শারমিন সামি’র চারটি কবিতা

শারমিন সামি
কবিতা
Bengali
শারমিন সামি’র চারটি কবিতা

পথের সমান দূরত্বে দাঁড়িয়ে

আয়নার দিকে মুখ ফিরে তাকালাম
ভাবছি যদি ডানা ছেড়ে নেমে আসি
লতাগুল্ম ঘেরা কোনো সমুদ্র কাঁটাতীরে?

বৃষ্টি চলে গেলেও রয়ে যায় কিছু দাগ
এমনই বেনামী রঙের মত তুমিও জেগে আছো
বৃত্ত ও পরাবৃত্তের মাঝে

এইসব ছায়াসন্ধ্যা রপ্ত করার কিছু রাত
কৌশলে পেরুলেই
জলের গভীরে যেতে যেতে কারা যেন মেলে ধরে
সহজিয়া দুপুরের ঘ্রাণ!

সফেন মেঘের ভাঁজে ভাঁজে সেসব চিঠির উত্তর নিয়ে পড়ে আছে ঘরহীন চৌকাঠ,
এখানে বেলা বাড়ছে — পথের সমান দূরত্ব নিয়ে।

বিষাদ বার

কখনো সমুদ্রবনেও ভেসে থাকে জল
স্বরসন্ধি দুপুরের সবচে কাছে উজ্জ্বল হয়ে থাকে সেদিনের স্নান
ঘোরনামায় যে ফুল নিমগ্ন শহরের দিকে এঁকে বেঁকে চলে যায়
তার নির্জন চোখের পাশেই ফুটে আছে অজস্র ঘূর্ণন

করতলে — কেউ কেউ দেখছে গন্ধরোদের লাগোয়া জীবন
ভুল চিন্তার কীর্তন করে কেটে যাচ্ছে রাত।

নিজস্ব দ্রাঘিমায় বেড়ে ওঠা উপকথা 

চিবুকে নুয়ে পড়া সোনালু ফুলের ভিড়ে
যদি শিখে নিতে পারি পাখিদের হাওয়া বদলের রাত!
তবুও এই পড়ন্তমর্মর সূর্যাস্ত গ্রীবায় ভেসে যেতে দিও
পালিয়ে যাওয়া পথের ছায়ামেঘ

কড়িখেলায় মেতে উঠেছে যে ফিনফিনে শরীর
তাকে কেউ গোপনে ঝরে যাওয়া শিখিয়ে দিলে
পাতাকেও জেনে নিতে হয় প্রতারণা।

এসো জানালা খুলি,
যদি কপাটে লিখে রাখতে পারি উরুসন্ধ্যার নীরবতা!

ব্যাধিগ্রস্ত দুপুরবেলা

ফিরে ফিরে সমস্ত মেঘেদেরই পার হতে হয়
হেমন্তকাল
জলপ্রবণতার নেপথ্য রোদে পুষে রাখা ভোর
যদি ঘোর থেকে দৃষ্টি খুলে এনে বিছিয়ে দেয়
হাতে,
করতলে কাঙ্খিত উড়াল নিয়ে
কেউ কেউ অপেক্ষাপ্রবণ হয়ে যায়

আতশি চোখের ঢেউয়ে, দুলে ওঠার কালে
বিপন্ন নদীগুলো তরপায় এবং
তাদের পরিধিভ্রমণের নিবিড় পাপগুলো
বেড়ে যেতে থাকে ভীষণভাবে

ঠিক যেমন
পৃথিবীর গোপনমর্মর কণ্ঠে
ম্রিয়মাণ দিনের শীৎকার শুনতে শুনতে
বোধের মিউকাস ধরে হেঁটে যেতে থাকলো
অগণিত বৃশ্চিক হাওয়া!

কবি, ছাত্রী। জন্ম ১৯৯১, ময়মনসিংহ। সম্পাদিত ছোট পত্রিকা: শব্দমঙ্গল।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

কবুতর

কবুতর

অগ্নিকাণ্ড আমার চৌহদ্দিতে ধ্বংসস্তুপের ভীড় পুনর্বার নুয়ে পড়া অতীতের তীর জীবনের মাঝপথে রেখে যায় সম্পর্কের…..