সুশান্ত সৎপতির ধারামুক্ত কবিতা

সুশান্ত সৎপতি
ধারামুক্ত কবিতা
Bengali
সুশান্ত সৎপতির ধারামুক্ত কবিতা

কাঁকড়

মংলু সরেন আমাদের কেউ না।
বাসন্তী মাহাতো, রেজিনা খাতুন এমনকি বিধু বাড়ুজ্জেকেও আমরা আপন ভাবতে পারিনা।
আমরা প্রত‍্যেকেই ভারতবর্ষ নামক বৃহৎ ঝুড়িতে কাঁকড়া রূপে বিরাজ করছি।

 

ধ্বনি

শব্দময় জগৎ থেকে সরে বিশুদ্ধ ধ্বনির কাছে যেতে চাই।
যা কথামাত্র ,যার ভিতর প্রাণ নেই।
তাকে নিয়ে খেলা করার নেশা দূর হ‌ওয়ার পর পাতার মর্মর শুনেছি, পাখির গান, ভ্রমরের গুঞ্জন এবং নদীর কলধ্বনিও শুনেছি দীর্ঘদিন।
এভাবেই জীবনের কাছে ফিরেছি।এখন জীবন কিছু শোনাতে চায়, আমি মুগ্ধ শ্রোতা হ‌ওয়ার আশায় –
ছড়ানো সুতা গোটাতে চাইছি।

 

আস্থা

আলোকে ধরে রাখতে গিয়ে দেখি আলো সত্য নয়।অন্ধকারে আস্থা রাখতে গিয়ে দেখি-সেও আলোর হাতে নিহত, শুধু একটি বিন্দু-থেকে ক্রমশ বিস্তারিত হ‌ওয়া এবং বিন্দুতে ফিরে আসাই নিয়তি।

 

কাকতাড়ুয়া

মানুষের কথা বলতে গিয়ে পাখি , পশু,পতঙ্গ, গাছ, লতার প্রসঙ্গ এসে ঐপড়ে।যা কিছু দৃশ্যমান এবং যে অদৃশ্য সম্পর্কে কিছুটা ধারণা হয়েছে তার সবকিছু মিলিয়েও একটি মানুষকে সম্পূর্ণ লিখতে না পারার দুঃখে কাকতাড়ুয়া হয়েছি। রোদ,জল,হিম ও বাতসের সংস্পর্শে থাকতে থাকতে হয়তো ঈশ্বর অথবা
শয়তানের চরিতাভিধানের কিছুটা অংশ লিখে ফেলতে পারব!

কসাইখানা

কসাইখানার পাশ দিয়ে যাতায়াতের পথ। রক্তাক্ত মন নিয়ে স্কুলে যাই, মন্দিরে যাই, হাঁসপাতালে এবং শুড়িখানাতেও যাই। মালিকের শান্ত, ভালো মানুষী স্বভাব দেখে ভাবি, কীভাবে সম্ভব!
সঙ্গীনীকে কাতর কণ্ঠে একথা শোনাতে সে মৃদু হেসে বাজারের ব‍্যাগ হাতে ধরিয়ে দেয়।
রন্ধন কার্যে মন দেয়।

মাংসের সুঘ্রাণে চনমনিয়ে ওঠে ক্ষুধা।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ