চালশে সময়

চৈতালী চক্রবর্তী
কবিতা
Bengali
চালশে সময়

প্রশ্ন ছিল

এই যে তুমি বোঝো আমায়!!!!
বোঝো না, তাতে কি
নিয়ম কি তবু বদলায়?

সারাটা দিনের সকাল বিকেল!!!!
গাঁটছড়া বাঁধা, তাতে কি
সাথে থাকা তবু কি হয়?

গভীরতায় মেপেছ কখনো!!!!
মাপোনি তাতে কি
ভুলে থাকা তবু কি হয়?

টুকরো বাঁচায় নিজেকে টুকরো করে বাঁচি
দেখোনি কখনো, তাতে কি
অভ্যেস কি তবু ছাড়া যায়?

নিজের সাথে লড়তে লড়তে একদিন
থামা শুরু হয়,
মুখ বুজে সহ্য করতে করতে একদিন
বলা শুরু হয়,
ভেতরে গোমরাতে গোমরাতে একদিন
ভাঙ্গা শুরু হয়।

এসো না একটু সহজে বাঁচতে শিখি,শেখাই
মন ভালো করার আনাচ কানাচ
খুঁজে আনি জীবনকথায়।

মহাকাল শরীরের ভেতর মালিক সেজে
শরীর সামলায়
যেদিন দেবে নোটিশ,ছেড়ে যেতে হবে
এক লহমায়।

জানা শোনা সকলের এক হয়না জানি
মনটাকে তবু নিজের মতই
সামলাতে হয়,
মালিকানাকে
মানতে হয়।

এই যে তুমি খোঁজো আমায়
জানি প্রয়োজনেই, তাতে কি
প্রয়োজনীয়তা কি তবু বদলায়?

আমার চোখে স্বাধীনতা

স্বাধীনতা !!!
সত্যি কি স্বাধীন আমরা?
কোথায় সেই সোনার ফসলের মিঠে ঘ্রাণ,
কোথায় সেই দুঃখের দিনে সুখের ফল
কোথায় অন্যের দুঃখে চোখের জল?
কোথায় সুন্দর দেশের সাজানো স্বপ্ন?
কোথায় রাণীসাজা ভারতভূমির যত্ন?

আজও মুক্তিযোদ্ধার পেটে নেই ভাত
স্বর্ণপদকবিজয়ী যোদ্ধার নেই মাথায় ছাদ
আজও আমরা ধুকছি অনাহার, অশিক্ষায়
ভেকধারির রকমফের চালে, আজও অবক্ষয়।
মাতৃভূমির চোখের জলে, আজও ভিজে মাঠ
কোথায় গেল পরাধীনতার এত রক্তপাত।

ঘুনেধরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন,মানুষের হাহাকার
তেলা মাথায় তেল চপ চপ।
পথশিশুর বাড়তি পরিসংখ্যান,
আমরা স্বাধীন ভারতের কাঠের পুতুল
বুদ্ধুরাজার লাঠি ঠক ঠক।

স্বাধীন বাংলার গন্ধ মেখে বাবুগিরি,
আজও বুঝতে শিখিনি চাটুকারি।
দমিয়ে বেঁচে আছি ভালো দিনের অপেক্ষায়,
যদি কোনো আলাদীন পথ দেখায়,
আবার নিঃশ্বাস নেবো স্বাধীনতায়।

প্রশ্ন ছিল

এই যে তুমি বোঝো আমায়!!!!
বোঝো না, তাতে কি
নিয়ম কি তবু বদলায়?

সারাটা দিনের সকাল বিকেল!!!!
গাঁটছড়া বাঁধা, তাতে কি
সাথে থাকা তবু কি হয়?

গভীরতায় মেপেছ কখনো!!!!
মাপোনি তাতে কি
ভুলে থাকা তবু কি হয়?

টুকরো বাঁচায় নিজেকে টুকরো করে বাঁচি
দেখোনি কখনো, তাতে কি
অভ্যেস কি তবু ছাড়া যায়?

নিজের সাথে লড়তে লড়তে একদিন
থামা শুরু হয়,
মুখ বুজে সহ্য করতে করতে একদিন
বলা শুরু হয়,
ভেতরে গোমরাতে গোমরাতে একদিন
ভাঙ্গা শুরু হয়।

এসো না একটু সহজে বাঁচতে শিখি,শেখাই
মন ভালো করার আনাচ কানাচ
খুঁজে আনি জীবনকথায়।

মহাকাল শরীরের ভেতর মালিক সেজে
শরীর সামলায়
যেদিন দেবে নোটিশ,ছেড়ে যেতে হবে
এক লহমায়।

জানা শোনা সকলের এক হয়না জানি
মনটাকে তবু নিজের মতই
সামলাতে হয়,
মালিকানাকে
মানতে হয়।

এই যে তুমি খোঁজো আমায়
জানি প্রয়োজনেই, তাতে কি
প্রয়োজনীয়তা কি তবু বদলায়?

চালশে সময়

তোমাকে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে লোভ
রাঙিয়ে দেয় খোলা জানালার রোদ
জানি এসবের কোনো দাম নেই আজ
এখন ফেরারী সকালেরা গন্ধহীন
চালশে চশমায় ঠিকানা লেখে
দু একটা আওড়ানো
কবিতার উপর
হাত রাখে।

সবুজ কালির লেখা চিঠিরা উবে গেছে নিয়মে
মনে করাবার জন্য গোলাপি বিকেল নেই
জানি এসবের আর কোনো মানে নেই
বুৎপত্তির ইতিহাস মেখেছে সময়
তাকে আর কিছু বলার নেই
ভালোবাসা হারিয়েছে
অনুভূতি , আবেগ
তোমার আমার।

জানি একটা সময়ের পর স্বর আলাদা হয় না
ধরা ছোঁয়াগুলো আর তেমন থাকে না,
অভ্যেসের হাত ধরে থেকে যেতে হয়
ডাক্তার বদ্যিমাখা ওষুধের গন্ধেই
বেঁচে থাকার সীমানা খুঁজে
দিন গোনা বাকি থাকে
তবু বেঁচে নিতে হয়।

ইতিকথার গল্পমালা
সবটুকু যেন রস হারিয়ে
নিস্পৃহতার দোলে একাই
দুলতে থাকে একা–
বলা হয়নি বয়সটা তখন
আশির কাছে ঠেকা।

পড়ন্ত বিকেল
এবার বুঝতে অসুবিধে হবে না
কি কারণে উজ্জ্বলতা হারিয়েছে
শহর,আমিরা
এও এক জীবনের দ্বীপপুঞ্জ,
গ্যালাক্সি আলফা
বেঁচে থাকার আনকোরা নিশানা।

চৈতালী চক্রবর্তী। কবি। জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের কলকাতা, বর্তমান নিবাস দিল্লি। প্রকাশিত বই: 'ইচ্ছেকথা' (কাব্যগ্রন্থ), 'অস্তরাগ' (গল্পগ্রন্থ ), 'নিভন্ত বিশ্বাসের মুহূর্তে চৈতী' (কাব্যগ্রন্থ), 'ভোরাই' (কাব্যগ্রন্থ)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

কবুতর

কবুতর

অগ্নিকাণ্ড আমার চৌহদ্দিতে ধ্বংসস্তুপের ভীড় পুনর্বার নুয়ে পড়া অতীতের তীর জীবনের মাঝপথে রেখে যায় সম্পর্কের…..