বিপ্রতীপ

তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
Uncategorized, কবিতা
Bengali
বিপ্রতীপ

ভূমি

যতটুকু ভূমি পাও, আগে তো পা রাখ
একটু দাঁড়িয়ে গেলে তারপর নাহয়

জায়গা বদলের কথা ভাবতে পার।

 

এরকম পরামর্শ অনেকেই দিয়েছিল,

যত্ন করে মনেও রেখেছি।

কিন্তু জায়গা বদল তো দূরের কথা

সেই থেকে খুঁজতে খুঁজতে

থিতু হয়ে দাঁড়ানোর জন্য

পায়ের মাপে ভূমিই পাইনি এখনও।

 

বিপ্রতীপ

নতুন জুতো পরে যেদিন প্রথম রাস্তায় বেরই

সেদিনই বৃষ্টি হয়। কোথায় মেঘ জমে থাকে কে জানে!

শর্টকাট রাস্তায় যখন তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে চাই

তখনই আরও দেরি হয়ে যায়।

একটু আস্কারা পেলে যখন তানপুরা সুর তুলতে পারে

তখন দামাল হাওয়া এসে সব তছনছ করে দেয়।

 

আমিও কম যাইনা,

যখন খুব কাজের চাপ থাকে,

আড্ডায় আর আলসেমিতে সময়টা কাটিয়ে দিই।

মানিব্যাগ ফাঁকা হয়ে এলে ঝেড়েঝুড়ে যা পাই

তা দিয়ে মোড়ের দোকানে বসে নিশ্চিন্তে চা খাই।

মাঝে মাঝে রিক্ত হয়ে যেতে বেশ ভালো লাগে।

ঘনত্বের মানে না বুঝলেও কখনও একটি একটি করে

গাছের কাছে গিয়ে জানতে চাইনা

জঙ্গল কাকে বলে।

 

কেউ ইট ছুঁড়লে আমি যদি পাটকেল খুঁজি

আমার চারপাশে তখন অজস্র ফুল ফুটে থাকে,

আমি ফুলে হাত রাখি, ফুল তুলতে ভুলে যাই।

শূন্য মনে ঘরে ফিরি। যখন একদম তৈরি থাকিনা

তখন মায়াবী কপাট খুলে আসা কারও ছায়া দেখতে পাই।

তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়। কবি ও গদ্যকার। জন্ম ও বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের বাঁকুড়া জেলায়। এবং কর্মসূত্রে কলকাতায় বসবাস। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। লেখালেখি শুরু সত্তরের দশক থেকে। প্রকাশিত বই: ‘মার্কিন মুলুকে, মফস্বলে’(২০২০)। যৌথভাবে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ‘রক্তাক্ত চন্দনের বনে’(১৯৭৭) এবং ‘সপ্তর্ষির আলো’(২০১৫)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

শঙখচিল

শঙখচিল   অসীম নীলাভ শূন্যতায় নির্ভার মেঘপুঞ্জের মত উড়ছে শঙখচিল, শিল্পিত ছন্দে পাখায় গেঁথে শূন্যতার…..