পুণ্যার্থীর পাহাড়িয়া ইচ্ছেতে
দেহের তরঙ্গ জুড়ে বদলের হাওয়া,
আর এঁকেবেঁকে লেখচিত্র ডুবন্ত মাছেদের পথ চিনিয়ে দিলে
বৃদ্ধ দ্বীপের দীর্ঘ আকাঙ্খার পারদ চড়ে যায় ।
আলো নেই পর্ণ ঝোপের তলে,
অশরীরী এলে
আরেকটা নতুন কাহিনির ঔষধ পেয়ে
লাফিয়ে ওঠে অমবস্যার মরে যাওয়া ঢেউ ।
এই পরিসরে কেউ
রহমত চাচার মতো রঙিন কাগজের নৌকো বানায় না ।
যন্ত্রচালিত বার্ষিক হিসেবেই বেড়ে ওঠে অর্জুন ।
হুংকারে তার বিবিধ কুরুক্ষেত্র রচিত হয় ।
কেউ হয়তো-বা নিমকাঠি ।
শুধু কামনাতে নয়, জীবনসংগ্রামেই আসে জয় ।
ছদ্ম-ভদ্রলোকের শ্রদ্ধাও স্পর্ধায় মুড়ে থাকে,
আদিবাসীদের সূর্য শিখায় জমে ভয় ।
নীল রঙের গেলাসের জলে সারঙ্গের মুখচ্ছবি ।
বুকের পায়রা জাগা খোপে অস্থির এক পঞ্চমুখী সর্প ।
পুণ্যার্থীর পাহাড়িয়া ইচ্ছেতে
স্বর্গরাজ্যে লাস্যময়ী দুলে উঠলেই
তঞ্চকতার সভ্যতা পুণরায় শ্বেতকায় রঙ ধরে ।
কে রাখা তরঙ্গের জলরঙ
হৃদয়, শব্দবঞ্চনা ভরতি আঁশটে পাহাড়িয়া নদ ।
ঘুমদেহ ঘেন্নার উত্তরীয়তে নিজেরই অনুশাসন খুঁজে খুঁজে ফেরে ।
অশোকের সাম্রাজ্যের নীচে
পাক্ষিক অনুশীলনে নেমে আসে মেহগনি-রাত ।
আমি তখন কেয়া গর্জনের ছায়ায় শিকলাবদ্ধ ।
আসা আর যাওয়ার অন্তহীন জীবনে বিকৃত পুরুষ শিক্ষা দেয় :
“বিক্রি করো তিপান্ন পর্বের দুঃখ ।
সাতচল্লিশ পর্ব সুখ তো উম্মাদ হয়ে নাচে”।
বিশ্ব বন্ধনে সাগরিকার মতো প্রেম,
নিস্পাপ ফুলের বিছানায় ভ্রমরের অত্যাচারী অজস্র দাঁতের সমাহার ।
ওহে প্রভু, সভ্যতার জগত জলদে ভাসিয়ে দাও ।
শুভ্র আঁচলের সীমারেখা ধরে শৈশব উঁকি মারে,
বজ্রাঘাত মেঘভাঙা সেতুর বুক পুড়িয়ে ছাড়ে ।
বিষবৃক্ষের ছালে পিপিলিকা চলে ।
আমার জীবনগ্রন্থ, উইপোকা আক্রান্ত,
পাঠশালা জীবন অসমাপ্ত রেখে পাঠাগারে পড়ে আছে সে ।
গুহাচিত্রের মতো অজন্তা-অনুপম কোনো মেয়ে,
দিবারাত্রি ডাকে নক্ষত্রের জঙ্গলে,
অবশিষ্ট মিলন তাড়নার থেকে বহুদূরে উদাসীন আমি ।
শুধু দেখি, সদ্য এঁকে রাখা তরঙ্গের জলরঙ ঝাপসা ।
অযাচিত নষ্টকথা
কৃতবিদ্য নারীর শূন্য কায়া, পাহাড়িয়া সুখে হায়না হিয়া ।
বীর্য রসের শোণিত স্রোতে, ধর্ষিতা মাগে মৃত্যুদূতে ।
পাহাড়িয়া বিছার
দংশনে লোলুপ কামনারা ধীরে ধীরে অজস্র
লতিকার
বন্ধুর শরীরের আঁকেবাঁকে রেখে যায় রিরংসার রক্তাক্ত ভাস্কর্য ।
সোপানতলের সাঁঝবাতি বড়ো ক্লান্ত, নিভু নিভু তার সূর্য ।
কীটদষ্ট মমি অস্বীকারের দীর্ঘ মরুঝড়
সামলে
নিয়তির প্যাপিরাসে যে অযাচিত নষ্টকথা লিখেছিল,
তার সব অক্ষর
প্রলেপে, যাতনার কঙ্কালভাঙা হাড়, ক্যালসিয়ামের বাঁধন সৌকর্য ছিঁড়ে সূর্যশিখর
সুবাসিত শাহী ঐতিহ্যের পচাগলা রসে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে ।
একটা বসুন্ধরা,
এ অন্ধপথের গোলকধাঁধায় নারীমুক্তির স্লোগান তোলে, মর্মকথার মোহরূপ হরা
অপরূপা কোনো ফাগ
সমুদ্রমন্থনে যখন অনন্তনাগ,
তখনও রক্তাক্ত দেহটা পোঁতা থাকে ডোবার পচা পাঁকে ।
সোনালি রঙকরা সাধের ছড়ানো চুলগুলো সিক্ত, লালজলের সোহাগে ।
উপহ্রদে আগন্তুক কোনো দেশান্তরী আজও অপেক্ষায় ।
নিথর একটা প্রেমের কাব্য, গর্জনশীল চল্লিশা পার হয়ে পৌঁছে যাবে তার মহুয়া-মদির গাঁয় ।