারকে তিরস্কার করেন, ছাত্ররা দূরত্ব বজায় রেখে চলে, আড়ালে হাসে, গালি দেয়, এই সব ইংরেজি স্যারের কাছে অপমানকর মনে হয় না, স্যার তার নিজের মতো করে চলতে থাকে ঠিক আগের মতো, তাকে দেখে মনে হতো যেন কিছুই হয়নি ।
সম্ভবত সেদিন কোন আর্টিকেল, বাড়ির পড়া ছিল আমাদের ক্লাসের, আমি তখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র, আমি পড়া মুখস্থ করে বিদ্যালয়ে আসিনি, ইংরেজি স্যার যখন পড়া বলতে বললেন আমাকে আমি তখন বলতে পারলাম না, ইংরেজি স্যার আমাকে তার কাছে ডাকলেন, আমি কাছে গেলাম, স্যার আদর করে আমার পিটে হাত বোলাতে বোলাত পড়ালেখার গুরুত্ব বোঝাতে থাকলেন, এক সময় দেখলাম স্যারের হাত আমার লিঙ্গের উপর, আমি ভদ্রতার জন্য মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছি না, স্যার লেখাপড়ার গুরুত্ব বোঝাচ্ছেন আর আলতো করে আমার লিঙ্গে হাত বোলাচ্ছেন, কিছুক্ষণ পর আমার কাছে দৃশ্যমান জগত ঝাপসা হতে থাকলো, সর্বাঙ্গ অবশ হয়ে যাচ্ছে এমন অবস্থা, সমস্ত শরীরে কি যেন বয়ে যাচ্ছে আমার, স্যার এই বেপারটা বুঝতে পেরে তার হাত বোলানো আরও বাড়ালেন, ক্লাস ভর্তি ছাত্র ছাত্রী অথচ কেও স্যারের এই বেপারটি দেখছে না, স্যার আমাকে তার চেয়ারের খুব কাছা কাছি নিয়ে গেলেন, আর আমাদের নিচের অংশ আড়াল করে রেখেছে স্যারের সামনের রাখা টেবিলটি। হটাত আমি যেন বাস্তবে ফিরে এলাম, বললাম, স্যার সবার সঙ্গে সব কিছু করা যায় না। এই বলে আমি আমার বসার বেঞ্চে ফিরে এলাম, স্যার তার মতো করে আমাদের ক্লাস নিতে থাকলেন আবার, যেন কিছুই হয়নি । তার অনেক দিন পর তখন আমি সেই ইশকুল থেকে বিদায় নিয়েছি, আমাদের পাশের গ্রামের এক ছেলেকে স্কাউটে নিয়ে স্যার জোর করে যৌন চাহিদা মিটিয়েছেন, ঘটনায় ছেলে গুরুতর আহত, এই নিয়ে এলাকায় তোলপাড়, স্যারের চাকরী যায় যায় অবস্থা, ইশকুলে আসা যাওয়ার পথে একদিন নির্যাতিত ছেলের অভিভাবকগণ জুতা পেটা করলো আমাদের ইংরেজি স্যারকে । মাঝে মধ্যেই শুনা যেত অমুক রাস্তায় আমাদের ইংরেজি স্যারকে দাওয়া করেছে, স্যার দৌড়ে কোন প্রকারে জান বাঁচিয়েছেন, স্যার প্রতিদিনকার পথ পরিবর্তন করে আসা যাওয়া করছেন, তারপরেও এলাকার লোকজন তাকে রাস্তায় অপমান করছে ।
আমি মাঝেই মাঝেই ভাবি, আমাদের ইংরেজি স্যার এমন কেন করতেন ? স্যারের স্ত্রী ছিলো, আমাদের সমবয়সী এক ছেলে ছিলো, তার পরেও তার চরিত্র এমন কেন ছিলো ? স্যারের স্ত্রী অনেক রূপবতী ছিলো, সুস্থ ছিলো, তার স্বামীর এরূপ কার্যকলাপে তিনি কি লজ্জা পেতেন না ? আর ছেলেটা ? আজো কি আমাদের ইংরেজি স্যারের মতো কোন স্যার্ নেই এই পৃথিবীতে ? আমার ধারনা পৃথিবীর অনেক ইশকুলেই এমন স্যার্ প্রতিদিনকার মতো বিদ্যালয়ে হাজির হন, ছাত্রদের পড়ান, আর ভাবেন কাকে নিয়ে যৌন সঙ্গমের নোংরা খেলায় কথন মেতে উঠবেন ।
আমি তখন অনেক ছোট, বয়স আর কতই হবে হয়ত আট অথবা নয় । তখন খেলার সাথী বা পরিচিতের মাঝে অনেককেই দেখেছি শস্য জন্মানো মাঠের পাশে ঝোপ ঝাঁরে খেলার ছলে বা দুষ্টামি করে একে অন্যের পায় পথে সেক্স করছে, তখনো কিন্তু সেই ছেলেরা সেক্স কি ঠিকঠাক বুঝেই উঠেনি, শুধু মাত্র প্রস্রাব করার বেলায় তাদের শিশ্ন শক্ত হয় । সেই সময় অথবা এখনো মেসে, হোস্টেলে, বন্ধুদের মাঝে এমন অনেক ঘটনাই ঘটতো হয়ত এখনো হয়। বর্তমান বিশ্ব খুবেই আধুনিক, চলছে বিজ্ঞানের বেশ জয়যাত্রা, মানুষ দিন দিন স্মার্ট হচ্ছে, কিন্তু এই আধুনিকতার নামে কিছু কিছু মানুষ হয়ে যাচ্ছে অসভ্য, চলে যাচ্ছে আদিম যুগেরও অতীত অসভ্য যোগে।
আমার উল্লেখিত শিশু কিশোর তরুণ তরুণীরা বুঝে বা না বুঝে বা শখের বসেই সম লিঙ্গের প্রতি এই যে দৈহিক মিলন করে, তাই বলে কি তাদেরকে ‘ গে ‘ বা ‘ লেসবিয়ান ‘ বলা যাবে ? তারা কিন্তু এক সময় শুধরে যায়, বুঝে যায় সম লিঙ্গের সহিত যৌনমিলন, পরিবার, সমাজ আর ধর্ম বিরোধী কর্ম, এমন কর্ম করা পাপ, জঘন্য অপরাধ । আপনি খেয়াল করে দেখবেন যারা সমকামী বা সমকাম সমর্থন করে তারা কোন ধর্মসম্প্রদায়ের অন্তর্গত নয়, তারা কোন ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিতও নয়, এমন কি তারা ধর্মনিরপেক্ষও নয়, তারা কোন ধর্মকেই তোয়াক্কা করে না, যে কোন ধর্ম উপাসনাকারীকেই উপহাস করতে সামান্যতম দ্বিধা করে না এই সব সমকামীরা । মূলত তারা ঈশ্বর;স্রষ্টা;আল্লাহর অস্তিত্ব বিশ্বাসেই করে না। যাই হোক ধর্মের কথা বাদ দিলেও দেখা যাবে একজন সমকামী পরিবার আর সমাজের প্রচলিত সভ্য কোন নিয়মেই মানছে না, তারা তাদের ইচ্ছে মতো অন্য ভাবে বললে স্বেচ্ছাচারী হয়ে জীবন যাপন করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে । তারা কখনোই বুঝে না বা বুঝতে চায় না, নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী আচরণ করা সব সময় ভালো না, সভ্য মানব সমাজ কিছু বিধি নিষেধ তৈরি করে দিয়েছে মানুষের সুন্দর ভাবে বসবাস করার তাগিদে, এই নিয়মনীতি সৃষ্টি হয়েছে পরিবার সমাজ রাষ্ট্র আর ধর্ম দ্বারা ।
আমার এই লেখা শেষ করেই ফেলেছিলাম, সমকামীদের নিয়ে লেখাটি পরিচিত একজনকে পড়ে শোনালাম, সে প্রথমেই আমাকে বললো, আমি লেখাটি গুগোল বা অন্য কিছু থেকে কপি করেছি কি না ? আমি উত্তরে বললাম, না কপি করতে যাবো কেন ? তবে অনেক তথ্য বা সমকামীদের নিয়ে জানতে গুগোল উইকিপিডিয়া আর বই পুস্তক ঘাটাঘাটি করেছি, কোন একটি বিষয় নিয়ে লেখতে গেলে সেই বিষয়টি ভালো ভাবে জানতে হয়, প্রবন্ধ হলো পূর্বাপর যুক্তিপূর্ণ রচনা, গল্প উপন্যাস বা কবিতার মতো কল্পনা আবেগ দিয়ে লেখা যায় না। তখন সে আমাকে প্রশ্ন করলো, সমকামী কি, মানে সমকামী বলতে আমি কি বুঝি ? উত্তরে সমকামী বলতে আমি যা বুঝি তা একটু ব্যাখ্যা করলাম। ততক্ষণে বুঝে গেছি আসলে সে জানতে চাইছে সমকামী নিয়ে আমার কোন ধারনা আছে কি না, পরিশেষে শুরু হলো আসল কথা । তার স্বচক্ষে দেখা দুই জন মানুষের বর্ণনা শুরু করলো সে । ( বিশেষ কারণে বর্ণনাকারী আর আলোচনা আসা মানুষগুলোর প্রকৃত নাম ব্যবহার করছি না ) ধরা যাক বর্ণনাকারীর নাম দিলরুবা, দিলরুবা বলা শুরু করলো, মাঝ বয়সী এক গ্রাম্য পুরুষের কথা, ধরা যাক গ্রাম্য পুরুষটির নাম কদু মিয়া । দিলরুবার বর্ণনা এই রূপ ‘ আমাদের গ্রামেই কদু মিয়ার বাড়ি, সে সংসারী একজন মানুষ, তার স্ত্রী আছে, সন্তান আছে তার এক মেয়ে আমার সহপাঠী । বৃষ্টি ঝরা এক দুপুরের ঘটনা, সমস্ত দিন বৃষ্টি হয়েও আকাশ পরিষ্কার নয়, সে দিন আবার হাটবার, প্রায় পরুষরাই হাটে চলে গেছে দুপুর বেলায় । সময় ২টা কি ৩টা হবে, এমন সময় পাশের বাড়ির দুলাল আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছে, তার পেছনে পেছনে যাচ্ছে কদু । দুলাল দশ বারো বছর বয়সের এক বালক। এই দৃশ্যের ঘণ্টা দুই পড়েই দুলালের মা কদু মিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালা গালি করতে করতে হাজির হলো আমাদের বাড়িতে । উদ্দেশ্য আমার বাবার কাছে কদু মিয়ার বিরুদ্ধে নালিশ করা । আমার বাবা এলাকার মাতব্বর, অত্র অঞ্চলের শালিসি কাজ গুলো বাবাই করে থাকেন । যাই হোক বাবা বাড়িতে নেই বাজারে গেছে মা এই কথা কদুর মাকে বলে তার কাজে চলে গেলেন, কিন্তু দুলালের মা খুব হইচই করছে, দুলালের মায়ের হইচই দেখে দুলালের মায়ের কাছে আম্মা জানতে চাইলেন, ঘটনা কি ? কি নালিশ নিয়ে সে এসেছে ? আম্মার প্রশ্নের উত্তরে দুলালের মা বর্ণনা শুরু করলো, দুপুর বেলায় তার ছেলে দুলাল বাড়ি ফিরছিল একা একা, পেছন পেছনে তখন কদু মিয়াও আসছিলো, পথিমধ্যে কদু তার ছেলে দুলালকে ভুলিয়ে ভালিয়ে কদু মিয়ার বাইর বাড়িতে নিয়ে যায়, এবং সেখানে জোর পূর্বক দুলালের পায়ুপথে যৌনকার্য করে কদু, সেই কাজের পর দুলাল গুরুতর অসুস্থ হয়ে কোন প্রকারে খুরিয়ে খুরিয়ে বাড়ি ফিরেছে । দিলরুবা তার দেখা ঘটনা থেকে সে আমাকে আরো বললো, এমন কাজ কদু মিয়া জীবনে একবার শুধু করেনি করেছে বহুবার। তার চাচার জমিজমা দেখাশুনা জন্য একজন দরিদ্র বৃদ্ধ লোক ছিলো, সেই বৃদ্ধের কাজ ছিলো দিনে জমিজমা দেখাশুনা করা, রাতে সেচ মেশিন ঘরে থাকা । কদু মিয়া সেই লোকটির সঙ্গে প্রায় রাতেই সেচ মেশিন ঘরে ঘুমাতো । কদু মিয়া থেকেও বৃদ্ধ লোকটি ছিলো দ্বিগুণ বয়সের মানুষ । একদিন এলাকার মানুষ জানতে পারে কদু মিয়া এই বৃদ্ধ লোকটিকে অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে । কারো সঙ্গে জোড় জবর দুস্তির মাধ্যমে যৌন কাজ করাকে তো ধর্ষণেই বলে তাই না ? যাই হোক কদু মিয়া শোধরায় নি, তাকে নিয়ে অনেক সালিশ হয়েছে, এলাকার সবাই মিলে থাকে নানা প্রকার শাস্তি দিয়েছে, কাজ হয়নি । বাজারে তার একটি মুদির দোকান ছিলো, সেই দোকানে দরিদ্র এক শিশুকে রেখেছিলো ফুটফরমাশ করার জন্য । মাঝে মাঝে কদু মিয়া দোকানে রাত কাটাত, সঙ্গে রাখতো কর্মচারী ছেলেটিকে, সেই ছেলেটিকেও সে রেহায় দেয়নি, দিনের পর দিন যৌন চাহিদা মিটিয়েছে । বলতে বলতে দিলরুবা থেমে গেলো, কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে আবার বর্ণনা শুরু করলো দিলরুবা, বললো, কদু মিয়া খুব ভালো বাঁশি বাজাতে পারতো, রাতে যখন বাঁশিতে সুর তুলত সে, প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়তো মায়াময় মুগ্ধতা। সেই মুগ্ধতায় মোহিত হয়ে আরো অনেকই হয়ত তার কাছে ছুটে যেতো, তার প্রেমে মজে বিলিয়ে দিত নিজেকে, আমরা এই ধর্ষিত পুরুষদের কথা জানি না। বলতে বলতে আবার থেমে গেলো দিলরুবা ।দিলরুবার বর্ণনা শুনে ভাবলাম, এই রকম অসংখ্য কদু অসংখ্য গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখনো । অসহায় দরিদ্র মানুষের উপর দিনের পর দিন যাপায়ে পড়ছে, কেও মুখ ফুটে বলছে সবাইকে, কেও বা আত্মসম্মানের ভয়ে কাওকে কিছুই বলছে না।
বর্ণনাকারী দিলরুবার কথা তখনো শেষ হয়নি, তখন বলা শুরু করলো আরেকজন মানুষকে নিয়ে । সমাজ ত্যাগী পরিবার ত্যাগী সত্যিকারই একজন সমকামীর কথা । ঘটনাটি দশ বারো বছর আগের, দিলরুবা তখন আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এ পড়ে, থাকে ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি ছাত্রী মেসে । সেই মেসের প্রায় সবাই আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রী । একদিন সেই মেসে একজন বড় আপু উঠলেন, তিন তলার একা একটি রুম নিলেন তিনি, নাম শ্যামলী। শ্যামলী আপু সবার থেকেই ব্যতিক্রম, পোশাক আশক ছেলেদের মতো । পেন্ট সার্ট পড়ে, সমস্ত দিন রুমেই থাকে, কম্পিউটারে কি যেন করে, কথা বলে খুব কম, কারো রুমে কখনই যায় না, বিকেল বেলায় ছাদে একটু বের হয় সে । সন্ধ্যায় আবার তার রুমে ফিরে যায়। বিকেল বেলায় ছাদে অনেক মেয়েরাই যায়, একদিন একটি মেয়ের সঙ্গে শ্যামলী আপু পরিচিত হলেন, মেয়েটি দুতলাতে থাকে নামা রুলী । শ্যামলী আপু রুলীকে বললেন, ‘ আমার কম্পিউটারে মুভি আছে দুজন মিলে দেখবো, সন্ধ্যার পর আমার রুমে এসো’ । সেই দিন থেকে শ্যামলী আপুর রুমে রুলী নিয়মিত যাতায়াত শুরু করলো । রুলীর রুমমেট আরেকজন মেয়েও শ্যামলী আপুর ভক্ত হয়ে গেলো ধীরে ধীরে, তার নাম মিথিলা । কিন্তু এক সঙ্গে কাউকেই শ্যামলী আপু তার রুমে যেতে দেন না । এক সময় রাত্রেও তারা দুজন থাকতে শুরু করলো শ্যামলী আপুর সঙ্গে । এই নিয়ে রুলী আর মিথিলার মনমালিন্য হতো প্রায় সময়, মাঝে মাঝে ঝগড়াও হতো তাদের, দুজনেই থাকতে চায় শ্যামলী আপুর সঙ্গে । রুলী আর মিথিলার শ্যামলী আপুর প্রতি ভক্তি আর আত্মহারা ভাব দেখে রুমমেট অন্যান্য মেয়েরা অবাক হয়ে যায়, কিন্তু কেও কোন সন্দেহ করেনা । একদিন সেই মেসে উঠলো ম্যানেজারের এক আত্মীয়, মেয়েটি নেত্রকোনা থেকে এসেছে, অপরূপ রূপবতী, তাকে দেখলেই মুগ্ধ হতে হয় এমন সুন্দরী সে, নামা পূর্ণিমা । পূর্ণিমার সঙ্গে একদিন শ্যামলী আপুর দেখা হয়ে গেলো মেসের ছাদেই, শ্যামলী আপু পূর্ণিমার রূপের খুব প্রশংসা করলেন, এক সময় তার রুমে যাবার আমন্ত্রণও জানালেন তিনি । শ্যামলী আপু সুন্দরী মেয়েদের সঙ্গেই কথা বলতেন বেশি, মূলত তার রুমে যাবার আমন্ত্রণ পেত অধিক রূপবতী মেয়েরাই । আর মেসে থাকা মেয়েরা বড় আপুদের খুব মান্য করে, আপুদের কথার অবাধ্য হয় না, এই সুযোগটি শ্যামলী আপু খুব সহজেই কাজে লাগাতে শুরু করলেন । পরদিন সন্ধ্যার পর পূর্ণিমা শ্যামলী আপুর রুমে হাজির হয়, সেই থেকে পূর্ণিমাও নিয়মিত যাতায়াত শুরু করে শ্যামলী আপুর রুমে। এমন করে বেশ কিছু দিন পার হওয়ার পর এক দিন নেত্রকোনা থেকে পূর্ণিমার বাবা ফোন করে পূর্ণিমাকে, বলে ‘তুমি তাড়া তাড়ি বাড়ি আসো’ । পূর্ণিমার বাবা ফোন করার পরে অনেক দিন পার হয়ে যায় কিন্তু পূর্ণিমা কিছুতেই তার বাড়ি যায় না, মেস ছেড়ে যায় না । এক সময় তারা বাবা মা সবাই তাকে ফোন করা শুরু করলো, তার ভাবী তাকে ফোন করে বললো, ‘ তোমার বিয়ের কথা চলছে, ছেলে ভালো, তুমি বাড়িতে আসো’ । এইসব বার বার বলা সত্যতেও পূর্ণিমা বাড়ি ফিরে না দেখে একদিন পূর্ণিমার বড় ভাই পূর্ণিমাকে নিয়ে যেতে মেসে উপস্থিত হয় আর জোর করে বাড়ি নিয়ে যায় পূর্ণিমাকে । পাত্র-পাত্রী দেখা শোনার পর দুই পরিবারের আগ্রহে পূর্ণিমার বিয়ে মোটামুটি ঠিকঠাক হয়ে গেলো, কিন্তু পূর্ণিমা কিছুতেই বিয়ে করবে না শোনে পূর্ণিমার পরিবারের সবাই হতভম্ব হয়ে পড়লো। পূর্ণিমাকে বিশেষ ভাবে জিজ্ঞাসা করা হলো, কেন সে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না ? কারো সঙ্গে কি তার রিলেশন আছে ? প্রতি প্রশ্নরে উত্তরেই পূর্ণিমা বলে, ‘ না, কোন রিলেশন নেই ‘ , কিন্তু বিয়ে করবে না সে এই কথাও সে জানিয়ে দেয় । পরিবারের পিড়াপিড়ি সইতে না পেরে এক সময় পূর্ণিমা বলে ফেলে, ‘ আমি শ্যামলী আপুকে বিয়ে করবো, তাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না ‘ । এই কথা শুনে সবাই হকচকায়ে যায় ! মেয়ে এই সব কি বলে ! সে মেয়ে হয়ে আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করতে চায়, ঘটনা কি ? পূর্ণিমার ভাবী বেপারটি সামলানোর জন তাৎক্ষনিক পূর্ণিমাকে নিজের রুমে নিয়ে যায়, খাটে বসিয়ে পূর্ণিমাকে প্রশ্ন করে, ‘ এই সব কি বলছে ? কেন বলছে ? ‘ পূর্ণিমা আস্তে আস্তে জবাব দেয়, বলে, ” শ্যামলী আপু যে ভাবে আমার সঙ্গে সেক্স করে সেই ভাবে আর কেও সেক্স করতে পারবে না, তোমরা যদি পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন ছেলের সঙ্গেও আমায় বিয়ে দাও, সেও পারবে না ‘ ।
ঘটনাটি পুরাপুরি বুঝবার জন্য, পূর্ণিমার অভিভাবক পর দিনেই মেসে এসে মেস ম্যানেজার সহ শ্যামলীর রুমে হাজির হলেন, শ্যামলীকে নানা জিজ্ঞাসা বাদ করে জানতে পারেন, শ্যামলী আসলে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নয়, আবার কোন চাকরীও করে না, মূলত তার কোন কাজেই নেই, যে কারণে তাকে মেসে থাকতে হবে। পূর্ণিমার অভিভাবক শ্যামলীকে তার বাবা মায়ের ফোন নাম দিতে বললে, শ্যামলী আপু কারো ঠিকানা বা ফোন নাম্বার না দিয়ে নীরব থাকে । সেই দিন শ্যামলী আপুর রুম থেকে বের হয়েই পূর্ণিমার অভিভাবক সিদ্ধান্ত নেয় তারা পুলিশকে বেপারটি জানাবেন । সেই রাত্রেই শ্যামলী আপুর বোনের হাজব্যান্ড পুলিশের বেপারটি কি ভাবে যেন জেনে ফেলে, আর শ্যামলীকে সব বলে দেয়, আর ভোরের আলো না আসতেই নিজের জিনিস পত্র নিয়ে চির দিনের জন্য মেস ছেড়ে চলে যায় শ্যামলী আপু । ময়মনসিংহ শহরে আর কোন দিন শ্যামলীকে দেখা যায়নি । মূলত শ্যামলীর পরিবার জানতো শ্যামলী সম লিঙ্গের প্রতি আসক্ত একজন নারী, এই বেপারটি তারা তাদের আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশী কারো কাছেই প্রকাশ করতে চাইনি, সেই কারণেই শ্যামলীর পরিবার শ্যামলীকে একেক সময় একেক মেয়েদের মেসে রাখে ।
এই সব ঘটনা শুনার পর পরিচিত আরও অনেকের সঙ্গেই সমকামী নিয়ে আমার লেখা বিষয়ে আলোচনা করলাম, কারণ দিলরুবার মত হয়তো আরো অনেকেই তাদের দেখা সমকামী নিয়ে আমাকে আরো অনেক ঘটনা বলতে পারবে এই আকাঙ্ক্ষা । আমার আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হতে বেশী সময় লাগলো না, দেখি প্রায় জনেই তাদের স্বচক্ষে দেখা সমকামীদের নিয়ে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছে । একজন আমাকে জানালো যে, একটি ছেলে ট্যাটু আঁকানোর লোভ দেখিয়ে নিয়ে আরেকটি ছেলেকে নিয়ে যায় তার বাসায়, প্রথমেই বুঝতে পারেনি ট্যাটু লোভী ছেলেটি তার বন্ধু বেশে আসা যুবকের উদ্দেশ্যে, পরিশেষে যখন জবরদস্তির মাধ্যমে তার সঙ্গে দৈহিক মিলনে লিপ্ত হতে চায় তখন নিজরে ইজ্জত নিয়ে পালায় ট্যাটু লোভী ছেলেটি । আরেকজন জানায় আমাকে যে, তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর কথা, যে কিনা সত্যিকার অর্থেই তার সম-লিঙ্গের প্রতি আকর্ষিত এক মানুষ, আর যেই সব ছেলেরা তার সঙ্গে মেলামেশা করে তারাই ঠিক তার মতই সমকামী ।
এই রকম অসংখ্য ঘটনা, অসংখ্য ব্যক্তি, অসংখ্য ছেলে মেয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের চার পাশে, ভদ্র বেশে তার স্বাভাবিক সংসারধর্ম নিয়ে আছে, যাদের সন্তান স্ত্রী, স্বামী সবেই আছে তবুও তারা সম লিঙ্গর প্রতি আসক্ত ।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক সমকামিতা ও পায়ু মৈথুন শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ, যার শাস্তি দশ বছর থেকে শুরু করে আজীবন কারাদণ্ড এবং সাথে জরিমানাও হতে পারে।
অথচ এই দেখে এখন পর্যন্ত সম-লিঙ্গের প্রতি দর্শনের কোন ফৌজদারি মামলা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না । হলে হয়তো হতে পারে কিন্তু আমার জানা মতে হয়নি । অথচ সমকামীদের অধিকার নিয়ে অনেকেই তাদের পক্ষে কথা বলছে, স্বীকৃতি চাইছে । আমি বিশ্বাস করি সমকামিতা স্বীকৃতি পেলে সভ্য সমাজের সকল রীতিনীতিই মুষড়ে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে ধীরে ধীরে সৃষ্টি হওয়া মানব সভ্যতা, সভ্য সমাজ আবার ফিরে যাবে অসভ্য আদিযুগে বা তারো থেকে অন্ধকার কোন যোগের সূচনা হবে যদি সমকামিতা স্বীকৃতি পায় । মানুষের কল্যাণের তাগিদে যে নীতি সমাজ পরিবার আর ধর্ম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দিনে দিনে তা বিদায় নেবে মুহূর্তেই । আমরা সবাই জানি মানুষের নিরাপদে বসবাসের জন্য সুন্দর পৃথিবী এখনো তৈরি হয় নি, হর হামেসাই কোন না কোন ভাবে স্ত্রী জাতিকে হতে হচ্ছে লাঞ্ছিত অপমানিত ধর্ষিত, কোন দুশ্চরিত্র পুরুষের ধর্ষণের স্বীকার হয়ে হারাতে হচ্ছে শত শত নারীর সতীত্ব ও প্রাণ । এই দিক দিয়ে পুরুষ জাতী বেশ নিরাপদেই আছেন, কিন্তু সমকামিতা সমাজে ছড়িয়ে পড়লে এই বিপদে পুরুষদেরও পড়তে হবে খুব তাড়াতাড়ি, তখন শুনা জাবে, সমকামীদের কাছে অমুক পুরুষের ধর্ষিত হবার খবর, দৈনিক খবরের কাগজের পাতায় তখন নারীদের পাশাপাশি থাকবে কোন গ্রাম অথবা শহরে ধর্ষণের স্বীকার হয়ে প্রাণ হারানো কোন যুবক, বৃদ্ধ অথবা শিশুর খবর । ভেবে দেখুনতো, তখন আপনি, আমি, আমরা নিরাপদে চলতে পারবো কি ? পাড়া সম্ভবও নয় । হয়তো কোন একদিন আমি অথবা আপনি অথবা আমাদের কোন আত্মীয় পুরুষ সম-লিঙ্গে আসক্ত কোন পুরুষের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়ে ইজ্জত নয়তো প্রাণ হারাবো ।
পৃথিবীর কোন ধর্মই সমাজের ক্ষতি হয় এমন কোন বিষয় সমর্থন করে না, সেক্ষেত্রে সমকামিতাকেও নয়। আপনি খোঁজে দেখুন সমকামিতা পৃথিবীর সকল ধমেই নিষিদ্ধ । আমাদের বর্তমান সভ্য সমাজের এমন কোন পরিবার পাওয়া সম্ভব হবে না যে তারা তাদের পরিবারের কোন সদস্য অনৈতিক কাজ করে তা তারা চায়, তাদের পরিবারের কেউ সমকামী হোক এটা তারা প্রত্যাশা করে । কারণ আপনি আমি আমরা সবাই জানি সমকামী সমাজের জন্য অনিষ্টকর, সুশোভন ও সুশৃঙ্খল সমাজ ব্যবস্থার জন্য বড় হুমকি ।
আধুনিকতার নামে পশুর মতো জীবন যাপনের গুরুতর বিরোধী লোক আমি, আমাদের প্রতিটি মানুষের আচার আচরণ হতে হবে সভ্য, মানুষ হয়ে পশুর মতো হলে-তো হবে না, যারা মানুষ হয়ে পশুর স্বভাব ধারণ করবে তাদেরকে সভ্য বলা হবে নেহাত বোকামি। আমি বিশ্বাস করি, সামাজিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় অনুভূতি প্রতিটি মানুষের মাঝে জাগাতে পারলে একজন ব্যক্তি কখনই সমকামী হতে পারবে না, আর সমকামিতাকে কখনই সে সমর্থনও করবেন না, কারণ সমকামী সকল দিক দিয়েই অশ্লীল ও ন্যক্কারজনক কর্ম ।
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
১৮ মার্চ ২০১৯ মধ্যরাত! চারদিক অন্ধকারে ঢেকে আছে শুধু বাড়ির চারিপাশে বিদ্যুতের বাল্বগুলো জ্বলছে তাদের…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..
সাধারণত আমরা পাপ নির্ধারণ করি ধর্মের নিয়ম নীতির উপর নির্ভর করেই । ধর্মে যায় নিষেধ…..