প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
এক
সুন্দরবনে সুমন্তদার সাথে
সুমন্তদাকে অনেকে সুমনদা বলে থাকেন।তিনি একাধারে গোয়েন্দা, বিজ্ঞানী ও প্রকৃতিপ্রেমী ব্যাক্তি।
সুমন্তদা এবার সুন্দরবন যাবেন। তোড়জোড় চলছে।সুমন্তদা বলেন, বেড়াতে গিয়ে কতরকমের অভিজ্ঞতা যে হয় তার তুলনা মেলা ভার।
পূর্ব বর্ধমান থেকে কলকাতা গিয়ে সুমন্তদা নামখানার বাস ধরলেন সুন্দরবন যাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন সহকারি তেতনকে,বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের শেষ ভূ-খন্ড সুপরিচিত ও সুবিস্তৃত সাগর ব-দ্বীপ৷ এখানে প্রতি বছর মকরে বা পৌষসংক্রান্তিতে কপিলমুনির মেলা ও পুন্যস্নান উপলক্ষে চার-পাঁচ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হয়৷ প্রবাদ আছে এই তিথিতে সঙ্গম স্নান করলে পুন্যস্নানে পাপস্খলন ও স্বর্গলাভের পথ সুগম হয়৷ পুন্যস্নান উপলক্ষে মেলা বসে জানুয়ারি ১৪ তারিখ থেকে৷ মেলা উপলক্ষ্যে কলকাতা থেকে অসংখ্য বাস পুন্যার্থীদের নিয়ে ছুটে যায় হারউড পয়েন্টের দিকে৷ রাজ্যের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম মেলা এটি৷ সাগর দ্বীপে কপিলমুনির আশ্রমে বা সঙ্গমে পৌঁছাতে হারউড পয়েন্ট থেকে লঞ্চে কচুবেড়িয়া গিয়ে সেখান থেকে বাসে বা ট্রেকারে অথবা প্রায় ৩০ কিঃমিঃ পথ পাড়ি দিতে হয়৷ ট্রেনে নামখানা স্টেশনে নেমে ভ্যান রিক্সা করে হারউড পয়েন্টে পৌছানো যায়৷
তোতন বলল কোলকাতা থেকে নামখানা বাসে বা ট্রেনে গিয়ে লঞ্চে পেরিয়ে পৌছে যাওয়া যায় চেমাগুড়ি৷ সেখান থেকে মাত্র ৮ কিঃমিঃ রাস্তা গেলে সঙ্গম স্থল৷ তবে মেলার সময় ছাড়া এই পথে ঠিকমত লঞ্চ চলে না৷ আর অন্যান্য সময় লঞ্চ চালু থাকলেও মেদিনীপুর জেলার রসুলপুর থেকে আসা লঞ্চ মেলা চলাকালীন বন্ধ থাকে৷ ফলে সেই সময় কোলকাতা হয়েই সাগরে যেতে হয়৷
শুধু মাত্র পুন্যস্নানই নয়, অন্যান্য সময়ে ধূ-ধূ বিস্তৃত সাগর বেলা, একদিকে মুড়িগঙ্গা ও অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরের উপস্থিতি, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণে নকসা কাটা বালুতট পযটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের৷ তাই শুধু মেলার সময়েই নয়, সারা বছর ধরেই পর্যটকরা এখানে আসেন৷ তাঁদের থাকার জন্য রয়েছে ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রম, জেলা পরিষদের বাংলো, পঞ্চায়েতের বাংলো এবং ছোট বড় নানান হোটেল৷সুমন্তদা বলেন, দঃ ২৪ পরগনার পর্যটনস্থল বলতে সাগরদ্বীপের পরেই আসে পৃথিবীর বৃহত্তম বনভূমি আবৃত ব-দ্বীপ অঞ্চল সুন্দরবন৷ সুন্দরী, গরান, গর্জন, গেওয়া-র ছায়ায় ঘেরা গা-ছমছমে বনবিবি আর দক্ষিণ রায়ের আবাস৷ মনোরম পরিবেশে নানা রকম পাখি, হরিণ, কচ্ছপ, বুনোশুয়োর, গোসাপের সঙ্গে রয়েছে জলের কুমীর আর ডাঙ্গার বাঘ৷
কোলকাতা থেকে ক্যানিং, সোনাখালি হয়ে অথবা কৈখালি থেকে ঢুকে পড়া যাবে এই জঙ্গলে৷ পঃবঃ পর্যটন দপ্তর ছাড়াও দঃ ২৪ পরগনা বনদপ্তর (২৪৭৯ ৯০৩২)। যথাযথ প্রবেশের অনুমতি সংগ্রহ করে যেতে হয় এই বনভূমি অঞ্চলে। এ ছাড়া অনেক বেসরকারী ভ্রমন প্রতিষ্ঠান ও এই ভ্রমন পরিচালনা করে থাকে।
ঘুটিয়ারী শরীফ ক্যানিং – এখানে আছে পীর মোবারক গাজীর (বড়খাঁ গাজী) দরগা ও মসজিদ৷ মুসলমানদের তীর্থক্ষেত্র৷ প্রতি বছর ৭ই আষাঢ় থেকে শুরু হয় গাজীর তিরোধান দিবস৷ সঙ্গে মেলাও বসে৷ এখানে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যোগদান করেন৷
পুরাতন গীর্জা-বাসন্তী – ক্যানিং থেকে নৌকায় বা মটর লঞ্চে গোসাবা হয়ে যাওয়া যায়৷ এখানে ভরতগড় স্থানটি প্রাচীন৷ বাসন্তীচার্চ এখানকার দর্শনীয় স্থান৷
হ্যামিলটনের বাংলো গোসাবায় স্যার ড্যানিয়েল ম্যাকিনন হ্যামিলটন সুন্দরবন অঞ্চলে চাষাবাদ প্রবর্তনের জন্য একটি কৃষি উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করেন গোসাবায়৷ এখানে তার বাংলোটি দর্শকদের আকর্ষণের বস্তু৷ কাঠের তৈরী এই বাংলোর আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক ও অন্যান্য পর্যটকরা৷ একটি ঐতিহাসিক গ্রন্থের গ্রন্থাগারও এখানে স্থাপিত হয়েছে৷
সুমনদা বললেন,হ্যালিডে দ্বীপ বঙ্গোপাসোগর ও মাতলা নদীর সঙ্গমে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে রয়াল বেঙ্গল টাইগার এবং পাখি দেখা যায়৷ আলিপুর D.F.O. অফিসের অনুমতি নিয়ে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে যাওয়া যায়।
দাদা ও দিদি এবার সুন্দরবন ঘুরে দেখলেন।
সজনেখালি সুন্দরবনের গভীরে অরণ্য দেখতে আগ্রহী মানুষ কলকাতা থেকে বাসে বা ট্রেনে সোজা চলে যেতে পারে বাসন্তীর সোনাখালি বা গদখালি৷ সেখান থেকে লঞ্চে চেপে ঢুকে পড়া যায়৷ সুন্দরবনের ভয়াল ভীষণ অরণ্যে৷ সজনেখালি বার্ডস্যাংচুয়ারি একটি দর্শনীয় স্থান৷ সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত এই বার্ড স্যাংচুয়ারি৷ দক্ষিনে হ্যালিডে দ্বীপ৷ এখানকার হেতাল বন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রিয় বাসস্থান৷ হাঁস, পানকৌড়ি, ঈগল, শঙ্খচিল প্রভৃতি পাখির বাস এখানে৷ তবে থাকলে ওয়াচ টাওয়ারে বসে হরিণ, বানরের সঙ্গে বাঘের দেখা মেলাও আশ্চর্যের নয়।
বকখালি নামখানা পর্যন্ত ট্রেনে গিয়ে সেখান থেকে অথবা কলকাতা থেকে সরাসরি বাসে পৌঁছে যাওয়া যায় বকখালি সমুদ্র সৈকতে৷ যাওয়ার পথে বাস সমেত লঞ্চে উঠে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পেরোনোর অভিজ্ঞতা সত্যি সত্যি রোমাঞ্চকর৷ এখানকার সমুদ্র সৈকত, ম্যানগ্রোভ বন, উন্মুক্ত চিরিয়াখানা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণের৷
ফ্রেজারগঞ্জ নামখানা থেকে বকখালি হয়ে ফ্রেজারগঞ্জ ঘুরে আসার আকাঙ্খা অনেক পর্যটকেরই হৃদয়ের আকর্ষণ৷ বাংলার গভর্নর স্যার এন্ডুফ্রেজার সাহেবের নামে৷ এখানে একটি মৎস্য বন্দর আছে৷ এছাড়া নৌকায় করে সমুদ্র মোহনায় ঘুরে আসাও খুবই আকর্ষণের ব্যাপার৷
গঙ্গাসাগর সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে অবস্থিত সাগর দ্বীপ ছিল ৫টি দ্বীপের সমষ্টি৷ পাঁচটি দ্বীপ হল সাগর, ঘোড়ামারা, সুপারীডাঙ্গা, আগুনমারী ও লোহাচড়া৷ বতর্মানে মাত্র দুটি দ্বীপ অবশিষ্ট সাগর ও ঘোড়ামারা। এখানে হুগলী নদী বঙ্গোপাসাগরে মিশেছে৷ এই সঙ্গমে প্রতিবছর পৌষ-সংক্রান্তির দিনে ১৪ই জানুযারী কপিল মুনির মন্দিরে সারা ভারতবর্ষের লক্ষ লক্ষ পূনার্থী সাগর সঙ্গমে পূন্যস্নান করে, পূজা দেন এখানে পাপমুক্তি ও পরিবারের শান্তি কামনা করেন৷ এছাড়া ভারত সেবাশ্রম সংঘের ব্যবস্থাও আছে৷ হোটেল, যুবআবাস, ধমর্শালা প্রভৃতিতে পর্যটকরা অবস্থান করতে পারেন৷
পাঁকুড়তলা এই স্থানটিতে প্রত্নসম্পদ সমৃদ্ধ দুটি বিশাল ঢিবি থেকে প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গেছে৷ নানারকম মুদ্রা, পোড়ামাটির পুতুল, পশুপাখি, নানারকম পাত্র, শিলমোহর, ছাচ্, গনেশ ও বিষ্ণুমূর্তি ও শিবলিঙ্গ আছে এখানে৷
শিবকালী নগর এখানকার বিশালাক্ষী ও ইশানেশ্বর শিবমন্দির বিখ্যাত দক্ষিনমুখী মন্দিরের গর্ভগৃহে ৩ ফুট উচ্চতার পিতলের চতুর্ভূজ দেবীমূর্তি বিরাজ করছে৷ দেবীর মূখমন্ডল অষ্টধাতু নির্মিত৷ শিবরাত্রি ও গাজন উৎসবে আসে স্থানীয় ধর্মপিপাসু মানুষ ও বহু সন্ন্যাসী৷
দুই
সুমন্তদা ও সাইকোভেগাস
গোয়েন্দা সুমন্তবাবু শুধু গোয়েন্দা নন। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী,গোয়েন্দা বিচক্ষণ ব্যক্তি।তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট সংবাদ রাখতে আগ্রহী। তিনি বিজ্ঞান এর সংবাদ সম্বলিত বইগুলো পড়েন আর তোতনকে বিশ্লেষণ করে বোঝান সেই কারণগুলো।কম্পিউটার আর মোবাইলের সাহায্যে এখন পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনেছে মানুষ। টাকা নিয়েও তিনি কাজ করেন আবার সমাজসেবক হিসেবেও তার নাম আছেন। আজ গোয়েন্দা সুমন নিজের বাড়ির বারান্দায় বসে আছেন। এই সময়টাতে নিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞান সংবাদ এর বইগুলো পড়েন। গোয়েন্দা সুমনের নিত্যসঙ্গী তোতন। গোয়েন্দা সুমনের কথাবার্তা শুনছেন তোতন। সুমন বলছেন, ভালুকের আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে গেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। দুই মেরুর বরফ গলতে শুরু করেছে।এই বরফের দেশের বাসিন্দা হলো শ্বেত ভালুক তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বাসস্থান হারিয়ে যেতে শুরু করেছে।
এর ফলে সে দলই তাদের নতুন বাসস্থান খোঁজার জন্য মাইল মাইল বরফের ভেতর দিয়ে সাঁতার কাটতে আরম্ভ করেছে।
সুমন্তবাবু বলছেন, এই ভল্লুক গুলো সাধারণত বেশিরভাগ সাঁতারে অভ্যস্ত নয়।।তোতন বল্লো, তাহলে এই ভাল্লুকের ভীষণ বিপদ।
তারা তাদের বাসস্থান এর আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়।প্রয়োজনমতো সাঁতার কাটে।
কিন্তু তাহলে এতদূর সাঁতার কেটে ফিরে আসবে কি করে।
তখন গোয়েন্দা সুমন বললেন, কিছু সাঁতার কাটতে কাটতে খোলা সমুদ্রের বুকে এসে পড়েছে। তারা তাদের বাসস্থান থেকে কিছু কিছু সময় 95 কিলোমিটার পর্যন্ত চলে আসতে দেখা গেছে। ফিরে যাবার ক্ষমতা থাকেনা এবং জলের মধ্যে দেহ ত্যাগ করে।
তোতন বলল, এটা জাপান মিনারেলস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস এর ‘এনভারমেন্ট নিউজ’ পত্রিকার নাম।
গোয়েন্দা সুমন বললেন, হ্যাঁ উত্তর উপকূলে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বেশকিছু শ্বেত ভালুক কে জলে সাঁতার কাটতে দেখা গেছে।
ওই জায়গায় কুড়ি শতাংশ ভালুক আশ্রয় খুঁজে সমুদ্র ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং উত্তর মেরুর বরফ এশিয়ার প্রতি দর্শকের 10% গলতে শুরু করেছে। সেই হিসাব করে দেখেছি 1.5 মিলিয়ন কিলোমিটাে রবরফ নষ্ট হয়েছে।
গত চার বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা অনেক বেশি উঠেছে।
নিজেদের মাংস নিজেরাই খাচ্ছে।খাবার নেই তাই।
তারা একে অপরকে আক্রমণ করছে এই খাবারের অভাবে।
এইসব জায়গাগুলোতে যেখানে এরকম ঘটনা ঘটেছে গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে জায়গাগুলো মিশে গেছে সমুদ্রের বুকে।
তোতন এই কাহিনী শুনে খুব দুঃখ পেল।
হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করলেন, এক বৃদ্ধ ব্যক্তি।
তিনি বললেন তিনি এক বিপদে পড়েছেন। গোয়েন্দা সুমনের সঙ্গে কথা বলার আগে তোতনকে কথা বলতে হয়।
তোতনের সঙ্গে কথা বলতে হয় বৃদ্ধ জানতেন না তোতন দরজা খুললেন।
তোতন গিয়ে প্রথমে দরজা খুললন।
তারপর বললন, কাকে চাই?
বৃদ্ধ বললেন আমি গোয়েন্দা সুমনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি
– বলুন আমাকে বলুন কি প্রয়োজন
-আমার নাম তোতন। আমি তার সহকারি। তখন বৃদ্ধ ব্যক্তি বললেন, আমার একটা সমস্যা হয়েছে কিছুক্ষণ বসে আলোচনা করলেই ভালো হয় তখন বললেন তোতন বলল আসুন ঘরে আসুন বসুন।
তারপর বৃদ্ধ ব্যক্তিটি চা খেয়ে গোয়েন্দা সুমনের দেখা পেলেন।
তার সামনাসামনি বসলেন সুমন।
বললেন, বলুন আপনার সমস্যা কি?
বৃদ্ধ শুরু করলেন আমাদের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি। সেখানে হঠাৎ আমি একদিন রাতে আবিষ্কার করলাম এক প্রাণীকে সেটা পৃথিবীর প্রাণী নয় অন্য কোন গ্রহ থেকে আসা হয়তো তারা মানুষের ভাষা বুঝতে পারছে। কিন্তু আমি এটা বলা মাত্র গ্রামে কোন লোক বিশ্বাস করছে না। গ্রামের লোক আমাকে পাগল বলছে। এটাকে দেখাতে না পারলে লজ্জায় আমাকে মরতে হবে।
জীবটি লুকিয়ে পড়ে যে কোন এক জায়গায়। তাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না।
এখন আপনার সাহায্যে প্রাণী কে আবিষ্কার করে আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করাই এখানে আসার কারণ।
তার জন্য অর্থ ব্যয় করতে আমি প্রস্তুত আছি।
গোয়েন্দা সুমন বলেন, আপনি আশ্চর্য হবেন না। আরে বাবা ভলতেয়ারের সেই বইটা পড়েন নি যে পৃথিবীতে এসেছে তার চেহারা অদ্ভুত 24,000 জ্যামিতিক অংশ দিয়ে সেই জীবের দেহ তৈরি।
প্রতিটি অংশের দৈর্ঘ্য 5 ফুট।
তার নাকের দৈর্ঘ্য 5714 ফুট পড়েছেন। এত বড় নাকের মালিক যিনি হন তাদের বুদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই মানুষের চেয়ে অনেক বেশিগুণ হয়।
বৃদ্ধ বললেন আমিতো অতশত জানিনা আমার পড়াশোনা অতদূর নয়।
আমি তবু দেখলাম সূর্যের বিপরীতে মানুষের ছায়া যত দীর্ঘ হয়।
সেরকম দীর্ঘ চেহারার ছায়ার মত কালো চেহারার লোক।
লোক বলাই ভাল কারণ হচ্ছে এ লোক নয় অন্য গ্রহ থেকে আসা মনে হচ্ছে।
আমাদের পৃথিবীর মানুষ নয়।
আপনি গিয়ে সেটা আবিষ্কার করতে পারলে সব থেকে ভাল হবে।
সুমন বললেন নিশ্চয়ই যাবো আমরা আপনার ওখানে যাব ঠিক আছে আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করে সমস্ত কথা বলব।
পরেরদিন গোয়েন্দার সাজে সেজেগুজে গোয়েন্দা সুমন সহকারি তোতনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন সেই বৃদ্ধের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
ঠিক চার ঘন্টা ট্রেন জার্নি।
পরে তারা তার বাড়িতে পৌঁছালেন।
বৃদ্ধ তৈরি ছিলেন তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য।
তিনি নিয়ে গেলেন ঘরে এবং তাদের থাকার জায়গাটি দেখিয়ে দিলেন।
দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে গোয়েন্দা সুমন আর তোতন গ্রাম দেখতে বেরোলেন।
বেশ বৈচিত্র্যে ভরা সবুজ সবুজ গাছগাছালি মন কেড়ে নেয়।পাশেই ফালি নদী। পাড়ে ফল গাছ।
ভেতরে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তোতন আর সুমন কথা বলতে বলতে চলেছেন। এক জায়গায় তারা বসে পড়লেন। জঙ্গল খুব ভালোবাসেন গোয়েন্দা সুমন।
তিনি সবুজ একটা পাতা হাতে নিয়ে বললেন এটা কি গাছের পাতা বলতো?
তোতন বলল, এই পাতা আপনি হাত দিয়েছেন? আপনার তালুতে আছে কোন অস্বস্তি হচ্ছে না বলছেন না তালুতে বিছুটি পাতার কোন প্রতিক্রিয়া হয় না।
কিন্তু এটা ঘষে দিলে রস যদি এদেহে লাগে তাহলে তখন জ্বলতে শুরু করে।
বলছি, আমি চিনি এটা বিছুটি পাতা।তোতন বললেন।
গোয়েন্দা সুমন আক্ষেপ করে বললেন এখনকার ছেলেরা এই বিছুটি পাতা, ডুমুর গাছ, নয়ন তারা গাছ, তারপর বাঁদর লাঠিগাছ এইগুলো কি আর চিনতে পারবে?
কত বিভিন্ন রকমের প্রকৃতিতে গাছ আছে। যারা আপনাআপনি বেড়ে ওঠে। তাদের লাগাতে হয়না কদবেল গাছ বেলগাছ এগুলো আস্তে আস্তে যেন হারিয়ে যাওয়ার পথে। বিশ্বপ্রকৃতির কতটুকু চিনি আমরা ভাই।
সুমন আর তোতনের কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে তারা বুঝতেই পারেনি।
হঠাৎ বন্ধ করলো তাদের আলোচনা একটা ছায়ামূর্তি।
কে যেন আড়ালে সরে গেলো।
তোতন ইশারা করে গোয়েন্দা সুমনকে, এগিয়ে গেলেন জঙ্গলের পাশে।
তিনি দেখতে পেলেন একটা ছায়ামূর্তি যাচ্ছে। ওরা দুজনেই পিছনে ছুটতে শুরু করলেন।
তাড়া করতে করতে জঙ্গলে গভীরে গিয়ে ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে গেল আগ্রহ ভরে।
দাঁড়িয়ে পরিষ্কার বাংলা ভাষায় বলল কেন তোমরা আমার পিছু ধাওয়া করেছ? কোন প্রয়োজন আছে।
গোয়েন্দা সুমন উত্তরে বললেন আপনি এত সুন্দর পরিষ্কার বাংলা ভাষা কি করে বলছেন?
তখন ছায়ামূর্তি উত্তর দিলো, আমাদের গ্রন্থিতে ভাষা অনুবাদের গ্রন্থি ব্রেনে সিলেক্ট করা আছে যাতে আমরা সব ভাষাই বুঝতে পারি।
গোয়েন্দা সুমন বললেন, আপনি কোন গ্রহ থেকে এসেছেন।
ছায় বলল আমি ইউরেনাস গ্রহ থেকে এসেছি আমরা আমরা পৃথিবীতে বেড়াতে এসেছি। এখানকার জীব বৈচিত্র। এখানকার সবুজ প্রকৃতি বৈচিত্র দেখতে।
আমার মত অনেকেই এখানে এসেছেন। আপনার নাম কি?
আবার সুমন জিজ্ঞাসা করল আপনার নাম কি?
উত্তর দিলো ছায়া আমার নাম সাইকোভেগাস।
আপনার নামের সঙ্গে সাইকো যুক্ত কেন?
প্রশ্নের উত্তরে বলল, আমরা সব মানুষকেই সন্দেহ করি। তারপর সন্দেহের তালিকা থেকে তাঁর অন্তরের কথা বুঝতে পারি।
গোয়েন্দা সুমন বলল আপনাদের পরমায়ু কত সাইকোভেবগাস বলল, আমাদের পরমায়ু খুব কম। খুব কম।
তোতন বল্লো, কত কম বলুন না।
বলল, আমাদের পরম আয়ু মাত্র সাড়ে 600 বছর।
আমরা মানুষরা তো 100 বছরে বুড়ো।
আমাদের চামড়া ঝুলে পড়ে।
আশি বছর হলে আমরা হাঁটতে পারি না।
সাইকো বলল, তোমরা খাও তোমাদের খাওয়া-দাওয়া ঠিক না।
আমরা গাছের সবুজ পাতা আর সৌরশক্তি সাহায্যে বেঁচে থাকি।
আর তোমরা খাও আর চৌদ্দবার করে মলত্যাগের জন্য যাওবাথরুমে।অই সময়টা আমাদের জীব উন্নয়নে কাজে লাগাই।কাজ করতে করতে খাই। বাকি সময় ঘুমোই। ঘুম না হলে উন্নয়ন বন্ধ।
তোতন বলল,এটা নতুন কথা। তারপর বলুন।
-আমরা বছরে একবার মাত্র মল ত্যাগ করি। গোয়েন্দা সুমন বললো আমাদের প্রকৃতি খুব সুন্দর। দেখে আপনার আনন্দ হবে আশা করি।
সাইকো ভেগাস বললন, আপনাদের গ্রহে আরো গাছ লাগান।
সবুজে ভরে তুলুন। তানাহলে, ‘ভেগো ভাইরাসে ‘ধ্বংস হয়ে যাবে এই গ্রহ।
তোতন বলল আমরা শুনেছি ইউরেনাস এত মাটি নেই।
সাইকো বলল আপনারা শুনেন অনেক কিছু কিন্তু কোনটাই সঠিক নয়।
স্কাইল্যাব এ চড়ে আমরা মহাবিশ্বে ঘুরে বেড়াই। এই মহাবিশ্বের কতটুকু খবর রাখেন আপনারা মানুষেরা।
গোয়েন্দা সুমন বললো আমরা দুজন আপনাদের গ্রহে যেতে চাই আপনি কি নিয়ে যেতে রাজি?
সাইকো বেগাস বলল, হ্যাঁ নিশ্চয়ই আমার সঙ্গেই আমার মহাকাশযান আছে।
আপনাদের বিশ্ব বাংলা লোগো ওই সবুজ রঙের গোল ফুটবলের মত আমাদের মহাকাশযান।
গোয়েন্দা সুমন আর তোতন মহাকাশযানে চেপে বসলো। গোয়েন্দা সুমন বললো আমাদের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফেরত দিয়ে যাবেন তো?
সাইকো বলল, আমরা কথা ও কাজে সত্যতা রাখি।
সাইকো বলল আমাদের প্রতিটি মিনিট খুব দরকারি তাই আমরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আপনাকে এখানে পৌঁছে দেবো কথা দিচ্ছি।
মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে গেল ইউরেনাস।প্রচুর অক্সিজেন।হাল্কা শরীর তোতন বলল। সুমন বললেন, এ জয়ফুল প্ল্যানেট ফর গ্রীন।
এত মহাকাশযানের গতি দেখে গোয়েন্দা সুমন অবাক। বলল আপনাদের এখানে এত নিশ্চুপ কেন। এত চুপচাপ সব কথা বলছে।
সাইকো বলল আমাদের এখানে মানুষ বলি না। মানুষ তো নয় এদের অন্য নাম আছে।ভার্জিন প্লানেটেরিয়ান।
এই গ্রহে বেশিরভাগ সময় রাতে ঘুমোতে হয় এবং ঘুমিয়ে থাকার ফলে এদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায় এবং পরম আয়ু বাড়ে।
কিন্তু গোয়েন্দা সুমন বলল আপনারা কি করে এত উন্নত হলেন এই সামান্য ঘন্টা জেগে থেকে। সে বলল আমাদের প্রতিটা মিনিট হচ্ছে ঘন্টার সমান।
আমরা প্রত্যেকটা মুহূর্তকে সুন্দর কাজে ব্যয় করি।
গোয়েন্দা সুমন বললেন, এই রহস্য আমাকে একটু বিশ্লেষণ করুন বলুন।
তখন সাইকো বেকাস বলল প্রায় উনিশ লক্ষ বছর ধরে এই 12 ঘন্টা বাধ্যতামূলকভাবে এই গ্রহে শারীরবৃত্তীয় বিবর্তন ঘটেছে।
আমরা উপযোগী হয়ে উঠেছি এই গ্রহে। এটা লক্ষ্য করবার মতো আমাদের যেমন দিনের বেলায় খিদে পায়। রাতে সে অনুভব খিদে করে না।
অল্প বয়সে যারা আমাদের গ্রহের ঝটপট করে কিন্তু রাত্রে 12 ঘণ্টা ঘুমিয়ে না খেয়ে কাটিয়ে দেয় কি করে এটা সম্ভব হয় একমাত্র মানবদেহে অপেক্ষাকৃত অল্প পরিমাণে যার জন্য হয়।
গোয়েন্দা সুমন ঠিক ধরেছেন এই পয়েন্টটা বললেন আমাদের মানব শরীরে ঘ্রেলিন হরমোন নিঃসরণঘটে। এটা তো আপনাদের জীবনের সঙ্গে মানবজীবনকে মিলিয়ে দিচ্ছে। সাইকোভগাস বলল, অতএব নিশ্চিত হয়ে যান। আপনাদের পরমায়ু ক্রমশ বাড়তেই থাকবে। তবে শর্ত হল সবুজ গ্রহ চাই।
তাহলে এটা কিন্তু আপনাদের গ্রহের জীবের সঙ্গে আমাদের গ্রহের জীবের হরমোন একদম মিলে যাচ্ছে।
সাইকো বিকাশ বলল দীর্ঘকালীন হরমোন নিঃসৃত অপেক্ষাকৃত অল্প পরিমাণে যার জন্য দেহে ক্ষুদ্র উদ্যোগ সামান্য হয় অন্যদিকে ওই সময় ক্ষুদ্রতম নিঃসরিত হয় এই দুটি রাসায়নিক যৌগের সমানুতা নিয়ে বিব্রত হয় না মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে ঘুমের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে কেননা ঘুমের দৈর্ঘ্য যখন 8 ঘন্টা থেকে কমিয়ে 5 ঘন্টা না হয় তখন দেখা যায় ক্ষুদ্র ঋণের পরিমাণ শতকরা 15 ভাগ বেড়ে গেছে অন্যদিকে ক্ষুদ্র ঋণের পরিমাণ শতকরা 15 ভাগ কমে গেছে।
সাইকো বেকাস বলল এই শরীর দীর্ঘ ঘুমের উপযুক্ত হয়ে বিবর্তিত হয়েছে বর্তমান জিভে কাজের পরিমাণ বাড়ায় ঘুমের পরিমাণ কমে গেছে প্রতিদিন 12 ঘণ্টা ঘুম মনে হয় সর্বনিম্ন পরিমাণ এর থেকে কম হলে শরীর ও মনে নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ভূমি মানুষের সঞ্জীবনী সুধা সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে কার্যকর শারিরীক ও মানুষিক বন্ধু শত দুঃখ ভরা রাত্রি যখন প্রয়াত হয় তখন রাতের ঘুম থাকে এক নতুন মানুষের পরিণত করে সকল আশা উদ্দীপনা নিয়ে নতুন করে জীবন সংগ্রামে।
বন্ধু সুমন বললো তাহলে এই ঘুমের পরিমাণ পৃথিবীর মানুষের বেড়ে গেলে তাদেরও পরমায়ু আপনাদের মত বেড়ে যাবে সাহস বললো নিশ্চয়ই বাড়বে এবং এটাই একমাত্র উপায় কিন্তু একটা শর্ত আছে শর্ত হলো সবুজ গ্রহ চাই সবুজ ছাড়া মানুষের মুক্তি নাই ।
তোতন বলল তাহলে আমরা শিখলাম মানুষের বার্ধক্য ত্বরান্বিত হয় দীর্ঘকাল ধরে নিবে করলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম সংক্রান্ত ব্যাহত হয় দেহ কোষের মধ্যে অক্সিডেশন বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ বাড়ে তার ফলে কোশপর্দার ডিএনএর ক্ষতি হয় বহু পরীক্ষার ফলে এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে যারা 6-7 ঘন্টা ঘুমায় তারা 4-5 ঘন্টা ঘুমায় তাদের থেকে।
সাইকো বেকাস বলল আমি শুনে খুশি হলাম সুমনের সাহায্যকারী তথনও যে এত জ্ঞানী মানুষ তা দেখে আমার ভালো লাগলো আপনারা দীর্ঘজীবী হোন।
সাইকো বেকাস বলল শুধু ক্যান্সার নয় দীর্ঘ একটানা নিদ্রা ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়া আলসার মানসিক অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে রাত্রে সুনিদ্রা দেহের ইমিউন সিস্টেমকে সতেজ করে ক্ষতিপূরণের সাহায্য করে আমাদের অজান্তে আমাদের সমস্ত পাকস্থলীর লাইন মেরামত করে রক্তে সংক্রমণ প্রতিহত করা উপযোগী কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং মেলানিনের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে এই মেলাটোনিন দেহে ক্যান্সার রোগ প্রতিহত করবার সময় উপযোগী একটি এন্টি-অক্সিডেন্ট যেসব নারীরা কাজকর্ম করে তাদের ঘুমের সময় বারবার পরিবর্তন ঘটলে তাদের স্তনে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা 70 গুণ বেড়ে যায়।
গোয়েন্দা সুমন বলল আপনি মানুষ মানবদেহের শরীরে মানবদেহ সম্পর্কে এত কিছু জানলেন কি করে সাহস বলল ওই যে বললাম আমরা সারা মহাবিশ্বের সমস্ত খোঁজখবর আমাদের রাখি আমরা যখন তখন কম্পিউটারের 10000 কাজ করতে পারি।
গোয়েন্দা সুমন এই ধরনের জীব দেখে অবাক ইউরিনে শেষে ঘুরতে পেয়ে অবাক তদন্ত খুশিতে মগ্ন কি করে এবার ফিরে যাবে সেই নিয়ে তারা চিন্তায় মগ্ন আমাদের সেই বৃদ্ধ ব্যক্তি খুঁজে হয়তো বেরিয়ে পড়েছেন সারা গ্রামের লোকদের নিয়ে তখন সে বলল আপনি চিন্তা করবেন না কয়েক ঘন্টার মধ্যে আপনাদের পৃথিবীতে ফিরে আসব।
গোয়েন্দা সুমন বলল, মানুষের শরীর আর আপনাদের শরীরের মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি একটু বলুন।
সাইকো ভেগাস বলল, মানুষের শরীরের প্রতিটি কোষে 23 জোড়া ক্রোমোজোম থাকে।
কিন্তু আমাদের গ্রহের জীবে কম করে 523 জোড়া ক্রোমোজোম থাকে।
এই মানুষের দেহে 23 জোড়া মধ্যে 22 জোড়া ক্রোমোজোম বাকি একজোড়া কে বলা হয় সেক্স ক্রোমোজোম।
কিন্তু আমাদের মধ্যে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অনেক বেশি সংখ্যক থাকার ফলে উন্নত অতিউন্নত লক্ষণ প্রকাশিত হয়।
সাইকো ভেগাস আবার বললো, প্রোটিন প্রয়োজনের নির্দেশ দেয় শরীরের ক্লান্তি।
ধারণা ছিল মানুষের প্রায় 1 লক্ষ জিন আছে এখন জানা গেছে এই সংখ্যা প্রায় 30 হাজার।
আমাদের দেহে এর সংখ্যা 30 কোটির মত একটি ক্রোমোজোমে সারিবদ্ধ ভাবে মালার মত থাকে। যেহেতু আমাদের গ্রহের জীব, প্রাণী স্বাভাবিক অতিমানবিক শারীরিক-মানসিক বৈশিষ্ট্য বিশিষ্ট।
এটা সহজেই অনুমেয় যে এই অতিমানবিক অবস্থার জন্য জিন দায়ী। এ
অবস্থা ছাড়াও দৈহিক বিকৃতি অসম্পূর্ণতা অস্বাভাবিক গঠন মানসিক প্রতিবন্ধকতা জরায়ু ক্যান্সার ইত্যাদির জন্য দায়ী এই জীন বৈশিষ্ট্য।একে বিভিন্ন রকম ভাবে ভাগ করা হয়েছে আপনারা জানেন একটি জিন হচ্ছে প্রবলভাবে প্রকাশিত আরেকটা হচ্ছে প্রচ্ছন্নভাবে প্রকাশিত।
তোতন বললো তাহলে আপনাদের আমাদের এই শরীরের মতো শরীর নয় কেন?
মনে হয় যেন আমাদের ছায়া।
ছায়ার মতো শরীর অন্ধকারময় কেন?
সাইকোভেগাস বলল,এটা হয় তখন , আমরা বায়ুর থেকে প্রতিসরাঙ্ক কমিয়ে অদৃৃশ্য হতে পারি। বায়ুর প্রতিসরণাঙ্কের সমান করলে ছায়ার মত হতে পারি। অহেতুক আমরা প্রকাশিত হতে চাই না। আমরা আড়ালে থাকতে ভালবাসি।
বায়ুর থেকে কম করলে আমরা ভ্যানিশ হয়ে যেতে পারি। অবাক করে অনেক সময় আমরা ভ্যানিশ হতে পারি।
বিশ্ব বাংলার লোগোর মতো সবুজ গোল ফুটবলের মত গ্রহে যানে চেপে ভালই লাগছিল। সুমন, তোতনের কথা হল ভালভাবে। এতদিন অবাক জগতে ছিল। আজ বাস্তব জগতে পদার্পণ করার আগে উত্তেজনা হচ্ছিল তাদের। তারা আস্তে আস্তে গল্প করছিল। তাদের ড্রাইভার ছিল ভেতরে।
তারপর পৃথিবীতে নেমে তারা তোতন এবং সুমনকে বাইরে আসতে বলল।
সুমনা তোতন বাইরে বেরিয়ে এসে দেখল অনেক লোকের ভিড়। সবাই খোঁজাখুঁজি করছে টর্চ নিয়ে লাইট নিয়ে।
জঙ্গল আলোময় হয়ে উঠেছে। এখন রাত দুটো বাজে। তারা অন্য গ্রহে গেছিলো প্রায় ছয় ঘন্টা।সবুজ গোল যানের গতিবেগ আলোর গতিবেগের থেকও বেশি –সুমন বললেন।
সবাই দেখলো তিনটে ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে দুজনকে তারা চিনতে পারল।
কিন্তু একজন কে চিনতে পারল না।
তখন গোয়েন্দা সুমন বললেন, ইনি হচ্ছেন আপনার দেখা সেই অন্য গ্রহের জীব ছায়া।
যিনি আমাদের তাদের গ্রহে নিয়ে গেছিলেন। আমরা দেখে এলাম।আমরা বলি এলিয়েন।
সুমনবাবু আরও বললেন বিজ্ঞানের কল্পনার কথা, আমাদের পৃথিবীর বাইরে প্রাণীর অস্তিত্ব আছে কিনা বা সত্যিই এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে কিনা, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক কখনই শেষ হবার নয়। কেউ বলছেন প্রাণের অস্তিত্ব আছে আর কেউ বলছেন তা কল্পনা মাত্র।বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এ বিষয়ে মানুষের কৌতুহল শুধু বেড়েছেই। তবে এ মাসের শুরুতেই বৈজ্ঞানিক মনিকা গ্রেডি মন্তব্য করেছিলেন যে, তিনি ‘প্রায় নিশ্চিত’ যে জুপিটারের একটি চাঁদ ‘ইউরোপা’য় প্রাণের অস্তিত্ব আছে।তবে সেটি হাঁটাচলা করতে পারার বা কথা বলতে পারা কোনো এলিয়েন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটির গ্রহ ও মহাকাশ বিষয়ক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিকা গ্রেডি বলেন, সেখানে যে ধরণের প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে, তা ‘অক্টোপাসের বুদ্ধিমত্তার কাছাকাছি প্রাণী’ হতে পারে।তিনি মনে করেন ঐ প্রাণীটি ইউরোপার বরফের নিচে থাকতে পারে।
বৃহস্পতি গ্রহের যে ৭৯টি চাঁদের সম্পর্কে জানা গেছে, ইউরোপা তার মধ্যে একটি। এটি ১৫ মাইল পুরু বরফের আস্তরণে ঢাকা।অধ্যাপক গ্রেডি মনে করেন মঙ্গলগ্রহে প্রাণের সন্ধান পাওয়া গেলেও সেখানে খুব উন্নত বুদ্ধির কোনো প্রাণী পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি বলেন: “মঙ্গলগ্রহে যদি প্রাণের সন্ধান পাওয়াও যায়, সেটি খুবই ক্ষুদ্র আকৃতির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন ধরুন, ব্যাকটেরিয়ার মত।
এবছরের শুরুতে মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একটি দল ধারণা প্রকাশ করেন যে তারা যদি মহাকাশে অক্সিজেনের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে পারেন তাহলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেতেও সক্ষম হবেন।যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পৃথিবীর বাইরে অন্যান্য গ্রহে অক্সিজেন গ্যাস খোঁজার একটি পদ্ধতিও আবিষ্কার করেছেন বলে জানিয়েছেন।নতুন গ্রহে আসলে প্রাণ থাকতে পারে?অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) পৃথিবীর অদূরেই একটি ‘বাসযোগ্য’ গ্রহের খোঁজ পেয়েছে বলে জানিয়েছে।
তোতন বললেন, তাহলে স্যার আমরা তার সাক্ষাৎ দর্শন পেলাম। সুমনবাবু বললেন, গত সোমবার নাসা দাবি করে নতুন ওই গ্রহ পৃথিবী থেকে ‘মাত্র’ ১০০ আলোকবর্ষ দূরে। পৃথিবীর আকৃতির ওই গ্রহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টিওআই৭০০ডি’। এটি ‘টিওআই৭০০’ নামের একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে।বিজ্ঞানীরা জানান, টিওআই৭০০ নামের ওই নক্ষত্র ও তাকে প্রদক্ষিণরত তিনটি গ্রহ আবিষ্কার করেছে টেস। এর মধ্যে টিওআই৭০০ডি নক্ষত্রটিকে এমন দূরত্ব থেকে প্রদক্ষিণ করছে, যা ওই সৌরমণ্ডলের বাসযোগ্য অঞ্চল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সূর্যের সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্বের বিবেচনায় এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এই দূরত্বে তরল পানির অস্তিত্ব থাকা সম্ভব বলে দাবি করেছে নাসা।
পরে আপনাকে বলা যাবে এখন উনাকে আমরা বিদায় সম্ভাষণ জানাবো। এলিয়েন সুমন্তবাবুর জ্ঞানের প্রশংসা করলেন। সাইকো বললেন, আপনাদের মত জ্ঞানী লোক এই পৃথবীর সম্পদ।
বৃদ্ধ ভদ্রলোকসহ সকলে অবাক বিস্ময়ে আকাশে দেখল তুবড়ির রোশনাই আর শুভেচ্ছার ভরসা পৃথিবীবাসির আগামী দিনের জন্য।
তিন
সুমন্তবাবু ও ছাত্রছাত্রী
এরপর সুমন্তবাবু চলে এলেন তোতনকে নিয়ে নিজের বাড়ি। সেখানে তিনি পড়ান বহু বহু ছাত্রছাত্রীকে তারপর আনন্দে সব ছেলেদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলাই তার কাজ।
কুসংস্কারে বিশ্বাস না করে তারা যাতে বিজ্ঞানমনস্ক পথে বৈজ্ঞানিক যুক্তি দ্বারা সবকিছু বুঝতে পারে তার চেষ্টা করে যান তিনি। আজ অনেক ছাত্রছাত্রী এসেছেন তার ঘরে। একজন জিজ্ঞাসা করল, মহাকাশের প্রাণের অস্তিত্ব কি বিশ্বাস করা যায়? তিনি তার বিরাট হল ঘরে তোতন আর ছাত্ররছাত্রীদের নিয়ে বসেন।তিনি বলছেন, টিভির পর্দায় এমন দৃশ্য আমরা সবাই দেখেছি৷ মহাকাশে নীল মরুদ্যানের মতো শোভা পাচ্ছে পৃথিবী৷ তখনই মনে প্রশ্ন জাগে, ‘‘বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে একমাত্র পৃথিবীতেই কি প্রাণের স্পন্দন রয়েছে? নাকি অন্য কোথাও প্রাণের বিকাশ সম্ভব?” এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গত কয়েক বছরে গবেষণা অনেক বেড়ে গেছে৷ জার্মানির পটসডাম শহরের বিজ্ঞানীরা সদ্য আবিষ্কৃত বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তু পরীক্ষা করেন৷ তাঁরা জানতে চান, দূরের এই জগত প্রাণের বিকাশের জন্য কতটা উপযুক্ত? পৃথিবীর সঙ্গে মিল আছে, এমন গ্রহ খোঁজা কেন এত কঠিন? গ্রহ গবেষক ভ্যার্নার ফন ব্লো বলেন, ‘‘এক্সট্রা-সোলার গ্রহ খোঁজার সমস্যা হলো, নক্ষত্রের আলো সংলগ্ন গ্রহের আলোকে পুরোপুরি ম্লান করে দেয়৷ রাতের আকাশে শুধু নক্ষত্রগুলি দেখা যায়, তাদের আশেপাশে গ্রহ থাকলেও সেগুলি দেখা যায় না৷”
তিনি বলেন: “মঙ্গলগ্রহে যদি প্রাণের সন্ধান পাওয়াও যায়, সেটি খুবই ক্ষুদ্র আকৃতির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন ধরুন, ব্যাকটেরিয়ার মত।” নতুন গ্ররহ নিয়ে আশা প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা।
এবছরের শুরুতে মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একটি দল ধারণা প্রকাশ করেন যে তারা যদি মহাকাশে অক্সিজেনের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে পারেন তাহলে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেতেও সক্ষম হবেন।
একজন ছাত্ররী বলল, মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পৃথিবীর বাইরে অন্যান্য গ্রহে অক্সিজেন গ্যাস খোঁজার একটি পদ্ধতিও আবিষ্কার করেছেন বলে জানিয়েছেন। এটা কি ঠিক সংবাদ।
সুমন্ততবাবু বললেন, অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) পৃথিবীর অদূরেই একটি ‘বাসযোগ্য’ গ্রহের খোঁজ পেয়েছে বলে জানিয়েছে।গত বছর নাসা দাবি করে নতুন ওই গ্রহ পৃথিবী থেকে ‘মাত্র’ ১০০ আলোকবর্ষ দূরে। পৃথিবীর আকৃতির ওই গ্রহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টিওআই৭০০ডি’। এটি ‘টিওআই৭০০’ নামের একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে।
তোতনও অনেক খবর রাখেন। তিনি বললেন, বিজ্ঞানীরা জানান, টিওআই৭০০ নামের ওই নক্ষত্র ও তাকে প্রদক্ষিণরত তিনটি গ্রহ আবিষ্কার করেছে টেস। এর মধ্যে টিওআই৭০০ডি নক্ষত্রটিকে এমন দূরত্ব থেকে প্রদক্ষিণ করছে, যা ওই সৌরমণ্ডলের বাসযোগ্য অঞ্চল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সূর্যের সঙ্গে পৃথিবীর দূরত্বের বিবেচনায় এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এই দূরত্বে তরল পানির অস্তিত্ব থাকা সম্ভব বলে দাবি করেছে নাসা।মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) একদল জ্যোতির্বিদ দাবি করছেন, পৃথিবীর মতো আরেকটি গ্রহের খোঁজ মিলেছে। এটি নিজ নক্ষত্রকে যতটুকু দূরে থেকে প্রদক্ষিণ করছে, তা আমাদের পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যবর্তী দূরত্বের প্রায় সমান। খবর রয়টার্স, এএফপি ও বিবিসির।নাসার ওই বিজ্ঞানীরা আমাদের সৌরজগতের বাইরে পৃথিবী-সদৃশ গ্রহটির সন্ধান পাওয়ার কথা গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন। নতুন চিহ্নিত ওই গ্রহের নাম ফোরফিফটিটুবি। এটি পৃথিবীর চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি বড়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আকৃতি ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যাচাই করে মনে হচ্ছে ওই গ্রহে পাথর, আগ্নেয়গিরি, মহাসাগর ও ‘সূর্যালোক’ থাকতে পারে। তবে সেখানকার মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর দ্বিগুণ এবং বছর হয় ৩৮৫ দিনে। গ্রহটির অবস্থান ১ হাজার ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে সিগনাস নক্ষত্রমণ্ডলে। এটি যে নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে তা আমাদের সূর্যের সমান হলেও বেশি পুরোনো। এটির বয়স প্রায় ৬০০ কোটি বছর। কিন্তু আমাদের সূর্যটি ৪৬০ কোটি বছরের পুরোনো।
সুমন্তবাবু বললেন, নাসার কেপলার মহাকাশ দূরবীক্ষণযন্ত্রের (স্পেস টেলিস্কোপ) সাহায্যে ওই পৃথিবী-সদৃশ গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল সাময়িকীতে প্রকাশিত হবে।জ্যোতির্বিদেরা মনে করেন, এ আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীর বাইরে প্রাণীর বসবাসযোগ্য স্থানের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে। নাসার বিজ্ঞানী জন জেনকিনস বলেন, এ পর্যন্ত পৃথিবীর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল পাওয়া গেছে নতুন চিহ্নিত গ্রহটির। এটি নিজ নক্ষত্রের কাছাকাছি বসবাসযোগ্য অঞ্চলে ৬০০ কোটি বছর পার করেছে—এমন ইঙ্গিত অবশ্যই বেশ আগ্রহ জাগিয়ে তোলে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘পৃথিবীর মতো’ গ্রহটি নিজস্ব নক্ষত্র থেকে যে দূরত্বে রয়েছে, তাতে সেখানকার পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা তরল পানি ধারণ করার উপযোগী হতে পারে। আর পরিবেশের এ ধরনের অবস্থায় প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। কেপলার টেলিস্কোপের যাত্রা শুরু হয় ২০০৯ সালে। এ প্রকল্পের বিজ্ঞানী জেফ কগলিন বলেন, পৃথিবী-সদৃশ এবং সম-আকৃতির সূর্যের পাশে প্রদক্ষিণরত একটি গ্রহের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি তাঁদের একটি বড় সাফল্য।নতুন চিহ্নিত ওই গ্রহের নক্ষত্রটি আমাদের সূর্যের চেয়ে ১৫০ কোটি বছরের পুরোনো, আকারে ৪ শতাংশ বড় এবং উজ্জ্বলতাও ১০ শতাংশ বেশি। তবে ১ হাজার ৪০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত বলে সেখানে এই পৃথিবী থেকে শিগগিরই কোনো নভোযান পাঠানোর সম্ভাবনা কম। তবু বিজ্ঞানীরা গ্রহটি নিয়ে আরও গবেষণার ব্যাপারে ভীষণ আগ্রহী। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুজান আইগ্রেইন বলেন, কেপলার-ফোরফিফটিটুবির যেসব বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে এটিই এ পর্যন্ত তাঁর জানামতে সবচেয়ে বেশি পৃথিবী-সদৃশ গ্রহ।কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০টি গ্রহের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ৪ হাজার ৭০০টি মহাজাগতিক কাঠামোর খোঁজ পেয়েছে, যেগুলো গ্রহ হতেও পারে। এর মধ্যে ১১টি পৃথিবীর কাছাকাছি বৈশিষ্ট্যের এবং সেগুলোর নয়টি সৃর্য-সদৃশ নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। কেপলার টেলিস্কোপ সরাসরি গ্রহগুলোকে দেখতে পায় না। কিন্তু সেগুলো থেকে নিঃসৃত আলোর ছোটখাটো পরিবর্তন পরিমাপ করে বিভিন্ন জটিল কম্পিউটার প্রোগ্রামে বিশ্লেষণ এবং বারবার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে শনাক্ত করার চেষ্টা করে।এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে মানুষ মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কীনা তা নিয়ে বহু জল্পনা কল্পনা করছে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই এ বিষয়ে একটি পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
আজকের মত ক্লাস হয়ে গেল সুমন্ত বাবু ছাত্রছাত্রীদের কিছু জলখাবার খেয়ে ছেড়ে দিলেন তারপর বললেন আমি যেদিন বলব সেদিন আবার আসবে আমি ফোনে ডেট বলে দেবো তারপর তোতন খাবার-দাবার জোগাড় করতে লাগল সুমন্ত আপাতত দুজনে থাকেন এখানে আর কেউ থাকে না তারা নিজেরাই নিজেদের না করেন এবার হঠাৎ এক ভদ্রলোক বারেন্দায় ঢুকে বললেন আপনাদের নমস্ককার জানাই। আপনাদের সঙ্গে কথা আছে আমি একটু ভিতরে আসতে পারি কি।
বারান্দায় তিনি ছিলেন। তখন তোতন বলল, ঠিক আছে আসুন ভদ্রলোককে তোতন বললেন, কী অসুবিধা?তোতন ভদ্রলোককে অনেক্ষণ আটকে রেখে তার গ্রাম এবং পরিবেশ সম্পর্কে জেনে নিল। ভদ্রলোক বললেন, আমার নাম নাটুবাবু। এই নামেই সকলে চেনে।
লোকগুলো আমাদের ওখানে একটা ভূতের উপদ্রবের গুজবে ভয় পাচ্ছে। লোকজন খুব ভয় পাচ্ছে। এটা তো আমি মানি না,কোনও মতেই। তাই আপনার সাহায্য নিতে চাই সুমন্ত বাবু আর আপনি গেলে এই রহস্যের সমাধান নিশ্চয়ই হবে তোতনন খুব উৎসাহিত হয়ে সুমন্তবাবুকে বললেন এবং ডাকলেন। তিনি এলেন। তিনি আরো বললেন ঠিক আছে আমরা যাব আগামীকাল। সন্ধ্যার মধ্যেই আমরা আপনার বাড়ি পৌঁছে যাব। আপনি ঠিকানা আর এখানে সবকিছু আপনার পরিচিতি দিয়ে যান। সুমন্তবাবু ও তোতন পরের বিকেলে ট্রেনে চাপলেন। কলকাতা থেক দূরে এক অজ পাড়াগাঁয়ে তাদের যেতে হবে। তোতন বলছে সুমন্তবাবুকে আমি গ্রামের ছেলে। ট্রেনে যেতাম স্কুলে। তারপর পায়ে হাঁটা।তোতন বলে চলেছে তার কথা, ট্রেনে যাওয়া আসা করার সময় কিছু লোক দেখতাম ট্রেনের মেঝেতে বসে থাকতেন স্বছন্দে।তাদের মত আমারও সিটে না বসে মেঝেতে বসার ইচ্ছে হতো।কিন্তু পারতাম না লোকলজ্জার ভয়ে।কি সুন্দর ওরা মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে ঘুগনি খায়।ট্রেনে হরেক রকম খাবার বিক্রি হয়।ওরা দেখতাম টুকটাক মুখ চালিয়ে যেতো।আমি জিভে জল নিয়ে বসে থাকতাম ভদ্র বাবুদের সিটে।তারা হাসতেন না।অপ্রয়োজনে কিছু খেতেন না বা কোনো কথা বলতেন না। ওদের মাঝে গোমড়া মুখে বসে মুখে দুর্গন্ধ হতো।তারপর গানের এৃক বিকেলে আমি বেপরোয়া হয়ে ট্রেনের মেঝেতে ওদের মাঝে বসলাম। লুঙ্গি পরা লোকটা গায়ে মাটির গন্ধ।বেশ হাল্কা হয়ে গেলো মনটা। লোকটা বললো,ভালো করে বসেন। কত আন্তরিক তার ব্যবহার।তারপর ট্রেনের খাবার খেতে শুরু করলাম।প্রথমেই ঝালমুড়ি।পাশের লোকটাও ঝালমুড়ি কিনলেন।খেতে লাগলাম মজা করে। তারপর এলো ঘুগনি,পেয়ারা,গজা,পাঁপড়,লজেন্স ও আরও কত কি। মনে হলো এ যেন কোনো ভোজবাড়ি।খাওয়ার শেষ নাই।যত পারো খাও। মেঝেতে বসার অনেক সুবিধা আছে।আমাদের দেশে গরীবের সংখ্যা বেশি।তাই গরীব লোকের বন্ধুও হয় অনেক।পথেঘাটে ওরা পরস্পরকে চিনে নেয় চোখের পানে চেয়ে।তাই ওদের মাঝে গরীবের দলে নাম লিখিয়ে আমি ভালো থাকি,জ্যোৎস্নায় ভিজি…
সুমন্তবাবু বললেন, তোর এই গুণের জন্যই তোকে ভালবাসি। তোতন বলল,হাওড়া থেকে কাটোয়া। তারপর শিবলুন স্টেশন থেকে টৌটো তে আধঘণ্টা যেতে হবে। কিংবা বড় বাস স্টপেজে নেমে ঢালাই রাস্তা ধরে নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস পেরিয়ে, সর্দার পাড়া পেরিয়ে চলে এলাম ভট্টাচার্য পাড়ায়।পুরোনো মন্দির আর মসজিদ,গির্জা আমার মন টানে। কালের প্রবাহে সেগুলো অক্ষত না থাকলেও পুরোনো শ্যাওলা ধরা কোনো নির্মাণ দেখলেই আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।অমরবাবু ছিলেন ষষ্টি তলায়। তিনি মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দিরে নিয়ে গেলেন আমাকে।নবগ্রাম অজয় নদীর ধারে অবস্থিত। সবুজে ঘেরা এই গ্রাম।
সুমন্তবাবু জানেন তোতন যার কাছে নিয়ে যায় তার সব খবর জেনে নেয়। তার যোগ্য সহায়ক। নাটুবাবু সময়মত টোটো নিয়ে এসে ওদের গ্রামে নিয়ে এলেন। পরেরদিন সকালে ভ্রমণবিলাসি সুমন্তবাবু বললেন, আপনার এলাকায় আজ শুধু ঘুরব। চলুন আপনি আমাদের সব চিনিয়ে দেবেন পায়ে হেঁটে। নাটুবাবু বলতে শুরু করলেন কবি এবং গাইডের মত গ্রামের পরিচয়। ইনি ভট্টাচার্য পাড়ার রঘুনাথ ব্যানার্জী। তিনি বললেন,মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দির অতি প্রাচীন।মায়ের পুজোর পালা পাড়ার সকলের একমাস করে পড়ে।মা দুর্গার পুজোর পালা তিন বছর পর এক একটি পরিবারের দায়ীত্বে আসে।সকলে মিলে পাড়ার পুজো চালায় বছরের পর বছর।হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম বাজারে পাড়ায়।এখানে,ঘোষ,পাল,মুখার্জী পরিবারের বাস। মুখার্জী পাড়ার ধ্রুবনারায়ণ বললেন,আগে মুখুজ্জে পুকুরের পাড়ে শিবপুজো হতো।মন্দির প্রায় দুশো বছরেরে পুরোনো হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছিলো।কৃষিকাজের সময় জল না হলে আমাদের বাবা, কাকারা শিবলিঙ্গ বাঁধ দিয়ে জলে ডুবিয়ে দিতেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মেঘ হতো ও বৃষ্টি হতো।মানুষের বিশ্বাসে সবকিছু।
নাটুবাবু বললেন, তারপর গোস্বামী পাড়ায় এলাম। সেখানে বদরী নারায়ণ গোস্বামীর সঙ্গে দেখা করি চলুন।
বদরীবাবু বললেন,আমরা নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশধর। মেয়ের বংশধর,দৌহিত্র বুঝলেন।আমার কাছে বংশলতিকা আছে। আমি বললাম,বলুন, আমি শুনি।তিনি শুরু করলেন,গঙ্গামাতা, তার স্বামী ছিলেন মাধব চট্টোপাধ্যায়, তার ভিটে এটা।তারপর প্রেমানন্দ,অনন্তহরি,পীতাম্বর,গৌরচন্দ্র,লালমোহন,শ্যামসুন্দর,নিকুঞ্জবিহারী,রামরঞ্জন, বংশগোপাল, বদরীনারায়ণ,বিনোদগোপাল।তারপর তিনি মন্দিরের গাত্রে লেখা বংশলতিকা দেখালেন।আমি ছবি তুলে নিলাম।পড়া যাবে নিশ্চয়।
রাধা মাধবের মন্দিরে বারোমাস কানাই, বলাই থাকেন।অগ্রহায়ণ মাসে এই মন্দিরে রাধামাধব আসেন।তখন সারা গ্রামের লোক প্রসাদ পান।
তোতন বলছেন, আমার মনে হচ্ছে এ যেন আমার জন্মস্থান। আমার গ্রাম। স্বপ্নের সুন্দর গ্রামের রাস্তা বাস থেকে নেমেই লাল মোড়াম দিয়ে শুরু ।দুদিকে বড় বড় ইউক্যালিপ্টাস রাস্তায় পরম আদরে ছায়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে । কত রকমের পাখি স্বাগত জানাচ্ছে পথিককে । রাস্তা পারাপারে ব্যস্ত বেজি , শেয়াল আরও অনেক রকমের জীবজন্তু।.চেনা আত্মীয় র মতো অতিথির কাছাকাছি তাদের আনাগোনা । হাঁটতে হাঁটতে এসে যাবে কদতলার মাঠ। তারপর গোকুল পুকুরের জমি, চাঁপপুকুর, সর্দার পাড়া,বেনেপুকুর । ক্রমশ চলে আসবে নতুন পুকুর, ডেঙাপাড়া ,পুজোবাড়ি, দরজা ঘাট, কালী তলা । এখানেই আমার চোদ্দপুরুষের ভিটে । তারপর ষষ্টিতলা ,মঙ্গল চন্ডীর উঠোন , দুর্গা তলার নাটমন্দির । এদিকে গোপালের মন্দির, মহেন্দ্র বিদ্যাপীঠ, তামালের দোকান, সুব্রতর দোকান পেরিয়ে ষষ্ঠী গোরে, রাধা মাধবতলা । গোস্বামী বাড়ি পেরিয়ে মন্ডপতলা । এই মন্ডপতলায় ছোটোবেলায় গাজনের সময় রাক্ষস দেখে ভয় পেয়েছিলাম । সেইসব হারিয়ে যাওয়া রাক্ষস আর ফিরে আসবে না ।কেঁয়াপুকুর,কেষ্টপুকুরের পাড় । তারপর বাজারে পাড়া ,শিব তলা,পেরিয়ে নাপিত পাড়া । এখন নাপিত পাড়াগুলো সেলুনে চলে গেছে । সাতন জেঠু দুপায়ের ফাঁকে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরতেন মাথা ,তারপর চুল বাটি ছাঁটে ফাঁকা । কত আদর আর আব্দারে ভরা থাকতো চুল কাটার বেলা ।এখন সব কিছুই যান্ত্রিক । মাঝে মাঝে কিছু কমবয়সী ছেলেমেয়েকে রোবোট মনে হয় । মুখে হাসি নেই । বেশ জেঠু জেঠু ভাব ।সর্বশেষে বড়পুকুর পেরিয়ে পাকা রাস্তা ধরে ভুলকুড়ি । আর মন্ডপতলার পর রাস্তা চলে গেছে খাঁ পাড়া , কাঁদরের ধার ধরে রায়পাড়া । সেখানেও আছে চন্ডীমন্ডপতলা , কলা বা গান, দুর্গা তলার নাটমন্দির সব কিছুই । পুজোবাড়িতে গোলা পায়রা দেখতে গেলে হাততালি দিই ।শয়ে শয়ে দেশি পায়রার দল উড়ে এসে উৎসব লাগিয়ে দেয়। পুরোনো দিনের বাড়িগুলি এই গ্রামের প্রাণ
চার
সুমন্তদা ও অঙ্কুর কোষ
সুমন্তবাবু বললেন, বাংলার সব গ্রামের রূপ এক। আমরা একতার সূত্রে বাঁধা।
নাটুবাবু বললেন, তারপর চলে এলাম গ্রামের মন্ডপতলায়। এই গ্রামে আমার জন্ম। লেখিকা সুজাতা ব্যানার্জী এই গ্রামের কন্যা।তার দাদু ছিলেন ডাঃ বিজয় বাবু।এখনও এই বাড়িগুলো গ্রামের সম্পদ।ডানদিকের রাস্তা ধরে হাঁটলেই খাঁ পাড়া। গ্রামের মাঝে গোপাল ঠাকুরের মন্দির,কৃষ্ঞ মন্দির। তারপরেই রক্ষাকালীতলা। কত ধর্মপ্রাণ মানুষের বাস এই গ্রামে। গোপাল মন্দিরের পুজো হয় বাড়ুজ্জে পাড়ায়।গ্রামের গাছ, পাথর,আমার গান আমার প্রাণ।
এবার নাটুবাবু টোটো ডাকলেন। সেখান থেকে অম্বলগ্রাম পাশে রেখে দু কিলোমিটার টোটো রিক্সায় এই গ্রাম। একদম অজ পাড়াগাঁ। মাটির রাস্তা ধরে বাবলার বন পেরিয়ে স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করতে হবে।তন্ময়বাবু গবেষক।এন জি ও সসংস্থার প্রধান কারিগর বনের সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালেন। তার জগৎ।পশু,প্রাণীদের উন্মুক্ত অঞ্চল।বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে, সেখানে।মা কালীর মূর্তি আছে। কাঁচের ঘরে ইকো সিষ্টেমের জগৎ।কেউটে সাপ, ব্যাঙ থেকে শুরু করে নানারকমের পতঙ্গ যা একটা গ্রামের জমিতে থাকে। বিরাট এক ক্যামেরায় ছবি তুলছেন তন্ময় হয়ে।আমি ঘুরে দেখলাম প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বানানো রিসর্ট।ওপেন টয়লেট কাম বাথরুম।পাশেই ঈশানী নদী।এই নদীপথে একান্ন সতীপীঠের অন্যতম সতীপীঠ অট্টহাসে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে চায় এন জি ও, নৌকায়। তন্ময়বাবু হাতে সাপ ধরে দেখালেন। শিয়াল,বেজি,সাপ,ভ্যাম আছে। তাছাড়া পাখির প্রজাতি শ খানেক।একটা পুকুর আছে। তার তলায় তৈরি হচ্ছে গ্রন্হাগার।শীতকালে বহু বিদেশী পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। তন্ময়বাবু বললেন,স্নেক বাইটের কথা ভেবে সমস্ত ব্যবস্থা এখানে করা আছে। ঔষধপত্র সবসময় মজুত থাকে।বর্ষাকালে ঈশানী নদী কিশোরী হয়ে উঠেছে।এই নদীকে মাঝখানে রেখে বেলুনের চাষিরা চাষ করছেন আনন্দে।এখানকার চাষিরা জৈব সার ব্যবহার করেন। কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেন না। এক চাষি বললেন,আমরা সকলে একত্রে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জৈব সার প্রয়োগ করেই আমরা চাষ করবো।তাতে বন্ধু পোকারা মরবে না। ফলনও হয় বেশি। এক এন জি ও সংস্থার পরামর্শে তাদের এই সঠিক সিদ্ধান্ত অন্য চাষিদের অনুকরণযোগ্য।এই এন জি ও সংস্থার যুবকরা গ্রামের ভিতর কুকুরদের নির্বিজকরণ কাজে লেগেছে।একটা লম্বা লাঠির ডগায় সূচ বেঁধে তাতে ওষুধভরে চলছে কাজ।কোনো প্রাণী আহত হলে তার সেবাশুশ্রূষা করেন যুবকবৃন্দ।সাপ ধরতে জানেন এই যুবকবৃন্দ।কোনো গ্রামে কোনো সাপ দেখা গেলে এই যুবকেরা সেটি ধরে নিয়ে এসে তাদের সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেন।এখনও এই যুবকবৃন্দ কাজ করে চলেছেন মানুষ ও প্রাণীজগতকে ভালোবেসে।বর্ষাকালে প্রচুর বিষধর সাপের আনাগোনা এই অঞ্চলে।এখানে পা দিলেই সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন এখানকার কর্মিবৃন্দ।ঘুরে দেখার জন্য গামবুট দেওয়া হয় পর্যটকদের। প্রচুর দেশি বিদেশি গাছ গাছালিতে ভরা এই প্রাঙ্গন। একটি কৃত্রিম জলাধার আছে।তার নিচে লাইব্রেরী রুম তৈরির কাজ চলছে।ওপরে জল নিচে ঘর। কিছুটা তৈরি হয়েছে। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এসে হাজির হয়। সেই পাখিদের নিয়েও চলে গবেষণা। তাদের জন্য সব রকমের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হয়।আর একটি জলাধারে বিভিন্ন ধরণের মাছ রাখা হয়। পা ডুবিয়ে জলে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের চামড়ার মৃত কোষ খায় এইসব বিদেশি মাছেরা। ওপেন বাথরুমে ঈশানীর জল উপলব্ধ।এই রিসর্টগুলিতে সর্বসুখের ব্যবস্থা আছে।শীতকালে অনেক বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। রাতে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থাও খুব সুন্দর।বেলুন গ্রামে ঢুকতে গেলে বাবলার বন পেরিয়ে মাটির আদরে হেঁটে যেতে হবে। এখন অবশ্য শিবলুন হল্ট থেকে নেমে বেলুন যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছে।টোটো,মোটর ভ্যান চলে এই রাস্তা ধরে।চারিদিকে সবুজ ধানক্ষেতে হারিয়ে যায় মন এক অদ্ভূত অনাবিল আনন্দে।বেলুন ইকো ভিলেজ কাটোয়া মহুকুমার গর্ব। লিলিদি বিজ্ঞানী । পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।গোয়েন্দাগিরিও করেন। এটা তার শখ।বুুদ্ধিতেে শান দেন নিয়মিত।খুব কম সময় বাইরে বেরোন।সবসময় নিজের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখেন কখন কিভাবে সমাজের উপকার করা যায়।দিদির বাড়ির একটি ছেলে আছে। তার নাম রিপন রিপন। ঘাড় বাঁকা।সে চলতে ফিরতে পারে না। একটা তিন চাকার রিকশা ছোট থেকে কিনে দেওয়া হয়েছে। তাতেই চেপে যাওয়া আসা করে। কিন্তু রিপন লেখাপড়ায় খুব ভালো তার বুদ্ধি খুব প্রখর।দিদির ঘরে তিনজন সদস্য সুমন বাবু নিজে তার এক চাকর তার দেখাশোনা করে আর একটা কুকুর।কুকুর প্রভুভক্ত প্রাণী। সমানভাবে কুকুরটি খুবই প্রিয় তার। ইঁদুর ধরে দেয় কুকুরটি সুমনবাবুকে।সঙ্গে যে থাকে তার নাম তোতন।। তোতন তাঁর দেখাশোনা করে। সবকিছুই তোতনই করে। লোকের সঙ্গে কথা বলা সব কিছুই সে সামলায়। আজ ভোরে উঠেই দিদির মাথায় একটা চিন্তা বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে। সে তোতনকে বলছে, মহাভারতের আদিপর্বে গল্পটা জানিস। ধৃতরাষ্ট্র পত্নী দু’বছর গর্ভধারণের পর প্রসব করলেন একটি গোলাকার মাংসপিণ্ড।সেটি তুলে দেওয়া হল ঋষি দ্বৈপায়নের হাতে। তার থেকে তিনি 100 টি খন্ডে বিভক্ত করে বিভিন্ন ওষুধি উদ্ভিদে ভিজিয়েএকটি কাপড়ের টুকরো নিয়ে সেগুলির মধ্যে টানা দু’বছর রেখে দিলেন। আজকের টেস্ট টিউব বেবি সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে কোথাও মিল আছে। কারো কারো মতে প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান খুব উন্নত ছিল।তোতন বললো তাহলে আর্য ঋষিরা কত পণ্ডিত ছিলেন বলুন। তারা নিশ্চয়ই এইসব ব্যাপারে বিজ্ঞানসম্মত উপায়গুলো জানতেন।দিদি আবার বললেন আমাদের পাশের বাড়ি রিপনের রোগ হয়েছে। তার নাম ডাক্তারি ভাষায়, আমিও ট্রফিক লেটারাল স্ক্লোরেসিস সংক্ষেপে এ এল এস।
বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং যার অসহায় শিকার। এমন একটা রোগ যা মস্তিষ্কের নিউরন অর্থাৎ কোষগুলোকে নষ্ট করে দেয়। ফলে প্রচুর অঙ্গ কাজ করে না।
কোষ বেশি অচল হয়ে পড়ে।
তোতন তো অত পড়াশোনা জানেনা।
সে সবে গ্রাজুয়েট হয়েছে। কিন্তু তবু তার জানার আগ্রহ অনেক।
সে বলল যে, এই অঙ্কুর কোষ আসলে কি? অঙ্কুর কোষ দিয়ে কি সব অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যায়?
বিজ্ঞানী দিদি বলেন, প্রথমেই সম্ভাবনার দিকে তাকানো যাক দেশ-বিদেশের বহু বিশেষজ্ঞ মনে করেন অঙ্কুর কোষের গবেষণা পৃথিবীতে রোগবালাইয়ের মুখচ্ছবি একদিন আমূল বদলে দেবে।
নির্মূল করবে ক্যান্সসার থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস।
ক্যান্সার এবং বহু বংশগতীয় অসুখ নিখুঁতভাবে মেরামত করে দেবে এবং তা থেকে ফুসফুস লিভার কিডনি ইত্যাদি বিশেষ করে তা শরীরের মধ্যে নির্দিষ্ট অংশে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিয়ে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ মেরামত করা হবে।
বিজ্ঞানী ভোরবেলা হাঁটতে বের হন আর দেখেন তিন চাকার সাইকেলে করে রিপন পড়তে যাচ্ছে তার মাস্টারের কাছে।
তিনি রিপন কে ডেকে বললেন আমার ঘরে তুমি মাঝে মাঝে যাবে। আর তোমার সঙ্গে আমার প্রয়োজন আছে। তোমার বাবা-মাকে বলেই আমার ঘরে আসবে।
রিপনের বাবা মা কারণ জিজ্ঞেস করাতে বলল দিদি বললেন যে, ও এলে আমি বিজ্ঞানসম্মত ব্যাপারগুলোকে বোঝাতে পারব এবং আমাদের গল্প হবে। আর ওর রোগের চিকিৎসা করব।
রিপনের মা বললেন, ওর কোন ক্ষতি হবে না তো?
সুমন বললেন, আমাকে সবাই পাগল বলে। তবে আশা করি আপনার ছেলেকে আমি সারিয়ে তুলতে পারব।
রিপনের বাবা মা আলোচনা করে দেখল ছেলেটা এমনিতেই অচল। বেঁচে থেকেও মরার মত। তাই ওরা ঠিক করলেন সুমনবাবুই ওদের শেষ ভরসা। দেখা যাক কি হয়।
রিপন এবার থেকে প্রায় রোজই বিজ্ঞানীর ঘরে আসে এবং খুব কৌতুহলী ওঠে। কিন্তু ও খুব কার্যকরী কথা বলে। ও খুব পড়াশোনায় ভালো। ওর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অচল হলেও পড়াশোনায় খুবই ভালো। এক থেকে দশের মধ্যে ছিল ওর রোল নম্বর।
বিজ্ঞানী কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে একটা নিডল দিয়ে ওর শরীরের হাতে পায়ে তিনি ওষুধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আস্তে আস্তে চিকিৎসা করতেন। আপনি এগুলো কি করছেন?
তোমার ঘাড় সোজা করার চেষ্টা করছি। তোমার হাত-পা সচল করার চেষ্টায় আমি তোমাকে আসতে বলেছি। তোমার বাবা-মাকে সবকথা বলার প্রয়োজন নেই এখন।
যখন তুমি সুস্থ হবে তখন তারা এমনিতেই জেনে যাবে। তাছাড়া আমি ওনাদের পারমিশনও নিয়েছি তোমার চিকিৎসা করার জন্য।
রিপন খুব বুদ্ধিমান ছেলে সে সময় পেলেই দিদির কাছে চলে আসে আর বিজ্ঞান এর সমস্ত কিছু জানতে চায়।
দিদি তার যথাযথ উত্তর দেন এবং তার মাঝেই তার চিকিৎসা চালিয়ে যান অঙ্কুর কোষের মাধ্যমে তার চিকিৎসা চলে।
বিজ্ঞানী, রিপনের নিজস্ব অঙ্গ থেকে দেহকোষ নিয়ে প্রতিস্থাপনযোগ্য যন্ত্রটি তৈরি করেছেন এবং এতে কোনো সমস্যা নেই।
সেক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখেছেন তিনি, তা হল কোন অঙ্গ থেকে কেবল সেই অঙ্গ বা তার অংশবিশেষ টি সুস্থ করা যায়।
প্রথমে তিনি হাত থেকেই চিকিৎসা শুরু করেন এবং যথাযথ ফল পেয়ে যান।
তার ফলে তার উৎসহ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায় বিজ্ঞানী দেখেন যে রিপন তার হাত নিচে নামাতে পারছে,ওপরে ওঠাতে পারছে।
বিজ্ঞানী বলেন রিপনকে এটা হাট করে সবাইকে বলার দরকার নেই।
যখন তুমি সম্পূর্ণ সুস্থ হবে তখন আমি নিজে থেকেই এই কথাগুলো সবাইকে বলব।
তোতন আজ আরো অবাক হয়ে গেল রিপন পা নড়াচড়া করছে। সে দেখল নিজে নিজে দাঁড়াতে পারছে। হয়তো বেশিক্ষণ পারছেনা।
কিন্তু আগে তো একবারেই পারত না। হুইল চেয়ারে বসে বসে যাওয়া করত।
কিন্তু এখন সে দাঁড়াতে পারছে।
সে জিজ্ঞেস করল বিজ্ঞানী যে এটা কি করে সম্ভব হল?
বিজ্ঞানী বললেন এসব ক্ষেত্রে আরও সফলভাবে কাজে লাগানো সম্ভব যদি ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন আইভিএফ পদ্ধতি সাহায্যে অর্থাৎ পরীক্ষাগারে রোগী বা রোগীনীর জনন গ্রন্থি তৈরি করা যায়।
রতন বলল হ্যাঁ আপনি যেভাবে বলেছিলেন যে এখন টেস্টটিউববেবী বা নলজাতক এর ব্যাপক সৃষ্টি সম্ভব হচ্ছে। বস্তুত আইডি এতে একসঙ্গে অনেকগুলো এমব্রায়ো তৈরি করতে হয়।।
যার মধ্যে একটি উপযোগী ভ্রূণকে মাতৃগর্ভে স্থাপন করে নলজাতক জন্ম দেওয়া হয়। এগুলো আমি আপনার কাছে শুনেছি।
রিপন বলল তাহলে আপনি কি অবশিষ্ট কোষগুলি থেকে অঙ্কুর কোষ নিষ্কাশন করে অঙ্গ মেরামতি কাজে আপনি সফল হবেন বা রোগ নিরাময় কাজে লাগিয়ে আমাকে সুস্থ করতে পারবেন।
বিজ্ঞানী বললেন মানুষের বা ইঁদুরের কোষ নিষ্কাশন সম্ভব হয়েছে মাত্র কুড়ি বছর আগে। তাই এর ব্যবহার এখনো প্রাথমিকভাবে আছে। তবে বহুবিধ শারীরিক ত্রুটি এবং দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময়ে একদিন সফল হবে বলেছেন বিদেশের বিশেষজ্ঞরা।
তুমি নিশ্চিন্ত থাকো আমি চলাফেরা করার মত মোটামুটি সুস্থ তোমাকে করে দিতে পারব।
রিপন বলে এগুলো পৃথিবীর কোথায় কোথায় ভাল রকম গবেষণাগার আছে স্যার।
বিজ্ঞানী বলেন অঙ্কুশ নিয়ে কোথায় কি ধরনের গবেষণা চলছে আমরা জানতে পারি এই বিজ্ঞান পত্রিকার মাধ্যমে।
এদেশে প্রায় 15 টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অঙ্কুর কোষ গবেষণা তার বাস্তব প্রয়োগ পরীক্ষা চলছে তার মধ্যে রিলায়েন্স লাইফ সাইন্স, হায়দ্রাবাদের এল ভি প্রসাদ ইনস্টিটিউশন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সাইন্সেস, ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের নাম উল্লেখযোগ্য।
রিপন বলল দিদি, তুমি এত আপডেট, কি করে খবরগুলো পাও।
তিনি বলেন আমার কম্পিউটার আছে। কম্পিউটার মাধ্যমে সব খবরগুলো পাই এবং আমার গবেষণার 40 বছর ধরে চলছে সেই জন্য তোমাকে দিয়ে আমি এই পরীক্ষাটা করতে চাইছি।
রিপন বলছি আপনি যখন সেলগুলো নিচ্ছেন তার আগে এক ঘন্টা আগে আমাকে একটা ইনজেকশন দিচ্ছেন তার ফলে আমি কিন্তু ব্যথা পাচ্ছি না কিছু বুঝতে পারছিনা।
বিজ্ঞানী বললেন হ্যাঁ এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সেইজন্য কাছাকাছি থাকার মাধ্যমে বা এটা কোন নার্সিংহোমে থাকা মাস্ট করা হয়।।
যেহেতু তুমি আমার পাশের বাড়িতে আছো আমি তোমাকে সব সময় দেখতে পারছি চিকিৎসাটা সব সময় চলা উচিত।
রিপন দিদির কথা অনুযায়ী তার মাকে বলল মা আমি সুমন দিদির কাছে এক মাস থাকবো তারপর তোমার কাছে আসবো।
আমি ওখানে পড়াশোনা করে কিছু শিখতে চাই আমি ওখানে পড়াশোনা করছি। সকলে আমাকে খুব ভালোবাসেন।
তার সঙ্গে আমার দেহের চিকিৎসাও চলছে।
রিপনের মা আনন্দের সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন তিনি বললেন ঠিক আছে তোর বাবার পারমিশন নিয়ে আমি তোকে সংবাদ দিয়ে দেব।
তোতন বললেন 61 বছর বয়স্ক এক ব্যক্তির যখন নিলয় থেকে মেরামত করা হয়েছে তারই অস্থিমজ্জা থেকে নেওয়া অঙ্কুর কোষ প্রতিস্থাপন করে কাজটি হয়েছে kaguya-sama মেডিকেল হসপিটালে।
বিজ্ঞানীর সঙ্গে হাবার্ড বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ আছে তাদের ভবসাগর রংপুরের সঙ্গে সংযুক্ত করে ঐতিহাসিক রূপান্তরিত করার উপায় বের করে ফেলেছেন এবং পদ্ধতিতে কম্পিউটারে তিনি দেখতে পাচ্ছেন অসুবিধা হলো তিনি সেই পদ্ধতি প্রয়োগ করলেন।
বিজ্ঞানী রিপনকে বললেন তবে ইদানিং যেভাবে অঙ্কুর কোষ গবেষণায় হিড়িক পড়ে গেছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে নানা প্রতিষ্ঠান। তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাধিক বিজ্ঞানী। গবেষণায় দক্ষিণ কোরিয়ার নামি এক বিজ্ঞানী জালিয়াতি ফাঁস হওয়ার পর এ ব্যাপারে খবর নিয়েছেন।
তাদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ ও অনুসন্ধানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
প্রায় দু’বছর ধরে বিজ্ঞানী রিপনের শরীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালেন, তাদের বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে।
তারপরের রিপনের বাবা-মা দেখলন, নিজেই তার কাজকর্ম করতে পারছে। আর হুইলচেয়ার লাগেনা। সে হাঁটতে পারে। তবে আস্তে আস্তে।
এখনো স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে।
রিপনের বাবা মা জানতে চাইলেন কি করে এটা সম্ভব হলো?
আমরা তো বুঝতে পারলাম না আপনি কোন টাকা পয়সাও নেন নি। তাহলে আমরা আপনার কাছে চির ঋণী হয়ে থাকলাম।
বিজ্ঞানী বললেন এটা আমার ব্যবসা নয় আমি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটা গবেষণা করছিলাম। আপনার ছেলেকে সুস্থ দেখে আমার নিজেরই ভালো লাগছে।আমার গবেষণা সফল।
তার বাবা-মা জিজ্ঞেস করলো কি করে এটা সম্ভব হলো?
বিজ্ঞানী বললেন, ইঁদুরের কোষ থেকে মোটর নিউরন কোষ তৈরি করে কৃত্রিম উপায়ে শ্রেষ্ঠ পক্ষাঘাতের চিকিৎসার আংশিক ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
আপনার ছেলের ক্ষেত্রে আংশিক সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এবার ধীরে ধীরে ও প্রাকটিসের মাধ্যমে, ধারাবাহিক অভ্যাসের ফলে ওর কোষগুলি আরও শক্ত হয়ে যাবে।
এখন বিজ্ঞানী তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা গবেষণার ফলে সেরে ওঠা রিপনকে নিয়ে রোজ ভোরবেলা হাঁটতে বের হন।
সে ধীরে ধীরে হাঁটে দিদির সঙ্গে খুব আনন্দে অবলীলায়।
রিপণ চেয়ে থাকে সবুজ সবুজ ঘাসের ভেতর দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে, আনন্দের দিকে আলোর খোঁজে,সেই আলোময় পথের দিকে।টেলিভিশনের পর্দায় এমন দৃশ্য আমরা সবাই দেখেছি৷ মহাকাশে নীল মরুদ্যানের মতো শোভা পাচ্ছে পৃথিবী৷ ‘বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে একমাত্র পৃথিবীতেই কি প্রাণের স্পন্দন রয়েছে? নাকি অন্য কোথাও প্রাণের বিকাশ সম্ভব?” এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গত কয়েক বছরে গবেষণা অনেক বেড়ে গেছে৷জার্মানির পটসডাম শহরের বিজ্ঞানীরা সদ্য আবিষ্কৃত বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তু পরীক্ষা করেন৷দূরের এই জগত প্রাণের বিকাশের জন্য কতটা উপযুক্ত? পৃথিবীর সঙ্গে মিল আছে, এমন গ্রহ খোঁজা কেন এত কঠিন?গবেষক ভ্যার্নার ফন ব্লো বলেন, ‘‘এক্সট্রা-সোলার গ্রহ খোঁজার সমস্যা হলো, নক্ষত্রের আলো সংলগ্ন গ্রহের আলোকে পুরোপুরি ম্লান করে দেয়৷ রাতের আকাশে শুধু নক্ষত্রগুলি দেখা যায়, তাদের আশেপাশে গ্রহ থাকলেও সেগুলি দেখা যায় না৷”পৃথিবীর মতো যখন তারা তাদের সূর্যের আলোকে ঢেকে ফেলে৷ তাই মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা কেপলার স্যাটেলাইট কক্ষপথে পাঠিয়েছিলেন৷ কেপলার স্যাটেলাইটে দেড় মিটার বড় টেলিস্কোপ ছিল৷ এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল প্রাণের বিকাশের উপযুক্ত গ্রহের সন্ধান করা৷ কোনো গ্রহ তার সূর্যের পাশ দিয়ে যাবার সময় আলো ঢাকা পড়ে যায়৷ অর্থাৎ নক্ষত্রের আলোয় সামান্য তারতম্য ঘটলেই স্যাটেলাইটকে তা টের পেতে হবে৷ তখনই গ্রহ আবিষ্কার করা যায়৷ যেমন আমাদের এই পৃথিবী সূর্য প্রদক্ষিণ করার সময় যে ছায়া সৃষ্টি করে, তার মাত্রা সূর্যের আলোর দশ হাজার গুণেরও কম৷ আরেকটি সমস্যা হলো, নক্ষত্রের উপর গ্রহের ছায়া পড়ার ঘটনা খুবই বিরল।তাই মহাকাশের একটা বড় অংশের উপর নজর রেখেছিল৷ সিগনাস নক্ষত্রপুঞ্জের আশেপাশে প্রায় দেড় লক্ষ নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে নিস্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল টেলিস্কোপ৷ স্যাটেলাইটকে এমন অবস্থান বজায় রাখতে হয়েছে, যাতে প্রত্যেকটি নক্ষত্র ডিটেক্টরে সরে না যায়৷ একমাত্র এভাবেই কেপলার গ্রহের ছায়ার কারণে আলোর সামান্য তারতম্য টের পেয়েছে৷ দূরের এই সব গ্রহে প্রাণের স্পন্দন সম্ভব কিনা, তা দেখার কাজ গবেষকদের৷ এটা অনেকটা নির্ভর করছে নক্ষত্র থেকে গ্রহের দূরত্বের উপর৷ পৃথিবীর মতো সেই গ্রহেও তরলকে তরল থাকতে থাকতে হবে, বাষ্প বা বরফ হয়ে গেলে চলবে না৷ ভ্যার্নার ফন ব্লো বলেন, ‘‘তরল পানি বা জল প্রাণের স্পন্দনের পূর্বশর্ত, যেমনটা পৃথিবীতে ঘটেছিল৷ অন্য কোনো গ্রহের তাপমাত্রা যতি আনুমানিক শূন্য থেকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে, তখন সেখানে তরল জল থাকা সম্ভব৷ এমন পরিবেশে প্রাণের বিকাশ ঘটা সম্ভব৷”কিন্তু কেপলার আর কারণ গত বছরের আগস্ট মাসে স্যাটেলাইটের দুটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে গেছে৷ চোখ ঘোরানোর ক্ষমতা ছাড়া ফোকাস করা সম্ভব নয়৷ অথচ ঠিক তার আগেই অভিযানের সময়কাল আরও ৩ বছর বাড়ানো হয়েছিল৷ কেপলার মোট ১৩৫টি নতুন গ্রহ আবিষ্কার করেছে৷ সবচেয়ে ছোট গ্রহটি আমাদের চাঁদের চেয়ে সামান্য বড়৷ সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার ছিল প্রায় আমাদের মতোই একটি সৌরজগত৷ সেই নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে পৃথিবীর মতো দুটি গ্রহ৷ এমন আদর্শ ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ আর পাওয়া যায়নি৷ তবে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এমন আরও গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে বলে অনুমান করা হয়৷ ভ্যার্নার ফন ব্লো বলেন, ‘‘কেপলারের আবিষ্কার থেকে মোটামুটি অনুমান করা যায়, মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে সম্ভবত ৫,০০০ কোটি গ্রহ রয়েছে৷ তার মধ্যে ৫০ কোটি গ্রহে প্রাণের বিকাশ সম্ভব৷”তবে এই সব গ্রহের সঙ্গে পৃথিবীর মিল কতটা বা সেখানে প্রাণ আছে কিনা, ভবিষ্যতের অভিযানগুলিতে তা জানা আপনার কি প্রায়ই মনে হয় না যে পৃথিবীর বাইরে কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে? অন্য কোনো গ্রহে মানুষের মতো বা ভিন্ন ধরনের প্রাণীর উপস্থিতি সত্যিই আছে? মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) বিজ্ঞানীরা আপনার সেই কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন।যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত নাসার সদর দপ্তরে গবেষকেরা পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অনুসন্ধানে তাঁদের মহাপরিকল্পনার ব্যাপারে সম্প্রতি বিস্তারিত জানিয়েছেন। নাসার একাধিক দূরবীক্ষণযন্ত্র (স্পেস টেলিস্কোপ) এ লক্ষ্যে আগে থেকেই মহাকাশে স্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব টেলিস্কোপের সংখ্যা ও তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে।যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক ও জ্যোতির্বিদ সারা সিগার বলেন, অদূর ভবিষ্যতে মানুষ কোনো একটি তারকা দেখিয়ে বলতে পারবে যে সেটি পৃথিবীর মতোই। প্রতিটি ছায়াপথে পৃথিবীর সঙ্গে তুলনীয় বৈশিষ্ট্যের অন্তত একটি গ্রহ থাকার সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা।পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধানে নাসার মহাপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) উৎক্ষেপণ ও স্পেস টেলিস্কোপ স্থাপনের মতো উদ্যোগ। ২০১৭ সালে সৌরজগতের বাইরের নক্ষত্র পর্যবেক্ষণে উৎক্ষেপণ করা হবে কৃত্রিম উপগ্রহ ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভেয়িং স্যাটেলাইট (টিইএসএস)। পরের বছরই মহাকাশে স্থাপন করা হবে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। আর পরবর্তী এক দশকের মধ্যে ওয়াইড ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে টেলিস্কোপ-অ্যাস্ট্রোফিজিকস ফোকাসড টেলিস্কোপ অ্যাসেট (ডব্লিউএফআইআরএসটি-এএফটিএ) পাঠানোর প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।নাসার ওই স্পেস টেলিস্কোপগুলো সৌরজগতের বাইরের গ্রহের খোঁজ করবে এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত জানাতে পারবে। ফলে সেসব গ্রহের জলবায়ু ও বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে। নাসার বিজ্ঞান অভিযান অধিদপ্তরের সহযোগী পরিচালক ও মহাকাশচারী জন গ্রান্সফেল্ড বলেন, গ্রহ খুঁজে পেতে নাসা যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, সেগুলো বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ও অন্যান্য প্রযুক্তি নিয়ে এখনই কাজ চলছে। তাই বিষয়টিকে স্বপ্ন বলে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।২০০৯ সালে কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ স্থাপনের পর থেকেই সৌরজগতের বাইরের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে মানুষ নতুন অনেক কিছু জানতে পেরেছে। সৌরজগতের বাইরে অন্তত পাঁচ হাজার গ্রহ রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার ৭০০ গ্রহের অস্তিত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।কেপলার স্পেস টেলিস্কোপই প্রথম পৃথিবীসদৃশ অন্য গ্রহের খোঁজ দিয়েছে।ওই গ্রহে তরল পানি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে অবস্থিত স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ম্যাট মাউনটেইন বলেন, ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলে সেটি হবে সত্যিই চমকপ্রদ ব্যাপার। সেই কাঙ্ক্ষিত আবিষ্কারের মুহূর্তে পৃথিবী ও মানবজাতি জেগে উঠবে। মহাবিশ্বে পৃথিবীর একাকিত্বের অবসানও ঘটবে তখন। বায়ুমণ্ডল থেকে পৃষ্ঠে অবতরণে এর ৭ মিনিট সময় লেগেছে। লাল মাটির গ্রহে’ পা রেখেই ইনসাইট মিশনের এ রোবটটি ছবি ও তথ্য পাঠানো শুরু করেছে, জানিয়েছে বিবিসি।কম্পনের তথ্য ও তাপমাত্রা থেকে মঙ্গলের অভ্যন্তরীণ কাঠামো বিষয়ে ধারণা নিতেই এ অভিযান চালাচ্ছে নাসা। মার্কিন এ মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জানায়, গ্রিনিচ মান সময় সোমবার রাত ৭টা ৫৩ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা ৫৩ মিনিটে) ইনসাইটের এ রোবটটি মঙ্গলে নামে। অবতরণের পরপরই মিশনটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ক্যালিফোর্নিয়ার জেট প্রোপালশান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) বিজ্ঞানীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।নাসার প্রধান প্রশাসক জেমস ব্রিডেনস্টাইন ইনসাইটের সফল ‘ল্যান্ডিংয়ের’ এ দিনটিকে ‘অভূতপূর্ব’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। ফোনে বিজ্ঞানীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডট্রাম্প ওরোবটটি এখন মঙ্গলের বিস্তৃত, সমতল একটি অঞ্চলে অবস্থান করছে; নিরক্ষরেখার কাছের ওই এলাকাটিকে ‘এলিসিয়াম প্ল্যানেসিয়া’ নামে ডাকা হচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময়ও এর গতি ছিল তীব্র বেগে ছুটে যাওয়া বুলেটের চেয়ে বেশি। চ্যালেঞ্জটা ছিল এরপরই- গতি কমিয়ে মঙ্গলপৃষ্ঠে নিরাপদে অবতরণের।একটি তাপনিরোধক যন্ত্র, প্যারাসুট আর রকেটের সমন্বয়ে মিনিট সাতেকের মধ্যেই সেই চ্যালেঞ্জ উৎরে যায় ইনসাইট। নাসা জানিয়েছে, তারা রোবটে থাকা ফরাসী-ব্রিটিশ সিসমোমিটার দিয়ে মঙ্গলের কম্পনের তথ্য জানতে চায়। এর মাধ্যমে লাল গ্রহটির কেন্দ্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। জানা যাবে, মঙ্গলের ভূ-অভ্যন্তরে থাকা বস্তুর কাঠামো সম্পর্কেও।গ্রহটি নিজের অক্ষের চারপাশে কীভাবে কম্পিত হয় তা জানতে ইনসাইটের রোবটটিতে রাখা হয়েছে রেডিও ট্রান্সমিশন সিস্টেমও।মঙ্গল এখন কতখানি সক্রিয় তা বুঝতে লাল এ গ্রহের মাটিও খুঁড়তে চায় নাসা। সে কারণেই রোবটের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ৫ মিটার পর্যন্ত খননে পারদর্শী এমন যন্ত্রও। আমাকে একদিন বললেন, আমার খুব বিপদ।
আমি বললাম, ক কি হয়েছে ?
তিনি বললেন, আমাদের গ্রামের সামনে একটা পুরোনো বাড়ি আছে ।জমি থেকে ভূতের চিৎকার গ্রামের লোকদের ভয়ে গ্রাম থেকে চলে যেতে বাধ্য করছে ।
ভূতের আক্রমণে এ পর্যন্ত কুড়ি জন লোক মারা গেছেন।
আমি মহা সমস্যার মধ্যে পর লাম । জানি দাদা নেই । তবু দিদি কে ফোন করলাম । দিদি রাজী হলেন । হবেন না কেন ,তিনি তো একাই একশ জনের বুদ্ধি ও শক্তির মালিক । অনেক অভিযানের প্রত্যক্ষ প্রমাণ ।
প্রায় পাঁচ ঘন্টা পরে আমরা শালার স্টেশনে নামলাম । পরিচিত বন্ধু প্রবীর কে দেখে সাহস হলো আমার । আমি দিদির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম প্রবীর কে ।
প্রবীর আগে চল লো আর আমরা পিছনে ।টোটো গাড়িতে চেপে যাচ্ছি । দুপাশে প্রকৃতির নয়ন ভোলানো রূপ ।
হঠাৎ দেখি একটা ম্যাজিক গাড়ি আমাদের ফলো করছে । দিদি বললেন, কোনো শর্ট কার্ট রাস্তা ধরো । সঙ্গে সঙ্গে টোটো চালক একটা গলি রাস্তায় ঢুকে পরলো ।পিছনের গাড়িটা থেমে গেলো ।
যাইহোক কষ্ট করে আমরা মুর্শিদাবাদ এর
আন্দুলিয়া গ্রামে পৌঁছে গেলাম । যে বাড়িতে ঠাঁই পেলাম সেটি টিনের চাল আর মাটির দেওয়াল ।
খাওয়া বেশ ভালোই হলো । পুকুরের মাছ আর পোস্তর তরকারি । সঙ্গে ছিলো আমের চাটনি ।
খুব গরম পরেছে । আমরা আজকে শুধু ভূতের বাড়িটা দেখে এলাম । বিকালে এক ছাট বৃষ্টি তাপমাত্রা কমিয়ে দিলো ।
রাতে খিচুরি আর ডিমের ওম লেট ।জমেছিলো ভালো । তারপর আমি ও প্রবীর আর উপরে দিদি । ঘুমিয়ে পড়েছি তখন বারো টা হবে ।
সকালে উঠে দেখি এক কান্ড । দুজনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে ।
ইতিমধ্যেই দিদি মর্নিং ওয়াক সেরে এসে বস লেন ।তারপর বললেন, ঠিক রাত একটার সময় এরা টিনের চাল তুলে ঘরে ঢুকেছিলো । তারপর মার খেয়ে এই অবস্থা । যাইহোক আমাদের সাবধানে থাকতে হবে ।
এই দুজন লোককে পুলিশ নিয়ে যাবে । আমি থানায় পরিচয় করে তবে এলাম ।
আমি বললাম, দিদি বিভিন্ন রকম আক্রমণ হচ্ছে, তাহলে আজ রাতেও আসবে ।
দিদি বললেন, ওরা আসার আগে আমরা যাবো । ওদের সাথে মোকাবিলা আজ রাতেই হবে ।
তারপর শুধু অপেক্ষা আর অপেক্ষা ।দিদির কোনো টেন শন নেই । যত টেনশন বোকা লোকের ।
এদিকে প্রবীর গিয়ে চুপি চুপি দশজন লোক ঠিক করে এলো ।কথায় বলে না ,জল জল গঙ্গা জল, বল বল বুদ্ধি বল আর লোকবল ।
ঠিক রাত বারোটার সময় আমরা সবাই অই ভূতুরে বাড়িতে প্রবেশ করলাম । সবাই সাবধানে পা ফেলছি । বিষাক্ত সাপের অভাব নেই ।
বাড়ি থেকে লাল রক্ত বেরিয়ে আসছে জলের স্রোতে । আমাদের পা ভিজে যাচ্ছে ।
ভিতর থেকে এক বিকট কান্নার সুর । যে কোনো মানুষ ভয় পেতে বাধ্য ।হঠাৎ আমার মাথায় কে যেনো আঘাত করলো ।
আমি জ্ঞান হারালাম ।
তার পর আমার যখন জ্ঞান এলো তখন আমরা সবাই প্রবীরের বাড়িতে ।
দিদি বললেন, এই গ্রাম টি দুস্কৃতিরা দখল করতে চায় । ওরা এখানে নানারকমের নেশার দ্রব্যের কারবার করতে চায় ।
দেখলাম জলের ট্রাঙ্কের ভিতর থেকে লাল জল বেরিয়ে আসছে। সব ওদের সাজানো ব্যাপার ।
আমি দেখলাম আমার মত অনেকেই আহত ।
দিদি সুমন্ত দা কে ফোন করলেন । ঠিকানা দিয়ে এখানে আসার কথা বললেন । জয়ন্ত দা দুদিনের মধ্যেই চলে আসবেন কথা দিলেন । এবার আমাদের জয় নিশ্চিত ।এখন দু দিনের অপেক্ষা ।
ঠিক তিন দিন পরে জয়ন্ত দা চলে এলেন ।
দিদি বললেন, সেদিন রাতে ঝামেলার সময় আমি ওদের দেহে নাইট্রিক অ্যাসিড ছিটিয়ে দিয়েছি । ওরা এখন বাইরে বেরোলেই ধরা পরে যাবে ।
সুমন্ত দা বললেন, আজই ওদের খেল খতম করবো আমরা সবাই একসাথে ।ওরা ট্যাঙ্কে জল লাল করেছে ভয় দেখানো র জন্য। রক্ত মনে করে কেউ যাতে ভয়ে না আসে ।ডি জে চালিয়ে স্টিরিও ফোনিক সাউন্ডে ভূতের কান্নার ক্যাসেটে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে ।
আমরা সবাই ঠিক বারোটার সময় আচমকা হানা দিলাম ভূতুরে বাড়িটায় । আবার সেই দিয়াল বেয়ে লাল রক্ত ।ভূতের কান্না । সবাই ব্যাপারটা বুঝে গেছে তাই কেউ আর ভয় পায় না । সবাই রে রে শব্দে লাঠি নিয়ে যাকে পেলে পেটাতে লাগলো । কারও মাথা ফুলে গিয়ে আলুর মত হলো ।কারও আবার পিঠে পটলের ছাপ ।
একটি ষন্ডা মার্কা লোক সুমন্ত দার মাথায় বন্দুক ধরেছে । বিদ্যুৎ চমকের মত দিদির ক্যারাটের আড়াই প্যাঁচে বন্দুক চলে গেলো জয়ন্ত দার হাতে । পা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দিলেন জয়ন্ত দা ।
সঙ্গে সঙ্গে সব শয়তান গুলো হাত তুলে আত্ম সমর্পণ করলো ।
থানা থেকে আই. সি. এসে ওদের ধর লেন আর যাবার আগে বললেন, পুলিশ বিভাগে আপনাদের মত লোকের প্রয়োজন । শুধু বন্দুক নয় তার সঙ্গে দরকার বিশ্লেষণী ক্ষমতা । নমস্কার ।
লিলি দি বললেন, নমস্কার । গ্রামের লোক এবার শান্তিতে বাস করতে পারবে ।
সুমন্ত দা আমাকে বললেন, ভালো খবর আছে, কাজ করে যান ।
গ্রামবাসীরা বললো, দিদি নমস্কার নেবেন । আপনি তো একাই একশো ।
💮💮💮💮💮💮💮💮
পাঁচ
এবার মথুরাপুর,সাঁইথিয়া।
হঠাৎ লিলিদি র ডাকে সুমন্ন্ত দার লুপ্ত চেতনা ফিরে এলো । দাদা বললেন , বসো বসো আমি একটু আসছি ।
তারপর দুই কাপ চা এনে বললেন, দিদি চা খাও ।
দাদা চা খুব ভালো করেন ।
দিদি বললেন, দাদা চা খুব ভালো হয়েছে ।
দাদা বললেন, ধন্যবাদ। তার পর কি খবর বলো ।
দিদি বললেন, গতকাল এক ভদ্রলোক ফোন করেছিলেন বেড়াতে যাওয়ার জন্য।
কোথায় ?
বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া র কাছে মথুরাপুর গ্রামে । দাদা নতুন জায়গা দেখতে ভালোবাসেন । ব্যাগ পত্তর গুছিয়ে পরের দিন দুজনে হাওড়া রামপুর হাট এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে বস লেন ।
ট্রেনে বসে জানালা দিয়ে দৃশ্যাবলী দেখতে দেখতে যাওয়া অন্তরে এক অদ্ভূত অনুভূতির সৃষ্টি করে । এ রসে যে বঞ্চিত তাকে বোঝানো কঠিন । দাদা ও দিদিকে এই কথা গুলি বলছিলেন ।
দিদি বললেন, সত্য কথা । ট্রেন জার্নির স্বাদ আলাদা ।
তারপর বারোটার সময় ওনারা মথুরাপুর গ্রামে এসে গেলেন । পরেশবাবু ফোনে খবর পেয়ে আগে থেকেই তৈরি ছিলেন ।
জলটল খাওয়ার পর পরেশবাবু দাদাও দিদিকে নিয়ে ময়ুরাক্ষী নদী দেখাতে নিয়ে গেলেন । নদীতে এখন বেশি জল নেই ।পায়ে হেঁটে ওনারা নদীর ওপাড়ে গেলেন ।
পরেশবাবুর ব্যবহার দেখে দাদা ও দিদি খুব মুগ্ধ হলেন ।
তারপর খাওয়া দাওয়া করে দুপুরে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বিকালে গ্রাম ঘোরার পালা । কত কিছু দেখার আছে আমাদের দেশের গ্রামে । গাছপালা নদীনালা এই নিয়েই আমাদের গ্রাম । কবিগুরু তাই বলেছিলেন, ” দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া … একটি ঘাসের শিষের উপর একটি শিশির বিন্দু “।
আমরা আজীবন ঘুরে বেড়াই, আনন্দের খোঁজে । আর এই আনন্দ হলো জীবনের আসল খোঁজ । কথা গুলি জয়ন্ত দা বললেন ।
দিদি পরেশ বাবু কে অনেক কথা জিজ্ঞাসা করলেন । পরেশ বাবুও কথা বলে খুব আনন্দ পেলেন ।
তার পর রাতে খাওয়া বেশ ভালোই হলো । পরেশ বাবুর বিরাট জায়গা জুড়ে বাগান ।অনেক হিম সাগর আম । গাছের টাটকা আম । আর সাঁকিরের পাড় থেকে আনা দৈ আর রসগোল্লা । রসিক মানুষ জয়ন্ত দা । বললেন, পরেশবাবু কব্জি ডুবিয়ে ভালোই খেলাম ।
পরেশবাবু বললেন, আপনাদের খাওয়াতে পেরে আমি খুব খুশি ।
ভোরবেলা তখন চারটে বাজে । জয়ন্ত দার ঘুম ভেঙ্গে গেলো । পরেশবাবুকে জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার এত কল রব কেন ?
পরেশবাবু বললেন, আর বলবেন না । আমার বাগানে অনেক জবা গাছ আছে নানা জাতের । কোনোটা লঙ্কা জবা, পঞ্চ মুখী , গণেশ জবা , সাদা জবা, ঝুমকো জবা ,খয়েরী জবা , লাল, ঘিয়ে জবা প্রভৃতি।
এখন একটা লাল জবা গাছে ঘিয়ে জবা হয়েছে । সবাই তাই ভোরবেলা পুজো দেয় । বলে , ঠাকুরের দয়া । তাই এক গাছে দুই রকমের ফুল ।
দিদি দেখছেন প্রচুর মহিলা চান করে কাচা কাপড় পড়ে পুজো দিতে এসেছেন ।
দাদা বললেন , এদের বোঝাতে হবে ।এটা বিজ্ঞান নির্ভর ব্যাপার ।
দিদি বললেন , আপনারা শুনুন, এটা বিজ্ঞানের ব্যাপার ।
তখন মহিলাদের একজন বললেন, একথা বলবেন না দিদি । পাপ হবে ।
দিদি বললেন , পরাগ মিলনের জটিলতার ফলে লাল গাছের পরাগ রেণু ঘিয়ে গাছের পরাগ রেণুর সঙ্গে মিলিত হয়ে হয়ত এরকম হয় । এই কাজটি করে পতঙ্গ রা ।সংকারয়নের ফলে জটিল পদ্ধতি পার করে এইসব ব্যাপারগুলো হয় । সেসব বুঝতে গেলে আরও পড়াশুনা করতে হবে ।
দাদা বললেন, কোন উদ্ভিদ বা প্রাণীর সগোত্রের মধ্যে মিলনের ফলে যে সন্তান উৎপন্ন হবে তাদের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য বাবা মায়ের অনুরূপ হবে। যেমন উচ্চতা, গায়ের রঙ, চোখের রঙ, চুলের রঙ,কণ্ঠস্বর, আচার আচরণ সবমিলিয়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকে বুঝানো হয়। উদ্ভিদের ক্ষেত্রেও তাই। যদি কোন উদ্ভিদ বা প্রাণী পলিপ্লয়েড হয় তাহলে তাদের উৎপাদিত সন্তান সন্ততিতে বাবা মায়ের কোন বৈশিষ্ট্যাবলী প্রকাশ না পেয়ে এমন কিছু বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ পায় যা সেই উদ্ভিদ বা প্রাণীর বংশে কখনোই ছিল না। এই অবস্থাকেই Phenotype বলা হয়।Polyploid যে সকল কোষ ও organism এর দুই জোড়ার অধিক homologous chromosome সেট থাকে তাদেরকে পলিপ্লয়েড বলে। তবে পলিপ্লয়েড সাধারণত উদ্ভিদ ও কিছু নিন্মশ্রেনীর প্রাণীতে পাওয়া যায়।আরেকজন মহিলা বললেন, কই আর কোনো গাছে তো হয় নি । দিদি বললেন, এত বড় বাগান ঘুরে দেখুন। নিশ্চিত দেখা যাবে ।দাদা জানেন সবাই প্রমাণ চায় । প্রমাণ ছাড়া এদের কুসংস্কার মন থেকে যাবে না ।দাদা ডাক লেন, আপনারা এদিকে আসুন । দেখুন এখানেও দুটি গাছে অই একই ঘটনা ঘটেছে।সবাই ওখানে গিয়ে দেখলেন, সত্য কথা তাই হয়েছে । লাল গাছে ঘিয়ে জবা ।দাদা বললেন ,মনে রাখবেন বিজ্ঞান অসম্ভব কে সম্ভব করে । বিজ্ঞান এর দৃষ্টি দিয়েই আমাদের সবকিছু বিচার করতে হবে ।সবাই বুঝতে পারলেন এবং খুশি হয়ে বাড়ি চলে গেলেন ।পরেশবাবু বললেন, এবার আপনাদের জন্য কফি নিয়ে আসি
বর্ধমান জেলার সিঙ্গি গ্রামে কবি কাশীরাম দাসের জন্ম স্থান ।অই গ্রামে আমার এক আত্মীয় বাড়িতে ক্ষেত্রপাল পুজোর সময় বেড়াতে গেছিলাম ।এই পুজোর সময় এই গ্রামে খুব ধূমধাম হয় ।রতন আমার থেকে বয়সে একটু ছোটো হলেও বন্ধু র মতোই ভালোবাসি । যেখানে যাই আমরা দুজন একসাথে যাই ।আমার অনেকদিনের ইচ্ছে সুমন্ত ভট্টাচার্য ও লিলি রায় কে এই সিঙ্গিগ্রামের পুজো দেখাবো । রতন কে আগেই বলে রেখেছি । দাদা ও দিদিকেও একমাস আগে বলে রেখেছি ।আজ তাঁরা আসবেন ।আমরা ক্ষেত্র পাল তলায় ঢাকের তালে মত্ত । হঠাৎ একটি ছোট ছেলে ছুটতে ছুটতে এসে সবাই কে বলছে, সবাই দেখে এসো মিত্র বাড়িতে ঠাকুর এসেছে ।আমরা ছেলেটির কথা শুনে কৌতূহল বশত মিত্র বাড়িতে গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য ।
–কি হয়েছে রে,
একটি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম । মেয়েটি বললো, জগন্নাথ মন্দিরের ভিতর স্বয়ং জগন্নাথ ঠাকুর এসেছেন ।
ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম , একটি বড় পোকা ঠিক জগন্নাথ ঠাকুরের মত সব কিছু ।খুব আশ্চর্য হওয়ার কথা ।
এদিকে দাদা ও দিদি এসে গেছেন । ওনাদের বন্ধুর বাড়ি নিয়ে গোলাম । কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া হলে গ্রামের সবকিছু ঘুরে দেখলেন । পাশের গ্রামে অনেক ভেড়া ,ছাগল জাতীয় পশু দের বলি দেওয়া হচ্ছে দেখে দাদা ও দিদির খুব রাগ হলো ।
ওনারা বললেন, এই সুযোগে বলি প্রথা বন্ধ করতে পারলে ভালো হয় । দেখা যাক এই নিরীহ পশু দের যদি বাঁচানো যায়। তার জন্য একটু মিথ্যার আশ্রয় নিতে হলে নিতে হবে ।
যাইহোক গ্রাম ঘুরে বেশ ভালো লাগলো ওনাদের ।রাত্রিবেলা সোরগোল । জগন্নাথ ঠাকুরের প্রসাদ খেয়ে অনেকেই অসুস্থ । তারা সবাই কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ।
দাদা মন্দিরের ভিতর ঢুকে বললেন, এত পশুর বলি দান দেওয়া হচ্ছে এই বিপদ অই কারণেই হয়েছে । গ্রামের সবাই যদি প্রতিজ্ঞা করে , বলি প্রথা বন্ধ করবে, তাহলে সবাই সুস্থ হবে । সবাই ঠাকুরের সামনে তাই বললো । আর কিছু করার নেই । বলি বন্ধ হলেই হবে ।
অনেক কিশোর কিশোরী ,বুড়ো বুড়ি এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি । গ্রামের বেশির ভাগ লোক পশু বলি চায় না ।কিন্তু অভিশাপের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না ।
হাসপাতাল থেকে সবাই সুস্থ হয়ে ফিরে এলে দিদি বললেন, এই পোকা টি জগন্নাথ ঠাকুরের মত দেখতে । কিন্তু এটি একটি বিষাক্ত পোকা । গভীর জঙ্গলে ওরা থাকে । রাতে প্রাসাদের আঢাকা থালার মধ্যে যাওয়া আসা করার ফলে বিষাক্ত ফ্লুয়িড খাবারে লেগে যায় । সেই প্রসাদ সকালে খাওয়া হয়,আবার তারপরে বলিপ্রথার পাপের ফল ।এই দুয়ে মিশে আমাদের গ্রামের অনেকেই অসুস্থ ।
বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে সব কিছু বিশ্লেষণ করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যায় জলের মতো ।
দাদা বললেন, মনে রাখতে হবে , আমরা মানুষ ,পশু নই । তাই আমরা নিজেরা বাঁচার পাশাপাশি আর বাকি সবাইকে বাঁচতো দেবো । তবেই আমরা সুন্দর এক পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারবো
কেতুগ্রাম থানার ভুলকুড়ি গ্রামে সন্ধ্যা ছ’টার পর আর কেউ বাইরে বেরোয় না ।একমাস যাবৎ এই অন্ঞ্চলে ভূতের অত্যাচার খুব বেড়ে গেছে ।
গ্রামের শিক্ষিত ছেলে বাবু ছুটতে ছুটতে এসে আমাকে বললো, জানো দাদা জবা দের দোতলা ঘরে জবা শুয়েছিলো । ঠিক বারোটার সময় জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে জবার মাথার চুল ছিঁড়ে নিয়েছে ।
—–কবে রে বাবু
—— গতকাল রাতে
——এখন কেমন আছে
—–এখনি ডাক্তার খানা নিয়ে যাবে বলছে
আমি কয়েকদিন ধরে এইরকম কথা শুনছি ।ভাবছি কি করা যায় ।আমার বাড়িতেও তো এইরকম আক্রমণ হতে পারে ।
আজকে রাতে রাস্তায় কেউ নেই । আমি দোতলার বারান্দায় রাত বারো টা অবধি জেগে থাকলাম । কিন্তু ,কাকস্য পরিবেদনা । কেউ নেই । একটু ভয় ভয় লাগছে ।তারপর রাত্রি র অপরূপ রূপে মগ্ন হয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম ।সকাল বেলা পেপার আর চা নিয়ে কোকিলের ডাক শুনছিলাম ।
হঠাৎ মন্ডল পাড়ার স্বদেশ এসে আমেজ টা নষ্ট করে দিলো ।
-দাদা,কালকে আমাদের পাড়ায় ভূতটা ঘুরছিলো ।প্রায় দশ ফুট লম্বা ,বড়ো হাত আর কালো রঙ ।ভয়ে আমার বাবা অজ্ঞা ন হয়ে গিয়েছিলো ।
_এখন ভালো আছেন ?
_না না ,এখনও বু বু করছে ।
আমি আবার চিন্তার মধ্যে ডুবে গেলাম ।কি করা যায়,এই সমস্যা সহজে সমাধান করা খুব কঠিন ।প্রকৃতির নিয়মে আবার রাত হলো ।গ্রামের সহজ সরল মানুষ এই সব বিপদের দিন অসহায় হয়ে যায় ।রাতে শুয়ে চিন্তা করলাম মুস্কিল আসান করার জন্য গোয়েন্দা সুমন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়কে খবর দিতে হবে । সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে চড়খীর অমল কে ফোন করলাম । আমার মনে আছে অদৃশ্য নাথ সেই ভয়ংকর বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছিলো সুমন্ত দা ও দিদি র জন্য।
অমল ফোন করে সুমন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়ের আসার সমস্ত ব্যবস্থা করে দিলো ।সঙ্গে আসছেন কিশোর মনো বিজ্ঞানের সহ সম্পাদনা সচিব রত্না দিদি । তিনি বিখ্যাত পরিবেশ বিজ্ঞানী । আমার একটু সাহস বাড়লো । ওদের সাথে আমার বন্ধু অমল কেও আসতে বললাম ।সেই রাত কাটলো ভয়ে ভয়ে ।সকালে উঠে শুনলাম ব্রাহ্মণ পাড়ার দীপক বাইরে বসে গান করছিলো আর ভূতে তাকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছো । শুনে আমার খুব রাগ হলো ।ভাবলাম, দাঁড়া আজকের রাতে তোদের ব্যবস্থা হচ্ছে।দাদা ও দিদি ঠিক বারোটার মধ্যে অমল কে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে এলেন ।তাদের দেখে আমার বুকের ছাতি চল্লিশ ইঞ্চি হয়ে গেলো মনে হচ্ছে।
ঠিক চারটের সময় মঙ্গল চন্ডী মন্ডপের উঠোনে গ্রামবাসীরা হাজির হয়ে গেলো । জয়ন্ত দা বলতে শুরু করলেন, আজ আমরা সবাই রাতে জেগে থাকব । কে বা কারা এই কুকর্ম করছে আমাদের জানা দরকার ।
একজন বলে উঠলেন, ভূতের সঙ্গে লড়াই করে কি পারা যাবে ।
দিদি বললেন, ভূত বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই । তারপর তিনি আরও কিছু কথা বললেন গ্রামবাসীদের সাহসী করার জন্য ।
আবার একজন বললেন, তাহলে আগুন জ্বলে উঠছে কেমন করে ।
দাদা বললেন, এসব কিছু বিজ্ঞান বিষয়ের ব্যাপার ।আগে ধরা হোক অপরাধী কে তারপর সব বোঝা যাবে ।
এখন রাত দশটা বাজে । গ্রামের সবাই জেগে আছে ।ঠিক রাত বারোটার সময় একটা দশ ফুটের লোক হেঁটে আসছে গ্রামের দিকে । দাদা থানায় ফোন করে দুজন বন্দুকধারী পুলিশ আনিয়েছেন ।সাধারণ লোকের বুদ্ধির সঙ্গে এখানে ই দাদার পার্থক্য । কখন যে সমস্ত ব্যাবস্থা করে রেখেছেন কেউ জানি না । ভূত কাছাকাছি আসা মাত্র পুলিশ দু রাউন্ড গুলি চালালো ফাঁকা আকাশে । গুলির আওয়াজ শোনা মাত্র ভূত টি ভয়ে মাটিতে পড়ে গেলো । সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের সাহসী ছেলেরা বিকট চিৎকার করে ধরে ফেললো ভূত বাবাজিকে । বেচারা তখন জোড়া হাতে ক্ষমা চাইছে ।
তাকে বিচারের জন্য ফাঁকা জায়গায় আনা হলো ।সবাই বসে পড়লেন । এবার দাদা বলতে শুরু করলেন,দেখুন সবাই এই চোরটি রণ পা ব্যবহার করেছে লম্বা হওয়ার জন্য । রণ পা টি বাঁশের তৈরী নয় ।
একজন বললো,তাহলে ও ছোটো বড় কি করে হতো ।
দিদি বললেন, রণ পা টি বিশেষ ধরণের । এর মাঝে একটি শক্ত স্প্রিং আছে। যার ফলে এ যখন লাফ দি তো তখন এটি ছোটো বড়ো হতো ।
আর একজন বললো, তাহলে মুখ দিয়ে আগুন বেরোতো কি করে।
দিদি বললেন, এটা তো সহজ ব্যাপার । সার্কাসে আপনারা দেখে থাকবেন মুখের মধ্যে পেট্রোলিয়াম বা কেরোসিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে এরা মানুষকে অবাক করে দেন । এই চোরটিও তাই করেছে ।
দাদা এবার চোরটিকে ধমক দিয়ে বললেন,তুমি জঘন্য অপরাধ কেন করছো জবাব দাও ।এবার চোরটি উঠে জোড় হাতে বললো,আমরা মাদক দ্রব্য চোরাপথে চালান করি । তাই ভূতের ভয় দেখিয়ে আমরা মানুষকে বাড়িতে ঢুকিয়ে রাখি ।এর ফলে আমাদের চোরা চালানে সুবিধা হয় ।এরপর দাদা চোরটিকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন । দাদা ও দিদির সাহায্যে একটি বড় চোরের দল ধরা পড়লো ।
দাদা ও দিদি জলপাইগুড়ি র বাড়িতে আছেন। পাহাড়ের রাজনৈতিক উত্তাল আবহাওয়া র মধ্যে ও তারা খবরের সন্ধানে সেখানেই আছেন । সাংবাদিক হিসাবে তাদের নাম বিখ্যাত সারা বাংলায় ।
শিলিগুড়ি আসার পথে দেখা হয়ে গেলো অমল বাবুর সঙ্গে ।অমলবাবুকে সঙ্গে নিয়ে দাদা ও দিদি চলে এলেন জলপাইগুড়ি র নিজের বাড়িতে ।রাতের বেলায় খাওয়ার সময় অমল বাবু দাদা ওদিদিকে এক নতুন সমস্যা র কথা বললেন ।দাদা বললেন, কি সমস্যা বলুন তো ?
অমল বাবু বললেন, সমস্যা এবার অন্য রকম । এক জন প্রতিবন্ধী মানুষ আমাদের গ্রামে এসে দরজা ঘাটের জঙ্গলে র কাছে কলা বাগানে বসে গান করেন । আর বারো বছরের নীচে কোনো প্রতিবন্ধী ছেলে বা মেয়ে এলে এক সপ্তাহে র মধ্যেই তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলছেন। দিদি বললেন, আমাদের এই মহাপুরুষ কে দর্শন করতেই হবে । তা না হলে আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে ।দাদা বললেন, আগামী কাল সকালে আমরা সবাই তার দর্শনে মুকুটমণিপুরে যাবো ।তারপর অমল বাবুর সঙ্গে দাদা ও দিদি পৌঁছে গেলেন স্বপ্নের গ্রামে। দাদা দেখলেন সুন্দর এক টা নদী বয়ে চলেছে। দীর্ঘতম মাটির বাঁধে চওড়া রাস্তা ।দূরে দেখা যাচ্ছে পাহাড় । সবকিছু মিলিয়ে এক স্বপ্নের জগতে এসে পড়েছেন তারা ।কংসাবতী নদীতে ঠান্ডা জলে চান করে মনে হলো সমস্ত শরীর যেন পবিত্র হয়ে গেলো ।
ঠিক বিকেল চারটের সময় অমল বাবু দাদা ও দিদি কে নিয়ে কলা বাগানে গেলেন । সেখানে দেখলেন প্রতিবন্ধী মানুষটি শত প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে মানুষের সেবা করে চলেছেন ।
তার কাছে এখন চারজন আট থেকে দশ বছরের ছেলে আছে । তাদের তিনি প্রায় সারিয়ে তুলেছেন ।
দাদা জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কতজনকে সুস্থ করে তুলছেন অথচ নিজে কেন সুস্থ হচ্ছেন না ।লোকটি বলতে শুরু করলেন, আপনাদের দেখে শিক্ষিত মনে হচ্ছে। আমি সবাই কে এসব কথা বলি না । আপনারা মন দিয়ে শুনুন ।বারো বছরের নীচে মানুষের শরীরের কোষ , কলা সবই নরম থাকে। তারা বিভাজিত হতে পারে । কিন্তু আমার সেই সুযোগ হয় নি ।দাদাবললেন, এবার আমি বলি । তারপর আপনি প্রচুর পড়াশোনা করার পরে গবেষণা শুরু করলেন ।ইতিমধ্যে অনেক লোকজন এসে শান্ত ভাবে বসে পড়লেন এই আশ্চর্য কাহিনি শোনার জন্য।দিদি বললেন, মস্তিষ্কের অকেজো মোটর নিউরন আপনি ওষুধের মাধ্যমে সারিয়ে তোলেন । তার ফলে আপনি শিশু দের সুস্থ করতে সমর্থ হন ।মহাপুরুষ মিটিমিটি হাসছেন । তাঁর হাসি এক শান্তি র বাণীর বার্তা বাহক ।দাদাবললেন, আপনি হয়তো জানেন স্টিফেন হকিং কুড়ি বছর বয়সে পঙ্গু হয়ে হুয়িল চেয়ার নিতে বাধ্য হয়েছিলেন । তারপর তিনি এই মারাত্মক ব্যাধি নির্মূল করার প্রতিজ্ঞা করেন । তিনি বলেন স্টেম সেল বা অঙ্কুর কোষ এই রোগ কে নির্মূল করতে পারবে ।উপস্থিত লোক জন বলে উঠলেন, তাহলে এই রোগ নির্মূল হবে একদিন ।দাদা বললেন, নিশ্চয়ই হবে । আমাদের ভারতবর্ষে স্টিফেন হকিং এর মত কত বড় বড় বৈজ্ঞানিক এই মহাপুরুষের মতো গ্রামে গঞ্জ এ নীরবে সাধনা করে চলেছেন তার ইয়ত্তা নেই ।এনারা প্রচার বি মুখ । কোনোরকম পুরস্কারের তোয়াক্কা এনারা করেন না ।এবার প্রতিবন্ধী মানুষ টি মুখ খুললেন।তিনি বললেন, দাদাবাবু আপনাকে নমস্কার জানাই । আমি সেই পরশপাথর অঙ্কুর কোষের সন্ধ তিনি এক বনেদী পরিবারের সন্তান । পূর্ব বর্ধমান জেলায় পূর্ব পুরুষ রা বাস করতেন । অই বংশের একাংশ আবার জলপাইগুড়ি তে বাস করতেন । কিন্তু কালের প্রবাহে কোনো কিছুই স্থির নয় । এখন কে কোথায় ছিটকে পৃথিবীর কোন জায়গায় আছেন তার সন্ধান করা সহজ কাজ নয় ।
এবার সৈকতদা সুমন্গ্রাবাবুর ছাত্র।গ্রামের পাশেই সতী পীঠ ।গাছ আর নদীতে ঘেরা সুন্দর একটি জায়গা ।ওখানে আমার এক সহপাঠী র বাড়ি ।আমি গোয়েন সৈ
…
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..