সারাদিন

আবদুল বাতেন
কবিতা
Bengali
সারাদিন

জাদুকরের প্রতি

বানাও যে বড়

তোমার রঙিন রুমালের আড়ালে

টাকার টাকশাল, কড়কড়ে কতশত নোট!

আঙুলের ফাঁকে, থুতনির কার্নিশে, কানের লতায়

ফড়ফড় করে বেড়িয়ে আসে, টাটকা টাকার মিছিল

ফাঁকি দিয়ে অবাক করা চোখ-মুখের মুগ্ধ মানুষগুলোকে।

 

নামাও, ছুঁ মন্তরে

ঝমঝম করে কয়েনের বৃষ্টি, স্ফটিকের গ্লাস উবু করে টেবিলে

শার্ট-প্যান্ট এবং কোর্টের শূন্য পকেট থেকে, মুঠি মুঠি।

অথচ তুমি জাদুকর,

প্রাণে পোষ দারিদ্রতার দাবানল

অভাবের কীট কিলবিলে, তোমার করোটির কানায় কানায়

গোপনে পচে পচে যাওয়া তোমার প্রাত্যহিক জীবন হয়

 

সারাদিন

আজ সারাদিন গোপনে কেটেছে ঘুণপোকা

একটানা ডেকেছে ঘুঘু করোটির কোণায়

বিষণ্ণ গ্রামীণ দুপুরের।

 

পাড় ভাঙ্গনের শব্দে কেঁপেছি, থেকে থেকে

বজ্রপাতে

শুনেছি পাতা ঝরার, আর্তনাদ!

পুলকিত পাপড়ির লুটিয়ে পড়া।

 

ব্যথার বন্দনাগীতিতে গেঁথে থেকেছি

দীর্ঘশ্বাসের দোজখে ডুবেছি একলা

ধোঁয়া কুয়াশায় মাখামাখি

আজ সারাদিন।

 

খুইয়েছি তিনকাল আবোলতাবোলে

মনকষ্টের করাতে ফালা ফালা

প্রতিদিনের অভ্যাসের রুটিন

আজ সারাদিন অশ্রুবিন্দুর মত লেপ্টে আছি, গালে।

 

 

নিউ ইয়র্কের প্রতি নিবেদিত পংক্তিমালা

নিস্তব্ধ নিউ ইয়র্ক, শ্রেয়সী

আমাকে বানাও তোমার বেদনার বিউগল

কাঁপাও আমার আট কুঠুরি নয় দরজা

ইস্রাফিল ফুঁৎকারে।

ছড়াও শোকার্ত

হৃদয়ের স্বরলিপি

পাহাড় থেকে সমুদ্রে, অরণ্য থেকে মরুভূমিতে।

 

তোমার শরীর জুড়ে

যে সমাধির বিস্তার

কফিনের কারুকার্য

দৃষ্টিব্যাপী এপিটাফের অরাজকতা

তোমার কণ্ঠনালী বেয়ে

যে শ্লোকের সন্ত্রাস

আমাকে ছুড়ে মারছে মহাশূন্যতায়

টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলছে, অবিরত!

 

তোমার বিবর্ণতায় বলি হতে চাই, প্রেয়সী

আমাকে নাও তোমার সহমরণে

ভাসাও, বেহুলার ভেলা

অকূল সুরের স্রোতে!

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

যাযাবর

যাযাবর

যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..