ফিরে এসো
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..
সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে এক হিন্দু বৃদ্ধা মহিলা এসে সম্রাটের কাছে নালিশ করে বললেন, ‘মহামান্য সম্রাট, আমার ছেলে আপনার সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। আমি খুব বিপদের মধ্যে আছি, প্রতিদিন রাতে কোনও এক দুর্বৃত্ত আমার বাড়িতে এসে হামলা করে আর আমার পুত্রবধুর সতিত্ব নষ্ট করার চেষ্টা করে। আমি আপনার কাছে আমার পুত্রবধুর সতিত্ব রক্ষার্থে বিচার চাই।’
সম্রাট জাহাঙ্গীর কোনও উত্তর দিলেন না।
বৃদ্ধা রেগে গিয়ে বললেন, সম্রাট, আমি তোমার কাছে বিচার নিয়ে এসেছি। তুমি যদি আমার পুত্রবধুর সতিত্বের দায়িত্ব না নাও আমি কিয়ামতের দিন তোমার স্রষ্টার আদালতের কাঠগড়ায় তোমাকে দাঁড় করাবো৷
সম্রাট বললেন, আমাকে একটা দিন সময় দাও।
বৃদ্ধা চলে গেলেন।
অন্ধকার রাত, সম্রাট জাহাঙ্গীর তরবারি হাতে ঘোড়ায় চড়ে চললেন বৃদ্ধার বাড়ির দিকে।
বুড়ির বাড়ির সামনে টিম টিম করে আলো জ্বলছে। জাহাঙ্গীর দূর থেকে শুনলেন মেয়েলি কণ্ঠের আওয়াজ ‘বাচাও, বাচাও!’
সম্রাট জাহাঙ্গীর বৃদ্ধার ঘরে প্রবেশ করলেন। তারপর দুর্বৃত্তকে ধরে বৃদ্ধা মহিলাকে বললেন, ‘আলো নিভাও।’
বৃদ্ধা আলো নিভিয়ে দিলেন আর সম্রাট জাহাঙ্গীর সেই দুর্বৃত্তের মাথা কেটে মাটিতে ফেলে দিলেন৷ তারপর বৃদ্ধাকে বললেন, ‘আলো জ্বালাও এবার।’
আলো জ্বালানোর পর সম্রাট জাহাঙ্গীর দুর্বৃত্তের মুখ দেখে বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ।’ এরপর সম্রাট বৃদ্ধাকে পানি নিয়ে আসতে বললেন এবং ঢক ঢক করে পানি পান করে বললেন, ‘কাল তুমি তোমার পুত্রবধুকে নিয়ে আমার দরবারে হাজির হবে।’
পরের দিন বৃদ্ধা মহিলা হাজির হলেন সম্রাট জাহাঙ্গীরের দরবারে। তখন ভরা রাজদরবার৷
সম্রাট বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমি কেন আলো নিভাতে বলেছিলাম তুমি জানো?’
বৃদ্ধা বললেন, ‘না, আমি জানি না।’
সম্রাট জাহাঙ্গীর তখন উত্তর দিলেন, ‘আমার ধারণা ছিলো আমার বাড়ির এতো কাছে আমার পুত্র ছাড়া কেউ এ কাজ করার সাহস পাবে না৷ আমি আমার ছেলেকে হত্যা করতে পারবো না, মনে দুর্বলতা আসতে পারে, ন্যায় বিচার ব্যহত হয়ে যেতে পারে তাই আলো নিভাতে বলেছিলাম। কিন্তু, মুখ দেখার পর দেখি সে আমার ছেলে না, তাই ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়েছিলাম।
তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি জানো কেন আমি তোমার ঘরে গিয়ে পানি পান করেছিলাম?’
বৃদ্ধা উত্তর দিলেন, ‘জানি না।’
সম্রাট বললেন, ‘তুমি যখন আমার দরবারে নালিশ করে বলেছিলে কিয়ামতের দিন আমাকে আল্লাহর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে তখন থেকে দুশ্চিন্তায় কিছুই খাই নাই। বড় তেষ্টা পেয়েছিলো তাই তোমার ঘরে গিয়ে এক গ্লাস পানি পান করেছি। আমার ভয় হচ্ছিলো, আমি ন্যায় বিচার করতে পারবো কি না।’
তারপর সম্রাট জাহাঙ্গীর বললেন, ‘মনে রেখো বুড়ি মা, একজন মুসলমান রাজার কাছে একজন হিন্দু বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পুত্রবধুর সতিত্ব রাজার মাথার মুকুটের চেয়েও বেশি দামী।’
এই ছিলো মুসলিম শাসকদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।
আর যারা ধর্মীয় লেবাসে অধর্ম করে বেড়ায়, ধর্মীয় সম্প্রীতিবোধ যাদের লেশমাত্র নেই, যারা উস্কানীমূলক কথাবার্তা বলে সহিংসতা ছড়ায়, দাঙ্গা ফ্যাসাদে উস্কানী দেয়, সমাজে সংসারে দেশের প্রতি যাদের মানবতাবোধ নেই, দেশের প্রতি মানুষের প্রতি কল্যাণকর কাজে যাদের অংশগ্রহণ নেই, যারা অকল্যাণজনক কর্মকান্ড করে, অশান্তি করে বেড়ায় তারা মানুষরুপি ভন্ড।
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..
ভার্সিটির বাস ধরতে হয় আমাকে খুব সকালে। বাড়ি থেকে একটু হেঁটেই রিকসা। তারপর বাস। হাঁটা…..
আজকের সন্ধ্যাটা থমকে যাওয়া মেঘেদের। ঝিরিঝির বৃষ্টি ছিল দিনভর। ঢাকা শহরের পথঘাট জল কাদায় মাখামাখি।…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..