সাদা ধূলির দূরত্বে

অয়ন্ত ইমরুল
কবিতা
Bengali
সাদা ধূলির দূরত্বে

সাদা ধূলির দূরত্বে

কোন কোন পথের কথা ভাবতেই
গোড়ালির দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে নুড়িগুলো
নিমের ঢঙ ঝেড়ে দু একটি পাখি পড়ে
দূর ছায়াগন্ধের বনে
অতল ঘোরের দিকে ধূলির হাইফেন এতটা ঝোড়ো….
দুপাশে সহস্র মধুকোপি কেঁপে কেঁপে ওঠে টিকিটের টিটিতে
ট্রেন তখনও তুলছে হাই সাদা ধূলির দূরত্বে
সেসব সিঁথিহাঁসের জলে একবার ডুবে আর ভেসে ওঠেনি গুনিনের সুর
ওদিকে আনচান বাড়ি
কণ্ঠিনালায় বেথুল বাজিয়ে রোদ
দাদার হুঁকার মীড়টুকু প্রাণে কতদূর বুনে যায় জহরের দিন
শুধাইও সুধা
ধুঁদুল পুবের রিলে মায়ের সন্ত অপেক্ষা
রপ্ত করে অনাঘ্রাত আতা
তবু হে নৃত্য হে আশাবরী
উল্টানো ক্যালেন্ডারে ছোট ছোট রঙ করা শীতে
গাছির হাঁড়ি ভরা রসে
মাছি রুয়ে দেয় বিষণ্ন তাফাল!

 

***
তারে যেতে দিও না–
ঘাড় ঘুরাই
যেতে দেখেই একটা রংধনুব্যাঙ লুফে নিল
মতিমহরের জ্যোতি
পাশেই পেচ্ছাব করছিল গন্ধগোকুল
চোখে তার রোজই মাংস লাগে
আমি ছটফট করি নুড়ি ভেঙে এই এতদূর এলাম
সাদা ধূলির দূরত্বে
ফিরে যেতে ডাকছে কুটুম পাখিটি
না ফিরে কি পারা যায়
অথচ বিমানবালা যে ঘুম পাড়িয়ে দিল
কারা যেন আলাপে টাকার গন্ধ নিচ্ছে
আর শান্তন ঢেলে বলছে
সমস্যা নেই আনন্দনগর ওখানেও আছে
আমি বেদনা থেকে বেদানার গভীরে ডুব দেই….

***
প্রহরের বিলগুলো ডিঙিয়েই মতিমহরের শ্রুতি
হরেক ফুলের মধুবালা
হাইফেনটুকু কাঁটানটে বন,একলা বিকেল
তার উহ্য থেকে
সিঁথিহাঁস পরান গন্ধের জলে উসখুস সন্ধে
পথ বেয়ে আঁচলে ভাগ হওয়া চন্দ্রপুলি
স্পিন-পর
রেখে যায় খইয়া বাবলা সমস্ত নিকেলের ওমে
স্লোগান খুলতেই কেঁপে ওঠে ঘোড়ার হ্রেষা

 

***
পড়া পড়তে যায় ডুমুরের জলে
ফুল নাকি পাখি?
গাঁদায় হলুদ আঁকিবুঁকি
গাথায় সুতো খুলে ঘুড়ি যে গোলে
বুলায় নেবুলা
পড়ায় থাকে না গো র-ফলা
আড়ায় ঝাপিয়ে রু রু রাতপরী
মনোরিলে জ্বলে
মা জাগার ঘড়িতে গো সেলেখানা ফলে
শখ সরে যায় পায়রায়
পায়রা সরে যায় উড়ায়
ওড়া সরে যায় ধীরে রাতের বালিশে….

 

***
ও নাকছাবি গোপনে গায়
হ্যাঁ,
পুণ্যপেঁপে ফুলে
পথে মাতাল পড়লে পোঁ তাড়নায়
ইয়া লম্বা নদীশর্তে ফুটলোবইকি পাতাম পাতামে
ঘটলো যে কাঁখের ওঠানামা
সাদা ধূলির দূরত্বে আজ বুঝি রূপঋণ
ঝরা বেয়ে উড়লো তো সরল পাতা
ধ্বনিকল্পে
ডুমুরের জলের বিভ্রমে এত অবলা তাই
পাঁপড়ি খুলে
কাতুকুতু বন….

***
গোপনে তুমি সাদা ধূলির দূরত্বে
এখানে থেমে গেছে মিনজিরি অন্ধু হুতুমের ডুরে….
বহুকাল ঘাসে নেই খরগোশ
রূপোর মতো কেবল শিশিরে মরে ওঠে কাকনবালা
রাত এইখানে শুরু হল….

অয়ন্ত ইমরুল। কবি। জন্ম ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশের সাভার। প্রকাশিত বই: 'ছায়া সমুদ্র' (কাব্যগ্রন্থ, ২০১৬), 'বুদ্ধের ভায়োলিন' (কাব্যগ্রন্থ, ২০১৮), 'সাদা ধূলির দূরত্বে' (কাব্যগ্রন্থ, ২০২০), 'স্বৈর হাওয়ার হরিণী'  (কাব্যগ্রন্থ, ২০২০) এবং 'কিসমত আলী অথবা শূন্য' (গল্পগ্রন্থ, ২০২০)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..