সেঁজুতি বড়ুয়ার কবিতা

সেঁজুতি বড়ুয়া
কবিতা
Bengali
সেঁজুতি বড়ুয়ার কবিতা

ল্যান্ডস্কেপের ভবিষ্যত

পানিতে, মেঘের অবয়ব দেখলেই
বুঝতে পারি, বৃষ্টিরা মেঘের গুমটিঘরে
পানির ঘূর্ণিতে নামবে জলমগ্ন বর্ষা

দূরের আকাশে পাশাপাশি ছায়া পাহাড়ের
ছায়া নয়, হেমন্তের বিরতিকালীন অপেক্ষা
ট্রেন ছাড়লে দৃশ্য লুকাবে সূর্যাস্তের স্তুপে

বনবাদাড়— প্রকৃতির ঘন ঘোর অন্ধকারে
অন্ধকার নয়, লম্পট চাঁদ বিঁধে গেছে গাছে
বাবুইয়ের বাসা খুলবে এবার সমস্যা জট

গ্রামশূন্য, যাওয়া-আসা নেই মানুষের
মানুষ কোথায়, কাকতাড়ুয়া ধানক্ষেতে
পশু-পাখিরা মানুষের মতো জোট পাকাবে

ভালো ঘর, মন্দ ঘর

তোমাদের বাসা সঙ্গীতপ্রিয়, আমাদের বাসা নিঃসঙ্গ
নকল অালোতে মিশে যাও তাই তোমাদের কত রঙ্গ

উজালা অাঁধারে আমাদের বাসা রাতভর ডানা ঝাপটায়
জারজ সংসারে লুম্পেন কাম তোমাদের ঘর সামলায়

উদাসীন বলে মুমূর্ষু কোটরে আমাদের ঘর কাঁপছে
সহজ আনন্দে হত্যাদৃশ্যে তোমাদের ঘর জাগছে

ঝুলকালিমাখা অপরূপ রূপে আমাদের মিথ সংসার
তোমাদের ঘরে পলাতক বোন, বুকে কষ্টের ভার

অামাদের ঘরে দেবতা আসে না, দেবতা কোথায় যায়?
তোমাদের ঘরে লাল নীল রং দেবতা পৌরুষ ছড়ায়

পাথরে খচিত অসীম আহ্লাদ তোমাদের দামী কামরায়
আমাদের খুঁটি নড়বড়ে তবু অটুট,স্থিত ভালোবাসায়

নিরীহ লোকটা

লোকটাকে ‘ভালোমানুষ’ বলে ছেড়ে দিও না
নরোম মাটিতে ওর মতোই দু’পেয়ে শ্বাপদ
‘নিরীহ, নিরীহ’ মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে!

ওর চেহারার অসহায়ত্বে একেবারে গলে যেও না
কেননা ধূর্ত চোখে অনিবার্য ধ্বংস-ছায়া এঁকে
সংসারের সবাইকে সে পেঁচিয়ে নিচ্ছে সুতায়

ভরদুপুরে নিরীহ লোকটার কামার্ত হাতে
লাটাই এবং সুতায়…ভালোবাসার স্তুতিতে
ভূপাতিত, তলিয়ে যাচ্ছে দোদুল্যমান কিশোরী

লোকটাকে ‘সরল-বোকা’ বলে স্বস্তি পেয়ো না
ওর মতো দুঃশ্চরিত্র, দু’পেয়ে দাঁতাল শুয়োর

সেঁজুতি বড়ুয়া। মূলতঃ কবি। পাশাপাশি গল্প, ছোটদের গল্প, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রবন্ধ-নিবন্ধসহ নানা বিষয়ে ফিচার লিখে থাকেন। জন্ম চট্টগ্রামের পটিয়ার কোলাগাঁও-এ মামা বাড়িতে। যদিও নিজ বাড়ি রাউজানের মহামুনি পাহাড়তলি গ্রামে। ঢাকায় বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা, জীবিকা সবকিছু। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..