বসন্ত বিলাপ 

তপনকান্তি মুখার্জি
কবিতা
Bengali
বসন্ত বিলাপ 

ফসিল 

টোকা দিলেই দরজা খোলে, আর এলোমেলো হাওয়ায় খিদে বেড়ে যায়, এসব বোধহয় ঠিক নয়। ভয় বিঁধে থাকলে দরজা বন্ধই থাকে, মনে শীত গজিয়ে উঠলে খিদের পুনর্জন্ম হয় না। ঘরে ঘরে দরজা তাই বন্ধ, পেটের খিদে গচ্ছিত উপবাসী অতীতে। কয়লারঙা শরীর এখন হাত ধরে ধর্মের,  পকেটে গোমড়ামুখ জমা রেখে মুখোশ খোঁজে আনুগত্যের ঝোলায়। আমরা হাঁটি, মুখ থাকে নরকের দিকে। আমাদের কোনও ভোরের আলো নেই, নেই শব্দের উৎসব। অন্তর্গামী স্রোতে অন্তসলিলা নদী বয়ে বেড়ায় দুঃখবিলাপ। কপালে ভাঁজ ফিকে সূর্যের।
বেসুরো 
কাকটা ‘ কা কা ‘ ডেকেই চলেছে সেই থেকে।
হাতে আমার সাতটি তারের স্বপ্ন,
সুরগুলো লাগছে না ঠিকমতো।
চোখে দিগন্তের ছায়া নামছে, হাত নিশ্চল।
অথচ চোখ থেকে আমি তো আগুন ঝরাতে
চাই মুষ্টিবদ্ধ হাতে।
হচ্ছে না, কাকটা ডেকেই চলেছে।
বোধহয় বলতে চাইছে, সব হাতে সেতার বাজে না,
সব হাতে বিপ্লবও।
বসন্ত বিলাপ 
ঘোড়ার জিনে বাঁধা আমাদের জীবন।
বেশির ভাগ হৃদয় ছুঁয়ে গড়ায় গাঢ় অন্ধকার।
তছনছ সব কিছু, সুরক্ষিত নয় কিছুই –
আজন্মলালিত বিশ্বাস, স্বপ্ন, আকাশ, বাতাস,
নদী, বনাঞ্চল। ঘোড়সওয়ার ছুটছে,
তার করতলে ধরা হরেক পাগলামো।
আমরা তার ঘুঁটি কল্পিত গন্ডির রামায়নী প্রভাবে।
ফিরে পাওয়া 
রবীন্দ্রনাথের যে গানটা আমার সবচেয়ে প্রিয়,
আজ ঘুম থেকে উঠে দেখি, ভুলে গেছি তার সুর।
বিষণ্ণ বিছানায় মরচে রঙ, ঘুঙুর বেসুর, সুরের
আঁকিবুকি মনের অন্দরে। সুরের খোঁজে গড়ায়
বেলা। গভীরে যেতে যেতে হঠাৎ সুর আসে, সুর
বাজে। আহত সকাল স্নিগ্ধ গোধূলি হয়ে হাসে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

অহমিকা

অহমিকা

অহমিকা আত্মগরিমায় আজ অন্ধ হয়ে আছো, বিবেকের দংশনে মননে নেই বিশ্বাস। কর্মে ব্যস্ততা সময়ের আবর্তে…..