পাপযোগ ও আমরা

শাহীদ লোটাস
মুক্তগদ্য
Bengali
পাপযোগ ও আমরা

সাধারণত আমরা পাপ নির্ধারণ করি ধর্মের নিয়ম নীতির উপর নির্ভর করেই । ধর্মে যায় নিষেধ তাকে আমরা বলি পাপ আর ধর্মে যায় করতে বলা হয় তাকে স্বীকার করে নেই পুণ্য বলে মানে ভালো কাজ, সঠিক, সহি । বর্তমান পৃথিবীর মানুষ শিক্ষায় সাহিত্যে বিজ্ঞানে অনেক এগিয়ে গেছে আর মানুষের এই এগিয়ে যাওয়া গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশেষ কোন একক ধর্ম এগোতে পারছে না, ধর্মের গতি সমগ্র মানব জাতীর এই গতির সঙ্গে কুলোতে না পারার কারণে ধর্ম আজ রয়েছে অনেক অনেক পেছনে, তাই হয়ত পাপ ধর্মের গণ্ডিতে না থেকে পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থার এমন কি মানুষের দৈনন্দিন ব্যবস্থায় নিজেকে প্রকাশ করছে প্রতি নিয়ত, এমন মনে করেন হয়ত অনেকেই, আবার অনেকের ধারণা ধর্ম সব সময়ের জন্য পাপ নির্ধারণের এক সঠিক ব্যবস্থা এবং মানুষের মাঝে পাপ রোধের এক মাহা-ঔষধ । যাইহোক পাপ প্রকাশ্যে যে পরিমাণ ঘটে তার থেকে বেশি ঘটে লোকালয়ের আড়ালে। আমরা সবাই চাই নিজেকে ভদ্র নিষ্পাপ আর ভালো মানুষ হিসেবে অন্যর কাছে তুলে ধরতে, কিন্তু এই নিজেকে আড়াল করে রাখার পেছনেও যে পাপ কাজ করে তা আমরা অনুধাবন করতে পারি না, আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না কোন কর্ম দ্বারা আমাদের পাপ হচ্ছে কোন কর্ম দ্বারা আমাদের পাপ হচ্ছে না। অন্তরের কলুষ চেতনা থেকে আমরা যখন অন্যের অমঙ্গল কামনা করি তখনো ভাবি সে আমার প্রতিপক্ষ সে আমার তুলনায় বড় হওয়া অনুচিত তাই তার ধ্বংস হওয়া আমার নৈতিক কাম্য, আমাদের অন্যের প্রতি এই অমঙ্গল কামনাতেও যে পাপ লুকিয়ে থাকে তা কিন্তু এক বারো আমাদের বোধশক্তিতে ধরা দেয় না। আমাদের ভদ্র বেশের আড়ালে যখন আমরা লোলুপ দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকি কোন যৌবনবতী নারীর দেহের দিকে তখনো বুঝতে পারি না এ আমাদের পাপ। মূলত বিবেকেই পাপ রোধ করে আবার এই বিবেকেই পাপ লালন করে। এক জন দুষ্কৃতিকারীর বিবেক কখনই দুষ্কৃতিকারীকে দুষ্কর্ম যে অপরাধ এ ভাবতে শেখায় না, দুষ্কৃতিকারীর বিবেক দুষ্কৃতিকারীকে সব সময় শেখায় অসৎ হওয়াটাই হল বুদ্ধিমত্তার পরিচয় যারা সরল তারা বোকা তারা কখনই অসৎ কাজ করতে পারে না, এই কাজ করতে হলে মেধার প্রয়োজন, সে নিজে যা করছে আর করবে তাই হলো বুদ্ধিমান আর চতুর লোকের কর্ম, আর এতে তৃপ্তিও এনে দেয় দুষ্কৃতিকারীকে। এভাবেই আমাদের বিবেকের প্ররোচনায় আমরা অন্যায় করি, পাপ করি, অন্যের অনিষ্ঠ করতে সামান্যতম দ্বিধা করি না।

 

 

আমরা যদি পৃথিবীর সকল পাপকে একত্রিত করে দু ভাগে বিভক্ত করি তবে হয়ত পাপকে সহজে বোঝার একটা উপায় বের হতে পারে আমাদের ।

 

ধরা যাক প্রথম ভাগে রাখা হল স্রষ্টার আর সৃষ্টির মধ্যকার কাজকর্ম মানে স্রষ্টা ও সৃষ্টির পাপ পুণ্যের হিসাব । যেমন, আমার মুসলিম পরিবারে জন্ম তাই আমি ইসলাম ধর্মের অনুসারী আর আমি মুসলিম বলে আমার ধর্ম আমাকে বলে দিয়েছে আমাকে কালেমা বিশ্বাস করতে হবে, নামায, রোজা, হজ, যাকাত আদায় করতে হবে, এই ধর্মীয় কাজ গুলো না করলে আমার গুনাহ হবে যার কারণে আমি নরকবাসী হবো আর এই ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা পালন করলে আমার পুণ্য হবে আমি জান্নাত পাব । ভেবে দেখুন এই পাপ বা পুণ্যে শুধু আমারই লাভ বা ক্ষতি হচ্ছে, এতে পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের কোন লাভ ক্ষতি হচ্ছে না, তেমনি ভাবে আমি সনাতন ধর্মের লোক হলে আমার পূজা অর্চনার হিসাবটা এসে যাবে আপনা আপনি। ধর্মের কথা ভাবতে গেলে চুল কাটা দাড়ি চাঁছাতেই পাপ পুণ্যের হিসাব নিহিত । এই ধর্ম কর্মযজ্ঞের সঙ্গে পরিবার সমাজ আর রাষ্ট্রের কোন লাভ ক্ষতি নিহিত থাকে না। এতে শুধু সৃষ্টির ও স্রষ্টারেই লাভ বা ক্ষতি নিহিত আছে । কিন্তু এই ধার্মিকতা, ও স্রষ্টার বিশ্বাস প্রতিষ্ঠার প্রবণতা অতিমাত্রা দেখাতে গেলেই সমাজ এবং রাষ্ট্র ক্ষতির মুখো মুখি হয়ে পরে, যার কারণে কুরআন পুরে, মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর হয়, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় আগুন দেওয়া হয়। আবার কোন কোন ধর্মে এমন কিছু বিষয়ের নিয়ম নীতি প্রণয়ন করে থাকে যায় এক ধর্মে পুণ্যের আবার অন্য ধর্মে হয়ে যাচ্ছ তা পাপ বা অধর্মের কাজ । কিন্তু আমরা যে ধর্মেরেই লোক হই না কেন কোন ব্যক্তি যদি তার নিজ ধর্ম্যের আদেশ নিষেধ অনুযায়ী স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত, আরাধনার অবহেলা করেন তাকেও আবার আমরা বলি ফেলি পাপিষ্ঠ, কোন কোন ক্ষেত্রে নিজ ধর্ম বাদে অন্য ধর্মের প্রতি আসক্ত ব্যক্তিকেও নির্দ্বিধায় বলা হয় পাপী মানুষ। তাহলে দেখা যাচ্ছে ধর্ম হলো এক জটিল ব্যাকরণের মতো, প্রতিটি ধর্মই নিজ নিজ ব্যাকরণের উপর দাড়িয়ে আছে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে তার অনুসারীদের নিয়ে । যদিও এখানে রাষ্ট্র সমাজ বা পরিবারে ততটা লাভ ক্ষতি একদমেই নেই। এখানে সৃষ্টি আর স্রষ্টার হিসেব থাকলেও একে নিয়েই আমরা বেশী আলোচনা করে থাকি এর উপরেই আমরা পাপ পুণ্যের হিসেবটা সহজেই করে ফেলি। এ এক বিস্তর আলোচনার বিষয়।

 

এখন পাপের দ্বিতীয় ভাগ নিয়ে আলোচনা করা যাক । আমরা সবাই জানি ঈশ্বর বন্দনার বাইরেই রয়েছে আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ আর এই বিশাল কর্মযজ্ঞেই পাপের দ্বিতীয় ভাগ নিহিত।কিন্তু এখানেও সমস্যা সৃষ্টি হয় বেশী পৃথিবীতে ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় এবং সমাজ ব্যবস্থার ভিন্ন ভিন্ন পার্থক্য থাকাতে । এমন কি একই রাষ্ট্র একই ধর্ম থাকার পরেও আমাদের গ্রাম্য এবং শহরের সমাজ ব্যবস্থাতেই পাপকে বোঝার ভিন্ন ভিন্ন পার্থক্য বিদ্যমান। যেমন ধরা যাক গ্রামের কোন গৃহবধূ কোন পরিচিত বা অপরিচিত কোন পুরুষের সঙ্গে সৌহৃদ্য তা দেখালে বা কোন নির্জন স্থানে কথা বললে গ্রাম্য সমাজ এই ব্যাপারটি ভালোভাবে নেয় না, নিজ পরিবারের বাইরে অন্য পুরুষের সঙ্গে এই সৌহার্দ্য-তা দেখানোর কারণে এই নারীকে পেতে হয় লাঞ্ছনা, পেতে হয় অপবাদ, সমাজের প্রায় সবাই তাকে বলে, তুই পাপিষ্ঠা, তুই পাপ-চারিণী। এই পাপিষ্ঠা যিনি যাকে পাপ-চারিণী বলা হচ্ছে আসলে তার কি অপরাধ ? এমন মেলামেশা শহরে হর হামেশাই হচ্ছে । এই একই ব্যাপার যদি শহরে পরিবেশে দেখা হয় তখন ? শহরের একজন নারী বলি আর মেয়েই বলি তার দিনের অধিকাংশ সময় কাটাতে হয় পরিবারের বাইরের ভিন্ন ভিন্ন অনেক পুরুষের সঙ্গে, এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে মাঝরাতেও থাকতে হচ্ছে তাকে বাসার বাইরে, এত শতর পরেও কিন্তু আমরা শহরের এই নারী বা পরুষকে কখনই পাপী বলি না, পাপিষ্ঠা, পাপ-চারিণী-বলি না, আমরা তাদের কে বলি শিক্ষিত নারী আধুনিক মানুষ ।

আমরা সব সময় জেনে আসছি, যে রমণী ধর্ম সমাজ পরিবারের নিয়ম শৃঙ্খলা এবং ভয় ভীতি তুচ্ছ করে নিজের ইচ্ছে মতো জীবন যাবন করে সেই পাপী । কিন্তু পাপের মূল্যায়ন বা পরিমাণ মূলত বিভিন্ন সমাজ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে বিবেচনা করা হয়, যেমন আমাদের বাঙালী ব্যবস্থায় বাঙালী মেয়েদের বিবাহ ব্যতীত সন্তান গর্ভধারণ প্রসব গুরুতর অপরাধ, এমন অপরাধীকে বাঙালী পরিবার আশ্রয় দেয় না বাঙালী সমাজ গ্রহণও করে না আর রাষ্ট্রও এদের প্রতি কোন স্বীকৃতি দিয়ে থাকে না, আবার এই একই পন্থায় কোন নারীর সন্তান গর্ভ ধারণ, প্রসব এবং লালন কোন কোন রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তেমন গুঁড়তর অপরাধ নয়, বরং এ কাজের জন্য এই নারীকে তার পরিবার আশ্রয় দেয়, সমাজ হেয় পতি পন্ন করে না আর তার বসবাস রত রাষ্ট্রও তার সন্তান আর তাকে স্বীকৃতি দেয়, মূলত সেই রাষ্ট্রে এই ভাবেই যৌন এবং সন্তান উৎপাদনের-রীতি প্রচলিত আছে । আমরা সবাই জানি পাপ, ধর্ম, সমাজ, রাষ্ট্র ভেদে ভিন্নতর হয়, এক ধর্মে যা পাপ অন্য ধর্মে তা পুণ্যের কাজ হয়ে যায় কখনো কখনো, এক সমাজে যিনি কোন এক কাজের জন্য নিন্দিত হন অন্য সমাজে তিনি একই কাজ করে প্রশংসিত হন, এক রাষ্ট্রে যা নিষেধ অন্য রাষ্ট্রে তা আগ্রহ নিয়ে করা হয়। তাই পাপকে জাতী ধর্ম এবং রাষ্ট্রের পার্থক্য ভুলে এক দৃষ্টিতে দেখলে আমাদের ভুল হবে হবে ।

 

আমি প্রথম যেদিন পাপকে জানতে পারি কথাটি অন্য ভাবে বললে বলা যেতে পারে আমাকে যেদিন পাপ সম্পর্কে বলা হয় সেদিনেই আমার মনে শয়তান নামক এক স্বত্বার অস্তিত্ব তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, শয়তান নামক এই চরিত্রকে না দেখেই বিশ্বাস করেছি, সেদিন থেকে শয়তানের কদাকার কুৎসিত আকৃতিবিশিষ্ট নোংরা অপরিচ্ছন্ন ছায়ামূর্তি ধরা দেয় মনে, এখন পাপ বলতেই বুঝি দুষ্ট প্রকৃতির এই শয়তানের কাজ, অথচ এই শয়তানকে আমরা কখনই দেখিনি, আর সত্যি বলতে এই শয়তান আছে কিনা তাও কিন্তু জানি না, পাপের সঙ্গে শয়তানের সমর্পকই বা কি ? যখন কোন নারী দ্বারা কোন অপকর্ম ঘটে তখন তা বলা হয় নারীর শয়তানী, যখন কোন পরুষ দ্বারা কোন অপকর্ম ঘটে তখনো বলা হয় এ পুরুষের শয়তানী, যিনি এই কর্মের কর্তা তার লিঙ্গের সঙ্গে শয়তান শব্দটি-যোগ করেও দেওয়ার মাঝেই শয়তানের অস্তিত্বকে আরো পাকাপোক্ত করা হয়। নারী পরুষের এই অপ-কর্মযজ্ঞের মাঝে শয়তান উভয় লিঙ্গে উপস্থিত হয়, তার মানে আমাদের বুঝে নিতে কষ্ট হয় না হয়ত শয়তানের কোন লিঙ্গ নেই বা শয়তান উভয়লিঙ্গ । আমরা স্বীকার করি আর নাই করি আমাদের ভেতরের পবিত্র সত্ত্বার পাশা পাশী থাকে আরেক নোংরা পাপাত্মা, আমাদের এই নোংরা পাপাত্মাকে যদি শয়তান বলে বিবেচনা করি তবে হয়ত অদেখা শয়তানের এক অস্তিত্বের দেখা মিলেও যেতে পারে, কারণ শয়তানের যেমন চরিত্রের কথা আমরা জানি শয়তানের যে কর্মযজ্ঞের কথা শুনি তা কিন্তু আমাদের দ্বারাই ঘটছে, স্বয়ং শয়তান কিছুই করছে না

 

আমরা স্বীকার করি আর নাই করি পৃথিবীর যত অশুভ অমঙ্গল পাপজনক কর্মগুলো ঘটে তা আমাদের দ্বারাই ঘটে এবং ঘটছে, আমরা প্রকাশ্যে বা অগোচরে হয়ে ওটি পাপিষ্ঠ, পাপগ্রহ আমাদের গ্রাস করে, অশুভ গ্রহের মাঝে নিজেদেরকে চরাতে আমরা ভালোবাসি, আমরা স্বেচ্ছায় এই অনিষ্ট করাকে কোন অন্যায় মনে করি না, তখন ধীরে ধীরে আমাদের হৃদয় হয়ে যায় পাপঘ্ন, পাপঘ্ন হয় আমাদের চোখ, আত্মা, দেহ, আমাদের জীবন এই অন্যায় অশুভ কাজের স্রোতে তখন ভাসতে থাকে । কিন্তু এত শত পাপ করার পরেও কখনই আমরা পাপনাশক ঔষধের খোজে বেরিয়ে পরি না, পাপ দূরকারী কোন পন্থাই গ্রহণ করতে রাজি হই না আমরা, অর্থের লোভ, ক্ষমতার লোভ আমাদেরকে পাপ পুণ্যের ব্যবধান ভুলিয়ে চালিত করে অন্যায়ের পথে, অনেক সময় আমরা পাপবুদ্ধিকে বিবেচনা করি বুদ্ধিমত্তার পরিচালক হিসেবে, পাপকে ভাবি চতুর লোকের কর্ম, অনেকেই আবার পাপমতি মানুষকে মনে করেন দুর্দান্ত স্মার্ট,তখন আমাদের অন্তর্দৃষ্টি অন্ধ হয়ে যায়, এই স্মার্ট ব্যক্তির দুর্মতি আর অ ধর্মবুদ্ধিতে অন্যান্য মানুষের যে ক্ষতি হচ্ছে, সাধারণ অনেক মানুষ তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা বিবেচনাই আনতে চাই না আমরা, এই না ভাবার কারণেও কিন্তু আমরা কোন না কোন ভাবে পাপী হয়ে যাচ্ছি, হয়ে যাচ্ছি পাপকারী পাপিষ্ঠ পাপভাগী। অথচ আমরা সবাই নিজেদের সাধু হিসেবে সমাজে উপস্থাপন করতে চাই নিষ্পাপ হিসেবে প্রকাশ করতে ভালোবাসি ।

 

আমরা আমাদের জীবনের, দৈনন্দিন চলার পথে জেনে বা না জেনে বিভিন্ন ভাবে পাপী হচ্ছি, অসংখ্য পাপ করে চলছি মনের অজান্তেই আর এই পাপের ফল গ্রাহী হয় কেউ না কেউ, আমাদের এই অপরাধ ধরিয়ে না দিয়ে আমাদের পরিবারের সদস্য, অফিসের সহকর্মী, ইশকুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী, যাদের নিয়ে আমাদের চলাচল তারা সবাই আমাদের কৃত্য পাপের হয়ে যায় অংশীদার। পৃথিবীতে এই যে পাপযোগ পাপকর্ম এর থেকে পরিত্রাণ কি ? মুক্তির উপায় কি ? প্রতিদিন নতুন ভাবে কোন না কোন পাপের মধ্য দিয়ে পাপ যোনি আমাদের জন্ম দিচ্ছে। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে ধ্বংস অবধি পাপাচার দুরাচার চলবেই। আমি, পিতা, পিতামহ, আমার সন্তান, আপনি, আপনার সবাই আর সে ও তারা সবাই হয়ে আছে হয়ে যাচ্ছে পাপকারী পাপিষ্ঠ। তার পরেও আমরা সবাই পাপকে ঘৃণা করি মনে প্রাণে চাই দুরাচার পৃথিবী থেকে বন্ধ হোক চিরতরে, কিন্তু নিজের স্বেচ্ছাচারিতা কখনই বন্ধ করিনা, আমি যে পাপিষ্ঠ তা স্বীকার করে শোধিত হই না, আমার ভেতরের পাপাত্মার মৃত্যু কামনা করি না কখনো, যে কারণে আমাদের পাপ-চিত্ত রয়েই যায় অতিশয় পাপী হয়ে। মহাপাপী বলা হয় সাধারণত যে গুরুতর পাপ করে, যে পাপের কারণে ক্ষতি সাধিত হয় অনেক, কখনো কখনো এই মহাপাপী হয়ে উঠেন কোন সাধু পরুষও, কোন সৎ বিজ্ঞানী, কোন দেশ প্রেমিক বীর যোদ্ধা। পৃথিবীতে অনেক পাপ যেমন একা একা করা সম্ভব তেমনি অনেক পাপ আছে যা একা কখনই করা সম্ভব নয়, প্রয়োজন আরেক জন বা অনেককেই, এমন লোকদের বলা যেতে পারে একটি পাপের চক্রাকার পাপিষ্ঠ লোকের দল, এর জন্য প্রয়োজন একাধিক পাপীকে, পাপকারীকে। পাপ সর্বত্রই হতে পারে এমন কি লেখা লেখিতেও, পৃথিবীতে অনেক লেখক এসেছেন যাদের লেখায় মানব কল্যাণ এগিয়ে গেছে বহুদূর, মানুষের উন্নত জীবন যাপনে এবং সভ্যতাতে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের লেখার ভূমিকা কৃতজ্ঞতার সঙ্গেই স্মরণ করতে হয়, তার পরেও তাদেরকে অনেকেই ভাবেন পাপী, কারণ তারা ছিলেন অধার্মিক, তাদের কিছু কিছু লেখা ধর্মকে অবমাননা করা হয়েছে, ধর্মের নিয়ম নীতিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হয়েছে তাদের চিন্তায় তাদের বক্তব্যে, এই মহান লেখক ধার্মিক না হওয়ার কারণে পরিচিত পান পাপচারী হিসেবে, পাপিনী হিসেবে। কিছু কিছু পাপ রয়েছে যা সকল দেশে সকল সমাজে তা পাপেই, সেই কাজকে যেই চোখেই দেখা হোক না কেন, তাকে পাপেই বলা যাবে।

 

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর দালালের পরিচালিত গণহত্যায় প্রাণ হারায় ত্রিশ লক্ষ মানুষ, যৌন নির্যাতনের শিকার হয় তিন থেকে চার লক্ষাধিক বাঙালী নারী আর উদ্বাস্তু হয় প্রায় এক কোটি বাঙালী, এ হল রাষ্ট্রের প্রতি রাষ্ট্রের পাপ। এই পাপেও দিন দিন পাপী হচ্ছে বিশ্বের ক্ষমতাধর, শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো। রাষ্ট্রের প্রণীত আইন অবমাননা কারী বা রাষ্ট্র বিদ্রোহীও পাপী । বোনকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা পাপ, ভাইয়ের সরলতার সুযোগে ভাইয়ের প্রাপ্য সঠিক ভাবে না দেওয়া পাপ, পিতা মাতার প্রতি অসৎ আচরণ তাদের দুর দিনে সেবা শুশ্রূষা না করাও পাপ, সন্তানের লালন পালনে অবহেলা করা পিতার পাপ, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অন্যায় আচরণ স্বামীর পাপ। কখনো কখনো রাজার হুকুমে সরকারী হুকুমে শাহি ফরমানেও পাপ বিদ্যমান থাকে। এমনি পাপ হয়ে আসছে পৃথিবীতে মানুষ বসবাসের শুরু থেকে আজ অবধি আর আমরা এই সব দেখে না দেখার ভান করে বা নিজের স্বার্থে এসব করে আমাদের জীবনকে নিয়ে যাচ্ছি পাপের মিছিল। আজ যারা আমাদের নেতা নেত্রী যারা আমাদের রাষ্ট্রীয় অভিভাবক তারা আমাদের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে পাপ করেন, আমাদের কষ্টার্জিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে পাপ করেন, সরকারী কর্মচারী জনগণকে ঠকিয়ে জনগণের প্রাপ্য কাজের মাধ্যমে পাওনা না দিয়ে ঘুষের বিনিময়ে কাজ করে পাপ করেন। শাসনতন্ত্র পরিচালকের পাপ, সরকারি কর্মচারীর পাপ, রোগীকে হয়রানি করার মধ্য দিয়ে ডাক্তারের পাপ, সমাজে শান্তি শৃঙ্খলার পরিবর্তে ঘুষ খাওয়ার মধ্য দিয়ে পুলিশের পাপ, মিথ্যে মামলার পক্ষে ওকালতি করে উকিলের পাপ, পরিবারের সদস্যদের মাঝে শৃঙ্খলা নষ্ট করে পরিবারের পাপ, বন্ধুর পাপ, পরিচিতের পাপ, নিজের পাপ, সব পাপ মিলে মিশে আমরা এমন পাপের তলায় তলিয়ে যাচ্ছি যে আজ পাপ পুণ্যের প্রার্থকটুকুও বোঝার বোধশক্তিটুকু আমাদের বিবেক থেকে হারিয়ে যাচ্ছি একেবারে ।

 

পাপ নিয়ে অনেক কথাই বলা হলো, এখনো নিজের পাপের কথা লেখাই হল না। এবার নিজের পাপ নিয়ে লিখা যাক, ধর্মে যে নিয়ম নিতি আছে তা সঠিক ভাবে পালন না করার কারণে আমি অবশ্যই পাপী, আবার অনেক সময় এমনো করে ফেলি যা করার সময় প্রথমে বুঝতে পারি না, যায় করছি তা পাপ, এই অজ্ঞতার কারণেও অনেক পাপ হয়ে যায় আমার। অনেক পাপ আছে যা করার সময় আমি বুঝতে পারছি, বুঝতে পারছি যায় করছি এ পাপ, এ অন্যায়, এ আমার করা ঠিক হচ্ছে না, তবুও হুজুকে পরে বা ক্ষণিকের আনন্দের জন্য সেই পাপ স্বেচ্ছায় করি বহুবার। এক সময় আমার কিছু কিছু পাপ হয়ে যেতো ক্রোধ বসত, হয়ত বাস থেকে নামছি, চেষ্টা করছি খুব দ্রুত নামার, এমন সময় কেউ আমার সামনে এসে পড়লো আর সে এগুচ্ছে খুব আস্তে আস্তে তার এই আস্তে হাঁটা বা বাস থেকে দ্রুত নামার কৌশল না জেনে ইচ্ছাকৃত আমার সমানে এসে পড়ার কারণে আমার খুব রাগ হতো, রাগের বসে তখন তার পায়ে পা তুলে দিতাম ইচ্ছাকৃত, ফুটপাত, বাজার বা যে কোন স্থানেই হোক আমি যখন হাঁটতাম আর আমার সামনে যদি কেউ মন্থর গতিতে হাঁটত, আমাকে পাশ কেটে যাওয়ার সুযোগ না দিতো তখনো আমার খুব রাগ হতো, আমি বার বার চেষ্টা করতাম তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কিন্তু আমার সামনের ব্যক্তি আমাকে কিছুতেই পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতো না এই কারণে আমার রাগ বহুগুণে বেড়ে যেতো তখন, এমতাবস্থায়তেও আমি সজ্ঞানে খুব জুরে স্যরই তার পায়ে পা তুলে দিতাম, যার পায়ের উপর আমার পা পড়তো তিনি চমকে উঠতেন, ব্যথা পেতেন, তার পায়ে আমার জুতার ময়লা লেপটে যেতো, যার পায়ে আমার পা পড়তো তিনি উঃ করে উঠেন, আমি পাশ থেকে তাকে মিথ্যে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তার পিঠে হাত দিয়ে বলতাম. সরি, সরি । এই যে কাউকে কষ্ট দেওয়া ! পায়ে পাড়া দেওয়া ! তার পর আবার তার পিঠে হাত ভোলান ! ভদ্রতার আড়ালে এই যে বদমাইশি হতো আমার, এ কি পাপ নয় ? আমি জানি এ আমার পাপ। পাপ মূলত অহংকার, রাগ, ঘৃণা, লোভ আর বোকামির বীজে উৎপন্ন হয়। পাপ যেমন ক্রোধ রোষ গোসা থেকে সৃষ্টি তেমনি সৃষ্টি হয় অনুরাগ প্রেম প্রণয় আসক্তি আর মমতা থেকেও। মা যখন সন্তানের কোন অপরাধ মমতার বশবর্তী হয়ে লুকিয়ে রাখেন তখন তিনিও পাপ করেন, কারণ এতে সমাজ এবং রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়, স্ত্রী যখন স্বামীর অপরাধ দামা চাপা দিয়ে স্বামীকে বাঁচানোর তাগিদে মিথ্যে বলে স্বামীকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সাফাই গান, তখন স্ত্রীরও গুরুতর পাপ হয় । আমরা সবাই জানি এ মায়ের মমতা প্রকাশ, এ এক স্ত্রীর ভালোবাসার প্রকাশ, তবও এ পাপ, কারণ এই মমতায় এই ভালোবাসায় অন্যের ক্ষতি হয় । আমরা হরহামেশাই পাপ করে এগিয়ে যাচ্ছি, কখনো ছোট ছোট পাপ, কখনো বড় বড় পাপে, কখনো ঈশ্বরের সঙ্গে, কখনো নিজরে ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে নিজেরেই সঙ্গে, কখনো পরিবার, সমাজ আর রাষ্ট্রকে ঠকিয়ে চলছে আমাদের দৈনন্দিন পাপের যাত্রা। আমাদের এই পাহাড় সম পাপ যদি সমাজ পরিবার পরিচিত-জনরা জেনে ফেলতো তবে কি আমাদের এই যশ আমাদের এই সম্মান আর আমাদের এই ভালো মানুষী টিকে থাকতো কখনো ? আমাদের স্মৃতির আয়না আমরা নিজেকে দেখলে হয়তো আন্দাজ করতে পারবো কিছুটা, আমরা কতটা পাপী।

নিজের পাপ নিয়ে লিখছিলাম। আমি কখনো কখনো অনিচ্ছায় এমন অনেক পাপেই করে ফেলি যার কারণে পরবর্তীতে খুব আত্মপীড়ন ভোগতে হয় আমাকে অনেকটা সময়, অনেক দিন। পাপ নয়, বেপারটি লঘু, তবও আমাকে শাস্তি দেয় সেই ঘটে যাওয়া ঘটনা । হয়ত কোন এক পরিচিত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত হল আমার বা আমার কাছেই আসলেন পরিচিত মানুষটি, আর ব্যস্ততা বা আনমনে থাকার কারণে তার সঙ্গে তেমন ভাবে কথা বলা হল না আমার, সে যতক্ষণ আমার সামনে রইলেন আমি রইলাম অন্য মনুষ্য বা অন্য কাজে ব্যস্ত, আর তিনি যখন চলে গেলেন তারপরেই নিজের দোষ সম্পর্কে সচেতন হলাম আমি, স্বীয় ক্রোটি সম্পর্কে ভাবতে থাকি তখন আর আফসোস করতে থাকি এই বলে, আহারে আর একটু সময় তার সঙ্গে তো কথা বলতে পারতাম ! সে তো আরও বেশি কিছু আসা করেছিলো আমার কাছে ! তার প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছুই করিনি আমি। এই চলে যাওয়া লোকের ব্যাপারে জীবনে বহু আত্মপীড়ন হয়েছে আমার। হয়ত কোন বেপারে কারো সঙ্গে মনমালিন্য হলো আমার, ক্রোধ বসত তাকে দুটি মন্দ কথা বলে ফেলেছি, ধমকও দিয়েছি আমি, এই বাগবিতণ্ডার জয়টা আমারেই হয়েছে, আর সেই ঘটনার পর প্রতিপক্ষের মালিন্য মুখ দেখে অশ্রু সজল চোখ দেখে মর্মবেদনা ভোগী আমি নিজেই । বেপারগুলো খুব ছোট, খুব সাধারণ, কিন্তু এই ছোট্ট সাধারণ বেপার গুলোই বার বার ফিরে আসে আমার মগজে, অনেক দিন তার প্রতি মাথাব্যথা আমাকে ভেতরে ভেতরে কাদায়, এই কাঁদানকে মনে হয় শাস্তি বলে, শাস্তি মানে-ইতো পাপের প্রায় চিত্ত ।

 

জীবনের যে কয়টি নিজের অপরাধ আমাকে খুব বেশী কষ্ট দেয় তার মধ্যে একটি হল, একজনকে কথা দিয়ে কথা না রাখা, সকাল থেকে পড়ন্ত দুপুর পর্যন্ত শাহবাগে অপেক্ষায় রাখা, আমি ইচ্ছে করলে হয়ত তার সামনে সেদিন যেতে পারতাম কথা বলতে পারতাম কিন্তু চাকরী হারানোর হতাশা ঢাকার চাকচিক্যময় পরিবেশে বেড়ে উঠা একটি মেয়ের উপর বিশ্বাস আনতে না পারা তার অপেক্ষায় থাকার ব্যাপারটি আমার কাছে গুরুত্ব পাইনি সেদিন। সেদিন তার সঙ্গে দেখা না করে যকটুকু পাপ করেছিলাম তার থেকে বেশি পাপ করেছিলাম পরে, সে যখন প্রশ্ন করেছিলো কেন আমি যাইনি তার কাছে সেখানে ? আর এর উত্তর আমি খুব গুছিয়ে মিথ্যে বলে তাকে বুঝিয়ে ছিলাম নিজে অসুবিধের কথা, আমি তাকে ধোঁকা দিয়ে ছিলাম, এই পাপের কারণেই চিরদিনের জন্য পথ বন্দ হয়ে যায় আমার তার মুখোমুখির হবার, আমি আর তার সামনে দাড়াতে পারিনি. পরে বহু বার তার কাছে কিছু না বলে সরি বলেছি, সে যখন জানতে চায় কেন আমার এই সরি বলা, আমি তার উত্তরে বলেছি, আমি তোমার সঙ্গে একটি অপরাধ করেছি তার জন্য সরি, সে আবার জানতে চায় আমার অপরাধের কথা, আমি কি অপরাধ করেছি তার সঙ্গে, তখন আমি সরা সরি কিছুই বলতে পারি না তাকে, সেই ঘটনা মনে করে সে আবার কষ্ট পায় লজ্জা পায় এই ভয়ে আমি নীরব থেকেছি । এই কিশোরীর অন্তরের কষ্ট আমাকে পাপের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আজো, আমাকে অঙ্গুল দিয়ে বলে যায় আমি পাপী ।

 

পৃথিবীতে বহু প্রকারের পাপ প্রতিনিয়ত মানব কর্মের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। কেউ এই পাপ সাধরে গ্রহণ করছে যশ খ্যাতি পাহাড় সম সম্পদের প্রাপ্তির লোভে আবার কেউ কেউ খুদার তাড়না মাথা গোজা ঠাইয়ের বিনিময়ে তলিয়ে যাচ্ছে পাপের চক্রে। নিজের সরলতার জন্য জীবনে বহু বার প্রতারিত হয়েছি, সংশয় গ্রস্ত হয়ে হারিয়েছি সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ, অনেক সময় বুঝতে পেরেছি আমি এক ফাঁকি বাজের পাল্লায় পড়েছি, তবও পাপকারীকে বুঝতে দিইনি, সে লজ্জা পায় এই ভয়ে, কারণ পাপকারী আমার খুব কাছের মানুষ । জীবনে আপন মানুষের কাছেই ঠকেছি বার বার, এও তো এক পাপ।

 

কেউ একজন আমাকে বলেছিলেন, যার মাঝে তুমি কখনই পাপ খুঁজে পাবে না, অপরাধ খুঁজে পাবে না, তবে বুঝে নিও সেই মানুষটি আসলে মানুষ নন, তিনি হয়ত ফেরেশতা নয়ত তিনি শয়তান। আমরা মানুষ আমাদের পাপ থাকবেই, অপরাধ আমরা করবই। কিন্তু আমাদের পাপের পরিমাণ দিন দিন এত ভেড়ে গেছে যে আমাদের এই পাপের কারণে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে বসবাসরত মানুষের জীবন কাটাতে হচ্ছে অমানবিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে, যার কারণে জীবনের সাধ কখনই পাচ্ছে না তারা, পাপকারীর পেশিশক্তির কাছে বিষাক্ত হয়ে আছে তাদের জীবন, মৃত্যু আর জীবনের গোলক ধাঁধাঁয় পরে রয়েছে এই ভুক্তভোগী মানুষগুলো দিনের পর দিন । আমাদের সবারেই জানা উচিত, আমরা যত জ্ঞানী হই আর যত শূন্যবাদে বিশ্বাসীই হই না কেন, পৃথিবীর কোন ধর্মই কিন্তু পাপ কে প্রশ্রয় দেয় না, মূলত পাপ-থেকে মুক্তির তাগিদেই ধর্মের প্রবর্তন, ধর্মের আবির্ভাব, এই কারণেই অন্যায় বা পাপ কাজকে বলা যায় অধর্মের কাজ, শাস্ত্রবিরুদ্ধ কর্ম, গুনাহ ।

আমি বিশ্বাস করি কাউকে ধোঁকা দেওয়ার উপর আর কোন পাপ নেই এই পৃথিবীতে ।

শাহীদ লোটাস। বাংলা ভাষার লেখক, বাংলাদেশ-এর নেত্রকোনা জেলায় মোহনগঞ্জ থানায় ৩০ মে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ও ভারতে শাহীদ লোটাস-এর বেশ কয়েকটি উপন্যাস, কাব্যগ্রন্থ ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লিখতে উৎসাহবোধ করেন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ