প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
(ধারাবাহিক কবিতার শেষপর্ব)
১৭
নষ্ট মেয়ে নষ্ট দেহে বিনষ্ট যৌবন
তাই পতিতার তকমা-আঁটা ভ্রষ্ট বিলক্ষণ
আমসি স্তন হলেই মাসীর খাতায় হয় বিলীক ,
পান্থশালায় দাঁড়ায় না আর উদ্ভ্রান্ত নাবিক
নোঙর করার মোহন নেশায় , সে এক
ভরসাহীন
ভবিষ্যতের গলগণ্ড কাটায় রাত্রিদিন ,
নষ্ট দেহের গ্রন্থিগুলোর ভ্রষ্ট ব্যভিচার
চিড়িক চিড়িক মিড়িক তোলে নষ্ট ভ্রূণ তার
নিঃশ্বাসকে ঘুলিয়ে তোলে , নাভিশ্বাস ওঠে ,
মেয়েরাই নয় , বেশ্যা পতিত পুরুষগুলোও বটে ,
পুরুষগুলোই মেয়েদেরকে সর্বনাশে নামায়
কেউ মেটাতে যৌনক্ষুধা , কেউ জোটাতে কামাই ,
তারাই যতো ধর্মাচারের সাজে ধ্বজাধারী
ধর্মে শোনায় একতরফা তাদেরই খবরদারি ,
নারী এই বিশ্ব নারী বিদ্রোহ করুক
ঘরে ঘরে তারাই হোক আজ প্রতিবাদের মুখ,
তাদের দুঃখ—-আজন্ম দুখ তবেই ঘুচতে
পারে
হাজার হাজার প্রচেষ্টা চায় সমাজ সংস্কারে ,
কামুক কুকুর পুরুষগুলোর ভূমিকার গর্ব
চিরতরে তবেই কেবল হ’তে পারে কচুকাটা খর্ব ।
( ১৮ )
কান্না আর কান্না ঘুরে মাতৃত্বের বুকে
যে ফেলে দ্যায় বুকের শিশু সমাজের চাবুকে
রিক্ত হ’য়ে , ক্ষিপ্ত হ’য়ে ,জর্জরিত হ’য়ে ,
জরাগ্রস্ত সে আর্তনাদ মৌন দিগ্বলয়ে
মাথা কুটে ব্যর্থ বিরাণ শ্মশানপুরীর মতো ,
গ্লানি আর পাপ সেই হুতাশে হয় ক্ষতবিক্ষত
শত সহস্র অভিধায় , পরিচয়ের ভয়
জয় করবার অক্ষমতা আঁধারের প্রশ্রয়
ছড়ায় মনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে , বিবেকের দংশন
দগ্ধ করার চেয়েও বাড়ায় নরকের ইন্ধন—
অপাঙ্ক্তেয় অপৌরুষের ভিক্ষা চাওয়া নয় ,
তাকে আজীবন ধ্বংস করার দীক্ষা ব্রত হয় ;
কান্না আর কান্না ঘুরে অভিশপ্ত মাতৃত্ত্বের বুকে ,
পরিত্যক্ত ভ্রূণের মতোই জরোজরো ধরিত্রী তার ধুঁকে ।
তোমরা পুরুষ বুঝবে না এর ভয়ঙ্কর জ্বালা—
দায়-দুঃখে গুমরে মরে সম্মোহনের মন্দিরার ঝালা ।
( ১৯ )
আমি মেয়ে আমি নারী
আমি বালা আমি বধূ
অহংকারী যৌবনের মধু
পান ক’রে
আমাকে তোমরা পতিতা করো ,আমি নই
বারবার আকণ্ঠ সম্ভোগ করার সুবিধার্থে
আমাকে বেবাক লালবাতির দেশে
গণ্ডীবদ্ধ ক’রে রাখো তোমরাই, আমি নই
আমার সবকিছু ছিঁড়েখুঁড়ে খেতে
বুনো কামার্ত কুকুর হও তোমারাই, আমি নই
মাংসের সম্ভোগ সেরে চোরের মতন সদর রাস্তার ভিড়ে
ধীরে সুস্থে তোমরা গা ঢাকা দাও , আমি নই
রাণ্ডি মহল্লায় যাওয়ার বিকৃত রুচির নিন্দার্হ ঘটনা
তস্করের মতো গোপন করার বড়ো
মহৎ মুখোশ ধরো সেজেগুজে তোমরাই, আমি নই
আমার নারীত্ত্বের স্বামী সন্তান সংসারের
সাধারণ সুস্থ অধিকার কেড়ে নাও নির্বিকার
ট্যাঁকের মোহর ছেড়ে তোমরাই ,আমি নই
তোমরা আমাকে যা যা বলো করো ভাবো করাও
সে আমি নই , সে আমি নই ,সে আমি নই ।
আমি মেয়ে আমি নারী
সংসার ব্রতের দেবী বিশুদ্ধ পৌরুষের পূজারী ,
পতিত পুরুষকুল কাপুরুষ তোমরা আমার
নির্বাত নির্মোহ প্রেমে উপলব্ধির দুর্লভ
নিকষিত হেম পাওয়ার
যোগ্য নও , যোগ্য নও , তার মিথ্যা স্তব
ক’রে পাও শুধু ক্ষতি ভুল রতি রক্ত-বমি নর্দমার দ্বার ।
( ২০ )
আমি চাই , যাও
নিয়ে এসো সেই নারীটিকে
যাকে তোমরা বলো অগম্যা অশুচি
যাকে বলো স্বৈরিনী সুন্দরী
যাকে বলো বারাঙ্গনা বধূ , গোদা বাংলায়
বেশ্যা বলো যাকে ,
যাও তাকে নিয়ে এসো
এইখানে—এই চৌরঙ্গীতে ,এই ধর্মতলায় ,এই
শহীদ মিনারের পাদভূমে মর্মর বেদীতে
দাঁড় করাও তাকে , তার ডান হাতে দাও
তাজা তাজা রক্ত-লাল ফুলের স্তবক
আর বাম হাতে দাও
দামী দামী গাদা চকোলেট যেন সোনায় বাঁধানো , তারপর
কেটে পড়ো যে যার
স্বার্থপর প্রবৃত্তির নিজের ধান্ধায়,
সে দাঁড়িয়ে থাক্ এইখানে
এই আলো ঝলমল সুন্দর সকালে
তার প্রতিদিনের প্রতিমূর্ত্তি হ’য়ে
ঐশ্বরিক প্রতিমার মতো এইখানে
সে দাঁড়িয়ে থাক্ নির্বাক নিষ্পলক নিঃসঙ্গ গন্তব্যহীন ।
বছরের অন্ততঃ একটি দিন
বিঘোষিত হোক বিশ্ব-গণিকার সংহতি দিবস
দশ বিশ পঞ্চাশ একশো কিংবা দু’চার হাজার
নরনারী পতিত মানবকুল অংশ নেবে যার মহতী সভায়
তার মর্মর মূর্ত্তিতে মালা দিয়ে অন্তরের নির্মোহ নীরব
অভিবাদন করুক তাকে বিনয়-বিদগ্ধ নরনারী ।।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..