সুমন্তদা ও সাইকোভেগাসের গল্প
গোয়েন্দা সুমন বাবু শুধু গোয়েন্দা নন। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী,গোয়েন্দা বিচক্ষণ ব্যক্তি।তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট সংবাদ…..
“না ভালো লাগার টান কে উপেক্ষা করে কাজ করে যাওয়া খুব মুশকিল মা। আমি চাকরিটা ছেড়ে চলে যাচ্ছি বাড়িতে।” … মেয়ে মেইল করেছে মা কে। মা পম্পা। মেয়ে সৃজিতা।
পম্পা ওর বর অরুণাভর দিকে তাকালো। “সৃজিতা চাকরি ছেড়ে চলে আসছে। ওর ভালো লাগছে না।”
অরুণাভ জানতে চাইলো,”ভালো না লাগার কারণ কিছু বলেছে?”
পম্পা মাথা নাড়ল, “না। ভালো লাগছে না। ব্যস।”
অরুণাভ হাসলো। “বেশ তবে আসুক। ভালো না লাগলে চলে আসুক। মনের ক্ষয় থেকে রক্ষা পাক।”
পম্পা জিজ্ঞেস করল, “কথাটা যদি ছেলে বলতো, অর্ঘ্য বলতো? এইভাবেই মানতে পারতে?”
অরুণাভ এবার একটু রুক্ষ স্বরে বললেন, “এই তুলনাটা তুমি কেন টানো? সৃ এর ওপর কোনও বার্ডেন নেই। মাথা গোঁজার ঠাঁই আছে এই বাড়ি। ওর নিজের বাকি প্রয়োজন ও নিজে চালিয়ে নিতে পারবে। কাছাকাছি ছোটখাট হোক বড়সড় হোক একটা চাকরি ঠিক জুটিয়ে নেবে। অর্ঘ্য বৌ বাচ্চা নিয়ে কোথায় দাঁড়াবে চাকরি ছাড়লে?”
পম্পা কেমন অন্যমনস্ক ভাবে বলল,” সেটাই আসল কথা। মনের ক্ষয় হলে ছেড়ে আসা যায়, এই কথাটা তাহলে ঠিক নয়। আসলে মনের ক্ষয় বলে কিছু হয় না অরুণাভ। মনের ক্ষয় বলে হাজার একটা অপছন্দের জিনিসকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। আমাদের আডজাস্ট করতে হয়। এটাই ফ্যাক্ট। জীবন সত্য। সৃ তোমার সাপোর্ট পাচ্ছে। ওর ভাগ্যটা ভালো।”
অরুণাভ একটা নিশ্বাস ফেলে চুপ করে গেলেন। এবং মনে মনে কিছুটা সমর্থন করলেন কথাটা। অর্ঘ্য, পম্পা আর অরুণাভর সন্তান। সৃজিতা পম্পার মেয়ে না। সৃজিতার মা মারা যাওয়ার পরে পম্পাকে বিয়ে করেছিলেন অরুণাভ। সৃজিতার তখন তিন বছর বয়স। অর্ঘ্য ওর থেকে দু’বছরের ছোট। কিন্ত অদ্ভুত এক টানাপোড়েন নিয়ে এক ছাদের নীচে থেকে গেল চারজন। সৃজিতা অরুণাভর যে স্পেশাল মনোযোগটা পেত সেটা কোনও দিন পম্পা আর অর্ঘ্য পায় নি। সেই ছোট্ট না ভালো লাগাটাকে সামলেই জীবনের একটা স্টেজ পার করল পম্পা। ওর মনের ক্ষয় হয়েছে কি হয় নি সেই হিসেব কোনও দিন অরুণাভকে দিতে হয় নি। তাই আজ এই কথা ও সহজেই বলতে পারলো।
সৃজিতা আর অর্ঘ্য বড় হল। সৃজিতা বিয়ে করল না। অর্ঘ্য বিয়ে করল। আর বিয়ের পরে অর্ঘ্যর পরিস্থিতিটা একটু বদলালো। বাকিরা যেমন কার তেমনই থেকে গেল। সংসার পম্পার নিয়মে চললেও পম্পা প্রতিবার দেখেছে সৃজিতার দাবি, চাহিদা, আবদারকে ছাপিয়ে ওদের সংসারে আর কিছুই বেশি গুরুত্ব পায় না। পম্পার খুব হিংসে হয়। পম্পাকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে সৃজিতার জন্যে। এখন বড় হয়ে চাকরি পেয়ে দূরে যাওয়াতে ভেবেছিল একটু নিশ্চিন্তে থাকবে নিজের মতো করে। কিন্তু চাকরি ছেড়েই চলে আসছে সৃজিতা! কেন? ওখানে ভালো লাগছে না, নাকি এখানে বাবার কাছাকাছি আর কারুর চলে আসার সেই ছোট্টবেলার ভয়ের মনস্তত্ত্বই কাজ করছে ? আগুন নিশ্বাস পড়ল পম্পার। আজ সুযোগ মতো বলল,”মনের ক্ষয় কে অগ্রাহ্য করে বেশিরভাগ মানুষই মানিয়ে নেয় অরুণাভ! “
অরুণাভ শুধু তাকালো একবার পম্পার দিকে। মনে যেটা ভাবছে মুখে উচ্চারণ করে বলতে পারলো না, “জানি।”
অর্ঘ্য ফোনে শুনল ওর দিদি চাকরি ছেড়ে চলে যাবে কলকাতা। হাসলো । বৌ এর দিকে তাকিয়ে বলল,” দিদি লাইফটা পুরো নিজের স্টাইলে কাটালো। কেউ ওর কোনও ইচ্ছেতে বাধাই দিল না। আর আমি দুয়েকবার চাকরি ছাড়বো বলাতে বাবার পায়ের তলার মাটি সরে গেছিল বোধহয়। “
অর্ঘ্যর বৌ সাতে পাঁচে ঢোকে না। “ধুর ভালো হয়েছে, এই চাকরিটাই ভালো। দূরে দূরে ভালো আছি আমরা। তাছাড়া চাকরিটা করছো বলেই তোমার সাথে আমার বিয়েটা দিলেন আমার বাবা। নাহলে ঝুলতে পারতাম তোমার গলায়? ” হেসে অর্ঘ্যর গলা জড়িয়ে ধরল। অর্ঘ্য হাসলো।
এদিকে অরুণাভ একটু ম্লান হেসে বলল, “তিন থেকে বত্রিশ। না সৃজিতা তোমার মেয়ে হল! না তুমি ওর মা হলে! ঠান্ডা লড়াই টা থেকেই গেল।”
পম্পা বলল,”সৃজিতার প্রতি তোমার একতরফা প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় দায়ী এর জন্যে ।”
গুমোট লাগছে অরুণাভর। তবু বলল,
“আর অর্ঘ্যর বিষয় নিয়ে ওভাবে তুলনা করবে না। অর্ঘ্য বিয়ে করেছে, সৃজিতার কোনও বার্ডেন নেই।”
পম্পার হাসি যেন হাসি নয় । ব্যঙ্গ । “কেনো নয়? কেন সৃজিতা মুক্ত? আমাদের তো বয়স হচ্ছে!আমরা তো ওর মা এবং বাবা। ‘বার্ডেন’ শব্দটা বদলে ফেলো। দায়িত্ব বলো। সেটা তো সৃজিতারও আছে। আর সেটার জন্যে স্বাবলম্বী হতে হবে! হুট বলতে চাকরি সৃ ই বা ছাড়বে কেন?”
অরুণাভ কিছু উত্তর দেবার আগেই পম্পা আবার বলল,” যুগটা তো সমানাধিকারেরই।”
গুমোট ভাব কাটিয়ে উঠতে, অনেকদিন পরে পম্পাকে সমর্থন করে অরুণাভ বলল, “ঠিক।”
কেউই যেটা উচ্চারণ করল না শুধু বুঝতে পারলো “অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। কেড়ে নিতে হয়।” আজ বোধহয় পম্পারও এটা প্রথম প্রয়াস। সৃজিতার একটা সিদ্ধান্তের বিরোধিতার। সিদ্ধান্তটা সৃজিতার হলেও সৃজিতা পরিবারের একজন। অতএব অবশ্যই পম্পা ওর বক্তব্য বলবে। যুগটা সমানাধিকারের।
গোয়েন্দা সুমন বাবু শুধু গোয়েন্দা নন। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী,গোয়েন্দা বিচক্ষণ ব্যক্তি।তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট সংবাদ…..
মফিজ সাহেব বসে আছেন। অভি মনে মনে ভাবে হয়তো তিনি বড় ধরনের কোনো সমস্যার…..
অসীম ও মাসির কথা সুমনদা বললেন,আমরা চারজন বন্ধু চিনু, ভব,অসীম,তারকেশ্বর ও আমি দীঘা বেড়াতে গেলাম…..
ছোটবেলায় একবার রবীন্দ্রনাথের সাথে দেখা হয়েছিল। মেলা-বান্নিতে ধবধবে শঙ্খসাদা তুলার দাড়িগোঁফে আবৃত মাথাঝুলানি রবীন্দ্রনাথ বিক্রি…..