হ্যাশ ট্যাগ স্বাধীনতা

শ্বেতা সরকার
কবিতা
Bengali
হ্যাশ ট্যাগ স্বাধীনতা

হ্যাশ ট্যাগ স্বাধীনতা

আজ জাতীয় পতাকায় রাঙানো আকাশটার নাম স্বাধীনতা।
জন্মলগ্নেই ভাতৃঘাতী দাঙ্গায় রক্তস্নাত যে কাঁটাতার,
মানচিত্রে তারই নাম স্বাধীনতা।
আমাদের ইতিহাস পরিচয় বোধ বিশ্বাস ও আগামী শ্রেষ্ঠত্বকে,
নিপুণ চালে তিনটুকরো করার নাম স্বাধীনতা।
হৃদয়ের সবুজে ফুটে ওঠা থোকা থোকা রক্তগোলাপে,
আজন্ম লালিত বিষাক্ত ঘৃণা ছিটিয়ে দেওয়াই স্বাধীনতা।
তুষার শুভ্র হিমালয়, শষ্যভূমি, অতলান্ত তরঙ্গকে,
রাডক্লিফ রেখায় টানা হ্যাঁচড়া করাই স্বাধীনতা।
কফিন বন্দী সৈনিক সংখ্যার
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর তালিকা হলো স্বাধীনতা।
অনাহার অপুষ্টি ভ্রুণহত্যা দলিত নির্যাতন নারীত্বের অপমানে,
এক জাতিস্বত্বার নুইয়ে পড়াটাই স্বাধীনতা।
ধর্ম আর রাজনীতির দুমুখো ফলায়
ক্ষতবিক্ষত মাতৃজঠরের নাম স্বাধীনতা।
জল আর দূষণের অশনি সংকেতে
ভয়াবহ ভবিতব্যের অপেক্ষায় আমাদের স্বাধীনতা।
আনুষ্ঠানিক দেশপ্রেম, রঙিন পানীয়, মাংস ভাতে,
একদিনের আমেজী ছুটি কাটানোর স্বাধীনতা।
তবুও, দলা পাকানো প্রতিবাদী চিত্কারটাই স্বাধীনতা।
কাঁটাতারের ফাঁক গলে রোদ মেখে উঁকি দেওয়া ঘাসফুলটাই স্বাধীনতা।
অনাগত এক সূর্যোদয়ের স্বপ্ন দেখাই স্বাধীনতা।

 

জলছবি

বৃষ্টি ভেজা খিদের জ্বালা,
বৃষ্টি ভিজেই পথ চলা।
দিন আসে দিন যায়,
ভিজে হাতগুলো
একমুঠো রোদ হাতড়ায়।
তোমার আমার কাব্যগাথা
নিমেষেই শেষ হয়,
একমুঠো ভাতের চাহিদায়।
কাব্য এখানে তফাতে যাও,
ধর্মও থেকো তফাতে,
ভরা পেটে ওসব চলে,
নীল সাদা সবুজ গেরুয়া রাঙানো
ঠাণ্ডা ঘরের ক্যাফেতে।
খিদের জ্বালা মানেনা ওসব,
“সেথা যাহা জল তাহা পানি”।
সব রং মিশে গিয়ে সেথায়
শুধু পোড়া রুটি একখানি….।

 

উপহার

রূপালী একটি সন্ধ্যা দিও আমায়,
দিও তোমাকে ছুঁয়ে থাকা কিছু আলো,
রূপালী দুটি গ্লাসের টুংটাং মিঠে,
তোমার আবেশী মুগ্ধতা এলোমেলো।

আমার কাজল সেদিন গাঢ় হবে,
ঠোঁট হবে আরব্য রূপকথা,
ঘন হবে হৃদয়ের স্পন্দন,
মিছে হবে জীবনের সব জীর্ণতা।

অনুভূতিরা মাখবে নরম আলো,
গিটারের সুরে জমা হবে মোমজল,
শার্টের বোতাম ভুলবে তাদের বাঁধন,
প্রতিক্ষণ হবে আবেশী গভীর অতল।

চুরি হয়ে যাওয়া দুটি মন টলোমলো,
পড়বে বাঁধা গভীর আলিঙ্গনে,
অমরত্ব কিছু সঞ্চিত হবে জেনো,
উষ্ণ মরুর নিভৃত মরুদ্যানে।

শ্বেতা সরকার। জন্ম ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি। স্থান, বাবার কর্মস্থল টিকিয়াপাড়া রেল কোয়াটার, হাওড়া,বাংলা, ভারত। পাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে হাওড়া নরসিংহ কলেজ থেকে বায়ো-সায়েন্সে স্নাতক। ছোট বেলা থেকেই নাচ,গান, আবৃত্তি, ছবি আঁকা, ফটোগ্রাফিতে ছিল শখ। বিবাহসূত্রে খড়্গপুরের বাসিন্দা। আঞ্চলিক...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..