আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
ভেঙেচুরে নতুন করে গড়েপিটে নিয়ে
নিজেকে হাজির করেছিলাম তোমার সামনে,
কিন্তু তবুও তোমার পছন্দ হলো না!
কি চাও, বলো তো তুমি?
একদম ঝকঝকে নতুন একটা আমি’কে,
না’কি – সময়ের আবর্তে পাল্টে নেওয়া
অন্য এক আমি-কে!
আমি কিন্তু সেই আমি-ই রয়ে গেছি।
ভেঙেছি, চুরেছি, নতুন করে সাজিয়েছি,
কিন্তু সে সবই তো – আসলে বহিরঙ্গ।
পর্দা তুললে মঞ্চে সেই মূল আমি টাই
অভিনয় করে,
প্রায়ান্ধাকারে চেনাই যায় না।
তুমি বরং অন্ধকারেই কথা বোলো আমার সঙ্গে,
দেখবে, তোমার সুরে সুর মিলিয়েই
বাজছে সব যন্ত্রানুষঙ্গ।
যন্ত্রীর যন্ত্রণাকাতর মুখটা নাহয়
ঢাকাই থাকলো, গাঢ় অন্ধকারের
নিঃসীম অতন্দ্রতায়।
তুমি ভাবছো, এগুলো আমার কবিতা,
মোটেই না।
এগুলো আসলে কালির আঁচড়ে তোমার বর্ণনা।
তোমাকে ভেবে অন্ধের মতো লিখে যাই,
তোমাকে তো আমি কোনদিন চোখে দেখিনি!
তোমার কাজলচর্চিত চোখদুটো মনে হয়, কালো ভ্রমরের মতো।
হাসলে তো গালে টোল পড়বেই,
হাতের কাঁচের চুড়ি নিশ্চই রিনরিন করেই বাজে।
পায়ের নূপুরের নিক্কণ নিশ্চই
বুকে মাদলের তাল তোলে।
হয়তো, এসবই আমার কল্পনা…
তা হোক, আমি যেভাবে ভাবতে পারি
তোমাকে সেভাবেই সাজাই।
ঘোমটাটা না হয় মাথায় তুলেই দিই,
সিঁথিতে গাঢ় লাল সিঁদূর,
কপালে থাক্ না, একটা গোল টিপ।
এভাবেই আমার কলম তোমায় ভেবে
ভরাতে পারে সাদা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা।
তোমায় দেখার আকুতিতেই আমার লেখা
তুমি যাকে কবিতা বলে ভুল করো।
আমি আমার পাশে বসি কিছুক্ষণ,
নিজেকে আদর করতে থাকি,
আর ছায়ার মধ্যে সেই প্রতিফলন দেখি।
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে সে বলেছিলো
আর একটু, আর একটু চুপ থাকো লক্ষীটি,
আমি চুপ ছিলাম,
তার ঠোঁট শুষে নিচ্ছিলো আমার ভেতরের
সব লজ্জা রাঙানো আদরগুলোকে।
আসলে মাঝে মধ্যে পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া
ঝর্ণা হয়ে যাই আমি।
তীব্র বেগে খুলে দিই কতো রুদ্ধমুখ বাঁককে,
ফিসফিসিয়ে গল্প শোনাই
আর ঝাঁপিয়ে পড়ি থরথর আবেগে,
ভিজিয়ে দিই সব উৎসমুখকে।
কিন্তু সব বুকে আশ্রয় জোটেনা
সব ঠোঁট আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে না
কপালে চুমু, সে বড়োই কঠিন,
মাঝে মাঝে বেরঙীনও বটে।
আমার তখন মন খারাপ হয়,
চুপ করে নিজের পাশে বসি,
আদর করে মনকে বলি, সময় হয়েছে এবারে
ভিজতে থাকার নিজস্ব আদরে।
চাতালে নামিয়ে রাখা নৈঃশব্দের শব,
অপেক্ষা চুলায় অগ্নি সংযোগের।
শব সকটের নিঃশব্দ স্ট্রেচারখানা
পরবর্তী আরোহীকে নেবার টানটান উত্তেজনায় প্রতীক্ষারত।
এর পরের পালা, বোধ হয় সময়ের,
আগ্রাসী ক্ষুধায় সব কিছু আত্মসাৎ করে
এবার অপেক্ষা নিজেকে আবিস্কার করার,
এক রহস্যময় চুল্লিতে,
যেখানে আগে থেকেই হাজির
নিঃশব্দ হারেমের বলিপ্রদত্ত অনুভূতির লাশেরা।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..