স্পর্শকাতর

শ্যামলেন্দ্র চক্রবর্ত্তী
কবিতা
Bengali
স্পর্শকাতর

আলপথ পাবো

আর কতটা পথ পেরোলে বলতে পারো
পুরো সবুজ একখানি গাছ পাবো
কতটা জল ভাঙ্গলে বলতে পারো আর
গোটা একটি সমুদ্র হয়ে দাঁড়িয়ে রবো
আসলে একটি সারেঙ্গী পেতে এই ভ্রমণ
কেউ বলবে না হারানোর মিথ্যে গল্প
বলবে না কেউ উঠে যাবার কথা কখনো
সারেঙ্গীর তারে আটকে যাবে মরণ
যে সুরে বাজে আতুর ঘরের কাচা মেঝে
ফসলী জমির ঘাস জন্মানো আলপথও
সেই গানে গানে ভরে উঠুক ছায়াতল
বাঁধনের ঘাট থেকে উথলে ওঠা ক্ষত
আর কতটা পথ পেরোলে বলতে পারো
পুরো সবুজ একখানি আলপথ পাবো
কতটা জল ভাঙ্গলে বলতে পারো আর
গোটা একটি জাহাজ হয়ে ভেসে যাবো –

স্বপ্নকথা

যে পথটি এঁকে বেঁকে গেছে নদী হয়ে
তার ঘাটে বেঁধে রাখতে চাই বৈঠা যত্নে
দেখো আকাশে এখন শুক্লা দ্বাদশী ভোর
সকালে যে সূর্য উঠবে
সেও খানিকটা হেলে থাকবে
মকরের দিকে
দিন ছোট হতে হতে মস্তিষ্কে গুঁজে দিচ্ছে সময় ফুরনোর ব্যথা
তোমার প্যান্টির রং আমি জানি না
জানি না তোমার কাঁচুলির মাপ
তুমি স্তন দেখালে
আমি আইসক্রিম খুঁজে পাই
আমি শুধু তোমার মনের মাপটা জেনে ফেলেছি !

আমার হাঁটতে মন নেই
এক জলবিন্দুতে থিতু হয়ে ঘূর্ণির পাকে দুলতে চাই
যে চারাটি মহীরুহ হয়ে উঠছে
তার ডাল ধরে ঝুলে ডিঙ্গিতে
খেলতে চাই শাখামৃগের মতো
তোমার মনের ভেতর যে কাঠ পাতা থরে থরে
আমি সেখানে শুয়ে আগুনের স্বপ্ন কথা বুনতে দেখতে চাই ।

 

স্পর্শকাতর

ভাতের থালায় স্পর্শকাতর একখানি কাঁকর মেখে নিয়েছিলাম
ডাল মেখে দেখলাম সে একা
ঝোলে চুবিয়েও তাকে মেশানো সহজ হল না
ভালোবেসে পাতে এসেছে বলে ফেলতে পারি নি
তুলে নিয়েছি জিভে
তারপর থেকে গলাটা চোক্ড
বিনিদ্র নিশা সারারাত স্পর্শকাতর হয়ে রইল !

 

গোপন সময়

তখন তোমার পাহাড়ী ঝোরার মত উচ্ছ্বাস
ঢেউ তুলে খাদ করেছো গভীর
সমতলে এসে এপার ওপার ব্যবধান ফেলেছো বাড়িয়ে
উচ্ছ্বাস হয়েছে স্তিমিত
শান্ত হয়েছে ঢেউ অনেকটাই
মাঝখানে চর জন্মে গেছে
বেড়েছে বসতসংখ্যা

যখন দেখা হল , এপারে ছুঁল ওপারের ঠোঁট
অনেক স্থিতধী নদী তখন
গতিহীন তরঙ্গহীন শীতলপ্রদেশী
ভালোবাসা এসে মিশে গেল
মোহনার মুখে গোপন সময় !

শ্যামলেন্দ্র চক্রবর্ত্তী। কবি। জন্ম ও বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের কোচবিহারে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..